গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- konika Islam sanju
part:12
ছাঁদের দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে আয়াত আর একটু দূরেই দাড়িয়ে আয়ান,, চোখ মুখে দুষ্ট হাসি,,, হাত ভরতি রঙ। আয়াত এখন পিছাতেও পারছে না আর আগাতেও না৷ আয়ান ঠোঁট কামড়ে এক ভ্রু উচু করে হাসি দিয়ে বলে
—- জানেমান এখন কথায় পালাবা। সবার হাত থেকে তো পালিয়ে এসেছিলে এখন?? আয়াত একটা শুকনো ঢুক গিলে বলে
—- দেখুন,, আম,,,আমার এই রঙ খেলায় কেনো রকম ইচ্ছে নেই,, তো আপনি খেলুন ওদের সাথে নিচে অনেকে আছে। আয়ান একটা ফ্লাইং কিস দিয়ে বলে
—- নো বেইবি আমি আমার বউ এর সাথে রঙ খেলব। বলেই আয়াতের গালে রঙ মেখে দেয়। আয়াত রেগে তেরে আসলে। আয়ান দৌড়ে নিচে নামতে লাগে,, সাথে আয়াতও। আজ সবাই মিলে রঙ খেলছে কারণ আজ অপূর্ব ছোট বোন আর বাড়ির সবার চোখের মনি ইরা আসছে। তারই আসার আয়োজন। আর আয়াত এইসব থেকে বাচার জন্য ছাঁদে এসে বসেছিল,, কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো কই? আয়ান এসে ঠিকই রঙ লাগিয়ে দিয়েছে। আয়ান দৌড়াচ্ছে আর বলছে
—- তোর মতো ডোরেমন আমাকে ধরতে পারবে? আয়াত রেগে নাক ফুলিয়ে বলে
—- তাল গাছের মতো লম্বা আপনি,,, পা গুলে এতো বড় বড় তো ধরব কি ভাবে? একটু ধীর গতিতে দৌড়ালে কি হয়। আয়ান সোজা দৌড় দিয়ে গার্ডেনে চলে যায়। আয়াতও আসে আর সাথে সাথে আয়ান আয়াতের দিকে রঙ ছুড়ে মারে। আয়াতও কমনা নিজের পা এগিয়ে দেয় আর লেং মেরে আয়ানকে নিচে ফেলে দেয় ,,,,, আয়ান নিচে পরে যায় তা দেখে আয়াত হাহা করে হাসতে লাগে। আয়ান নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে
—- ফাজিল মেয়ে উঠা আমাকে।। আয়াত হাতটা এগিয়ে দিয়ে আবার ফিরিয়ে নিয়ে বলে
—- সময় নেই। আয়াত চলে যেতে চাইলে আয়ান আয়াতের উড়না ধরে বলে
—- বউগো আমাকে উঠাও না। খুব ব্যাথা পেয়েছি। আয়াত ও নিজের হাত বাড়িয়ে দেয় আয়ান উঠে দাড়িয়ে বলে
—- এখন তোর কি হবে?
আয়াত দৌড় আয়াতকে আর পায়কে। আয়ান আর আয়াত মেতে উঠেছে রঙ খেলায়,,,, অন্য দিকে আরেকজন রাগে ফুসছে।।।।।
হঠাৎ ভিরের মাঝে কে যেন আয়াতকে রঙ লাগিয়ে দেয়। আয়াত সেটা কে বুঝে উঠার আগেই আলভিরা পিছন থেকে বলে
—- আমাদের ইরা বতি,,,, আর সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে ইরাকে নিয়ে। ইরার সবার সাথে কথা বললেও,,, আরিয়ানের সাথে কথা বলে না,,,, ইরা বরাবরই আরিয়ানকে লাইক করে কিন্তু আরিয়ান ইরাকে এড়িয়ে চলে। কিন্তু এইবার আরিয়ান ইগনোর করার আগেই ইরা আরিয়ানকে ইগনোর করছে। তাতে অবশ্য আরিয়ানের কিছু যায় আসে কি না বুঝা যাচ্ছে না।
___________
অপর দিকে আয়াত সেই কখন থেকে ওয়াশরুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে,, আয়ান বের হলেই সে শাওয়ার নিতে যাবে। আরিয়ান দরজাটা হালকা ফাক করে বলে
—- আয়াত তোয়ালেটা দেতো নিতে ভুলে গিয়েছে। আয়াত বিরক্ত হয়েই তোয়ালেটা এগিয়ে দেয় আয়ানের দিকে। কিন্তু তার আগেই আয়ান আয়াতের হাত ধরে টান দিয়ে ভিতরে নিয়ে আসে। হঠাৎ এমন করাতে আয়াত ঘাবড়ে যায়। ঝরনার পানিতে দুজনে ভিজে একাকার,,,, আয়াত বার বার চোখের পলক ফেলছে,, কারণ পানির গতি অনেক। তা দেখে আয়ান মুচকি হাসি দিয়ে আয়াতের চোখে দুটো চুমু দেয়। আয়াতের সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কখনো খুব কেয়ার করে কখনো আবার খুব করে বকে। আয়ান আয়াতের দিকে তাকিয়ে বলে
—- শাওয়ার নিয়ে আসো। আর আমি রুমে চেন্ঞ্জ করে নিচ্ছি। বলেই চলে যায়। আয়াত এখনো সেই আগের জায়গায় দাড়িয়ে আছে। আয়ান দরজায় নক কর বলে
—- ফাস্ট । আয়াতের হুশ আসতেই দরজটা আটকে শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে আসে। আয়ান রুমে নেই হয়তো নিচে। আয়াত বেলকনিতে গিয়ে দেখে,, আরিয়ান আর আয়ান কোনো ব্যাপার নিয়ে কথা বলছে। আয়ান পরেছে হুয়াইট শার্ট হাতা গুলো কনুই অব্দি উঠানো,,,,, আর কালো পেন্ট,,, আরিয়ানও কম কিসে ইস্কাই ব্লু কালারের শার্ট আর হুয়াই পেন্টে। আসলে বাগান পরিষ্কার করা হচ্ছে,, রঙ খেলায় বাজে অবস্থা তখনই ইরা আসে আয়াতের রুমে আর ভাওও করে আয়াতকে ভয় পায়িয়ে দেয়। আয়াত রেগে ইরার কান ধরে বলে
—- জীবনে ভালো হবি না। ইরা ঠোঁট উল্টে বলে
—- আহহ আয়ত আপুই লাগছে তো ছাড়োনা। আয়াত ছেড়ে দেয় পরে দু’জন ইচ্ছে মতো গল্প করে। কিন্তু এতটুকু সময় অপূর্বের দেখা একবারও মেলেনি। অন্য দিকে নিজের রুম থেকে বের হচ্ছে আলভিরা,, বের হতে না হতেই আরেক জনের সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে চাইলে তাকে সে ধরে ফেলে। সাদী ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো
—- তোর জন্য চশমা কিনতে হবে,, কখনো পানিতে পরিস আবার কখনো শুকনো জায়গায়। আলভিরা সোজা হয়ে দাড়িয়ে বলে
—- আর আমার গল্পে হিরোর মতো এন্ট্রি নাও তুমি,, এটা তোমার প্লানিং!! সাদী বলে
— গল্পের ভিলেন আমি,,এই নে তোর পায়েল,,, রঙ খেলার সময় খুলে গিয়েছিল। আর আমার সব বিগ বি গুলো কই? অপূর্ব ভাইয়া আয়ান ভাইয়া আরিয়ান একজন কেও তো দেখছি না। আলভিরা পায়েলটা নিয়ে বলে
—- আমি জানি না,, আরবি আপুকে জিজ্ঞেস কর গিয়ে। কিচেনে আছে। সাদী আলভিরার চুল টান দিয়ে চলে যায়। আলভিরা রেগে বলে
—- বিগ বির কাছে বলে দিব৷ সাদী বাঁকা হাসি দিয়ে বলে
—- বিবি আমাকে কিছু বলবে না আর করতেও পারবে না। নিচে আয় একটু পর সবাই খেতে বসবে।
_________
সবাই একসাথে খাচ্ছে আর গল্প করছে কিন্তু এইসবের মাঝে আয়াত পরেছে বিপদে,, আয়ান এক হাত দিয়ে খাচ্ছে আরেক হাত দিয়ে মাঝে মাঝে আয়াতের হাতে চিমটি দিচ্ছে। আয়াত না পারছে সহ্য করতে না পারছে কিছু বলতে । তখনই অপূর্ব বলে
—- আয়াত তোমার সমস্যা হলে তুমি আমার জায়গায় এসে বসো। আর আমি না হয়। আয়াত রাজি হয়ে যায়,,, আয়ান একবার আয়াতের দিকে তাকিয়ে বেস জুড়েই চিমটি দেয়। আয়াত বেচার আম্মু বলে চেচিয়ে উঠে।। তা দেখে সবাই বলে
—- কি হয়েছে কি হয়েছে?? আয়াত পরিস্থিতি সামাল দিতে বলে
—- মাছের ঝুলটা যা হয়েছে না,, আরেক পিছ। আয়ান মিট মিট করে হাসছে। একটু পরই অপূর্ব এসে বসে পরে আরবি আর আয়ানের মাঝে,,, আর আয়াত গিয়ে বসে পরে আরিয়ানের পাশে মানে অপূর্বের জায়গায়। পাশেই আলভিরা আর সাদী বসা। আয়াতের মা আয়াতের প্লেটে মাছ দিতে দিতে বলে
—- সূর্য আজ কোন দিকে উঠেছে!! আলভিরা শশা খেতে খেতে বলে
—- সামনাসামনি। আয়ানকে উদ্দেশ্য করে। সাদী আলভিরার মাথায় হলাকা থাপ্পড় দিয়ে বলে
—- সূর্য উত্তর দিকে উঠে গাঁধা,,, পূর্ব দিকে উঠে। আলভিরা এক রকম কেঁদে দেয় আর বলে
—- আমি আয়ান ভাইয়ার কথা বলছি,,, তুমি না দেখালা আয়ান ভাইয়া আয়াত আপুর হাতে চিমটি কাটছিল। আর সবাই একসাথে হেসে দেয়,, শুধু একজন ছাড়া। আয়াত বেচারির গলায় খাবার আটকে যায় ।৷ আরিয়ান তাড়াতাড়ি করে পানি এগিয়ে দেয়,, আর সাদী রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আলভিরার দিকে। আয়াত পানি খেয়ে বলে
— আমার খাওয়া শেষ,, আর সোজা রুমে দৌড়। আয়ান বেচারার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে বেচারও বলে
—- আমার খাওয়াও শেষ। আর আয়ানও দৌড়। আয়ান যেতেই সবাই হাসিতে ফেটে পরে। ইরার হাসতে হাসতে প্রায় অবস্থা খারাপ তাই সে সামনের থাকা গ্লাসটার দিকে হাত বারায় পানি খাওয়ার জন্য, আর আরিয়ানও। কিন্তু আরিয়ান গ্লাসের বদলি ইরার হাত ধরে
চলবে।