তার শহরের প্রেম পর্ব-১১

0
1763

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:11

কলেজ শেষে একটার পর একটা ফুচকা খাচ্ছে, আয়াত আর আলভিরা। অন্য দিকে আরিয়ান ওদের খাওয়া দেখছে। হঠাৎ করেই একটা বাচ্চা এসে আয়াতের হাতে একটা লাল চিরকুট আর একটা গোলাপ ফুল দিয়ে যায়। আয়াত বলে

—- বাবু এটা তোমাকে কি দিতে বলেছে? বাবুটা ইশারা করে বুঝায় সে কথা বলতে পারে না আর দৌড়ে চলে যায়। আরিয়ান বলে

—- এটা আবার কোন নতুন আপদ!! দেখি আমাকে দাও। আয়াত চিরকুটা আরিয়ানের কাছে দেয় আরিয়ান পড়ে দেখে তাতে লেখা

—– সৌন্দর্যের পরিপূর্ণ সম্ভার বললেও হবে না ভুল,

যেমন সুন্দর তোমার মাথার ঘন কালো চুল,

তেমনই তোমার টিয়া পাখীর মত লাল ঠোঁট অনন্য,

একেবারে পাগল আমি তোমাকে পাবার জন্য!

অপ্সরার রানি রম্ভার মত গায়ের রং তোমার,

তুলার মত নরম কোমল গালে থাকবে স্পর্শ আমার,

এমনই সাধ জাগে মনের মাঝে,

সকাল দুপুর কিংবা সাঁঝে!

বিধাতার বিশেষ সৃষ্টি তুমি,

তোমার মন জয় করে ছাড়বই আমি♥️♥️ চিরকুটের লেখাটা শুনে হুহু করে হাসতে লাগে,, আলভিরা আর আয়াত।। আরয়িন বলে

—- হায় দিন দুপুরের আয়াত তোমার জন্য নতুন প্রেমিক তৈরি হয়েছে,, এবার তুমি সমালাও। বলেই হাসতে লাগে। আয়াত ফুচকা চিবুতে চিবুতে বলে

—- পুরান পাগলের ভাত নাই,, নতুন পাগলের আমদানি,, ডিপলি ভাবা যায় এগুলো??!! কোথায় থেকে আসে এরা!! আলভিরা বলে

—- ভাবি আমি শিহরিত,,, । কিন্তু আয়ান ভাইয়াকে জ্বালানো যাবে। আজ কালতো সে আবার তার বউকে চোখে হারায়। আয়াত রেগে সে ফুচকাটা খেতে খেতে বলে

—– কচু চিন? ঐ কচু। আরিয়ান চিরকুটটা আয়াতের দিকে এগিয়ে দেয় আর বলে

—- না আজকাল তো তাই দেখছি। তা এটার কি করবে?? আয়াত বলে

— কি আর? ডাস্টবিনে জায়গা হবে। বলেই চিরকুট টা ছিড়ে ফেলে দেয়। আর তিনজনই বেরিয়ে পরে আয়াতদের বাসার উদ্দেশ্য। চারদিকে যাক যমক,,, বাড়ি ঘর সাজাতে মেতে উঠেছে সবাই। এতো সাজ সজ্জা কেন? আয়াত সাদীকে জিজ্ঞেস করে

—- এই সাদী এতো সাজসজ্জা কেন? সাদী আয়াতের গাল টেনে বলে

—- তোর অপূর্ব ভাইয়া আসছে,,,।

অপূর্ব ভাইয়া নামটা শুনেই খুশিতে গদগদ হয়ে উঠি,,, অপূর্ব ভাইয়া হচ্ছে আমার বাবার,,,চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মানে আমার ভাই লাগে। আগে প্রায় আসতো কিন্তু বিয়ের পর আর দেখা হয়নি৷ আরিফা আপুর বিয়ের ১ মাস আগে বলে ছিল দেখিস আরিফার পরেই তোর বিয়ে। আমাকে অনেক আদর করে।। খুশি মনে বাসায় চলে আসাল আয়াত।

_________

বিকেলে অফিস থেকে ফিরে আয়ান দেখে আয়াত আর সবাই একসাথে খুশিতে মেতে উঠেছে,,, আর আয়াতের সাথে বসে আছে অপূর্ব। অপূর্বর সাথে আয়ানের সম্পর্কটা সাপ নেয়ুলের মতো। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। কারণ সেটা অজানা৷ (পরে জানতে পারবে) আয়ান আয়াতকে ডাকে আর বলে

—- আয়াত উপরে আসো।অপূর্ব বাঁকা হাসি দেয় আর বলে

—- হেই বিগ বি,,, কেমন আছো? আয়ান বলে

—- আলহামদুলিল্লাহ,, আয়াত জলদি রুমে আসো।

আয়াতকে সবাই পিন্ঞ্চ মেরে বলে যাও যাও। কিন্তু সব কিছুর পরও অপূর্বের চোখ জোরা সবার আড়ালে গিয়ে আটকে আছে একজনের দিকে। আয়াত রুমে এসে দেখে আয়ান টাই খুলছে চোখ মুখে ভয়ংকর রাগ। আয়াত মনে মনে বলে

—- আয়াতরে কেটে পর কেটে পর,, যেই ভাবা সেই কাজ কিন্তু তার আগেই আয়ান আয়াতের হাত ধরে দরজটা লাগিয়ে দেয় আর আয়াতের দুই হাত চেপে ধরে বলে

—- ফাস্ট আর লাস্ট বারের মতো বলছি,, অপূর্বের থেকে দূরে থাকবি, তোর ,, আশেপাশেও যেন ওকে না দেখি। আমি একটু সাহস জুগিয়ে বলি

— কেন অপূর্ব ভাইয়া কি!!? আয়ান রেগে দেওয়ালে পান্ঞ্চ মারে বলে

—- না মানে না। এর উপরে কোনো কথা চাই না। আয়ান রাগের বসে সেই কাটা হাত দিয়ে দেওয়ালে মেরেছে ফলে হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আয়াত রেগে গিয়ে আয়ানের হাত ধরে বলে

—- সবসময় ফালতু রাগ আর জিদ আপনার,, রাগের বসে তো আপনারই ক্ষতি হয়েছে,, ব্যাথা করছে না, আমি এখনই ।।।। বলে আয়াত যেতে চাইলে আয়ান আয়াতের হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর জাড়িয়ে ধরে। আয়াত রেগে অনেক কথা বলছে কিন্তু সেদিকে আয়ানের খেয়াল নেই। আয়ান মনে মনে বলে

—- অপূর্ব থেকে তোর দূরে থাকতে হবে,, কারণ অপূর্ব মনে করে তার থেকে তার প্রিয় মানুষটাকে দূরে আমি সরিয়েছি,, কিন্তু না সব ছিল ভাগ্যের লেখা৷ আই এম সরি অপূর্ব,, এতে আমার কোন ভুল ছিল না। আর আমি আমার আয়াতকে কোথাও যেতে দিব না। আয়াত আমার আছে আমারই থাকবে। আয়াত নিজেকে আয়ানের থেকে ছাড়িয়ে আবার হাতে বেন্ডেজ করে দেয়।

________

রাতে শুয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আয়াত। তখনই আয়ান এসে বলে

—- তোর পড়া শেষ? নাকি শুধু কলেজই যাস। আর আসিস। আয়াত রাগী চোখে তাকিয়ে বলে

—- রাত ১২টা অব্দি বাইরে থাকলে দেখবেন কি করে? তখনই অপূর্ব দরজায় করা নারে। আয়াত দরজা খুলে বলে

—- তুমি এখানে? কিছু লাগবে ভাইয়া?? অপূর্ব বলে

—- সবাই একসাথে উপরে গল্প করছে তুই আর আয়ানও আয়। আয়াত বলে

— সে মাত্র বাইরে থেকে এসেছে তুমি যাও আমরা আসছি। আয়ান ভেবে দেখে এখন যদি সে বারণ করে তাহলে খারাপ দেখায় তাই বলে

—- আয়াত তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। আয়াত মনে মন বলে

—- সবার সামনে তুমি আর একা তুই,, হারামি। আয়াত আর অপূর্ব কথা বলতে বলতে চলে যায়। আয়ান ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হতে যাবে তখনই কিছু তরল জাতীয় জিনিসের উপর স্লিপ করে। কিন্তু বেলেন্স করে নেয়। সামনে তাকাতেই দেখে একটা কাচের গ্লাস ভাঙা,, আর নিচে জুস৷। এইরে একটুর জন্য কাচের উপর পরত। তখনই আয়ান একটা সার্ভেন্টকে ডাকে আর বলে

—- এগুলো একটু দেখে শুনে করবেন,, একটু হলেই তো। সার্ভেন্ট টা বলে

—- সরি,,, স্যার মাফ করবেন। কিছু সময় আগেই তো একজন উপরে জুস দিয়ে এসেছে তখন হয়তো। আমি পররিষ্কার করে দিচ্ছি। আয়ান পাশ কাটিয়ে চলে আসে ছাঁদে। তারপর শুরুহয় তাদের আড্ডা। আয়াত বলে

—- আমার সাথে একটু কেউ নিচে কিচেনে চলো না,, পানি খাবো,, এখানে তো সব,, আয়ান বলে

—- চলো,,, আর সবাইকে গুড নাইট
কালকে আয়াতের কলেজ আছে, আলভিরা ঘুমাতে যা আরবি তুইও,, আর আরিয়ান তো কিছু সময় আগেই বাসার উদ্দেশ্য বের হয়েছে একটা কল দিয়ে৷ তখনই আরিয়ানের মেসেজ আসে সে ঠিক মতো বাসায় পৌঁছে গিয়েছে আর তার দিদুন নাকি আর তিনদিন পর আসবে৷ আয়াত নিচে নামতে নামতে বলে

—- আচ্ছা আপনি এমন হঠাৎ বদলে গেলেন কিভাবে? এতো ভালো ব্যবহার৷ আয়ান রাগী কন্ঠে বলে

—- কেন বাজে ব্যবহারটাই কি ঠিক? আসলে আমারই ভুল,,,বেশি মাথায় তুলে ফেলেছি। আয়াত চুপ হয়ে যায় আর মনে মনে বলে

—- ঠিকইতো হয়তো সিমপ্যাথি দেখাচ্ছে এর বেশি কিছু না। নিজের বেহায়া মনটাকে ইচ্ছে মতো বকে
_______

অপর দিকে অজানা ব্যক্তিটা রেগে একাকার। আয়ান কিভাবে বেঁচে গেলো?

——৷ আহহহহহহহ,,, আয়ান,,, আয়ান,, আয়ান। কি এমন আছে ওর মাঝে যা আমার মাঝে নেই। আয়াত আমার আর ওকে খুব জলদি আমার করে নিব,, মাঝপথে বাঁধা শুধু আয়ান। আর আয়ান আই এম সরি BB,,,, তোমাকে সরতে হবে। ৪দিন পরই তো আহমেদ বাড়িতে উৎসব। আর সেটাই হবে আমার আয়ানকে পথ থেকে সরানোর আসল দিন। এই চোর পুলিশের খেলা আর না এবার সামনা সামনি খেলা হবে। বলেই বাঁকা হাসি দেয়। আর হাতে থাকা ছুড়িটা ছুড়ে মারে আয়াত আর আয়ানের বিয়ের ছবি বরাবর।

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে