গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- konika Islam sanju
part:10
সকালের মিষ্টি সোনালী রোদ্দুর চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে যায় আয়ানের। আয়ান তাকিয়ে দেখে তার বুকে মুখ গুজে শুয়ে আছে আয়াত। আয়ান আজ আর সেইদিনের মতো আয়াতকে বালিশে শুয়িয়ে দেয়নি,,, খুব যত্নে আবার তার বাহুডোরে আবদ্ধ করে কোপালে একটা চুমু দিয়ে চোখ বুঝে নেয়। আর সাথে সাথে আয়াত চোখ মেলে তাকায়। আর দেখে তাকে আয়ান খুব শক্ত করে ধরে আছে। আয়াত আয়ানের বাহুডোর থেকে বের হতে চাইলে,, আয়ান আরো শক্ত করে ধরে রাখে। আয়াত কিছু বলতেও পারছে না। কারণ তার মতে যদি আয়ান জেগে তাহলে আবার নতুন কাহিনী শুরু করবে। ধূর এখন কি হবে,,,, । একসময় আয়াতকে আয়ান ছেড়ে দেয়,, আয়াত তাড়াতাড়ি করে উঠে চলে যায় ফ্রেশ হতে।
আয়ান মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—– বউ তুমি এতো কিউট কেন? প্রায় ২০ মিনিট পর আয়াত বের হয় শাওয়ার নিয়ে,,,,, সাদার মধ্যে লাল রংরে সুতোয় ফুলের কাজ করা। চুলগুলো থেকে টুপ টুপ পানি পরছে,, আয়ান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়াতের দিকে,, তা দেখে আয়াত সোজা বেলকনিতে চলে যায়। কারণ তার অস্তিত্ব লাগছে। আয়ানও তোওয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে,, আয়াত বিছানা ঠিক করছে। আয়ান তোয়ালেটা সোফার উপর ফেলে চলে যায় বেলকনিতে আর একটা সিগারেট ধরায়। প্রায় ২/৩ দিন যাবৎ সিগারেট খাওয়া হয়নি৷ তাই সিগারেট টানছে। আয়াত রেগে এসে হাত থেকে সিগারেট টা নিয়ে ফেলে দিয়ে আর ভিজা তোয়ালেটা হাত ধরিয়ে বলে
—- এটা আমার রুম কোনো গরু ছাগলের না!!! আর শুনেন এই ছাইপাঁশ খাওয়াটা বন্ধ করুন ,, এট লিস্ট আমার সামনে না। আর রুমের কি অবস্থা করেছেন কালকের জামা কাপড় সোফায় পরে আছে জান সেগুলো গুছান। আয়ান অসহায় ফেস নিয়ে বলে
—- বউগো আমার সোনা বউ লক্ষ্মী বউ,, আমি কি সেগুলো পারি বলো? আয়াত দাঁত চেপে চেপে বলে
—- না পারলে আরেকটা বিয়ে করে নিয়ে আসুন,,, যা বলছি তাড়াতাড়ি করুন,, নয়তো আপনার এই সরংজাম নিয়ে আমার রুম থেকে বের হন। আয়ান বলে
—- একটাই ধনে লঙ্কা,, আরকেটা বিয়ে করলে তো আমি খতম। আল্লাহ এখন বউয়ের জন্য ঘর গুছাতে হবে। এই আয়াত না করলে হয় না? আয়াত একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলে
—- হয় তো ঐ যে দরজা বেরিয়ে জান। আয়ান রেগে তোয়ালেটা শুকাতে দিয়ে নিজের জামা কাপড় ঠিক করতে লাগে। আয়াত তা দেখে বেস মজা পাচ্ছে। আয়াতের নজর যায় গার্ডেনের দিকে। পর পর দুইটা গাড়ি বাসার ভিতরে ডুকছে। একটা থেকে জেনইনাব, ফারিন, ফাহাদ (ফারিনে হাসবেন্ড), আর শাকিল (জেইনাবের).। পরের গাড়িটা থেকে নেমে আসে,, আরিয়ান,আরবি আর আলভিরা। সবাইকে দেখে আয়াত খুশি হয়ে যায়। আয়ান তখন রুম থেকে বলে
—- হয়েগেছে। আয়াত রুমে এসে দেখে সব সুন্দর করে নিজের কাজ করেছে আয়ান। আয়াত বলে
—–এখন নিচে চলুন,, সকালের নাশতা করবেন। আয়ান নিচে গিয়ে দেখে সবাই একসাথে,,,, সেটা অবশ্য কালকেই জানতো সে। সকালের নাশতা সবাই আজ এক সাথে করবে তাই আর আয়ান আয়াতকে ডাকে নেই কেউ। খাওয়া শেষে সবাই একসাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল ,, কিন্তু আয়াত চুপচাপ।।।।। তা দেখে সাদী বলে
—- কি রে আজ এতা চুপচাপ? আয়াত বলে
—- তো কি করব?? জেইনাব বলে
—- তা আয়ান হানিমুনে কোথায় যাবি?? আয়ান বলে
— এক বোতল হানি আর একটা কৃত্রিম মুন কিনে আনব,, হয়ে গেলো হানিমুন। সবাই একসাথে হুহ করে হেসে দেয়। আরবি বলে
—- সুইজারল্যান্ডের যা। আলভিরা বলে
— ইন্ডিয়া গিয়ে তাজমহল দেখে আসো। আয়ান ঠোঁট উল্টে বলে
—- যার হানিমুন তার হুশ নাই আর তোদের চোখে ঘুম নাই। আয়াত বলে
—- তোমরা চুপ করবে!! আর আরয়িনা কোথায়? সাদী বলে
—- গার্ডেনে,,, ফোনে কথা বলছে,, কেন? আয়াত বলে
— নাহ এমনি।
তারপর সবাই ঠিক করলো বিকেলে ঘুরতে যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। একটা গাঢ়ো নীল রঙের শাড়ি পরেছে আয়াত সাথে চুলগুলো খুলা,, সাজ বলতে চোখে কাজল আর তেমন কিছু না। সেই সাজই যে কারো দিল ঘায়েল করতে পারে। সবাই একসাথে ঘুরতে গিয়েছে নদীর পারে। আয়ান আয়াতের হাত ধরে হাটছে আর গল্প করছে সবার সাথে। কিন্তু তখনই আলভিরা কিভাবে যেন পানিতে পরে যায়। আর সেটা দেখে সাথে সাথে পানিতে ঝাপ দেয় সাদী। আলভিরার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে,, আর উপরে চলে আসে। আলভিরা বেশ পানি খেয়ে নিয়েছে,, তাই কুহু কুহু করে কাশতে লাগে । সবাই ব্যাস্ত হয়ে যায় আলভিরাকে নিয়ে। আয়ান জিজ্ঞেস করে
—- তুই পরলি কিভাবে? আলভিরা বলে
—- আমাকে কে যেন ধাক্কা দিয়েছে। আরিয়ান রেগে বলে
—- তোর সবসময় লাফালাফি,, এখন নিজে দোষ করে অন্যের নাম দিচ্ছিস? তোকে কে ধাক্কা দিবে?? আরবি বলে
—- আহহ বদা দে না,, ও ঠিক আছে এটাই অনেক আর সাদী তোকে ধন্যবাদ। এখন বাসায় যাওয়া যাক। দুজনেই কাক ভিজা হয়ে গিয়েছিস। আয়ান বলে
—- তাই ভালো হবে। সবাই বাসায় চলে আসে।
________
অন্ধকার রুমে আর গুন গুন করে গান গাইছে সেই ব্যক্তি।।।
—- Hame tumse peyar kitna yea ham nhi jante.. আমার তোমাকে চাই আয়াত তাইতো তোমাকে আয়ানের থেকে আলাদা করতে হলে যা দরকার সব করব,, সরি মাই সুইটি আলভিরা,,,আই এম রিয়েলি সরি বেইবি,,,,, আমার ইচ্ছে ছিল না তোমাকে পানিতে ফেলার,, কিন্তু আয়ান আর আয়াতকে যে আমার এক সাথে সহ্য হচ্ছিল না ।।।।।।। তারপর সে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।
__________।
সবাই ছাঁদে বসে আড্ডায় মতে উঠেছে। আর আয়াত ফোন নিয়ে ব্যাস্ত,,, আরিয়ান কোলডিংক্স হাতে ছাঁদে আসছে আর আয়ান সাদী বারবিকিউ কাজে বিজি। আয়ান হুট করে এসে আয়াতের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নেয় আর বলে
—- বউ তুমি ফোনে এতো কি কর? সবার সাথে গল্প কর। নয়তো চোখে বড় বড় দুইটা চশমা লাগবে। আয়াত ছু মেরে আয়ানের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে বলে
—- নিজের চরকায় তেল ব্রাশ করুন,, নয়তো সম্পূর্ণ ঢেলে দেন। আর আমার থেকে দূরে থাকুন। আরবি গান ধরে
— তুমি দূরে দূরে থেকো না। আর সবাই হেসে দেয়,, আলভিরা বলে
—- ভাইয়া একটা গান গাউনা ভাবির জন্য!!! আয়াত বলে
—- আমার জন্য আবার গান?? সাদী বলে
—- এখনই গিটার নিয়ে আসছি। আয়াত তাচ্ছিল্যের সুরে বলে
—- কারো জন্য গান গাইতে হলে ফিলিংস এর প্রয়োজন হয়। যেটা ওনার মাঝে নেই। আয়ান শুধু বাকা হাসি দিয়ে বলে
—- ফিলিংস আল্লায় ঢাইলা দিছে এখন জাস্ট তোমাকে দেখামু বউ। আর সাদীও হাজির। আয়ান গিটার হাতে নিয়ে গান গাইতে লাগে
—বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা বোঝেনা,
বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা আমারে,
বোঝেনা বোঝেনা,বোঝেনা আমারে,
জিবন পুরা বদলে গেলো ছিলো যেসব অগোছালো,
শিখছি আমি নতুন করে বউয়ের চাপে ঘর গোছানো,
(আয়ানের সাথে তাল মিলিয়ে শাকিল গায়)
ঝাড়ু দেয়া ভেজা তাওয়াল,, এই অভ্যাস ভাল্লাগেনা,
যে চোখে তার মায়ায় ছিলো আজ আমাকেই ভাল্লাগেনা, ( তার পরের লাইন ফাহাদ হায়)
(আয়ান আয়াতের দিকে তাকিয়ে আবার গান ধরে)
তবে কোথায় হারালো সেই প্রেমঅনুভুতি জোয়ার মায়া তোমার আমার,
অভিমানে ঢাকা পড়ে গেছি লাগে বেশি বেশি যখন কাছে আসি,
( তখন সাদী ও তাল মিলায়)
আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে,
(সব ছেলেরা এক সাথে গাইতে লাগে)বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা বোঝেনারে,বোঝেনা বোঝেনা,বোঝেনা বোঝেনা আমারে,
বোঝেনা বোঝেনা বউ আমার
বোঝেনা বোঝেনারে, (বকিটা নিজ দায়িত্ব শুনে নিয়) আয়াত, জেইনাব, আর ফারিন তো গান শুনে অবাক।। আর বাকি সবাই মজা নিচ্ছে।
চলবে??
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে,, রিচেক করতে পারিনি।