গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- konika Islam sanju
part:06
আয়াত আর আরিয়ান সবাই খেলায় মতে উঠেছে,,আর আয়ান সোফায় বসে বসে,, অফিসের কাজ করছে। আয়াত হঠাৎ করে বলে উঠে
—- আরিয়ান নো চিটিং।। আরিয়ান বলে
—- কোথায় করলাম,,, আয়াত বলে
—- আমি দেখেছি ,, তুমি চিটিং করেছো। আরিয়ান আয়াতকে চোখ মেরে বলে
—- আবার দেখল বইল,,,, আয়াত ঠাস করে আরিয়ানের পিঠে চাপর মেরে বলে
—- হবে ,, ফাইজলামি বাদ দাও । আয়ান এইসব দেখছে,, আর রাগে ফুসছে সে বলে
— এই সবের মানে কি?? এখান থেকে যাও সবাই আমি কাজ করছি। আয়ানের বাবা বলে
— তোমার সমস্যা হলে তুমি রুমে চলে যাও। আয়ান রেগে উঠে রুমে চলে যায়। আয়াত ওরা প্রায় রাত ১২ টা অব্দি খেলে আয়াত ক্লান্ত হয়ে,, যায়। তাই রুমে চলে যায় শুতে। যদিও কালকে ফ্রাইডে। আয়াত রুমে যেতে যাবে ঠিক তখনই কেউ একজন তার হাত ধরে টান দিয়ে তাদের পাশের রুমে নিয়ে আসে। রুমটা আয়াতের চিরচেনা,,,, আয়াত সামনে তাকিয়ে দেখে আয়ান আয়ানকে দেখে কেমন অচেনা অচেনা লাগছে,, আয়াতের,, কেমন চোখ গুলো লাল হয়ে আছে,, চুলগুলো উসক খুসক।৷ আয়াতের দুই বাহু চেপে ধরে বলে
—- কি শুরু করেছিস? আয়াত বলে
— কি করেছি আমি??? আপনাকে কিছু বলেছি??? আয়ান বলে
— জানিস না তুই?? দেখাই তো যাচ্ছে রামনীলা। আয়াত রেগে আয়ানের দুই হাত ঝাড়া দিয়ে বলে
— সমস্যা কি আপনার,, আমাকে নিয়ে আপনার মাথা ব্যাথা কেন এত? কি বুঝাতে চান?? আয়ান বলে
— আমার সমস্যা তুই আরিয়ানের সাথে এমন করিস কেন? এত লেগে থাকিস কেন ওর সাথে?? আয়াত বলে
—- আমার যা ইচ্ছা তাই করব,,, দরকার হলে,, ওর পিঠের সাথে আমার পিঠ এক সাথে করে সুপার গ্লু লাগিয়ে নিব৷ আপনার সমস্যা। আয়ান আয়াতের দুই চুয়াল ধরে বলে
—- তাহলে হাত কেটে নাটক কেন করলি? আয়াত আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে বলে
—- ভুল করেছিলাম একটা,, এমন মানুষের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিত চেয়েছিলাম যার লাইফে আমার থাকা না থাকাতে কিছু যায় আসে না। সব নিজের মন মতো। আর আপনার সাথে যেহেতু আমার ডিভোর্স হয়েই যাবে। তাহলে এত জোর কেন?আর কোন অধিকার খাটাচ্ছেন? আপনিতো আমাকে স্ত্রী হিসেবেই মানেন না।
আয়ান দূরে সরে যেতে লাগপ সত্যি তো কেন এমন করছে আয়ান,,সে জানে না। পাশে থাকা ফুলদানিটা সোজারে মেঝেতে ছুড়ে মারে,, চুল গুলো টেনে ধরে,, আবার আয়াতের কাছে এসে বলে
—তোকে যেন আর আরিয়ানের আশেপাশেও না দেখি। আয়াত নিজেকে ছাড়িয়ে দরজা খুলে যেতে যেতে বলে
— ১০০ বার যাবো,, কি করবেন আপনি? কিছু করার সাধ্য আছে? বলেই আয়াত চলে যায় আর আয়ান বলে
— চেন্ঞ্জ করলি!! আমিও দেখে নিব
_________
আজকে সকাল থেকে ঝুম বৃষ্টি আয়াত মন খারাপ করে বসে আছে ড্রয়িং রুমে,,, দুপুর হয়ে গিয়েছে। আরিয়ান,, আলভিরা আর আরবি এসে বসে পরে আয়াতের অন্য পাশে সাথে। আরিয়ান বলে
—- আয়ু ,,, আম্মুকে বলো খিচুড়ি খাবো সাথে ইলিশ মাছ ভাজা ।।। আয়াত বলে
— মন্দ হয় না,, কিন্তু তুমি আমাকে কেন বলতে বলছ? আরিয়ান একটা বোকা মার্কা হাসি দিয়ে বলে
— আমি বল্লে পিটাবে। কারণ সকাল থেকে আমাকে বোকে চলছে,,, কারণ আমার রুম এলোমেলো হয়ে আছে । আরবি বলে
—- তোর রুম দেখলে মনে হয় কোনো গরু-ছাগল বাস করে। আলভি হাসি দিয়ে বলে
—- ঠিক বলছ,,,, এটাতো গরু -ছাগলই। তখনই আয়ান এসে বসে পরে আয়াতের পাশে। তা দেখে আয়াত সরে গিয়ে একটা সিঙ্গেল সোফায় বসে পরে। আরিয়ান বলে
— ভাইয়া,,, আয়ান এক ভ্রু উচু করে বলে
—কি?? আরিয়ান ফিক করে হেসে দিয়ে বলে
—- তুমি টিশার্ট উল্টো পরেছে,, আয়াতও খেয়াল করে হেসে দেয়। আয়ান ধমক দিয়ে বলে
— চুপ এইটাই ইস্টাইল,,, আলভিরা বলে
—- হ্যা নতুন ইস্টাইল,, আবার হাসির রুল পরে যায়। কিন্তু আয়াত বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে আছে,,, আহাম্মক নাকি!? এভাবে কেউ আসে,, যা খুশি করুক আমার কি?? শয়তানের হাড্ডি,,,, তখনই আরিয়ানের মা এসে বলে
—- আরিয়ান তোকে না রুম পরিষ্কার করতে বলেছি? আরিয়ান বলে
—- আম্মু,, আমি এইসব পারি বল? আরিয়ানের মা বলে
—- তুই পারিসনা তো একটা বিয়ে করে নিয়ে আয় না!! তারপর তোর সব কাজ করে দিবে,, আমি আর পারছি না,, বাপু।৷ এই আলভি (আলভিরা)তুই এখানে কি করিস যা গিয়ে আরিয়ানের রুমটা গুছিয়ে দিয়ে আয়৷ আলভিরা বলে
—- আমার ঠ্যাকা পারছে?? তোমার ছেলে পারে না নাকি? তখনই আয়াত বলে
—- বড় মা আমার না খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে,, একটু করে দিবা?? আরিয়ানের মা বলে
— আগে বলবিতো,,,এখনই যাচ্ছি। বলে চলে যায়,, আরিয়ান বলে
—- ধন্যবাদ আয়ু,,, তোমার জন্য বেঁচে গেলাম। আয়াত বলে
— এত কথা বাদ দিয়ে যাও রুম পরিষ্কার করে আসো। আরিয়ান বাচ্চাদের মতো ফেস করে বলে
— যেতেই হবে,, আলভিরা বলে
— না ঘুমিয়ে থাকো। আরিয়ান বলে
—- আমাকে যদি কেউ হেল্প করত!! আয়াত কিছু বলতে যাবে তখনই আয়ান বলে
— তুই যা আমি একটা সার্ভেন্টকে বলে দিচ্ছি। আরিয়ান চলে যেতেই আয়াত রান্না ঘরে যায়। আয়ানও পিছু পিছু রান্না ঘরে যায়। আলভিরা বলে
— আপু দেখ,, আয়ান ভাইয়া কেমন জেলাস ফিল করছে আরিয়ান ভাইয়ার থেকে,, আর কেমন কয়দিন ধরে আয়াত আপুর পিছনে পিছনে ঘুরঘুর করে। আরবি বলে
—- তাইতো দেখছি আল্লাহ হয়তো রহমত করেছে। আলভিরা হেসে দেয়। রান্না ঘরে গিয়ে দেখে আয়ানের মা আর চাচাি রান্না করছে,, আর সার্ভেন্ট রা সব এগিয়ে পিছিয়ে দিচ্ছে। আয়াতকে দেখে আয়ানের মা বলে
—- কিরে তুই এখানে,,, তোর কিছু লাগবে? আয়াত বলে
—- বসে থাকতে থাকতে অনেক ক্লান্ত আমি তাই খেতে এসেছি। আয়ানের মা মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—- তাই,, তা কি খাবি শুনি? আয়াত বলে
—- আইসক্রিম,,, তখনই আয়ান এসে সোজা ফ্রিজ থেকে আইসক্রিমের বক্সটা নিয়ে চলে যায়। আয়াত বলে
— এটা কি হলো?? আয়ানের চাচি বলে
—- তাইতো,,৷ ছোট এটা কি হলো? আয়াত বলে
— ফুপি তোমার ছেলেকে ভালো হয়ে যেতে বলো। ভালো হইতে টাকা পয়সা লাগে না। আর লাগলে আমাকে বইল ২০ টাকা দিয়ে দিব। তাও জানি ভালো হয়ে যায়। কুদ্দুস আলী একটা। এই বলে কিচেন থেকে বেরিয়ে আসে আয়াত। আয়ানের মা আর চাচি আয়াতের কথায় হেসে দেয়।
আয়াত দেখে আয়ান,, আরবি আর আলভিরা একসাথে আইসক্রিম খাচ্ছে আর,,, মুভি দেখছে,,, আয়াত গিয়ে বসে পরে আলভিরার পাশে। আলভিরা বলে
— আপু আইসক্রিম খাও!! আয়াত বলে
—- নারে আলু (আলভিরা) জানো এই আইসক্রিম খাওয়া ভালো না,,, আমি খাবো না। আয়ান আইসক্রিম খেতে খেতে বলে
—- বিড়াল বলছে সে নাকি মাছ খায় না। আয়াত বলে
— আরবি আপু তোমার ভাইয়ের মুখ বন্ধ করতে বলো,, আমার পিছনে এতো লাগতে আসে কেন? আয়ান আইসক্রিম টা রেখে দাড়িয়ে বলে
—- ১০০ বার লাগবো ১০০০ বার লাগবো। দরকার হলে সুপার গ্লু দিয়ে লাগবো। তোর কি হ্যা৷ আয়াত সোফায় থেকে কুশনটা ছুড়ে মরে বলে
—- আপনার এই সোজা নাকটা আমি থেতলে দিব। শুধু কথায় কথায় নাক গলাতে আসে। আয়ান বলে
—- আমি কারো কথায় নাক গুলাই না।তোর মতো।
অন্য দিকে আরবি আর আলভিরা মুভি ওফ করে ওদের ঝগড়া দেখছে আর আইসক্রিম খাচ্ছে। মানে ফ্রিতে এন্টারটেনমেন্ট ,,,, আরবি বলে
—- ঝগড়ায় দম নাই তোর আয়াত,,, আরেকটু দম বারা। আয়াত বলে
—- ওকে আপু,, ঐ আপনি কি বললেন নাক গলান না,, আপনি তো হাত পা সব গলান তাই আর নাকটা দেখা যায় না,, এত বড় বড় দুইটা পা,, আবার আসছে নাক গলাতে। আয়ান বলে
— কেনরে হিংসা হয়? পনে চার ফিটের একটা বাচ্চা ডোরেমন,,,, আলভিরা বলে
—- ভুল বলছো ভাইয়া পিকাচু,, আজকে হলুদ পরছে আর রাগতো সেই কারেন্টে ঝটকা খাওয়ার মতো। আয়াত বলে
—- তোমার ভাই কি আয়রন ,,,,,, বিশুদ্ধ পানিকেও বিষাক্ত করে তুলবে নিজের বিষ দিয়ে এমন একটা ফাজিল নাগ।।। আয়ান বলে
—- আমি নাগ হলে তুই জেহরেলী নাগীন৷ আরবি বলে
— ওয়াও,,,এবার জমছে। তখনই রান্না ঘর থেকে আসে আয়ানের মা আর চাচি।।। বলে
— কি হয়েছে? আয়াত বলে
—- এই সব দোষ আয়রনের। আয়ান বলে
— সব দোষ এই ডোরেমন এর। আয়ানের মা বলে
— দুইটা যদি আরেকবার এমন বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করছিস তো খবর আছে, আর আরবি তুই বসে বসে ওদের ঝগড়া দেখছিস। আরবি বলে
—– তো ফ্রিতে এন্টারটেইনমেন্ট কে মিস করবে,,, মাঝখানে তোমারা ভিলনে হয়ে এসে সব শেষ করে দিলে। আয়ানের চাচি বলে
—- অনেক হয়েছে এখন জানি কোন আওয়াজ না পাই বলে চলে যায় । আয়াত বলে
— I will see you…আয়ান বলে
—- তুই নির্লজ্জ,, বখাটে মেয়ে,, আমার মতো সুন্দর মাসুম ছেলেকে একা পেয়ে টিজ করছিস। আয়াত যেতে যেতে বলে
—- যেই না চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা,,, আপনাকে মাসুম বললে,, মাসুম শব্দটাকে অপমান করা হবে।। ওকে বায়,,
আয়ান মনে মনে খুশি হোক না ঝগড়া কিন্তু আজ অনেক দিন পর আয়াত তার সাথে একটু কথা তো বলেছে।
চলবে