তার শহরের প্রেম পর্ব-০৫

0
1795

গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍

লেখিকাঃ- konika Islam sanju

part:05

সবাই একসাথে বসে নাশতা করছে,,, শুধু আয়ান নেই। একটু পরই ফরমাল লুকে নিচে নেমে আসছে। অসম্ভব রকম হেন্ডসাম লাগছে আয়ানকে। কিন্তু আয়াতের কাছে অসহ্য লাগছে। আয়ান দেখে আয়াত আর আরিয়ান কিছু নিয়ে ফিসফিস করে কথা বলছে। আরিয়ান বলে

— জানো আজ ভাইয়া অফিসে জয়েন করবে। আয়াত বলে

—- তাতে আমার খাতা ছিড়া গেলো,,, আরিয়ান আয়াতের কথা শুনে ফিক করে হেসে দেয়। আয়ানের বাবা বলে

—- কি এমন কথা হচ্ছে তোমাদের আমিও শুনি। আলভিরা বলে

—- সে সব পরে হবে,, আগে ভাইয়া এটা বলো তোমার কেমন লাগছে অফিস জয়েন করছ? আয়ান বলে

—- ভালো,, দোয়া করিস,, তারপর একে একে সবার থেকে দোয়া নেয়। আলভিরা বলে

— আয়াত আপ্পি কে বললে না? আয়াত আপেলের পিস খেতে খেতে বলে

—- আমার দোয়া তার লাগবে না,, তোমরা সবাই দিয়েছ তাতেই তার যথেষ্ট,, আর যদি এতেও না হয় তাহলে অনলাইন থেকে লোক ওর্ডার করে দোয়া করে যেতে বল। এটা বলেই আয়াত খাবারের টেবিল ছেড়ে উঠে যায়। আর আয়ান তো রাগে ফুসছে। আয়ানের চাচি বলে

—- মেয়েটা না খেয়েই চলে গেলো। আয়ান বলে

—- ও না খেয়ে চলেগেলো সেটা দেখছ বড় মা,,, আমাকে যে এত গুলো কথা শুনালো?? আয়ানের মা মুচকি হাসি দিয়ে বলে

— তাতে তোর কি?? আর কিছু দিন পরেতো আলাদা হয়ে যাবি!! আরবি বলে

—- আয়াত ভুল কি বলেছে?? অফিসটা বাবার নিজের আর এখানে তার কোনো ইন্টারভিউ নিবেনা যে ভয় হবে,, চাকরি হবে কি হবে না,,,,, অন্য কোম্পানি হলে কথা ছিল। আয়ান খাবার ছেড়ে উঠে যেতে চাইলে আয়ানের বাবা বলে

—- চুপচাপ খাবার শেষ কর,,,.। আয়ানের চাচা বলে

—- অফিসে গিয়ে এমন এটিটিউড নিয়ে কাজ করলে হবে না,, আয়ান৷ ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। আয়ান শুধু বলে

—- হুমমমম।

_____________

নতুন কলেজ পাশেই আরিয়ানদের ভার্সিটি,,,, আর একটু দূরেই একটা মেলার আয়োজন করা হয়েছে,, আরিয়ান বলে

—- আলভিরা আর আয়ু,, শুনো ছুটির পর তোমরা চাইলে মেলায় ঘুরতে যাবো, আর ক্লাসটা মন দিয়ে কর,,, যাই। বলেই চলে যায়,, আয়াতের বেশ লাগছে কলেজটা আশেপাশে সবাই অনেক মিশুক।৷ ক্লাস শেষ করে মাঠে এসে দাড়িয়ে আছে আলভিরা আর আয়াত কারণ আরিয়ান এখনো আসেনি। তখনই একটা ছেলে এসে আয়াতকে বলে

—- হেই মিস,,, নাম কি? আয়াত বলে

—- আয়াত,,,, আলভিরা বলে

—- আপনার কি দরকার?? ছেলেটা বলে

—,, কারণ আছে,,সেকেন্ড ইয়ার মানে সিনয়র,, আচ্ছা আয়াত তোমার নাম্বার টা দিবে?? আয়াত বলে

—- দিনদুপুরে নেশা করেছেন? চেনা নাই জানা নাই!! ছেলেটা বলে

— হ্যা তোমার নেশা। প্রথম দেখায় দিল ঘায়েল,, । আয়াত বাঁকা হাসি দিয়ে বলে

—- I am not cigarette that you,, you will smoke and throw way,, I am drug baby,, that will you’ll beg for,,,, এখন সামনে থেকে দূরহ নয়তো জুতা পেটা করব। ছেলেটা বলে

— কুল কুল,, আয়াত নিজের জুতা হাতে নিয়ে বলে

— তোর কুলের মায়রে বাপ। আর ছেলেটা দৌড়ে পালায়। তখনই আসে আরিয়ান,,, ছেলেটাকে যেতে দেখে বলে

—- কি হয়েছে? সব ঠিক আছে?? আলভিরা বলে

—- আরে আপুকে প্রপোজ করতে আসছিল আপু ধুয়ে দিয়েছে৷। আরিয়ান বলে

— বাহ-বাহ,,,, বেশ ভালো। আয়াত বলে

— মেলায় যাবো না?? আরিয়ান বলে

— হুমম যাবো তো,, আয়ান ভাইয়া কল দিয়েছিল সেও আসছে। ড্রাইভার চাচ্চু গাড়ি নিয়ে গিয়েছে। আয়াত বলে

— তাহলে চল বাসায় চলে যাই। তখনই আয়ান আসে আর বলে

—- চলচল,,, তারপর এক রকম না চাওয়া সত্ত্বেও আয়াত যায়। চারদিকে হইচই,,, ইশশশ কি বিচ্ছিরি ব্যাপার,, আয়াত বার বার পিছনে পরে যাচ্ছে। তা দেখে আরিয়ান আয়াতের হাত ধরে নেয়। সেটা আয়ানের চোখের আড়াল হয়নি। একটু আগাতেই,,, আলভিরা বলে

—- ভাইয়া ফুচকা খাবো। আয়ান বলে

— এগুলো খাওয়া ভালো না।।। আয়াত বলে

— আরিয়ান আমি ফুচকা খাবো। আরিয়ান বলে

— আমিও খাবো,, চল। আয়ান বলে

— এইসব খেলে পেট খারাপ হবে। আয়াত একটু খুচা মেরে আয়ানকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,

— সবার পেটে সব সয় না,, আরিয়ান আমারটায় ঝাল মেডিয়াম। আয়ান বলে

— আমিও খাবো। আরিয়ান মুচকি হাসি দেয় আর বলে

— মামা,,চার পেলেট ফুচকা দুইটায় ঝাল কম। আর দুইটায় মিডিয়াম। এত ভির হঠাৎ করে কারো সাথে ধাক্কা লাগে আরিয়ানের ফুচকার পেলেট টা পরে যায়। তা দেখে আলভিরা বলে

— আরেক পেলেট দিতে বলি?? তখনই আয়াত ইচ্ছে করে আয়ানকে দেখিয়ে দেখিয়ে আরিয়ানের দিকে ফুচকা ধরে,, আরিয়ানও কিছু সময় ভেবে সেটা খেয়ে নেয়। আয়ান রেগে গিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে

—- অনেক হয়েছে,, বাসায় চল। আয়াত বলে

—- আরিয়ান কারো সমস্যা হলে তাকে চলে যেতে বলো।। আমিতো ঘুরব,,, চুড়ি কিনব,, কুলফি খাব। নাগরদোলায় দোলব। চল। আয়ান তো রাগে ফুসছে এবার আরিয়ান হাত ধরার আগেই আয়ান আয়াতের হাত ধরে ফেলে। সেটা দেখে আয়াত অবাক হয়। কিন্তু একটু পরই আয়ানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে পাশের চুড়ির দোকানে চলে যায় । দেখে অনেক সুন্দর সুন্দর রেশমি চুড়ি,, আয়াতের চোখ আটকে যায় দুই মোঠ চুড়িতে,, লাল আর নীল। আলভিরাও দুই মোঠ চুড়ি কিনে আরবি আর তার জন্য । আরিয়ান বলে

— আয়াত,,, লাল আর নীল চুড়ি গুলো তুমি নাও তোমার হাতে বেশ মানাবে।। আয়াত বলে

— আমিও তাই ভাবছি। আয়ান বলে

—, আলভিরা তুই ,, পাশে থেকে কালো চুড়িটাও নিয়ে নে। আয়াত ভাবে

—- এই খাচ্চরটা আবার চুড়ি দিয়ে কি করবে যা খুশি করুক আমার কি। তারপর অনেক ঘুরে। কুলফি খেতে খেতে আর গল্প করতে করতে মেলেয়া থেকে বের হচ্ছে আয়াতরা। একটু আগাতেই আরিয়ান বলে

—- ভাইয়া তোমরা এখানে দাড়াও,, আমার একটা ফ্রেন্ড আমাকে ডাকছে,, আসছি। আয়াত তো নিজের মতো দাড়ি আছে। আয়ান দেখে আয়াতের ঠোঁটের পাশে কুলফি লেগে আছে। তা দেখে কি মনে করে,, সে আয়াতের সামনে দাড়িয়ে নিজের বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে কুলফিটা পরিষ্কার করে দেয়। আলভিরা তো অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর আয়াত তো অবাক। আয়াতের মনে পরে যায়। তাদের ফার্স্ট নাইটের কথা,, কেমন অদ্ভুত। সে আয়ানের থেকে দূরে সরে যায়। আরিয়ান আসতেই সবাই বাসায় ফিরে যায়। আয়াত ভিষণ ক্লান্ত তাই ফ্রেশ হয়ে সোজা নিচে চলে যায়। তারপর সবাই ঠিক করে ক্রাম খেলবে। আয়াত, আরিয়ান, আলভিরা আর আয়ানের বাবা। তারপরে আরবি,, আরিয়ানের বাবা,,আর যে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড হবে সে। আয়াত গুটি আনতে রুমে চলে আসে,, রুম থেকে বের হতেই

কারো সাথে ধাক্কা লাগে আর হাতের গুটি গুলো পরে যায়,,,, আয়াত তাকিয়ে দেখে আয়ান,, সম্পূর্ণ সাদা পরে আছে। পেন্ট গেন্ঞ্জি,, তা দেখে আয়াত বলে

— সাদা মূলা। আর গুটি গুলো তুলে নিয়ে যায়। আয়াত যেতেই আয়ান বলে

— কি বললে!! সাদা মূলা,,, আর হাসিতে ফেটে পরে। আয়ান একটা জিনিস খুব লক্ষ করছে সেটা হলো।। কিছু দিন যাবৎ সে আয়াতের উপর একটু দূর্বল হয়ে পরেছে,, কিন্তু পরে ভাবে,, হয়তো তারই ভুল। আর চলে যায়

চলবে!!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে