#তান্ডবে_ছাড়খার
#পর্ব_১৪
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
আফিয়া বেগমের মুখে বন্যার বিমর্ষ অতীতের কথা শুনে তাহসান হতভম্ব হয়ে মায়ের মুখের পানে তাকিয়ে থাকে।শান্ত অথচ গম্ভীর স্বর করে বললো,
“তাই নাকি?”
ছেলের কথার ধরন না বুঝে আফিয়া বুঝলেন উনার ছেলে বুঝি এসব জানেই না।তাই সে আয়োজন করে বললেন,
“সে কি!তুই জানিস না?”
তাহসান কিছু না বলে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে আফিয়া বেগম বলেন,
“কি অবস্থা হয়েছিলো মেয়েটার আল্লাহ।তুই আর ওর সাথে মিশিস না তো।লোকে ভালো বলবে না।”
তাহসান তার মায়ের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে তারপর শান্ত গলায় বললো,
“বন্যা ধর্ষিতা বলেই কি ওর সাথে চলতে মানা?”
আফিয়া বেগম বললো,
“লোকে খারাপ বলবে।”
“লোকের বলা না বলায় কি আসে যায়?বন্যা কি আর ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন অপবাদ মাথায় নিয়েছিলো নাকি?”
ছেলের কথায় আফিয়া বেগম সন্তুষ্ট হলেন না।রাগী গলায় বললো,
“এতো তর্ক কেনো?বলেছি কথা বলবিনা তাই হবে।”
তাহসান মাথা নেড়ে বললো,
“একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের সমন্ধে এসব বলতে খারাপ লাগছেনা?”
আফিয়া বেগমের গলা উঁচু হয়ে যায়।
“বেশী কথা বলছিস।”
তখনই মোবারক সাহেব রুম থেকে বেরিয়ে আসে।এতোক্ষন মা ছেলের কথাগুলো রুম থেকে শুনলেও কথার ধারা পরিবর্তন হচ্ছে শুনে বেরিয়ে আসে।উনাকে দেখে দুজনেই থেমে যায়।তাহসান চুপচাপ রুমে চলে যায় আর আফিয়া বেগম তার যাওয়ার পানে রাগী চোখে তাকিয়ে থাকে।মোবারক সাহেব স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
“ছেলে মেয়েদের এতোটাও শাসন করা উচিত না যতোটা শাসন করলে তারা বিগড়ে যায়।”
স্বামীর কথা আফিয়া বেগমের পছন্দ হয় না।
“তুমি যা বুঝো না তা নিয়ে কথা বলোনা।ছেলেমেয়ের দিকে কতোটা খেয়াল রাখো তুমি?ওদের চাল-চলন দেখেই আমি সব বুঝি।”
“ছেলে বড়ো হয়েছে সেটাও তো বুঝতে হবে।”
“সেটা বুঝেই তো ছেলেকে বুঝাতে চাচ্ছিলাম।”
মোবারক সাহেব হাসেন।সোফায় বসতে বসতে বললেন,
“এমন কর্কশ ভাষায় কারো নামে দুর্নাম করলে কি বুঝানো যাবে?বুঝাতে হবে ঠান্ডা মাথায়;শান্ত স্বরে।”
আফিয়া বেগম উতলা হয়ে উঠে।উনি বন্যার পাশে নিজের ছেলেকে কল্পনাও করতে পারছেন না।এমন গুন্ডা টাইপ মেয়ে তো তার একমাত্র ছেলের বউ হবার কোনো যোগ্যতাই রাখে না।
“এতো বুঝলে তুমি বুঝাচ্ছো না কেনো?”
“বুঝানোর সময় আসেনি তাই।”
“কবে আসবে?যখন মাছ বঁড়শিতে আটকে যাবে তখন?”
মোবারক সাহেব ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
“দেখা যাক।আমার ছেলের উপর আস্তা আছে।”
আফিয়া রান্নাঘরের দিকে যেতে যেতে বললো,
“এতো ছেলের প্রশংসা করোনা এই ছেলেই তোমার মুখ পুড়াবে।”
সাপ্তাহ খানেক আফিয়া বেগম আর সন্দেহের কিছু দেখলেন না।কিন্তু এভাবে হাত ঘুটিয়ে বসে থাকলে চলবে কেনো? বন্যা সুই হয়ে ঢুকে কুড়াল হয়ে বেড়োতে কতোক্ষন?তাই আগে ভাগেই পদক্ষেপ নেয়া ভালো।কোনো বাবা মা’ই চাইবেনা বন্যার মতো মেয়ে ছেলের বউ হিসেবে আসুক।সকালে বন্যা ভার্সিটিতে চলে যাওয়ার পরে আফিয়া বেগম বন্যাদের ফ্লাটে যায়।রেনু বেগম উনাকে দেখে খুব খুশী হয়।চুলায় চায়ের পানি বসিয়ে দুজনে গল্পে মেতে উঠে।আজকে আফিয়া বেগমই কথা বেশী বলছেন একফাঁকে সেই কথাটা উঠালেন যেটার জন্য মূলত আজকে এখানে আসা।
“তা ভাবী আপনারা কি চোখে দেখেন না কিছু?”
রেনু বেগম উনার কথা শুনে অবাক হয়।
“কি দেখবো ভাবী?”
আফিয়া বেগম কায়দা করে বললো,
“আশেপাশে সমাজের অবস্থা দেখেন না।আজকাল মেয়েদের নিয়ে যা ভ,য়,রাস্তাঘাটে চলা ফেরাও মুশকিল কখন কোন কুকুর আক্রমণ করে ফেলে।আপনাদের বন্যা তো একবার বিপদের সম্মুখীন হয়ে ফিরে আসলো এখন বড়ো হয়েছে আবার কোনো দূর্ঘটনা ঘটার আগে বিয়ে দিয়ে ফেলেন।আমার মেয়েকে আমি ইন্টার পাশ করিয়েই বিয়ে দিয়ে দেবো,আমি ভাই কোনো রিস্ক নিতে রাজী না।”
মেয়ের অতীতটা সুখকর না এটা রেনু বেগম নিজেও অবগত।আশেপাশের মানুষের সব কথায় বন্যার অতীত নিয়ে সুক্ষ্ম খোচাটা টের পায়।আফিয়া বেগমের কথা শুনে ভ্রু খানিক কুঁচকে গেলেও বিরক্তিটা প্রকাশ করলো না।তিনি হাসিমুখেই জবাব দিলেন,
“মেয়েতো এখন বিয়ে করবেনা। ”
আফিয়া বেগম বেশ অবাক হয়ে বললো,
“কেনো?”
“আমার মেয়ে পড়তে চায়,ওর জার্নালিস্ট হওয়ার ইচ্ছা।”
আফিয়া বেগম বললেন,
“পড়ার অজুহাত দিচ্ছে ভালো কথা কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেনো পড়ার নাম করে বে-পথে চলে না যায়।”
“হ্যাঁ তা তো রাখছিই।”
“আপনার জন্য আমার খুব মায়া হয়,ওর বিয়ে দিতে পারলে বোধহয় আপনার চিন্তা কিছুটা কমতো।”
রেনু বেগম চুপ করে থেকে কথাটা ভাবলেন।উনি যেটা বলেছে সেটা একদম ফেলে দেয়ার মতো না।আসলেই বন্যার একটা ব্যবস্থা করতে পারলে উনার চিন্তা কিছুটা কমতো।উনাকে কিছু ভাবতে দেখে আফিয়া বেগম বললো,
“আমার কাছে একটা পাত্রের সন্ধান আছে।আমার চেনাজানা আপনি চাইলে যোগাযোগ করতে পারি।”
“তাই নাকি?তা ছেলে কি করে?”
“ব্যাংকে চাকরি করে।ভালো ছেলে।আপনি চাইলে আলাপ দেবো।”
রেনু খানিকটা ইতস্তত করে বললো,
“বন্যাকে আর বন্যার বাবাকে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা।”
আফিয়া বেগম আশ্বাস দিয়ে বললো,
“আরে দেখলেই কি আর বিয়ে হয়ে যায়?দেখতে সমস্যা নেই তো”
“তা না কিন্তু..”
আফিয়া বললো,
“এতো ভাববেন না তো,আপনি বললে আলাপ দেই।আজকাল যোগ্যমতো পাত্র-পাত্রী যোগানো বড়ো কঠিন কাজ।আমার ছেলেকেই দেখুন ভাবছিলাম বিয়ে করিয়ে দেবো কিন্তু মনমতো হচ্ছে না।এখন কি যুগ আসলো মেয়েরা তো চালাকই মেয়েদের বাবামা তো আরো কয়েক ডিগ্রি চালাক এরা ফন্দি করে বাড়িওয়ালা ছেলে হাত করতে চায়।আমার তাহসান কে নিয়ে তো রাজ্যের চিন্তায় আছি কোন সময় কোন বাজে,নষ্ট মেয়ের হাতে পড়ে।”
আফিয়া বেগমের এমন উদ্ভট কথায় রেনু বেগম থমথম খেয়ে যায়।তাহসানের সাথে ইদানীং বন্যাকে দেখা যাচ্ছে যা উনার চক্ষুগোচর হয়নি।আফিয়া বেগমও নিশ্চয়ই দেখেছে তাইতো এমন কথা বলছে।উনি কি বলবে ভেবে পায় না কিছু না বললেও ব্যাপারটা খারাপ দেখায়।তাই আলতো হেসে বললো,
“আপনার ছেলে তো ভালোই এসবে নিশ্চয়ই জড়াবে না।”
“তা কি করে বলি,আশেপাশের মেয়েরা কি আর ভালো থাকতে দেবে।আমার আলাভোলা ছেলে মেয়েদের হাতের নাড়া ই তো বুঝবেনা।”
রেনু বেগম অনিচ্ছা সত্বেও মাথা নেড়ে বললো,
“হ্যাঁ তা ঠিক।”
রেনু বেগমের এমন ভাবলেশহীন ভাবে কথা বলায় আফিয়া বেগম আর কথা বলার উৎসাহ পেলেন না। আর কথা না বললেই বা কি?আসল কথা আকারে ইঙ্গিতে বলে দিয়েছেন।উনি উঠে দাঁড়ায়।
“আচ্ছা ভাবী আসি।”
রেনু বেগম মাথা নাড়তেই উনি চলে গেলেন।বন্যার মা ওখানেই ঠায় বসে থাকলো।উনি ভাবলেন বন্যাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবে কি না।
সন্ধ্যায় যখন বন্যা তার পড়া নিয়ে ব্যস্ত তখন তাহসান ফোন দেয়।
“কি করছো ম্যাডাম?”
বন্যা কাধ দিয়ে মোবাইল কানের সাথে চেপে ধরে বললো,
“পড়ছি।আপনি?”
“আমিও।”
বন্যা কপট রাগ দেখিয়ে বললো,
“পড়ার সময় ফোন দিয়েছেন কেনো?”
“একটা কথা জানার ছিলো।”
“কি?”
“শাড়ি পড়তে পারো?”
বন্যা মাথা নেড়ে বললো,
“না।”
তাহসান কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো,
“আচ্ছা সমস্যা নেই।ইউটিউব এর যুগে এসব না পারা মূহুর্তেই পারা হয়ে যাবে।আমি শাড়ি আনতে যাচ্ছি তুমি ইউটিউব দেখে শিখো।”
বন্যা দ্বিমত করে বললো,
“কিন্তু আমি…”
তাহসান মিহি গলায় আবদার করে বললো,
“তোমাযে শাড়ি পরা দেখতে ইচ্ছে করছে।”
বন্যা হেসে বললো,
“বিয়ের সময় দেখা যাবে,এতো আগেভাগে দেখা ভালো না।”
তাহসান আফসোসের গলায় বললো,
“তার আগেই যদি আমি মা,রা যাই?তুমি আমার ইচ্ছা পূরণ করবেনা বলো?”
বন্যার বুকটা কেমন ধক করে উঠে।মাথা নেড়ে বললো,
“আচ্ছা।”
তাহসান মুচকি হাসে।শক্ত খোলসের আবরণে বন্দী বন্যার যে কোমল একটা মন আছে যেই মন কিনা আজকাল তাহসানকে হারাতে ভ,য় পায়।তার ইমোশনাল কথায় বন্যা পটে যায়।তাহসান শাড়ি কিনে বন্যার বারান্দা দিয়ে শপিং ব্যাগ দিয়ে,কৃত্বিতের গলায় বললো,
“ছাদে,অকে?”
বন্যা আঁতকে উঠল।
“বাসার সবাই এখনো জেগে আছে। আমি কখনো উনাদের সামনে শাড়ি পড়ে যেতে পারবো না।”
তাহসান কিছুক্ষণ ভেবে বললো,
“সবাই ঘুমুলে এসো।”
বন্যা নিচু গলায় ফিসফিস করে বললো,
“তাহলে রাত বারোটার পরে।”
“সমস্যা নেই।”
রাত একটা।নিঝুম রাত।বন্যা অগোছালো শাড়ি হাতে দাঁড়িয়ে আছে।কোনো ভাবেই এই শাড়ি গায়ে পড়তে পারছেনা।বিরক্তিতে মুখ অন্ধকার হয়ে আছে।হাতের শাড়ি বিছানায় ছুড়ে মেরে বললো,
“ধুর বা*।আমারে দিয়া এইসব হইবো না।”
তখন তাহসান ফোন দেয়।বন্যা কানে ধরতেই তাহসান কৌতুক করে বললো,
“আপু আজকে আপনার বিয়ে না তাই কম সাজলেও হবে।”
বন্যা মাথা নাড়িয়ে বললো,
“আরে সাজবো কি আমি তো শাড়িই পরতে পারছিনা।না পরি?”
তাহসান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
“একটু পেচিয়ে টেচিয়ে চলে আসো না।আমিই তো।”
অগ্যতা বন্যা আবারো শাড়ি হাতে নিয়ে পেচায়।এক হাতে কুচির জায়গা শক্ত করে ধরে আরেক হাতে দরজা বন্ধ করে ছাদে চলে যায়।
তাহসান ছাদে বসে ছিলো বন্যাকে দেখে কিছুক্ষণ থম মেরে তাকিয়ে থাকে।লাল পেরে সাদা শাড়ি পরা অবস্থায় কি মিষ্টি লাগছে।বন্যা গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে আসে।হাত দিয়ে শক্ত করে কুচি ধরে রেখেছে।তাহসান মুচকি হাসে।তার হাসি দেখে বন্যা রেগে যায়।
“হাসছেন কেনো?”
তাহসান হেসে বললো,
“সুন্দর লাগছে তো।”
“ঠিক ঠাক পড়তেই পারলাম না আর সুন্দর!”
আসলেই সুন্দর লাগছে,একদম বউ বউ।”
তাহসানের কথায় বন্যা খানিক লজ্জা পায়। মাথা ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকায়।তাহসান বললো,
“হাত দাও তো।”
“কেনো?”
তাহসান নিজেই বন্যার হাত টেনে নিয়ের হাতে নিয়ে বললো,
“বেশী কথা বলে।”
তার হাতে দুইটা রজনীগন্ধার মালা।খুব যত্নের সাথে বন্যার হাতে পরিয়ে দেয় তারপর বন্যার হাতদুটো নিজের গালে ঘষে নেয়।বন্যা চোখ বন্ধ করে হাতে ছোট দাড়ির সুক্ষ্ম খোঁচা টের পাচ্ছে কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে একটু ব্যাথা অনুভব না হয়ে ভালোলাগায় সারা মন দেহ পুলকিত হয়ে যায়।অনুভূতির ফোয়ারা ঝলকে উঠে,অদ্ভুত কাঁপন টের পায়।তাহসান বন্যার হাতের উল্টো পিঠে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে বললো,
“তুমি খুবই মায়াবতী।”
বন্যা কিছু না বলে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে।তাহসান বন্যার এলোমেলো চোখের দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বললো,
“এভাবে তাকিও না মায়াবতী।”
বন্যা হেসে ফেলে।শক্ত করে তাহসানের হাত আঁকড়ে ধরে বললো,
“আপনি যে এতো রোমান্টিক এটা কখনোই বুঝা যায়নি।”
তাহসান বন্যাকে কাছে টানে হাতের মুঠোয় হাত নিয়ে বললো,
“প্রত্যেক পুরুষ রোমান্টিক কেউ প্রকাশ করে কেউ করেনা।আমার মনে হয় ব্যক্তিগত নারী ছাড়া অন্যকাউকে রোমান্টিকের পরিমাণ দেখানো উচিত না।”
তখনি আচমকা তাহসানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বন্যার শাড়ি খুলে ছাদের ফ্লোরে পড়ে যায়।হতভম্ব চোখে বন্যা শাড়ির দিকে তাকিয়ে তাহসানের দিকে তাকায়।তাহসান লুটানো শাড়ির দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।বন্যা ঝটপট নিচু হয়ে শাড়ি হাতে তুলে নেয়।
“বলেছিলাম পারি না।এখন কি হবে?”
তাহসান ভেবে বললো,
“আচ্ছা আমি পড়িয়ে দেই।”
অগ্যতা বন্যা না চাইতেও রাজী হতে হয়।তাহসান কোনোরকমে শাড়িটা গায়ে জড়াচ্ছে।সে না চাইতেও বন্যার নমনীয় নারী দেহের দিকে তাকিয়ে ফেলছে।স্নিগ্ধ দেহটা তাকে যেনো টানছে।তাহসান চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলায়,এখন যদি যে একটু ভুল করে উলটাপালটা কাজ করে ফেলে তো বন্যার কাছে ধর্ষক আর তার মাঝে কোনো পার্থক্য থাকবেনা।সে চোখ বন্ধ করে বন্যার হাতে কুচি দিয়ে বললো,
“দাও।”
বন্যা কুচি দেয়ার পর মনে হলো শাড়ি পরানোর মতো কিছুটা হলেও হয়েছে।বন্যা তাহসানের প্রশংসা করে বললো,
“বাহ!আপনি তো আমার থেকেও ভালো পারেন।”
তাহসান বন্যার দিকে তাকিয়ে থাকে।তার দেহমন উদ্যাম হয়ে আছে,শরীরে অনুভূতির সুক্ষ্ম আলোড়ন খুব টের পাচ্ছে।সে বন্যাকে বললো,
“বিয়ের পরে তুমি যখন শাড়ি পড়বে সবসময় আমিই পড়িয়ে দেবো।”
বন্যা খুশী হয়ে বললো,
“খুবই ভালো কথা।”
তাহসান বন্যার গালে হাত ছুঁয়িয়ে বললো,
“আমার মিষ্টি চাঁদ!”
বন্যা কিছু বলেনা,তাহসান বন্যার কাছে এসে হুট করে বন্যাকে পাজকোলা করে কোলে নেয়।ছাদের এমাথা থেকে ও মাথা হাটতে হাটতে পুরুষালী গলায় গেয়ে উঠে,
“আমি হবো রাত আর
তুই হবি চাঁদ, জ্যোৎস্নায় ঘর আমাদের।”
“তুই হলে রোদ আমি রংধনু হই,
ছিলো সে শহর আমাদের।”
ভুলে যেতাম কোলাহল,
বুঝে নিতাম সবই বল,
ছিলো রোজের চলাচল আমাদের।”
“আমি হবো রাত আর তুই হবি চাঁদ জ্যোৎস্নায় ঘর আমাদের।”
বন্যা তাহসানের গলা আঁকড়ে ধরে।এই লোকটা খুবই ভয়ংকর,তার মাঝে কেমন মাতাল বাতাস বয়িয়ে দিচ্ছে।সে তাহসানের কানে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
“এত্তো ভালোবাসা দিয়েন না প্লিজ।আমার খুব ভ,য় হয়।”
তাহসান বন্যার মতো করেই ফিসফিস করে বললো,
“আমার তো ইচ্ছে করে সব আদর,ভালোবাসা একসাথে তোমার পায়ে ঢেলে দেই।আমার চাঁদ।”
চলবে……