#তান্ডবে_ছাড়খার
#পর্ব_০৭
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
বন্যা তাহিয়ার ইংরেজি বিষয় পড়াচ্ছে।তাহিয়া ভালো ছাত্রী বন্যার পড়ানোর পদ্ধতি তার ভিষণ পছন্দের।বন্যা যেভাবে পড়ায় তা তাহিয়ার মাথায় ঢুকে বেশী তাইতো বন্যা বলতেই সে পাগল।কিন্তু আজকে তাহিয়া পড়ায় মনোযোগ দিতে পারছেনা মনের মাঝে আরেকজন উঁকিঝুঁকি মারলে কি পড়া ভালো লাগে?লাগে না তাই তাহিয়াও আজকে উশখুশ করছে।বন্যা তাহিয়ার এই উশখুশ লক্ষ করে বললো,
“কি সমস্যা?”
তাহিয়ার ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসির রেখা ঝিলিক দেয়।মাথা নিচু করে ভাবে বন্যাকে বলবে কি না।কি ভেবে বললো,
“আপু প্রেমে পড়লে কি বুকের কাঁপন বাড়ে?নিঃশ্বাস ফেলতে কষ্ট হয়?”
বন্যা ভ্রুকুঞ্চন করে তাহিয়ার ফর্সা মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।প্রেম!মেয়েদের মাথায় যে কেনো প্রেম নামক বি/ষপোকা ঢুকে কে জানে।মুখ গম্ভীর করে বললো,
“আমি জানি না তাহিয়া।”
তাহিয়া উৎসাহিত কন্ঠে বললো,
“কেনো?তুমি প্রেম করোনি?”
না বন্যার জীবনে প্রেম আসেনি বন্যা আসার কোনো সুযোগ দেয়নি।পুরুষ মানেই তো খারাপ এই খারাপ সমাজে খারাপ পুরুষদের সাথে প্রেম করার প্রশ্নই আসে না।
তাহিয়ার প্রশ্নে বন্যার গলার স্বর কর্কশ হয়ে যায়,চোখ পাকিয়ে বললো,
“আমি তোমাকে পড়াতে এসেছি প্রেম শিখাতে না।পড়ো!”
তাহিয়া বন্যার ধমকে থমকে যায়।মুখের ভাব হয় গম্ভীর।চুপচাপ পড়ায় মনোযোগ আনার চেষ্টা করে।
তাহসান তাহিয়ার রুমে আসে।টেবিলের সামনে বসা বন্যার দিকে তাকিয়ে মাথা ঘুরিয়ে বিছানায় পা মুড়ে বসে।বন্যা তাহসানের উপস্থিতি টের পেয়ে মাথা ঘুরিয়ে তাকায়।বন্যা তাকানোতে তাহসান হাসে কিন্তু বন্যা হাসে না তার মুখাবয়ব গম্ভীর।তাহসান হাত দিয়ে চুল পেছনের দিকে ঠেলে বললো,
“ম্যাডাম তাহিয়াকে ভালো মত পড়াবেন কিন্তু।”
তাহিয়ার কথায় এমনিতেই বন্যা রেগে ছিলো এখন তাহসানের কথায় মনটা আরো বি/ষিয়ে উঠলো কিন্তু কিছু বললো না।বন্যার নিশ্চুপতায় তাহসান অপমানবোধ করলো,কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর না দিলে খুব খারাপ লাগে।তাছাড়া ছোট বোনের সামনে এমন পরিস্থিতিতে পড়ে তাহসান বেশ বিব্রত বোধ করে।উঠে আস্তে করে ড্রয়িংরুমে চলে গেলো।পড়ানো শেষ করে বন্যা বেড়িয়ে যাচ্ছে।তাহসান উঠে দাঁড়ায়,বন্যার করা অপমান,কটু কথা সব ক্ষমার যোগ্য মনে হচ্ছে,এই মেয়েটার প্রতি একটুও রাগ লাগছে না।বন্যার সামনে গিয়ে বলে,
“মন খারাপ?”
প্রায় এক সাপ্তাহ পর তাহসানের সাথে দেখা।তাহিয়ার কাছে শুনেছিলো তাহসান সাজেক গিয়েছে বন্ধুদের সাথে।তাহসানের ডাকে বন্যা মাথা নেড়ে না জানায়।
তাহসান অপলক বন্যাকে দেখে যেনো এক সাপ্তাহের তৃষ্ণা এখনি মিটিয়ে ফেলবে।মেয়েটা এতো মায়াবী সেটা আগে চোখে পড়েনি কেনো?নাকি যার জন্য মনে তান্ডব শুরু হয় তার সবকিছুই ভালো লাগে?তাহসানের কাছে এতো প্রশ্নের উত্তর নেই তার কাছে বন্যাকে ভিষণ মায়াবী লাগছে।
“তোমাকে আপসেট লাগছে।”
তাহিয়ার করা উদ্ভট প্রশ্নের কথা সে আর তাহসানকে বললো না।মাথা নেড়ে বললো,
“ঠিক আছি।”
তাহসানের মনে হলো বন্যা মিথ্যা বলছে।মাথা নেড়ে বললো,
“তাহলে ছাদে আসো।”
বন্যা ভ্রুকুঞ্চন করে বললো,
“ছাদে আসতে হবে কেনো?”
তাহসান বিগলিত হেসে বললো,
“দরকার আছে।তাছাড়া বন্ধু বলেছিলে মনে আছে তো?”
বন্ধুত্বের কথাটা মনে করিয়ে তাহসান হাসে বন্যা মাথা নেড়ে বুঝায় মনে আছে তারপর দরজা খুলে সিড়ি বেয়ে তড়তড়িতে নেমে যায়।
আফিয়া রান্নাঘর থেকে তির্যক দৃষ্টি মেলে এতোক্ষণ বন্যা আর তাহসানকে দেখেছে।তার লক্ষীমন্তর ছেলের এমন লাজ লজ্জাহীন মেয়ের সাথে কি কথা থাকতে পারে তা উনার মাথায় ধরে না।বন্যার মুখের ভাব গম্ভীর থাকলেও তাহসানের মুখে ছিলো মিষ্টি হাসি।এই মেয়ের সাথে কথা বললে এমন হাসতে হবে কেন?বাড়িওয়ালার ছেলেকে ফাঁদে ফেলে ভাড়াটিয়া মেয়ে গলায় ঝুলে পড়ার অনেক কাহীনি শুনেছেন; এবার কি নিজের ছেলের সাথেই এমন বিশ্রী কাজটা হবে?আফিয়ার ভেতরে অহংকার মাথা নাড়া দিয়ে উঠে জানান দেয় তা হতে দেয়া যাবেনা।বন্যা চলে গেলেও তাহসানের মুখের মুচকি হাসি আফিয়ার নজর এড়ায় না।আতংকে বুক ধরফর করে উঠে।রান্নাঘর ছেড়ে ড্রয়িংরুমে আসে তাহসানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো,
“এই বেয়াদব মেয়েটার সাথে তোর কি কথা?”
তাহসানের হাসিমুখ মলিন হয়ে যায়।মাথা নেড়ে বললো,
“এক বাসায় থাকি এমনিই কথা বলছিলাম।”
আফিয়া অনুসন্ধানী চোখে তাকিয়ে বললো,
“কথা বললে হাসতে হবে?হাসছিলি কেনো?”
তাহসান চায়’না তার মনের ভাব এখনি তার আম্মু জেনে যাক।তাই মাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“হাসি আসলে হাসবো না আম্মু?তোমার ছেলে কি গুমরামুখো?”
আফিয়া মাথা নেড়ে আদেশের সুরে বললো,
“ওই মেয়ের থেকে দূরে ঠিক আছে?”
তাহসান মাথা নেড়ে মনে মনে ভাবে দূরে থাকবো কিভাবে আম্মু মেয়ে তো অলরেডি কলিজায় আঘাত করে ফেলছে,মনে হচ্ছে সামনে আরো কাছেই আসবে।তাহসানের মুখে ছড়িয়ে পড়ে শান্তি শান্তি আবেশ।
রেনু সোফায় বসে মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছে।রাত এগারোটা বাজতে চললো বন্যা এখনো খায়নি কয়েকবার ডেকে এসেছে কিন্তু বন্যা আসছি আসছি করছে কিন্তু আসছেনা কিছুক্ষণ পরে আসলো।বন্যা খাওয়ার পরে মায়ের পাশে সোফায় গিয়ে বসে।রেনু গম্ভীর চোখে মেয়ের দিকে তাকায়,মনের কথাটা বলবে কিনা ভাবছে।বন্যা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“কিছু বলবে?”
রেনু মাথা নেড়ে বললো,
“তোর আব্বা তোর জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এনেছে।”
বন্যা ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
“আচ্ছা।তারপর!”
“ছেলে ব্যাংকের কর্মকর্তা।দেখে পছন্দ হলে বিয়ে হয়ে যাবে।কোন ঝামেলা নেই।”
বন্যা হেলান দিয়ে বসে।
“তো!”
রেনুর গলার স্বর বেড়ে যায়।কঠিন গলায় বলে,
“পেন্ট শার্ট ছেড়ে সেলোয়ার কামিজ পড়।আর মুখের ভাষা ঠিক করবি।আচরন যেনো মেয়েদের মতো হয়,একদম গুন্ডামী করতে যাবি না।”
“এগুলোর কোনোটাই পারবো না।আর এই বিয়ে টিয়ে নিয়ে এতো আগ্রহ কেনো শুনি?”
রেনু বেগম ধরা গলায় বললো,
“মা হলে বুঝতি।”
বন্যা রুমে যেতে যেতে বললো,
“আমি বিয়ে করবো না আম্মা।ছেলেদের আমি সহ্য করতে পারিনা।একেকটা অমানুষ।”
রেনু শেষ চেষ্টা করে বললো,
“সবাই এক না।তোর যেমন খারাপ পুরুষের সাথে পরিচয় হয়েছে তেমনি অনেক ভালো পুরুষও আছে যাদের সাথে তোর দেখা হয়নি।একবার কারো উপর নির্ভর হয়ে দেখ প্রিয় পুরুষ মানে এক আকাশ শান্তি।”
বন্যা মায়ের কথাগুলো মন দিয়ে শুনে।এমন কথা শুনে তার বুকটা কেমন চিনচিন করে উঠে।সে কেনো আর দশটা মেয়ের মতো পুরুষদের নিয়ে ভাবতে পারেনা।একটা ভ/য়ংকর,নষ্ট পুরুষের জন্য তার জীবন কেন পাল্টে গেলো?বন্যা এসব উত্তর জানে না।লাইট আর দরজা বন্ধের শব্দ শুনে সে আস্তে করে বেরিয়ে যায়।মেইন দরজা লক করে ছাদে উদেশ্যে উঠে যায়।তাহসানের কথা শুনার কোনো ইচ্ছা ছিলো না কিন্তু কেন জানি সে যাচ্ছে।ছাদে গিয়ে দেখলো দরজা খোলা তারমানে তাহসান এসেছে সে ধীর পায়ে ছাদে যায়।রাতের ঠান্ডা বাতাস তার গা ছুঁয়ে যাচ্ছে,ম্নে হচ্ছে বৃষ্টি হবে।ছাদের কিনারায় তাহসান দাঁড়িয়ে আছে।বন্যা গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যায়।
তাহসান পেছনে না ফিরেই বুঝতে পারছে যে বন্যা এসেছে।ঠোঁটের কোনের হাসি প্রসস্ত হয়।মাথা ঘুরিয়ে বন্যাকে দেখে বললো,
“এতোক্ষণে আসার সময় হলো ম্যাডাম?”
বন্যা ববকাট চুল পেছনে ঠেলে তাহসানকে দেখে তার মুখের ভাব গম্ভীর।
“এতো রাতে ছাদে ডাকার মানে কি?”
তাহসান স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হেসে বললো,
“সাত দিন তোমাকে দেখিনি।”
বন্যা চমকে বললো,
“মানে?”
তাহসান নিজেকে শুধরে বললো,
“মানে সাত দিনের কথা জমে গেছে না?”
বন্যা দূরের বিল্ডিংয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
“অহ!আচ্ছা।”
“জানো,সাজেক অনেক সুন্দর।”
বন্যা আক্ষেপের সুরে আস্তে করে বললো,
“আমি কখনো যাইনি।”
তাহসান বললো,
“যাবে?”
“কিভাবে?আম্মা সব এলাউ করলেও দূরে যাওয়া এলাউ করবে না।”
তাহসান দূরে তাকিয়ে বললো,
“আমার সাথে যাবে?”
বন্যা মাথা নেড়ে বললো,
“না।”
“কেন?”
“আমি পুরুষদের পছন্দ করি না।”
তাহসানের চোখে অনুসন্ধানের ছোঁয়া ফুটে উঠে।তার মনেও এই প্রশ্ন কয়েকবার এসেছে যে পুরুষদের কেনো একদম পছন্দ করে না।
“কেনো?”
বন্যার চোখে কেমন যন্ত্রনাময় ছায়া ভেসে উঠে যা তাহসানের দৃষ্টিগোচর হয় না।তাহসান বন্যাকে অভয় দিয়ে বললো,
“আমি তোমার বন্ধু না?বন্ধু হিসেবে বলতেই পারো।”
বন্যা মাথা নেড়ে বললো,
“ক্ষত খুচানো মানে যন্ত্রণা বাড়ানো সুতরাং ক্ষতে হাত দেয়ার দরকার নেই।”
এমন কথার পিঠে তাহসান আর কোনো কথা বললো না।সে বললো,
“একদিন তোমাকে নিয়ে ঘুরবো।মনে থাকবে?”
“কিভাবে?”
তাহসান চুলে হাত দিয়ে আচড়ানোর মতো করে বললো,
“দেখা যাক।”
বিনা আমন্ত্রণে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে।তাহসান দৌড়ে চিলেকোঠার চলে যায় কিন্তু বন্যা যায় না ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।ঝুপ বৃষ্টি এসে বন্যাকে ভিজিয়ে দেয়।বন্যা আকাশের দিকে মুখ করে তাকায়,মুক্ত পাখির মতো দু’হাত ছড়িয়ে রাখে।মনের সব বিষাদ যদি এই বৃষ্টির সাথে ধুয়ে যেতো তাহলে কেমন হতো?কেমন হতো জানা নেই কিন্তু বৃষ্টির এই মিষ্টি মূহুর্তে বন্যার খুব খুশী লাগলো।ইচ্ছে করলো পাখির মতো উড়ে যেতে।
তাহসান মুগ্ধ হয়ে বন্যার দিকে তাকিয়ে আছে।সে এবার পুরোপুরি শিওর যে বন্যা এই ছেলের মতো আচরন পুরোটাই একটা মুখোশ আর মুখোশের আড়ালে আছে মিষ্টি, নাজুক এক বন্যা।সে বন্যাকে ডাকলো,
“তোমার জ্বর আসবে তো।আর ভিজ না চলে এসো বন্যা।”
বন্যা খানিক এগিয়ে আসে।খিলখিল করে হেসে বললো,
“জ্বর আসলে আসুক কিন্তু আমি ভিজবই।আপনিও আসুন,বৃষ্টিতে ভিজলে ভালো লাগবে।আসুন।”
বন্যার ডাকে তাহসান মন্ত্রমুগ্ধের মতো বন্যার কাছে এগিয়ে যায়।হঠাৎ করে বৃষ্টির পানি গায়ে পড়াতে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায় খানিক পরে এই পানিটাই সস্থি এনে দেয়।বন্যার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে তাহসান বৃষ্টি ভেজা বন্যাকে দেখলো।বন্যা চোখ মেলে তাহসানকে দেখে বললো,
“আমি যদি পাখি হতাম তাহলে খুব ভালো হত।তাই না তাহসান?”
বন্যার নরম মিষ্টি কন্ঠে তাহসান ডাকটা শুনে তার বুকটা তান্ডবের আগমনে ঝংকার তুলে উঠে।বন্যার ছড়ানো হাত দুটো ধরে বললো,
“চলো পাখি হই।”
বন্যা কিছু বলার আগে তাহসান বন্যার হাত ধরে বৃষ্টির মাঝে ঘুরতে শুরু করলো।দুজন মানব-মানবী ঘুরছে বৃষ্টির ছিটে তাদের ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।বন্যার মনে হলো সে আসলেই পাখি।তার স্বভাব ভুলে খিলখিল করে হাসলো একসময় ঘুরা থামালে সে তাহসানের হাতে ধরেই নিজের ভারসাম্য রক্ষা করলো।আস্তে করে বললো,
“মাথাটা ঘুরছে।উফ।”
তাহসান মুগ্ধ চোখে বন্যাকে দেখছে।বন্যার হাতের স্পর্শ পেয়েই হৃদপিণ্ড বেড়িয়ে আসতে চাইছে।বন্যা বললো,
“একটুর জন্যপাখি বানানোর জন্য ধন্যবাদ।জানতাম না এভাবে ঘুরলে পাখি হওয়া যায়।”
তাহসান মোটেই কথা বললো না সে তা বুকের ঝড় থামানোর জন্য ব্যস্ত।বন্যার ভেজা পাপড়ি মেলে তাকানো,মৃদু কাঁপা ঠোঁট সব তাহসানের বুকে তান্ডবের ঝড় বয়িয়ে দিচ্ছে।বন্যাকে ফিসফিস করে বললো,
“বৃষ্টি ভেজা রাতে খুব দুষ্ট হতে ইচ্ছে করছে বন্যা কিন্তু তুমি তো পুরুষ পছন্দ করো না।”
বৃষ্টির শব্দে বন্যা বোধহয় ঠিক শুনেনি।সে বললো,
“কি বললেন?”
“আমাদের বন্ধুত্বের শর্ত যেনো কি?”
বন্যা হেসে বললো,
“প্রেমে পড়া যাবে না।”
তাহসান নিচু হয়ে বন্যার কানের কাছে গিয়ে বললো,
“কিন্তু আমি বোধহয় প্রেমে পড়ে গেছি।”
বন্যা তাহসানকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়।সিড়ির দিকে যেতে যেতে বললো,
“বাসায় যান।জ্বর আসবে।”
তাহসান তখনো বুকে হাত রেখে দাঁড়িয়ে।বিরবির করে বললো,
“জ্বর!মনের জ্বর তো এসে গেছে সেই খবর কি রাখো?”
‘এই মেয়ে শোন!এই বৃষ্টি ভেজা রাতে কোমল,মায়াবী রূপে আচ্ছন্ন করে আমার বুকে যে তান্ডবের ঝড় তুলে গেলে তার কি হবে?ঠিক তো চলে যাচ্ছো,এই অসহায় আমার কি হবে?এতো যন্ত্রণা বুকে নিয়ে থাকা যায়?আমিতো মা/রা যাচ্ছি। আমি একদম শেষ।”
সে প্রলাপ বকতে বকতে ছাদে শুয়ে পড়ে।ভাবে সে প্রেমে পরে গেছে,নিজের সবটা নিয়ে বন্যার তান্ডবে সামিল হয়ে যাচ্ছে।বন্যা কি তাকে একটু যায়গা দেবে নাকি ভাসিয়ে দেবে?ভাসিয়ে দিলে দিক,বন্যার ভালোবাসা থাকলে ভাসতেও রাজি।
চলবে……