ছোটঘরের_ভালোবাসা সিজন_২ পর্বঃ ০২
– আবির খান
আবির যেইনা মাথা ঘুরিয়ে তাকায়, আবির যেন আকাশ দিয়ে পরে। এ কিভাবে সম্ভব?? এটা ওর বাসা??আল্লাহ কেনো তুমি আমার সাথে এমন করলা??কেন ওর কাছে আমায় আনলে??
– তুমি????
আবিরঃ……..আবির কি বলবে সে পুরো অবাক হয়ে গিয়েছে। কারণ সে যাকে দেখেছে তাকে এখানে দেখবে সে স্বপ্নেও কল্পনা করেনি।
আঙ্কেলঃ রিয়া মা তুমি ওকে চিনো নাকি??
রিয়াঃ হ্যা বাবা। কিন্তু ও এখানে???
আঙ্কেলঃ জানিস মা ওর সাথে যা হয়েছে তা কতটা কষ্টের বলে বুঝাতে পারবো না।
আঙ্কেল রিয়াকে সব বলল। রিয়া শুনে খুব কষ্ট পেলো।
রিয়াঃ জানো বাবা ওইতো সেই আমাদের ভারসিটির ছেলে যে আমাকে সেদিন বাচিঁয়ে ছিলো।
আঙ্কেলঃ কি বলিস মা সত্যিই!!!(অনেক খুশি হয়ে)
রিয়াঃ হ্যা বাবা হ্যা।
আঙ্কেলঃ বাবা তোমাকে আমি যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো আমি কোনো ভাষাই খুঁজে পাচ্ছি না। আসলে তোমাকে ধন্যবাদ দিলে ছোট করা হবে। তার চেয়ে তুমি আমার বুকে আসো। আজ থেকে তোমার জায়গা শুধু আমার বুকে।(কাদো কণ্ঠে)
আঙ্কেল আবিরকে জরিয়ে ধরে। আবিরও আঙ্কেলের সাথে আবেগি হয়ে পরে বাবা মার কথা খুব মনে পরছে। চোখ গুলো ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছে।
আবিরকে ছেড়ে ওর দিকে তাকিয়ে।
আঙ্কেলঃ দেখো ছেলের কান্ড কিভাবে কাদছে। বাবা রে তোর যে কাদার দিন শেষ। তুই আর কাদবি না। শুধু হাসিখুশি থাকবি।
রিয়া আবিরের দিকে শুধু তাকিয়ে আছে। ছেলেটাকে সে প্রথমদিন থেকে দেখে আসছে। কিন্তু এখন যে আবিরকে দেখছে তাকে চিনার কোনো যো নেই।
আঙ্কেলঃ দেখো দেখি কান্ড। এতো কথা বললাম অথচ বাবা তোমার নামটাই এখনো জানতে পারলাম নাহ। তোমার নাম কি বাবা?
আবিরঃ আঙ্কেল আমার নাম মোঃ আবির খান।
আঙ্কেলঃ কিহ আবির। রিয়া মা ওই সেই আবির তাহলে?? বাবা তোমাক….
রিয়া তারাতারি ওর বাবাকে থামিয়ে দেয় ইশারা করে।
আঙ্কেলঃ হা হা হা। আবির বাবা তুমি আসলেই অনেক লাকি। কেন জানো??
আবিরঃ জিজ্ঞাসারূপ তাকায়।
আআঙ্কেলঃ এখন বলবো না। সময় হলে তুমি নিজেই জানতে পারবে। কিরে রিয়া মা জানতে পারবে তো নাকি আমিই….
রিয়াঃ বাবা তুমি যাওতো। ফ্রেশ হয়ে আসো।
আঙ্কেলঃ যাচ্ছি যাচ্ছি। এখন থেকে তুই ওর খেয়াল রাখবি আর আবির বাবা তুমিও ওর খেয়াল রাখবে। হা হা।
আবির আঙ্কেলের কথা কিছুই বুঝতে পারছে না। আসলে আঙ্কেল ওকে কি বুঝতে চাইলো??
আঙ্কেল উপরে তার রুমে চলে যায়। রিয়া ধীরে ধীরে আবিরের কাছে এগিয়ে যায়। সেখানে আর কেউ নেই। শুধু আবির আর রিয়া।
রিয়া আবিরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ওর দিকে তাকিয়ে আছে। রিয়া দেখে আবিরের চোখগুলো ভিজা আর চোখের নিচটা কালো হয়ে আছে। রিয়া আসতে করে হাতটা উঠিয়ে আবিরের চোখ স্পর্শ করতে নিলে আবির দুকদম পিছে চলে যায়। বিষয়টায় রিয়া রাগ করে।
রিয়াঃ একটু আগে যেখানে ছিলে সেখানে আসো। না হলে কিন্তু অনেক খারাপ হবে।
আবির আবার তার আগের জায়গায় ফিরে আসে। রিয়া নিজ হাত দিয়ে আবিরের চোখের পানি মুছে দিচ্ছে। খুব যত্ন করে।
আবিরঃ আমার কষ্ট গুলো মুছার চেষ্টা করছো??
রিয়াঃ…..
আবিরঃ তোমার চোখে পানি কেন??
রিয়াঃ কাছের কেউ কষ্টে থাকলে চোখগুলো এমনিই আপনাআপনি ভিজে আসে।
আবিরও মনের অজান্তেই রিয়ার চোখ দুটো মুছে দিলো। রিয়া আবিরের প্রথম স্পর্শে কেপে উঠে। আবির ব্যাপারটা বুঝতে পেরে রিয়ার কাছ থেকে একটু সরে দাঁড়ায়।
রিয়াঃ তুমি আর আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না। কারণ মহান আল্লাহই তোমাকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন সারাজীবনের জন্য। তুমি শুধু আমার মানে আমার। শুকরিয়া আল্লাহ তোমাকে। (মনে মনে)
রিয়াঃ আবির আসো আমার সাথে। তোমার রুমটা দেখিয়ে দি।
আবির বিষন্ন মন নিয়ে রিয়ার পিছে পিছে যেতে থাকে।
রিয়াঃ এটা তোমার রুম আর এইযে দেখছো এই রুমটা এটা আমার। কিছু লাগলে আমাকে বলবে।
রিয়া ইচ্ছা করেই ওর পাশের রুমটা আবিরকে দিয়েছে।
আবির রুমে ঢুকেতো পুরো অবাক। বিশাল বড় রুম। এতো বড় রুম আবির আগে কখনো দেখেনি। দামি দামি আসবাবপত্রে ভরা রুমটা।
আবিরঃ না রিয়া আমি এতো বড় রুমে থাকতে পারবো না। তার চেয়ে বরং তুমি আমাকে ছোট একটা রুম দেও। এখানে কমপক্ষে হলে ৫০ জন অনায়াসে ঘুমাতে পারবে। আমার এতো বড় রুমে ঘুমানো কোন যোগ্যতা নেই।
রিয়া আবিরের দিকে ভ্রুকুচকে তাকায় আর বলে,
রিয়াঃ এই হাত দেখছো??একদম কষিয়ে একটা চর দিবো। বাবা কি বলছে মনে নাই। আমি যা বলবো তাই শুনবা। তুমি এখানেই থাকবা।
রিয়ার ধমক খেয়ে আবির আর কিছু বলে না।
রিয়াঃ আর এ রুমটা না এই বাড়ি,এই বাড়ির সব কিছু তোমার,সাথে রানীও।
আবিরঃ কিহ বললা।
রিয়াঃ না কিছু না। এখন যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। আর হ্যা মন খারাপ করবে না। নাহলে কিন্তু আমিও।
আবিরঃ আচ্ছা। সত্যিই তোমাদের মতো ভালো মানুষ আর হয় না।
রিয়াঃ জ্বি না আমি পঁচা আমি ভালো না। এখন যান।
রিয়া চলে যেতে নিলে আবির খুব সুন্দর করে রিয়াকে ডাক দেয়।
আবিরঃ রিয়া….
রিয়া মুগ্ধ হয়ে পিছে তাকিয়ে আবিরের অনেকটা কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।
রিয়াঃ কি বলো। (ছলছল চোখে আবিরের দিকে তাকিয়ে)
আবিরঃ টয়লেটা কোথায়???
রিয়া কি বলবে?? রাগে মাথা হট হয়ে যাচ্ছে। বেটা এই কথা জিজ্ঞেস করার জন্য এভাবে কেউ ডাকে??আর আমি কিনা কি মনে করলাম।
রিয়াঃ টয়লেট আমার মাথায়।
আবির অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে রিয়ার দিকে।
রিয়া রাগ ভুলে যায়।
রিয়াঃ ওইযে ওইদিকটায়। আর কিছু লাগলে বলো।
আবির মাথা নাড়ায়।আচ্ছা।
রিয়া চলে যায়। আধা ঘণ্টা হয়ে গেলো কিন্তু আবিরের কোন খবর নাই। তাই রিয়া নিজে উপরে আবিরের রুমে যায়। আস্তে আস্তে গুটিপায়ে ভিতরে ঢুকে দেখে আবির রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। রিয়া আস্তে আস্তে ওর কাছে যায়। কাছে গিয়ে বুঝে আবির কান্না করছে। এরপর রিয়া যা করে তাতে আবির…..
চলবে…?