ছিটরুটির মতো পথ

0
993
ছিটরুটির মতো পথ – আমরা অসীম আকাশে দেখতে থাকি নীলাভ সৌন্দর্য, অরুণ রবির রক্তিম আভা; ঋতু বৈচিত্র্যের রাশিরাশি মেঘমালা, অনন্ত নক্ষত্র সারির কোজাগরি চন্দ্র শোভা। আমরা ঘুরিফিরি দেশবিদেশে আবেশে নানান বেশে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসায়; অসীম সাগরের নীল জলরাশিতে ভাসি, পাখির কলতানে আনমনে কবিতা আওড়ায়! যার যার স্বার্থে আমরা প্রতিদিন চলি পথে পথে, ছিটরুটির মতো সে পথ! পথের পাশে সারি সারি বাড়ি, নিজের সাথে করি আড়ি, শুধু করি না সত্যের শপথ! আমরা দেখি দিগন্ত বিস্তির্ণ মাঠে জলরাশির ঘের দেখি না শুধু বিলীন ভূমিহীন, ভূমিদস্যু শের! আমরা দেখি আইনের জালে ছটফটরত চুনোপুটি, ধরতে দেখি না শুধু রাঘববোয়াল ও তার খুটি! দেখার পরিপক্কতা শেষ হতে না হতেই পূর্বসুরীদের মতোই সবাই অন্তহীন পথে হাটি; ফুরিয়ে যায় না কারও কর্ম, কারও ধর্ম আলো-আঁধারীর যত উচ্ছিষ্টে উর্বর হয় মাটি। আমরা নিজেকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই কখন যেন সবাই পেতে চাই নাগরিক পরিচয়; তখন কর্মের ফলাফলে নিজের চেয়েও আমাদের প্রিয়জন ভাবনা ক্রমশঃ প্রকটতর হয়! ভাবতে পার, নিজের জন্য কী এমন লাগে? আছে যার যা যথেষ্ট তা; পোষ্য তরে প্রেম জাগে! নিজের কী করণীয়- তা না কর অনুসরণীয় নিত্য অনুশীলিত অসঙ্গতিকে কর কেন জনপ্রিয়? হও যে প্রায় নিরুপায় সামগ্রীক দুর্বৃত্তায়নের চক্রে যুক্ত, নিজেই সমগ্রের শুরু- গৌণ কর তা! ছেড়ে দিয়ে অধিকার, জনে জনে নির্বিকার হও যবে অমুক্ত, ক্রমে গ্রাস তো করবেই হতাশা। উল্টা ভাবনায় মুক্তি, ফিরে পাই যে শক্তি সমগ্রের উৎস তো সবে- নিজেকেই ভাবতে পারি। সামগ্রীক দুর্বৃত্তায়নে, ভীতিকর সন্ত্রস্ততায় প্রত্যেকের নিজেকেই- নির্দায় করা সর্বাগ্রে জরুরি।
আমি তখনই হব ভালো- যদি সবাই ভালো হয়’ এমনতর জীবনবোধ- ক্রমে সমাজের অবক্ষয়! সবাই ভালো হতে তো অন্তত আমি ভালো হই; কে কী করে সে দায় তার- আমি তো শুদ্ধ রই। আমি তুমি তিনি মিলেই তো নাগরিক জনতা আমার চর্চায় ভয় থাকে তো- ভীত আমার নেতা! আমি যদি সাহস করি, ত্যাজ্য করি ভিরুতা আমার ভিতরে জন্মে নেতা করবে জবাবদিহিতা। জীবনভর জগতময় প্রতিটি পদক্ষেপে মানবের সন্তোষ-অসন্তোষ, সাফল্য-ব্যর্থতা; ক্রমাগত প্রাপ্তিতে গগনচুম্বী অর্জনের আলোতেও দূর হয় না প্রত্যাশার সীমাবদ্ধতা! প্রতি বিষয়ে কেবা না চায় জনকল্যাণময় প্রগতি? জীবন যাপনে অকারণে কেউই চায় না দুর্গতি। নিত্যকর্মে সন্তুষ্টির ভাগেই দিতে যদি পারি জোর; কর্মস্পৃহার প্রগতিতে হ্রাস করি অসন্তোষের ঘোর। নতুন জন্মেই প্রগতি, চৌপাশে দেখি তাতে উর্বর ফসলের মাঠ, ঠিক কর স্বীয় করণীয় পাঠ; অধিকার চাও যা; অপরে অকপট দাও তা নিজেরে শান দিয়ে রুখ অনাচার, বাঁধ আটঘাট।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে