ছায়া সঙ্গী পর্ব -১
লেখা : নাহার
মোহনার সাথে আমার বিয়েটা দেয়া হয় এক প্রকার জোড় করেই। ঐ রকম একটা মানসিক বিকারগ্রস্থ প্রেগন্যান্ট মেয়েকে কেও স্বেচ্ছায় বিয়ে করার কথা নয়।
মোহনা উচ্চশিক্ষিতা প্রচন্ড সুন্দরী একটি মেয়ে। হাসিখুশি উচ্ছল প্রাণবন্ত ছিলো একসময়। অর চেহারা এত মিষ্টি যে, যেকেও দেখলে প্রেমে পড়তে বাধ্য। আমিও ওর প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে ছিলাম। কিন্তু তখন ওর বড়লোক বাবা তার একমাত্র রূপবতী এবং গুণবতী মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দিতে চাননি। আমাকে প্রচুর অপমান করে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। তখন মোহনা এবং আমি দুজনেই অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি। ভার্সিটিতেই আমাদের পরিচয়।
মোহনা কখনোই আমাকে ভালবাসেনি। ওর আমায় ভালবাসার কোনো কারণ ছিল না। আমি সহজসরল গরীব ঘরের একজন সাধারণ ছেলে ছিলাম। তবু মোহনার রূপে মুগ্ধ হয়ে হিতাহিত বোধ শূন্য হয়ে পড়েছিলাম এবং ওর বাবাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেই। আজ চার বছর পর মোহনার বাবা আমাকে তার মেয়েকে বিয়ে করতে একপ্রকার বাধ্য করে।
এর কারণ মোহনা প্রেগন্যান্ট। আর আমিও বাধ্য হই কারণ আমি মোহনার বাবার কোম্পানিতে চাকরি করি। আমি যদি মোহনাকে বিয়ে না করি তাহলে আমায় চুরির অপবাদ দিয়ে বের করে দেয়া হবে এবং আমার আর কোথাও চাকরি হবেনা। এটা বলেই মোহনার বাবা আমায় ব্ল্যাকমেইল করে।
মোহনাকে কখনোই আমি কোনো ছেলের সাথে যদিও দেখিনি কিন্তু বিয়ের আগেই প্রেগন্যান্ট মেয়ের ক্যারেকটার কতটুকু ভাল থাকে আর সেই মেয়েকে বিয়ে করতে চায় এরকম ছেলে পৃথিবীতে কয়টা আছে?
তার উপর মোহনার মাথা খারাপ। চার বছর আগে যখন ওকে আমি বিয়ের জন্য প্রোপোজ করেছিলাম তখন সব কিছু ঠিক ছিল। কিন্তু ভার্সিটি থেকে মোহনা ও তার কিছু ফ্রেন্ড সুন্দরবন ট্রিপে গিয়েছিলো তখন থেকেই মোহনা অদ্ভুত আচরণ করে। যেমন কারো সাথে মিশে না কথা বলেনা। ভার্সিটিতে আসে এক্সাম দেয় চলে যায়। কখনো দুই মিনিট এর জন্যও কারো সাথে কথা বলেনা। কোনো ছেলে যদি তাকে প্রোপোজ করে বা যেচে কথা বলতে যায় তাহলে সে আতংকে সেখান থেকে দৌড় দেয়। এবং নিজের গাড়িতে করে বাড়ি চলে যায়।
মোহনার পাগলামি আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। ক্লাসে কোনো পুরুষ টিচার তার দিকে তাকালে সে স্যারদের দিকে ব্যাগ বই খাতা সব ছুড়ে দিয়ে সেখান থেকে চলে আসত।মোহনাকে এর জন্য অনেক সাইক্রিটিস্ট দেখানো হয়েছে। সবার কাছেই মোহনা শুধু মাত্র একটাই কথা বলেছে, ছায়াটা সহ্য করতে পারেনা তার আসেপাসে কেও ঘেঁষুক।
কিন্তু কিসের ছায়া কোথাকার ছায়া কেমন ছায়া তা কেও জানেনা। মোহনার কোনো ভাই নেই। তার একজন খালাতো ভাই আছে যে মোহনাকে নিজের বোনের মত স্নেহ করত। একসময় সেই ভাই এর মোহনাদের বাড়িতে যাতায়াত থাকলেও মোহনার অসুখটা শুরু হওয়ার পর তার সেই বাড়িতে আসা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। কারণ মোহনা তাকে দেখা মাত্রই ঘরের সব কাঁচের জিনিস ছেলেটার দিকে ছুড়ে মারত।
অই বাড়ির সমস্ত পুরুষ চাকরকে বহিষ্কার করা হয়। এবং তাদের যায়গায় মেয়েদের দায়িত্ব দেয়া হয়। ইভেন দাড়োয়ানের যায়গায় ও মেয়ে দাড়োয়ান রাখা হয়েছে। ঐ বাড়ির একমাত্র পুরুষ সদস্য মোহনার বাবা।
এমন একটা মেয়েকে কে প্রেগন্যান্ট বানালো? যে ই বানাক সেটা ফ্যাক্ট না। ফ্যাক্ট হল আমার বউ বিয়ের আগেই প্রেগন্যান্ট। এই মেয়ের সাথে সংসার করা আমার পক্ষে কোনো ভাবেই সম্ভব না। আমি বাসরঘরে ঢুকার সাথেই ও হাত পা ছুড়া শুরু করে দিল আর অদ্ভুতভাবে হাসে। যে হাসির রহস্য উদ্ধার করা অন্তত আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি ওর কাছে যেতেই আমার উপর বালিশ ছুড়ে দিল আর চিৎকার করে বলা শুরু করল
– আমার কাছে এসনা ছায়া রাগ করবে ছায়া রাগ করবে।
আমার তো মনে হয় সব ওর ঢং। মাথায় কোনো পাগলামি নাই। নিশ্চই কোনো ছেলের সাথে কুকির্তি করেছে সেগুলা ঢাকার জন্য পাগলের বেশ ধরেছে। আমার প্রচুর রাগ হচ্ছে ওকে দেখে। ওকে নিজের বউ হিসেবে মানব কিনা সেটা পরের কথা। আজ যেহেতু কাছে পেয়েছি বহুদিন আগের যে হিসেব বাকি ছিল সেটা মিটিয়ে নেই। ওর সব ছুড়াছুড়ি অগ্রাহ্য করে আমি ওর কাছে গিয়ে বসলাম। ও আমায় ধাক্কিয়ে সরানোর চেষ্টা করছিল তখন ওকে একটা থাপ্পড় দিলাম। একপ্রকার জোড় করেই ওর সাথে সম্পর্ক করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু হঠাৎ ই ও এমন ধাক্কা দিল যে আমি খাট থেকে দরজার কাছে পড়ে গেলাম।
মোহনা নেমে এসে আমার বুকের উপর বসল। আমার মনে হচ্ছিলো বুকের উপর কোনো হাতী বসেছে।
বিয়ের প্রথম দিন এইভাবে নতুন বউ বরের বুকের উপর বসে আছে এটা বোধ হয় পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম। ও এইভাবে বসে থাকলেও আমার ওকে নড়ানোর মত কোনো ক্ষমতাই ছিল না। আমার মনে হচ্ছিলো আমার হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এনাকণ্ডা যখন জীবন্ত কোনো প্রাণি খায় তখন খাবারটা পেঁচিয়ে ধরে আস্তে আস্তে এমন চাপ দেয় যে সেটার হৃদস্পন্দন তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়ে যায়। আমার বারবার সেই কথা মনে আসছিল।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
আমাকে উদ্ধার করলেন আমার শ্বশুর। অবশ্য এটা আমি পরে জানতে পেরেছি। নিজের অস্বাভাবিক মেয়েকে আমার সাথে বাসরঘরে পাঠিয়ে তিনি দরজার পাশেই আড়ি পেতে শুনছিলেন। আমাদের রুম থেকে নাকি এক প্রকার গোঙানোর আওয়াজ আসছিল। সেটা শুনেই তিনি আমার ঘরে এলেন। আর আমাকে উদ্ধার করলেন।
এতদিন শুধু ওর প্রতি একটা ঘৃণা কাজ করত কিন্তু এখন আমার ওর প্রতি ভয় কাজ করে। আমি সারাদিন ভয়ে ভয়ে থাকি। পারতপক্ষে সারাদিন অফিসেই থাকি। কিন্তু বাসায় আসতেই হয়। চাকরিটার সাথে একটা শ্বশুর আর তার মেয়ে বোনাস পাইছি।
আমাকে দেখলেই ও ছায়া ছায়া করে চিল্লাতে থাকে। কিন্তু আমি কোনো ছায়া দেখিনা। ও বারবার বলতে থাকে কাছে এসোনা ছায়া তোমায় মেরে ফেলবে।
যাই হোক এইভাবেই চলতে থাকে। আমি আর কি যে বউকে ছুতে পারিনি অবধি তার বাচ্চার বাবা হয়ে বসে আছি।
মনে জেদ চেপে গেছে। একদিন রাতে আমি মোহনার খাবারে ঘুমের ওষুধ মেশালাম। যথারীতি খাওয়ার কিছুক্ষণ পর ই ও ঘুমিয়ে গেল। কোনোদিন আমি কোনো মেয়েকে ছুয়ে দেখিনি। সব ভালবাসা বউ এর জন্য জমিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু যে বউ পাইছি আমার ত মনে হয় শেষে সন্যাষি হতে হবে। আমি চাইনা সেটা হতে।
আজ আমি আমার বউকে যেভাবেই হোক কাছে টেনে নিলাম।
সেদিনের বাসর রাতের ঘটনার পর আমার শশুর অদ্ভুত একটা কাজ করলেন। সারা বাড়িতে লাইটের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলেন। তার কথা অনুসারে আলো বেশি থাকলে মোহনার আচরণ অনেকটা কন্ট্রোলে থাকে। আমিও তা ই লক্ষ করছিলাম।
কিন্তু আজ ঘরে ঢোকার পর থেকেই আমার লজ্জা লজ্জা লাগছিল। মোহনা যেহেতু ঘুম ওর লজ্জা লাগার কথা নয়। তাই আমি বড় লাইটের সুইচ বন্ধ করে দিলাম। দেয়ালে নীল রঙের একটা মৃদু ডিমলাইট জলছে।
আমার হঠাৎ মনে হচ্ছে ঘরে আরো কেও আছে। কেন এমন মনে হচ্ছে আমি জানিনা। তবে আমি আমার স্নায়ু সজাগ রেখেই মোহনার দিকে এগুচ্ছি। ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট অন করে নিয়েছি। এখনো বারর বার মনে হচ্ছে ঘরে কেও আছে। আমি ভাবলাম শশুর আব্বা সেদিন যেমন দরজায় আড়ি পেতেছিলেন। আজ ও হয়ত ওরকম কিছু একটা করেছেন। হঠাৎ কেও আমায় পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে আমায় খাটে ফেলে দিল। যেদিক থেকে ধাক্কা দিয়েছিল আমি সেদিকে তাকালাম। সেখানে ফ্ল্যাশ লাইট ফেলা মাত্রই মনে হল কি যেন সেখান থেকে চলে গেল। হঠাৎ আমার মাথায় কিছু আঘাত করল। আমি সেদিকে ফ্লেশ দিলাম কিছু নেই।এখন আমার পায়ের দিক থেকে কিছু আমায় টানছিল। মনে হচ্ছে অতি মোলায়েম হাত আমার পা ধরে টানছে। আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা। হাত ঘুরালাম আর আলো পায়ে পড়ল তখন পায়ের অখানে সব উৎপাত বন্ধ হয়ে গেল। এখন মনে হচ্ছে আমার কেও চুল টানছে। আমার মনে হতে লাগল এইসব কিছুর সাথে আলোর একটা ভীষণ সম্পর্ক আছে।
আমি উঠে গিয়ে আলো জালানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু আমি যখন সামনে ফোনের আলো ফেললাম পিছন থেকে আমায় কিছু একটা টেনে ধরল। আমি অনেক চেষ্টা করলাম নিজেকে ছাড়ানোর পারছিনা। ঘরের যত জিনিসপত্র আছে সব আমার পিছনের দিকে ঘুরে ঘুরে এসে আছড়ে পরল। আমার মাথা ফেটে গেছে বুঝতে পারলাম। কারণ ঘাড় বেয়ে যে রক্তস্রোত যাচ্ছিলো তার অনুভূতি টের পাচ্ছিলাম। আমি আলো সেদিকে তাক করলাম। আবার সব নিশ্চুপ। আমি আলো আমার মাথার একহাত উচু দিয়ে ধরলাম যাতে আমাকে ঘিরে একটা আলোক বৃত্তের তৈরী হয়। সুইচের কাছে গিয়ে আমি পিছনে তাকালাম তখনো সুইচ জালাইনি আমার খুব ইচ্ছে কি এতক্ষণ আমার সাথে এমন করল। কিন্তু পিছনে তাকিয়ে আমি যা দেখলাম আমার রক্ত হিম হয়ে গেল।
আমার সামনেই একটা ছায়া দাড়িয়ে আছে। তবে ঠিক ছায়া নয়। নীল আলো দিয়ে গড়া মানুষের শরীরের আকৃতির কিছু একটা। যেটার চোখ মুখ নাক আছে কিনা আমি জানিনা। স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না। সব আবছা আবছা। তবে হাত পা আছে। কিন্তু শরীর ভেদ করে পিছনের সব কিছুই দেখা যাচ্ছিলো।
আমার পক্ষে আর দেখা সম্ভব হচ্ছিলো না। আমি আলো জালালাম। মুহুর্তেই নীল মানব সদৃশ ছায়াটা উধাও হয়ে গেল।
মানুষ হিসেবে আমি প্রচণ্ড প্রেকটিকেল হাসি তামাশা যা ই করিনা কেন আমি কখনো ভূত প্রেত আত্মা এলিয়েন এই জাতীয় কিছু বিশ্বাস করিনি।
কিন্তু আমি আজ যা দেখলাম তারপর নিজের বিশ্বাস কে না বদলিয়ে উপায় নেই। আমি বুঝতে পারছিনা যা হয়েছে তা কি আমার হেলুসিনেশন নাকি বাস্তব? বাস্তবে ত এটা হওয়া সম্ভব না। কিন্তু হেলুসিনেশন হওয়াও ত সম্ভব না। যদি হেলুসিনেশন ই হয় তবে আমার মাথা থেকে এখনো রক্ত পরছে কীভাবে?
এতদিন মোহনাকে পাগল দুশ্চরিত্রা বলে ঘৃণা করতাম। কিন্তু এখন ওর প্রতি আমার এক ধরণের করুণা হচ্ছে। এই জিনিসটা নিশ্চই ওর সাথে ই থাকে।
আমার সন্দেহ হতে থাকল মোহনার পেটে যে বাচ্চা সেটা আবার এই জিনিসটার নয়ত?
আমার মন দূর্বল ছিল তাই আমু এসব চিন্তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছিলাম। কিন্তু আমার মস্তিষ্ক কিছুতেই এটা মানতে রাজি ছিলোনা যে এইসব আদিভৌতিক কিছু পৃথিবীতে থাকা সম্ভব। যদি ভূত প্রেত কোনো কিছু এই পৃথিবীতে থেকে থাকে তবে বিজ্ঞানিরা ওইটার এতদিনে লেব্রোটরিতে ডি এন এ, আর এন এ বের করে ফেলত।
কিন্তু চোখের দেখা কীভাবে অবিশ্বাস করি।
আমি একটা হাইপোথিসিস দাড় করালাম। মোহনা নামক পাগলিটার সাথে থাকতে থাকতে আমি নিজেও পাগল হয়ে গেছি আর উল্টোপাল্টা কল্পনা করছি। আমার এখনি আলো নিভিয়ে সব পরিক্ষা করে নেয়া উচিৎ ।
আমি আলো নিভালাম। তখন ই হঠাৎ আবার সেই নীল আলোর ছায়া পেলাম। যেটা আমার উপর ঝাপিয়ে পড়তে চাচ্ছে আমি আলো জ্বালিয়ে দিলাম। মুহুর্তেই সেটা উধাও হয়ে গেল।
আমি আমার মন আর মস্তিষ্কের সাথে যুদ্ধ করে করে হেরে যাচ্ছিলাম। একটা ছায়া /আদিভৌতিক কিছু কিভাবে এমন কিছু করতে পারে? অথবা সব কিছুই আমার হেলুসিনেশন নয় তো?
আচ্ছা এমন নয়ত যে মোহনা সত্যি ই ভাল একটা মেয়ে? সে কোনো ভৌতিক শক্তির সিকার?
আজ পরিস্থিতির দায়ে আমায় এমন টা ভাবতে হচ্ছে নিজের দেখা জিনিসকে অস্বীকার করি কিভাবে?
আমি মোহনাকে ওর ঘরে রেখে আমার শশুরের সাথে কথা বলতে গেলাম। রাত দুটোর সময় কোনো ছেলে তার শশুরের ঘরে যাচ্ছে বউকে ভূতে ধরেছে কিনা জিজ্ঞেস করতে। হাস্যকর।
সারাবাড়িতে আলো জলছে। সম্ভবত মোহনার জন্যই বাড়ির কোনো কোণা অন্ধকার রাখা হয়না। আমি সাবধানে আমার শশুরের ঘরে গেলাম। তিনি এখনো জেগে। দরজায় এক টোকা দেয়ার সাথেই দরজা খুলে দিলেন। যেনো তিনি আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন।
-আপনি এখনো ঘুমান নি?
-আমার ঘুম কমে গেছে বাবা। কেমন আছ তুমি?
-যেমন মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছেন ভাল থাকার কোনো সুযোগ আছে?
-আমি খুব দুঃখিত কিন্তু তুমি ত বুঝতেই পারছ এটা না করলে আমার মান সম্মান থাকত না।
তারপর তার সাথে আমার অনেক কথা হল। সেই নীল ছায়াটা তিনিও দেখেছেন। মোহনার সুন্দর বন থেকে আসার পর থেকেই নাকি অই ছায়াটাকে দেখতে পাওয়া যায়। আর তখন থেকেই মোহনা কোনো ছেলের আশেপাশে যেতে পারেনা। তিনি আমার কপালের রক্ত মুছে ব্যাণ্ডেজ করে দিলেন।
আমি ঠিক করলাম কাল মোহনাকে নিয়ে হসপিটালে যাব।
আমি আর মোহনা হসপিটালে বসে আছি। মোহনার আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করাবো। দিনের বেলা ওর মধ্যে তেমন একটা অস্বাভাবিকতা থাকেনা। হালকা অন্ধকার ঘরে আচরণ অদ্ভুত করে। তবে সেটা সামলে নেয়ার মত।
আমি আর মোহনা ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছি। ডাক্তার আমার ফ্রেন্ড। (মেয়ে) ওর থেকে খুব কষ্টে অনুমতি নিয়েছিযে মোহনার আল্ট্রাসোনোগ্রাফির সময় আমিও থাকব। প্রথমে রাজি হচ্ছিলো না। কিন্তু পুরো ঘটনা জানার পর রাজি হয়ে গেল। এবং সে ই ব্যবস্থা করে দিল হসপিটালে যেন কোনো পুরুষ স্টাফ মোহনার সামনে না আসে।
মোহনার আল্ট্রাসোনোগ্রাফি হচ্ছে। একটা কম্পিউটার এ কি সব চিত্র দেখা যাচ্ছে। পিউ এর মুখ অস্বাভাবিকতায় ভরা। ও ঘামছে অই চিত্রগুলার দিকে তাকিয়ে। পিউ আমার ডাক্তার বান্ধবী। বুঝতে পারছিনা ও কি এমন দেখছে যে অভাবে তাকাচ্ছে?
চলবে
প্রিয় পাঠক আপনারা যদি আমাদের (গল্প পোকা ডট কম ) ওয়েব সাইটের অ্যাপ্লিকেশনটি এখনো ডাউনলোড না করে থাকেন তাহলে নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে এখনি গল্প পোকা মোবাইল অ্যাপসটি ডাউনলোড করুন => ??????
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.golpopoka.android