#চোরাবালি
#পর্বঃ১৫(শেষপর্ব)
#আহিয়া_আমান_অণু
৩৪
হাসপাতালের করিডরে আমান,উহাশী,উষশী,উষশীর মেয়ে বিন্দি,তার ছেলে বিশাল, আমেনা বেগম, সালাউদ্দিন সাহেব,তার স্ত্রী হুমায়রা বেগম আর আলিফ সহ সবাই উপস্থিত আছে। কেউ বা বসে কেউ বা দাড়িয়ে আছে। ওটি রুমের লাল বাতিটা জলজল করছে। সবাই অপেক্ষা করছে কখন ডাক্তার বেরুবে। উহাশী অনবরত কাদছে। তাহিফ আমানের পাশে দাড়িয়ে কাদছে। আমান একটা চেয়ারে বসে নিরবে অশ্রুপাত করছে। উষশী ভাইকে দেখছে আর ভাবছে ছেলেদের কি এত সহজে কাদা মানায়? হয়তো মানায়, নয়তো আমান এত কাদে কেনো?
“ভাইয়া নিজেকে সামলে নে প্লিজ!”
উহাশী খুড়িয়ে এগিয়ে এসে ভাইয়ের কাধে হাত রেখে কথাটা বলে। আমান উহাশীকে দেখে তার দিকে রক্তচক্ষু নিক্ষেপ করে। তারপর দাড়িয়ে রেগে বলে,
“ছয়বছর আগে সেই ট্রাক এক্সিডেন্ট থেকে বাচিয়েছিস কি আজ মারার জন্য?তুই কেনো আদ্রিজাকে একা রেখে বাইরে গিয়েছিলি বল?”
“ভাইয়া ভাবী ঘুমে ছিলো।কে জানতো আমি একটু বাইরে গেলে ভাবী উঠে নিজেই আগ বারিয়ে কলপাড়ে যেতে গিয়ে পা স্লিপ করে পড়ে যাবে।”
উহাশী কাদো কাদো হয়ে উত্তরটা দেয়। হ্যা সেই ট্রাক এক্সিডেন্ট হতে হতে সেদিন হয়নি। উহাশী ছুটে এসে আদ্রিজাকে ধাক্কা মেরে সে সহ রাস্তার ধারে পড়ে যায়। তাতে কারোর গুরুতর আঘাত না লাগলেও উহাশীর বা পায়ের উপর দিয়ে ট্রাকের এককোণায় ধাক্কা খেয়েছিলো বিধায় তার পা ভেঙ্গে গিয়েছিলো।ডাক্তার বলেছিলো হাটতে পারলেও সমস্যা হবে হাটাহাটিতে। সেজন্য সব ঠিক হলেও উহাশী এখন খুড়িয়ে হাটে। সেই ট্রাক এক্সিডেন্ট টা হতোনা, ওটা শাহীনের ঠিক করা লোকের দ্বারা এক্সিডেন্টটা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।পরে এসব উষশী জানিয়ে দেয় আমানদের।উষশী শাহীনকে ট্রাকের ড্রাইভারদের সাথে ফোনালাপ করার সময় শুনে নিয়েছিলো। পরে এসব জানালে শাহীনকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়। শাহীনকে যখন উষশী জিগাসা করা হয়েছিলো এমন কেনো করলো সে? শাহীন হেসে উত্তর দিয়েছিলো, ঐ মেয়েটার জন্য নাকি তার আর উষশীর মাঝে দূরত্ব,সমাজের মানুষের অপমান তার জীবনের সুখ কেড়ে নিয়েছিলো। যে মেয়েটাকে নিয়ে সমস্যা তাকেই দুনিয়া থেকে সরাতে চেয়েছিলো সে। সবাই জানতো এক্সিডেন্টে মারা গেছে। কিন্তু ভাগ্য খারাপ উষশী সবটা জেনে যায়। সত্য যে চাপা থাকেনা আর হিংসা যে ধ্বংস ডেকে আনে জীবনে তার জলজ্যান্ত প্রমাণ শাহীন। আর সেটারই প্রমাণ পায় উষশী। শাহীনের চোদ্দ বছরের জেল হয়। তারপর উষশীকে আদ্রিজা নিজে গিয়ে মির্জা বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। ধীরে ধীরে জীবনের বিষাদ ভুলে গিয়ে আস্তে আস্তে আগলে ধরে প্রতিটা মানুষকে। এরমাঝে বছর তিনেক আগে ফখরুল মির্জা মারা গেছে তার অসুস্থার জন্য। রুহিনা বেগম বিছানায় পড়েছেন। মা বেচে আছে অথচ সন্তান মারা গেছে এর থেকে কষ্টের কিছু কি হয়?মায়ের আত্মা মানে কি? ফখরুল মির্জাকে সঠিক পথে না আনতে পারার শাস্তিটা হয়তো এটাই পাচ্ছেন রুহিনা বেগম। উহাশী আর উষশীও বাবার পাপের কথা চেপে রেখে আজ উহাশীর পায়ের সমস্যা বিধায় সমাজের অনেক ভালো পরিবার বিয়ের সমন্ধ এনেও ফিরে চলে যায়। আর উষশীর তো সংসারটাই ভেঙ্গে যায় অথচ এই সংসার আগলাতে শাহীন তালুকদার ফখরুল মির্জার কথায় তাল মিলিয়েছিলো। সেও আজ জেলে পচে মরছে। আজ আদ্রিজার ডেলিভারী ডেট। ওটিতে চলছে সিজারের অপারেশন। আমান আর আদ্রিজার মাঝে সব ঠিক হতে দুবছর সময় লেগেছে। আদ্রিজা সব ভুলে সবাইকে আপন করে নিয়ে আগলাতে সক্ষম হয়েছে। সে তাহিফের আবদারে আবারও বাচ্চা নিয়েছে। কিন্তু তার পিরিয়ড সমস্যা ছিলো আগে থেকেই। বাচ্চা কন্সিভ করাই তার পক্ষে ক্ষতিকর। তাহিফ হওয়ার পর ডাক্তার মানা করে দিয়েছিলো আর বাচ্চা না নিতে। কিন্তু আদ্রিজা সবার থেকে কথাটা লুকিয়ে আবারও বেবি কন্সিভ করেছে।পরে চেকআপ করতে গিয়ে ডাক্তার আমানকে সবটা জানায়। তখন থেকেই আমান ভয়ে ভয়ে সব কাজ ফেলে আদ্রিজার খেয়াল রাখতো, সে না থাকলে উহাশী থাকতো আদ্রিজার সাথে।আর তাহিফ তো এখন বড় হয়ে গিয়েছে, দশবছরে পা দিয়েছে সে নয় পেরিয়ে। সেও মায়ের খেয়াল রাখতো। আজই সকালে আমানের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় শহরে গিয়েছিলো। উহাশীকে রেখে গিয়েছিলো। এদিকে আদ্রিজারও নয়মাস চলছিলো প্রেগ্ন্যাসির। ডাক্তার বলেছিলো যখন তখন ডেলিভারি পেইন উঠতে পারে। সকালে যখন আমান চলে যায় কাজে; তখন আদ্রিজা ঘুমে ছিলো। তাই তাকে না ডেকে উহাশীকে রেখে চলে যায় আমান। উহাশীরও একটা ফোন কল আসায় কথা বলতে বলতে উঠোনের বাইরে চলে যায়। তখন আদ্রিজা উঠে নিজে নিজে কলপাড়ে যেতে নেয়। তাহিফও পাশে ছিলোনা যে হাত ধরে নিয়ে যাবে। সে তার দাদী, আর উষশী ফুফুর আর তার ছেলেমেয়ে সহ সবার সাথে খেতে বসছিলো। আদ্রিজা কাউকে না ডেকে নিজে একা একা যেতে ধরে বারান্দার সিড়ি দিয়ে নামতে ধরে পা মচকে পড়ে যায় আদ্রিজা। উহাশী তখন ফোন কেটে বাড়িতে ঢুকছিলো। চিৎকার করে সে এগিয়ে আসে আদ্রিজার কাছে। তার চিৎকারে সবাই এগিয়ে আসলে উহাশী কল করে আমানকে বলে বাড়িতে আসতে। বাড়ির কাজের লোক গাড়ি ডেকে আনলে হাসপাতালে ছুটে উহাশী আর উষশী। পরে আমানরা সব উপস্থিত হয় সেখানে।
ওটির লাল বাতি যখন ওফ হয়ে যায় অতীতের স্মৃতি বিচরণ থেকে বর্তমানে ফিরে আমান। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হয় বড্ড বেশিই দীর্ঘ হয়। এজন্য ধীরে ধীরে অতীতের পাতা আওড়ে দেখছিলো সে। ডাক্তার ওটি থেকে বের হয় তার সাথে সাথে বের হয় একজন নার্স। যার হাতে সাদা তোয়ালে জড়ানো একটা ফুটফুটে বাচ্চা। সবাই হন্তদন্ত হয়ে ডাক্তারকে ঘিরে ধরে।ডাক্তারকে কিছু জিগাসা করবে, ডাক্তার নিজেই ভরকে যান সবাই এভাবে ধরায়। আমান তাড়াতাড়ি করে ডাক্তারকে জিগাসা করে,
“ডাক্তার সাহেব আমার ওয়াইফ?”
“সি ইজ আউট ওফ ডেন্জার। বাট উনাকে হাসপাতালে থাকতে হবে সাতদিন। উনার প্রোপার মেডিসিন নিতে হবে সাথে চেকআপও করতে হবে। আর উনাকে মেন্টালি কোনো প্রেশার বা টেনশন দিবেন না আর সবাই একত্রে ভীর করে দেখতে যাবেন না। তাই আপনারা একে একে গিয়ে দেখা করবেন। ২৪ঘন্টা পর উনাকে কেবিনে শিফট করা হবে। তখন দেখা করতে পারবেন। আর কংগ্রাচুলেশনস, আপনাদের ফুটফুটে একটা মেয়ে হয়েছে।”
কথাগুলো বলেই ডাক্তার সাহেব চলে যান। সবার আত্মায় যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে তাদের নতুন সদস্যকে দেখতে থাকে। আমান নার্সকে বলেই আদ্রিজাকে দেখতে ছুটে। সেখানে গিয়ে আদ্রিজার পাশে বসে হাতে চুমু খায় হাত ধরে। নিরবে চোখের জল ফেলে সে। আদ্রিজাকে হারানোর ভয়টা সে কাটাতে পারেনা। কিভাবে পারবে আদ্রিজা তো তার জীবনের চোরাবালি। যার ভিতর আটকালে মুক্তির আর উপায় নেই।
৩৫,
চোখ পিটপিটিয়ে খুলতেই নিজেকে হাসপাতালের বেডে দেখতে পাই। বাম হাতে স্যালাইনের সুচ ফুটানো যাকে বলে ক্যানেলা। উঠে বসবো বলে চেষ্টা করতেই একজন নার্স ছুটে আসলেন। পেটে অসম্ভব ব্যাথা অনুভব করছি। আমার সন্তান, তার কথা মাথায় আসতেই কেমন আত্মার ভিতর মোচর দিয়ে উঠলো। পেটে হাতটা চলে গেলো। না পেটটা আগের মতো নেই। আমি নার্সকে তড়িঘড়ি করে জিগাসা করলাম,
“নার্স আমার বাচ্চা?”
“এই যে আমাদের মেয়ে আদ্রিজা। প্লিজ হাইপার হবেনা। ডাক্তারের বারণ আছে।”
আমান কেবিনে ঢুকতে ঢুকতে কথাটা বলে। আমি সেদিকে তাকাই। ও হাতে সত্যিই একটা বাচ্চা। আমার সামনে এসে টুলে বসে বাচ্চাটাকে আমার সামনে ধরে। আমি কোলে নিবো বলে হাত বাড়াতেই ক্যানেলার টান অনুভব করি। আমি আমানের দিকে অসহায় চোখে তাকাই। ও আমাকে আসস্ত করে, নার্সকে বলে স্যালাইন খুলে দিতে।তারপর আমি মেয়েটাকে কোলে নেই।
“আমাকে ভুলে গেছো মাম্মা?”
তাহিফ কথাটা বলে। ও কেবিনের দরজায় দাড়িয়ে আছে। আমি মুচকি হাসলাম। ওকে ইশারায় কাছে ডাকলাম। তাহিফ মুখ ফুলিয়ে কাছে আসলো। আমি ওকে আমানের কাছে দাড়াতে বললাম। ও তবুও মুখ গোমড়া করে আছে। আমি তা দেখে তাহিফকে বললাম,
“মাম্মার কাছে তার প্রিন্স তো একটা প্রিন্সেস গিফট চেয়েছিলো, মাম্মা কি ঠিক বলছে তাহিফ?”
“ইয়েস।”
তাহিফের ছোট্ট উত্তর। আমি হাসলাম,সাথে আমানও। আমি বললাম,
“মাম্মার কাছে প্রিন্সেস চেয়ে প্রিন্স কেনো রাগ করে তবে? প্রিন্সেস কে তো ভাম্পায়ারদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে তাইনা?”
তাহিফ এবার হাসে আমার কথায়। ওকে ঘুমানোর আগে ভাম্পায়ার আর রাজা-রানির গল্প বলতাম। সেখানে প্রিন্সের বোন আছে শুনে তাহিফও জিদ করতো বোনের জন্য। আল্লাহ সে দুয়া কবুল করেছেন। আমরা মা-ছেলে মেয়েটাকে নিয়ে গল্প করতে লাগলাম। কি নাম রাখবো না রাখবো সেসব নিয়ে।
“শুনো তোমার তো সেন্স আসলো একদিন পর। আর ছয়দিন পর তোমার রিলিজ, আর সেদিনই আমাদের ছেলে মেয়ে দুজনেরই আকিকা হবে।তাহিফের তো হয়নি আকিকা; তাইনা?”
আমান হঠাৎ কথাটা বলে উঠে। আমি কিছু বলবো তার আগেই দেখলাম সাইফা আর বৃষ্টি হুড়মুড়িয়ে কেবিনে ঢুকলো। আমি ওদের দেখে সারপ্রাইজ হলাম। ওরা কাদো কাদো ফেসে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি কিছু বলবো তার আগেই সাইফা এসে আমার কোল থেকে বাচ্চাটাকে নিয়ে বলে,
“আমার ছেলের বউ এটা। আর তাকে দুনিয়ায় আনতে তোর যে কষ্ট হয়েছে তার জন্য তোর খবর আছে। কেনো লুকিয়ে লুকিয়ে কন্সিভ করতে গেছিলি?”
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম ওর কথায়। এটা ঠিক ওর এরমাঝে একটা ছেলে হয়েছে, তিনবছরের ছেলেটা নাম আরাফাত।বৃষ্টিরও মেয়ে হয়েছে এর মাঝে নাম রেখেছে আরিয়া। বৃষ্টি তো রিতিমতো কেদে দিয়েছে। ও নিজেও বললো,
“তোর ছেলের বউ করবি আমার মেয়েকে। কিন্তু তার আগেই পটল তোলার ব্যবস্থা কেনো করছিলি?”
“তোরা থামবি? কি সব আবল তাবল বকে যাচ্ছিস!”
ওরা আমার ধমকানিতে থেমে যায়। আমি আমানকে বলি,
“বাসায় যাওয়ার ব্যবস্থা করো। ভালো লাগছেনা আমার।”
“ডাক্তারের কড়া নিষেধ।সুস্থ হও যাবে।আর বৃষ্টি আর সাইফা তোমরা থাকো ওর কাছে আমি আসছি।”
কথাটা বলেই হনহনিয়ে চলে যায় আমান। আমি সেদিকে তাকিয়ে নজর দিলাম বৃষ্টি আর সাইফার দিকে। সবার সাথে টুকটাক কথা বলতে লাগলাম।
মেয়েকে খাওয়ানো, সময় মতো নিজের খাওয়াদাওয়া,মেডিসিন নেওয়া এসব করতে করতে কেটে যায় সাতটা দিন। এরমাঝে আম্মা আর শ্বাশুড়ি মা এসে থেকেছেন আমার সাথে। বাকিরাও এসে এসে দেখা করে গেছে। আজ আমার রিলিজের ডেট। আম্মা আমার সাথে আছে এখন।আমান কল করেছিলো, আকিকার পশু জবাই হচ্ছে বাড়িতে। সেটা হলেই সে আসবে নিয়ে যাবে। ওর জন্য অপেক্ষা করতে করতে মেয়ের সাথে এমনিই কথা বলছিলাম। কথা বলতে না জানলেও মা তো সন্তানের সাথে কথা বলা মায়েদের স্বভাব।আম্মা বাইরে ডাক্তারের সাথে কথা বলে রিসিপশনে গেছেন সব ফর্মালিটি পূরণ করতে। আধাঘন্টা পর আমান সহ আম্মা এলেন আমায় নিতে। সবশেষে সব সেড়ে বাসার উদ্দ্যেশে রওনা দিলাম আমরা।
বাড়িতে ঢুকতেই তাহিফ,বিন্দি আর বিশাল আসলো মাম্মা বলে চিৎকার করে। বিন্দি আর বিশালও আমায় তাহিফের সাথে তাল মিলিয়ে মাম্মা বলে ডাকে। বাড়ির বাকিরাও ছুটে আসলো। পুরো বাড়ি মানুষে মানুষে গিজগিজ করছে। আকিকার জন্য দাওয়াত করা হয়েছে অনেক মানুষকে। আমানকে হুজুররা ডাকলেন। বাচ্চা সহ আমায় যেতে বললেন। দুয়া পড়ে দিয়ে নাম রাখার কথা বললেন। আমার সাথে বাড়ির সব মানুষ গেলেন। আমাকে আর মেয়েকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে হুজুর সাহেব দুয়া করে দিলেন।
“আদ্রিজা মা কি নাম রাখবে মেয়ের?”
আব্বার কথায় ভাবলাম কি নাম দিবো মেয়ের? পরে ধীর স্বরে বললাম,
“আমান আর আদ্রিজার মেয়ে হবে আমায়া। আর সাথে সবাইকে একটা গুড নিউজ দিতে চাই।”
সবাই আগ্রহ নিয়ে তাকালো, আমি একবার উহাশী আর একবার আলিফের দিকে তাকালাম।তারপর বললাম,
“উহাশী আর আলিফের বিয়ে দিতে চাই আমি। আপনাদের মতামত কি?যেহেতু সবাই এখানে উপস্থিত তাই বললাম। আর আমি আশা করি ওদেরও মতামত আছে এই সিদ্ধান্তে। আমি খেয়াল করেছি ওদের, আমি আশা করি ওরা একেওপরকে পছন্দ করে।”
সবাই আলহামদুলিল্লাহ বললেন। আলিফ আর ইহাশী লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো।বাড়ির সবাই খুশি, আমিও সবার দিকে তাকালাম।আম্মা,আব্বা,আলিফ,আৃার শ্বাশুড়িমা,দাদী,উষশী আপা,বিন্দি,বিশাল,তাহিফ,বৃষ্টি,ওর বর, ওর মেয়ে আরিয়া,সাইফা,ওর বর আর ছেলে আরাফাত সবকাছের মানুষগুলোর মুখে হাসি। সবাই সবার জীবন নিয়ে খুশি।লেপ্টে থাকুক এই খুশি গুলো। আমান আমার কাধে হাত রাখলো। আমি ওর দিকে তাকালাম। ও আশ্বাস দিলো সব ঠিক থাকার। বাড়ির বাকি সবার দিকে তাকালাম, সবার মুখে হাসি। আমার সংসারটা ভরা থাকুক। কোনো অশান্তি না ছুতে পারুক। মেয়ের কপালে চুমু খেলাম। প্রতিটি মেয়ের জীবন সুখে ভরে উঠুক। আমার মতো পরিস্থিতি কারোর না আসুক।সবার হাসিতে আমার ঠোটেও হাসি বিস্তৃত হলো।এমনটাই থাকুক সবসময়।
সমাপ্ত।