#চোরাবালি
#পর্বঃ১৩
#আহিয়া_আমান_অণু
২৯
আজ গুনে গুনে পুরো চারবছর দুইমাস পর মির্জা বাড়ি পা দিলাম। দেওয়ার ইচ্ছেটা ছিলোনা, কিন্তু নিজের পরিবার আর সন্তানের কথা ভেবে দিয়েছি পা। আমানের কোলে তাহিফ হাসছে। একজন মায়ের কাছে সন্তানের হাসিটা সর্বপ্রথম। তাহিফ তো ততটা বুদ্ধিমান নয় যে ওর মায়ের অপমান বুঝে বাবাকে ত্যাগ করবে। আমি চাইও না বাবাকে ত্যাগ করুক। আমি নিজে যেখানে আব্বা-আম্মার আদরে বড় হয়েছি, আমিও চাই আমার ছেলেটাও তার বাবার স্পর্শ,আদর,স্নেহটা পাক। উচ্ছলে বেড়ে উঠুক। বাড়িটা কেমন মরুভূমির ন্যায় হয়ে গেছে। প্রাণবন্ত নেই, আগেও ছিলোনা। বিয়ের পর প্রথম এই বাড়িতে পা দিলে বিয়ের বাড়ি হিসেবেও ছিলোনা কোনো আনন্দ। মরুভূমিতে পা দিয়েছিলাম বলে আজ চোরাবালিতে আটকে আছি।
“কি রে মা ভেতরে আয়, বাইরে খাড়াই আছোস ক্যান?”
উঠোনের দরজায় দাড়িয়ে আনমনা হয়ে গিয়েছিলাম। আমানের মায়ের ডাকে সামনে তাকাই। উনি হাসিমুখে দাড়িয়ে আছে। এই মানুষটাও তো আমায় ঘৃণা করেছিলো। তবে আজ আবার এত ভালোবেসে ডাকছে যে! আমানের দিকে তাকালাম। ও নিজেও ইশারা করলো ভেতরে ঢুকতে। ভেতরে ঢুকতেই দাদী শ্বাশুড়িকে দেখলাম বারান্দায় চেয়ার পেতে বসে আছেন উনি। মুখে হাসি লেগে আছে, পান খান উনি। পানের লাল রং এ ঠোট লাল হয়ে আছেন উনার। বয়স্ক মানুষ হিসেবে উনাকে আমার ভালো লাগে খুব। কিন্তু উনি আমার ব্যাপারে কেমন ধারণা রাখেন তা নিতান্তই অজানা আমার। শ্বাশুড়িমা এগিয়ে এসে কপালে চুমু খেলেন। আমি হাসলাম, সুখের হাসি নয় তাচ্ছিল্যের।
“বাড়ির মায়াবতী বাড়িতে ফিরছে, আবার বাড়িটা প্রাণ ফিরে পাইবো।!
শ্বাশুড়িমা কথাটা মৃদু হেসে বললেন। তাহিফের দিকে তাকালাম, ছেলেটা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে পুরো বাড়ি দেখছে। নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ, ছেলেটা যে ভয় পাচ্ছে বুঝতে পারছি। আমি আমানের থেকে তাহিফকে নিয়ে নিলাম কোলে। আমান নিঃশব্দ, কিন্তু আমার যে ওর প্রতি রাগ তা কমানোর উপায় নেই। নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে চুপ আছি। শ্বাশুড়িমার সামনে দাড়ালাম তাহিফকে নিয়ে।তারপর ওনাকে দেখিয়ে বললাম,
” এই যে ইনি, ইনি তোমার দাদীমা। সালাম দাও।”
তাহিফ সালাম দিলো,উনি হাসিমুখে সালাম নিয়ে তাহিফকে কোলে নিতে চাইলেন। তাহিফ গেলোনা, হয়তো ভয় পাচ্ছে। আমি ধীর পায়ে দাদীর সামনে গেলাম। উনাকে সালাম দিলাম। এই মানুষটা আমার ঐ বাজে সময়ে আমাকে আগলে ধরেছিলেন। বাবাকে খবর দিয়ে সুষ্ঠু ভাবে যেতে সাহায্য করেছেন। নয়তো উনার ছেলে মানে আমার শ্বশুরমশাইয়ের কবলে পড়ে সেদিনই যা সম্মান ছিলো তা আর থাকতোনা। উনি হাসিমুখে সালাম নিলেন। আমি তাহিফর দিকে তাকিয়ে উনাকে দেখালাম। বললাম,
“উনি বড়আম্মা, উনাকে ভয় পাবেনা। উনি তোমায় ভালোবাসবে,আদর করবে ভয় পাবেনা ঠিক আছে? সালাম দাও উনাকেও।”
তাহিফ আমার কথা রাখলো। বাচ্চাটা বাধ্য সন্তান আমার। দাদী ওর দিকে হাত মেলালো কোলে নিতে। আমি তাহিফকে ইশারা করলাম যেতে। তাহিফও কোলে গেলো।
“ঘরে চলো ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ো। রাত অনেক হয়েছে। ”
আমান পাশে দাড়িয়ে কথাটা বললো। আমি শুনেও না শুনার মতোয় পাত্তা দিলাম না। এই মানুষটা আমার জীবনের মোড় কি থেকে কি করে দেয় জানিনা। ভুল করেছিলাম ভালোবেসে, নয়তো এত মাশুল দিতে হয় নাকি! আমানকে পাশ কাটিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়ালাম। বাড়ির সবকিছু আগের মতোয় আছে, শুধু অনেক জায়গায় পুরোনো আসবাবপত্রের জায়গায় নতুন কিছু আসবাবপত্র জায়গায় পেয়েছে। বারান্দা ধরে হেটে সবশেষে কোণার রুমটা আমানের ঘর। সেখানে চলে আসলাম নিজে একাই। শ্বাশুড়ি আমার সাথে আসতে চাইলো বাধা দিলাম। আমানের ঘরে আলমারী খোলাই ছিলো, সেখান থেকে একটা শাড়ি বের করে নিলাম। বাপের বাড়ি থেকে আসার সময় কাপড় আনতে চেয়েছিলাম, আমান নিষেধ করেছিলো। এমনিতেই ওর উপর আমার অনুভূতী কাজ করেনা। আবার আজ যা করলো, অনুভূতি মরে গেছে তাতে।
“মাম্মা।”
তাহিফের ডাকে দরজার দিকে তাকালাম। আমানের হাত ধরে দাড়িয়ে আছে। মুখে হাসি লেপ্টে আছে আমার বাচ্চাটার। আমি হাত দিয়ে ইশারা করলাম কাছে আসতে। তাহিফ দৌড়ে কোলে উঠলো এসে।আমি কোলে নিলাম। তারপর বললাম,
“কিছু বলবে মাম্মাকে?”
“তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি মাম্মা। থ্যাংক ইউ তোমাকে। আমার বাবাকে আমার কাছে এনে দেবার জন্য। ”
তাহিফের কপালে চুমু দিলাম। বললাম,
” বাবাইয়ের সাথে আড্ডা দাও। মাম্মা ফ্রেশ হয়ে আসি।”
তাহিফ নেমে গেলো কোল থেকে। আমিও আমানকে পাশ কেটে গেলাম কলপাড়ে।শ্বাশুড়ি মা খাবার টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে দেখলাম। দাদীকে কোথাও দেখলাম না, হয়তো ঘরে চলে গেছে। কলপাড়ে গিয়ে ফ্রেশ হতে লাগলাম।বিকেল থেকে ঝামেলার মাঝে সময় পার হলো।
৩০
পরেরদিন সকালবেলা,
সময়টা নয়টা বাজে মনে হয়। আমানদের পুকুরপাড়ে দাড়িয়ে আছি, ভালো লাগছেনা কিছু। মনের বিরুদ্ধে কিছু করলে খারাপ লাগারই কথা। কাল আমান যা করলো তাতে মন বিষিয়ে গেছে। অবশ্য ও ওর জায়গায় ঠিক আছে। গ্রামের মানুষ পুকুরের অপরপাশে আল ঘেষে কৃষকরা লাঙল কাধে আবাদ করতে জমিতে যাচ্ছে। মাঘের শেষ, নবান্নের ধান কেটে আবার জৈষ্ঠ্যমাসের ধান বুনতে তোড়জোড় চলছে। কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশটায় শীতে শরীরে হীম ধরে যাচ্ছে। তাহিফ আর আমানকে বিছানায় রেখে উঠে এসেছি। রাতে তাহিফ জিদ করেছিলো মা আর বাবার মাঝখানে ঘুমাবে বলে। আমান ঠিকই বলে, ও আমার জীবনে চোরাবালি। চোরাবালিতে পা আটকালে মুক্তির উপায় থাকেনা। আমারও হয়তো তার সাথে আটকে থাকতে হবে।
“এখানে দাড়িয়ে কি করো? ”
আমান পাশে এসে দাড়িয়ে কথাটা বলে। আমি উত্তর দিলাম না ভালো লাগছেনা। আমান কাধে হাত রাখে এরপর। আমি ছিটকে দূরে সরে যাই। এই মানুষটার ছোয়া আমার সহ্য হয়না। আমান কেমন অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে। ভালোবাসার মানুষ জীবনে আছে, চোখের সামনে আছে অথচ তার থেকে অবহেলা পাচ্ছে, এর থেকে বড় শাস্তি হয় কিনা জানিনা। শারীরিক শাস্তি কয়দিন থাকে,কিন্তু মানসিক শাস্তির মতো শাস্তি হয়না। আমান আমার সাথে যা করেছে তাতে ওর প্রতি অনুভূতি জন্মানোর কোনো কারণ দেখছিনা।
“এতটা ঘৃণা করো যে সামান্য ছোয়াও ছুতে দিচ্ছো না?”
“ঘৃণার পাত্র হতেও নিম্নতম অনুভূতি লাগে আমান সাহেব। আমার সেই অনুভুতির এক টুকরোও নেই আপনার প্রতি। ”
আমানের কথায় আমার সোজাসাপ্টা উত্তরে হতাশ হয় আমান। আবারও ঠোট নাড়িয়ে বলে উঠে,
“আমি মানছি আমার ভুল আছে,দোষ আছে। ক্ষমা কি করা যায়না? আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি তার বান্দাকে ক্ষমা করেন, আর তুমি আমার ভালোবাসা, আমার বৈধ স্ত্রী হয়েও ক্ষমা করতে পারবেনা।”
“যাক তাও ভালো অপরাধ স্বীকার করলেন। কিন্তু একটা কথা কি জানেন?”
‘কি কথা?”
“আপনি চাইলেই পারতেন সব আরও আগে প্রকাশ করে আমায় ফিরিয়ে আনতে। আপনি করেননি, এখন আমায় ফিরতে দেখে কেনো করছেন?আমি না আসলে হয়তো আপনি এটাও করতেন না, তাইনা? ”
আমান নিষ্প্রভ মলিন চাহনীতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমার এই কথা হয়তো ওকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। উত্তর আছে কি আদৌ এই প্রশ্নের।আমি শব্দ করেই নিশ্বাস ফেললাম। চলে আসতে নিলাম বাড়ির ভিতরে। তাহিফ কোথায় কো জানে।
“আমি নিজেও জানতাম না তুমি কোথায় ছিলে, খুজেছি তোমায় পাইনি। হয়তো পারতাম আরও আগে সব প্রকাশ করতে। কেনো করিনি কারণটাও বলেছি। জানোয় তো সমাজের মানুষের স্বভাবই এমন, নেই কাজ তো খই ভাজ। এরা সত্যি প্রকাশ পেলেও মজা লুটবে, মিথ্যা বললেও মজায় মজবে। শুধু শুধু কি দরকার ছিলো তাদের অযথা কথা বলার একটা টপিক দিয়ে। এখন তো কাল আমার-তোমার দুই গ্রামের মানুষ সত্যিটা জানে যে তুমি দোষী নও। দেখেছো তার কতটা আলোচনা-সমালোচনা করছে এই বিষয়টাকে নিয়ে। রাতে তো আমার সাথে আসার সময় দেখলে এমন একটা চায়ের দোকান নেই যেখানে দুলাভাই আর বাবাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। সবটা যেনো প্রকাশ না হয় সেজন্য কয়েকজনকে নিয়ে গেলাম তোমাদের বাড়িতে। সেখানে কথা কি হলো না হলো প্রকাশ পেয়ে গেলো। কারণ সত্যি তো আর চাপা থাকেনা। প্রকাশ পায় একদিন না একদিন। কাল পেয়েছে তোমার সত্যিটা।অনেক তো হলো আদ্রিজা, এবার এই বিষয়ে একটু কথা বলা ওফ করো। আমাদের ছেলের আনন্দের দিকে তাকাও। ও কতটা হ্যাপি দেখেছো?”
দুকদম বাড়ালেই আমান কথারা বলে। আমি থেমে যাই, ওর কথা শুনি। তারপর পিছন ফিরে মলিন হেসে বলি,
“হ্যা ঠিকই বলেছো, ছেলের হাসির জন্যই আমি নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দিতেও ছাড়িনি। কারণ জানো তো মায়ের মতো নিঃস্বার্থ কেউ হয়না। শতহোক মা তো আমি। মা হওয়ার পাশাপাশি সন্তানও আমি।কাল সমাজের বড় বড় নেতাদের নিয়ে গিয়েছিলে বাড়িতে আমায় আনতে। উনারা তো বিবাহিত,সন্তান আছে এমন সন্তানকে ঘরে রাখার জন্য আমার আব্বা-আম্মাকে সমাজ থেকে আলাদা করার কথাও তুলেছিলো।যদিও তুমি এসব বলতে পরে নিষেধ করো,তবুও শুনতে হয়েছে। শাহীন ভাই সব সত্যি স্বীকার করলে তারা মাফ চেয়ে নিয়েছে বলে রক্ষে। নয়তো কাল ওখানেই লাশ পড়তো আমার। এত অপমান মেনে নেওয়া যায়না। কি-ই বা করার নিয়তির লিখনে ছিলো, এটা তো খন্ডণ করা যায়না। আমার আব্বা-আম্মা আর তাহিফের কথা ভেবে এসেছি আমি।ভাববেন না আপনাকে ভালোবেসে এসেছি। সেটা জন্ম নেবার নয় আমান সাহেব।””
আমি কথাটা বলেই বাড়িতে চলে আসলাম। আমানও পিছু পিছু আসলো। বাড়িতে ঢুকতেই এমন কিছু দেখবো ভাবিনি। বাড়িতে আসার দশদিন পার হয়ে গেছে। একদিনও শ্বশুর মশাইকে দেখিনি। উষশী আপা উনাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।উহাশী তার সাথে হাত লাগিয়েছে। শাহীন দুলাভাইও আছে সাথে। কিন্তু উনি নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায় দাড়িয়ে আছে। আমার শ্বাশুড়ি মা উনিও বারান্দার এককোণায় চুপ করে দাড়িয়ে আছেন, উনার কোলে তাহিফ। দাদী শ্বাশুড়ি শীতের জন্য উঠেননি এখনও। বাবা যতই খারাপ হয় মেয়েরা বাবার থেকে মুখ ফিরাতে পারেন না।বাবা যে মেয়েদের মা বলে ডাকে। মায়েরা তো এত স্বার্থপর হয়না। উষশী আর উহাশী আপাও তেমনই। আমানের দিকে তাকালাম।সেও আমার মতোয় তাকিয়ে দেখছে। আমি তাকাতেই চোখাচোখি হয় ভালোমতো।আমি ইশারা করলাম উনাকে ধরে ঘরে নিয়ে যেতে। আমান আমার ইশারায় এগিয়ে গিয়ে উনাকে ঘরে রেখে আসলেন। উষশী আর উহাশী আপাও মাথা নিচু করে আমার কাছে আসলো। দুজনই হঠাৎ জড়িয়ে ধরে কেদে ফেললো। আমি মুহুর্তেই থমকে দাড়ালাম। এটা কি হচ্ছে,এনারা কাদে কেনো।নানান প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকলো। আমি এজন্য বলে উঠলাম,
“কাদছেন কেনো উষশী আপা? আর উহাশী তুমি কেনো কাদছো?”
দুবোনই আমার প্রশ্নে আমায় ছেড়ে দাড়ালো। নিজেদের সংবরণ করার চেষ্টা করে উষশী আপা মৃদুস্বরে বললেন,
“কাল আমানের করা কাজের খবর শাহীন আমাদের দিলেও আসতে চেয়েও আসতে পারিনি বাবার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। আমান তো খারাপ কিছু করতে যায়নি, এজন্য আর যাইনি,শাহীনকে পাঠিয়েছি সব দেখতে।সমাজের কিছু গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তোমায় ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলো বলে আমরা কিছু বলতে যাইনি।তোমাদের স্বামী স্ত্রীর ব্যাপার, তাছাড়া সবাই যখন ভালো বুঝে তোমায় ফিরিয়ে এনেছে এবার কি আমাদের ক্ষমা করা যায়না আদ্রিজা?বড় বোন হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা তো পরিস্থিতি আর নিজের বাবার লোভের স্বীকার। আর কতটুকুই বা করতে পারতাম আমরা? ক্ষমা চাচ্ছি, এবার এই সংসারটাকে একটু বাচিয়ে রাখো। ভালো লাগছেনা আর এত বিষের মতো মানুষের কথা ছুড়ি। আমার বাবাও তার পাপের শাস্তি পাচ্ছে দেখলে তো! আমি, উহাশী মায়ের চোখের মনি থেকে বিষ হয়েছি সব জেনেও চুপ থাকার জন্য। শাহীন ঐ যে আমার স্বামী নামক মানুষটা; তার মুখেও মানুষ থুথু ছিটাচ্ছে আমানের কালকের করা কাজের জন্য।ওর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর কতটা শাস্তি পেলে এই বাজে পরিস্থিতি থামবে বলোতো। আমি চাচ্ছি এবার অন্তত এসব থেমে যাক, সুন্দর একটা সংসার গড়ে উঠুক এই মির্জা বাড়িতে। আমান,আদ্রিজা আর আদ্রিমানের সুখের একটা সংসার গড়লে কি খুব ক্ষতি হবে?”
উষশী আপা কথাগুলো বলে থামলেন।কান্নার দমকে উনার কথাগুলো দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। উহাশী আর আমান উঠোনের এককোণে নিশ্চুপ দাড়িয়ে আছে। আমানের মা তিনিও কাদছেন। শাহীন ভাইও উদাশ দৃষ্টি মেলে সবাইকে দেখে যাচ্ছেন। তাহিফ ওর বাবার কোলে। সবার চোখের কোণে পানি। সবার কান্নার দমকে যেন প্রকৃতির বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এত বিষাদ কেনো আমাকে ঘিরে। মনের মধ্যে জ্বলে যাচ্ছে আমার। কি করবো আমি?
চলবে?
ভুলত্রুটি মার্জনীয়,