চৈত্রের_রাঙায়_রচিত_প্রণয় পর্ব-১৬

0
514

#চৈত্রের_রাঙায়_রচিত_প্রণয়
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_১৬

ঈদের ছুটিতে সারফারাজ আর অর্নিলা ফের এসেছে মোহনগঞ্জ।‌ তবে বেশিদিনের জন্য নয়। সারফারাজের ছুটি তেমন পাই নি। বিশ রোজ অবধি তো শহরেই ছিল। শাহিনুর বেগম কতোবার করে ফোন করলেন, চলে আসতে। একটাই তো রোজা, তাও বছর ঘুরে। তাও বুঝি দুজনের সময় হলো না। অর্নিলা ব্যস্ত পড়াশোনা নিয়ে আর সারফারাজ ব্যস্ত মেডিকেল নিয়ে। অর্নিলা তবুও যেন সকল ব্যস্ততা কাটিয়ে যেতে পারত কিন্তু গেলো না, কেমন করে যাবে? বরকে এখানে একা ফেলে কি যাওয়া যায়।‌ এতোদিন পর গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরত এসেছে যেন বুক ভরে শ্বাস নিল অর্নিলা।‌রোজার শুরু থেকেই আরাফাত এখানে। আরাফাত চান্স পেয়েছে বুয়েটে। যাক, তার স্বপ্ন পূরণ হলো। তাদের এক জুটির দুই স্বপ্ন ছিল। একজন পূরণ করতে পেরেছে বলে অর্নিলা বেশ খুশি। সেখানে হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করছে সে।‌ অর্নিলা বসার ঘরে এসেই দেখতে পেল আরাফাত চেয়ারে বসে আম খাচ্ছে। অর্নিলা আহম্মক এর মতো কতোক্ষণ চেয়ে রইল।‌ দুপুর গড়িয়ে গেছে। এই রোজার সময় এতো বড় হাবলা ছেলে নাকি রোজা রাখেনি। সোফার কুশন গায়ে ছুঁড়ে মেরে বলল, “কি রে হাবলা! তুই রোজা রাখিস নি কেন?”

আরাফাত উল্টো হাসল। বলল, “খাবি!” এ তার ছেলেবেলার অভ্যাস। সবসময় অর্নিলা কে জ্বালাতন করা তার চাই। অর্নিলা মুখ ভেংচি কেটে বলল, ”আমি তোর মতো নাকি রে? আম্মু জানে তুই এই কাজ করেছিলি। মা! ও মা এসে দেখো। তোমার হাতির মতো ছেলে রোজা না রেখে আম খাচ্ছে!”

সারফারাজ ব্যাগ হাতে নিয়ে ঢুকল। ঘেমে একাকার! ক্লান্ত দেহ নিয়ে সোফায় বসে পড়ল। শাহিনুর বেগম ছেলের পিছন পিছন এসে মাথার উপর ফ্যানটা ছেড়ে দিলেন। ধীরে সুস্থে বললেন, “ওকে বলিস না,‌ ও শরীর ভালো নেই।”

“শরীর ভালো নেই! অ্যাহ, সব ঢং। ছেলে তো তাই দোষ দেখতে পাও না।

“এভাবে কেন বলছিস। আমি কি সবসময় তোর দোষ দেখি বল তো। ছেলেটা গতকাল থেকে ইফতারের পর থেকেই শরীর টা খারাপ। কয়েকবার বমি করেছে। স্যালাইন ও দিয়েছে রাতে একটা। আজকের দিনটা যাক।

“হ্যাঁ, তাই বলে এভাবে রাক্ষসের মতো খাওয়া দাওয়া করবে।

“চুপ কর। এভাবে বলিস না। সারফারাজ, তুমি রোজা তো!”

সারফারাজ মাথা নাড়ল। অর্নিলা মুচকি হেসে বলে, “আমিও রোজা মামনী! লক্ষ্মী মেয়ে, তোমার ছেলের মতো অর্কমা না!”

“ভালো হয়েছে। যা ঘরে নিয়ে ফ্রেস হয়ে নে। সারফারাজ ঘরে যাও।”

সারফারাজ উঠে দাঁড়াল। এক হাতে ব্যাগ নিয়ে সামনে এগিয়ে গেল। আরাফাতের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, “শরীর কেমন? ভালো তো! প্রেসার লো ছিলো নাকি?”

“হ্যাঁ, তেমনটাই। একদম নিচে নেমে গেছে। এখন ভালো আছি। কিরে বুড়ি? আম খাবি।‌ এই দেখ…
বলেই কামড় বসাল। অর্নিলা মুখ ভেংচি কেটে চলে গেলো। আম তার ভীষণ পছন্দ। আর এই পাকনা ছেলে তাকে এভাবে খোঁচা দিচ্ছে! সারফারাজ মৃদু হেসে বলল, “পড়াশোনার চিন্তা এবার একটু কমিয়ে কর। তাহলেই শরীর ঠিক থাকবে!”
.
তারাবীহ নামায শেষে সারফারাজ, আরাফাত আর আরিফ হাসান একসাথে বাসায় ঢুকলেন। অর্নিলা বেলের শরবত করে রেখেছিল। মা ও নামাজ শেষে ঘর ছেড়ে বের হলেন। বসার ঘরে সবাই একসাথে। দেখে তার ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। দুদিন বাদে, শ্রেয়মী, রুদমিলা, ফরহাত সকলে চলে আসবে। বাড়ি আরো জমজমাট হয়ে উঠবে। ভাবতেই খুশিতে তার চোখ দুটো ভরে উঠল। দ্রুত চোখ মুছে‌ খাবারের কথা বললেন তিনি। সারফারাজের শরীর ম্যাজম্যাজ করছে। সে বলে উঠল, ”এখন আর খাবো না। ঘুমাবো। মাঝরাতে একবারে উঠে খাবো।”‌ হাঁটা ধরল ঘরের দিকে। পিছন পিছন এসে হাজির হলো অর্নিলা। সারফারাজ তখন সবে গায়ের পাঞ্জাবী খুলে বিছানার উপর রাখল। অর্নিলা পাঞ্জাবি হাতে তুলে নিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ফারাজ ভাইয়ের দিকে। ব্যাপারটা সে বুঝতে পেরেছে। সেও এদিক ফিরল। দুজনের চোখাচোখিতে অর্নিলা মুখ টিপে হেসে উঠল। তার লজ্জা মাখা হাসির মানে দাঁড় করাতে সময় লাগল না সারফারাজের। ড্রয়ার থেকে একটা টি শার্ট নিয়ে অর্নিলার মাথা টোকা মেরে বলল, “রোজার মাসে এসব আজেবাজে চিন্তা বাদ দে অনি!”

“ওমা আজে বাজে চিন্তা আবার কি ফারাজ ভাই? আমার হক আছে আপনার উপর।”

”রোজার মাসে যেন একটু বেশিই হক নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছিস।”

“অবশ্যই তা তো করতেই হবে। আচ্ছা ফারাজ ভাই, আপনার আমাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করে না।”

“ছিঃ ছিঃ রোজার দিনে এসব কী ধরণের কথাবার্তা!”

“তো কি? রোজা তো দিনে ছিলাম এখন তো রাত।”

“রোজার মাসে আল্লাহর দরবারে দোয়া চাইতে হয় অনি। ওসব কর!”

“স্বামীর খেদমত করলেও কিন্তু সোওয়াব আছে ফারাজ ভাই!”

কথাখানি বলেই মুখ টিপে হাসল অর্নিলা। সারফারাজ গম্ভীর মুখে বলে উঠল, ”তোর মতো নির্ল/জ্জ মেয়ে আমি একটাও দেখেনি অনি। কতো মুখ পাতলা মেয়ে তুই!”

”এমন নিরামিষ বর পেলে সব মেয়েরাই নির্ল/জ্জ হয়ে যাবে। আচ্ছা, আপনি কি একটু বলেন। সে তে সেদিন একবার চুমু খেলেন এরপর তো ধারে কাছেও ঠেকলেন না। সোজাসুজি বলুন, আমায় আপনার ভালো লাগে না!”

সারফারাজ শীতল দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে বলে উঠল, “তুই নিজেই ভেবে দেখ, এ’কদিন আমি নিঃশ্বাস ফেলার সময়টুকু পেয়েছি কি না!” চলে গেলো ওয়াশরুমে। অর্নিলা চুপ হয়ে ভাবতে লাগল। সত্যিই তাই, এ’কদিনে ফারাজ ভাই তেমন একটা ঘরে থাকেনি। সেই সকাল বেলা ঘর থেকে বের হওয়া লোকটা সন্ধ্যায় ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরত। তাকে দেখতেই তখন মায়া লাগত। গায়ের এপ্রোন সহ ভিজে উঠত ঘামে। মেডিকেল এ তার উপর কি ধকল যাচ্ছে সেটা সে বুঝতেই পারছে। এরপর তো রোজ রাতেই পড়ার টেবিলে বসে থাকত। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটা তার ছেলেবেলা থেকেই। সেই স্বপ্নের পিছনে এখনো সে ছুটছে। অথচ টের পাচ্ছে না,‌তার জন্য ও তো কেউ অপেক্ষা করছে। সেও তো তার মতোই ছোট থেকে তার পাত্তা পাবার চেষ্টা করত। তাও বললে কম হবে। সেদিন মাঝরাতে উঠেও ফারাজ ভাইকে হসপিটাল যেতে হয়েছে। ইমার্জেন্সি ছিল। তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে কখন যে ভোরে চোখ লেগে গেলো টের পায়নি অর্নিলা। অতঃপর যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন তার চক্ষু চড়কগাছ! কলিং বেল বাজছে সেই কখন থেকে। কি গভীর ঘুমেই না ছিলো সে। ফারাজ ভাইয়ের ৪৯ টা মিসকল। আধ ঘন্টার কম তো হবেই না। ছুটে এসে দরজা খুলল সে। চিন্তায় তার বুক ধুক পুক করছিলো। ভেবেছিল এখনি একটা ধমক খাবে। কিন্তু যখন ফারাজ ভাই তার দিকে ফিরে মলিন হাসি হেসে বলে উঠল, ”ঘুমিয়েছিলি নাকি অনি?”

সে তখন মুখ ফুটে শব্দ করেনি, একটা কথাও বের হয়নি তার কণ্ঠ থেকে। শুধু ইচ্ছে করছিলো কাঁদতে। আগে মনে হতো ফারাজ ভাই বুঝি কিছু থেকে কিছু হলেই রেগে যায়। কিন্তু না, সে কখনো রাগতে পারেনা। এমন সহজ সরল একটা মানুষ আবার রেগে থাকে কি করে। এরপর রোজা! এতোগুলো রোজা গেলো, সে প্রতিদিন রোজা রেখে মেডিকেলে ছোটাছোটি করে এসেছে। মাঝে মাঝে তো মাঝরাস্তায়ই মাগরিবের আজান দিয়ে দিত। কে জানে কিভাবে সামাল দিতো। অনি বুঝে পারে না, এই লোকটা এমন কেন? দরজা খোলার শব্দ। ফিরে তাকাল সে। সারফারাজ চেঞ্জ করে বের হয়েছে। পরনে বাদামী রঙের টি শার্ট আর ট্রাউজার। দেখে বড্ড ক্লান্ত লাগছে। এখনি বিছানা পেলে সে ঘুমিয়ে পড়বে। সত্যি সত্যি তাই হলো। সে ঘুমিয়ে পড়ল। অর্নিলা হেসে উঠল। যাক, এতো বছর অপেক্ষা করতে পারলে আরো কিছুদিন সে অপেক্ষা করতে পারবে। এই নিরামিষ বরকে আমিষ বানিয়ে সে ছাড়বেই!

রাতে ঘুমানোর সময় সারফারাজের কপালে হাত রাখল অর্নিলা। চুমু খেলো তার ললাটে। কপালে হাত বুলাতে লাগল। ক্রমশই তার কোল যেন দখল করে ফেলছিলো ঘুমন্ত সারফারাজ। অর্নিলা মোটেও বাধা দেয়নি। আগলে নিয়েছিল তাকে। তাকে আগলে ধরে চোখ বুজে নিল সে। মাঝরাতে ঘুম ভাঙল সারফারাজের। নিজেকে অর্নিলার কোলের মাঝে দেখে মোটেও অবাক হয়নি সে। এমনটা এর আগে বহুবার হয়েছে। ঘুম থেকে জাগলে নিজেকে অর্নিলার কাছেই পায় সে। দু হাতে সে আগলে নেয় তাকে। ঘড়ির দিকে ফিরে তাকাল। ৩ টা বাজতে চলল। মা বুঝি এখনি উঠে যাবে। সারফারাজ উঠে নিল। আবারো ফিরে তাকাল অর্নিলার দিকে। ঘুমন্ত অর্নিলার ললাটে চুমু খেল। হাতখানা রাখল থিতুনি। ল্যাম্পশেডের অল্প আলোতে অর্নিলার মুখস্রী উজ্জ্বল হয়ে উঠছিলো। সারফারাজ মায়ার জালে আটকে যাচ্ছিল ক্রমশ। হাতের আঙ্গুল দিয়ে অর্নিলার ওষ্ঠাদ্বোর ছুঁয়ে দেখল। অর্নিলার তখনকার কথাগুলো মনে পড়ল। আচমকা হেসে চুপসে গেল। সত্যিই তার আফসোস হচ্ছিল। অনেকদিন যাবত অনি কে সে সময় দিতে পারছে না। কিন্তু এভাবে আর কদিন। অনি এখন তার বউ, তার সম্পর্কের জটিলতা ভেঙে এখন অনেকটা সহজ। এখনো পিছিয়ে থাকা কি ঠিক! চুমু খেলো ঘুমন্ত অর্নিলার ওষ্ঠাদ্বোরে। তার ঠোঁট দুটো নড়েচড়ে উঠল। এ যেন বলছে, ইশ, এতো ছোট চুমু খেলেন ফারাজ ভাই। আরেকটু খেলে আপনার কি বয়ে যেত।” সারফারাজ হেসে উঠলো। তার এমন কথাবার্তা শুনে সে না হেসে পারে না। উঠে গেল ওযু করতে। এসে তাহাজ্জুদ নামাজ শেষে অনি কে ডাকতে লাগল। এই মেয়ে উঠেনি। উল্টো চাদরে মাথা ঢেকে হা হুঁ করতে লাগলো। থাক , আর ডাকে নি সারফারাজ। আজ কম ধকল যায় নি। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল। রান্নাঘর থেকে টুকটাক শব্দ আসছে। মা উঠে গেছে। বাবা বসার চেয়ারে বসে আছেন। আরিফ হাসান ছেলেকে দেখতে পেয়ে কাছে ডাকলেন। শুধালেন, “অনি উঠেনি?”

“না, ঘুমাচ্ছে। থাক আরেকটু পর উঠবে।”
মা রান্না ঘর থেকে বলে উঠলেন, “সারফারাজ, চা খাবে!”

”হ্যাঁ খাবো!” দু কাপ চা নিয়ে মা এলেন। আরিফ হাসান আর সারফারাজ ছেলেকে নিয়ে বারান্দার দিকে গেলেন। বাতি জ্বালালেন। বেতের চেয়ারে বসে বললেন, ”বলো। কেমন আছো? অনির সাথে তোমার সম্পর্ক সহজ হলো আদৌও। সে রাতে যা করেছিলে তার জন্য ক্ষমা চেয়েছো?”
সারফারাজ মাথা দুলিয়ে না করল। সত্যিই সে এখনো ক্ষমা চাইতে পারেনি। তার ক্ষমা চাওয়া উচিত। আরিফ হাসান চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললেন, ”বসো!” সারফারাজ বসে পড়ল। দীর্ঘদিন পর বাপ ছেলে মুখোমুখি। দু চারটে কথাবার্তা হচ্ছিল তাদের মাঝে। খানিকবাদে মা এসে খেতে ডাকলেন। পিছন পিছন অর্নিলা হাজির। তার ঘুম পুরোপুরি এখনো ভাঙেনি। ইয়া বড় একটা হামি ছাড়ল সে!
.
শ্রেয়মী, রুদমিলা আর ফরহাত চলে এসেছে। সবাই রুদমিলা কে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছে। ঈদের পরেই তার বিয়ে। বিয়ের পরেই সারফারাজ আর অর্নিলা কে শহরে যেতে বলছে। ছেলে কি করে? নাম ধাম কি? এসব জিজ্ঞেস করতে করতে অর্নিলা ক্লান্ত হয়ে গেল। সারফারাজ দূরে বসে বলল, “একটু থেমে বল অনি, রোজা রেখে কেউ এতোকথা বলে। কিছুক্ষণ পর দেখবি হুটহাট করে পানি খেয়ে ফেলবি। ধীরে সুস্থে কথা বল!”

অর্নিলা মুখ ভেংচি কাটল। সকলে হাসতে লাগল। এই ভুল অর্নিলা প্রতি রোজায় করে। সবসময় তার এই কাণ্ড নিয়ে হাসিতামাশা হয়। ফরহাত সোফার কোণায় বসে পড়ল। তাকে দেখে বেশ চিন্তিত লাগছে। সারফারাজ শুধালো, ”কিছু হয়েছে?”

”হুম বস। বিরাট কাণ্ড ঘটেছে।

”কি?”

“আমার গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে ঠিক হয়েছে।”

“ গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে মানে? তুই এর মধ্যেই নতুন জুটিয়ে ফেলেছিস তার বিয়েও ঠিক হয়ে গেল। কি রে? তোর কি পুত্র রাশি নাকি? যেই মেয়েকেই ভালো লাগে তার পিছনেই বর ছুটে বেরায়।

ফরহাত মুখ গম্ভীর করে বলল, ”প্রথমত‌ পুত্র রাশি বলে কোন রাশি নেই। আর আমি কি জানব। যাকেই ভালো লাগে তার ফ্যামিলি উঠে পড়ে লাগে বিয়ের জন্য।”

”তা ভালোই। চাচীকে বল!

”কোন মুখে বলি, রুদমিলার বিয়ে। এখন বলা যায়। ওর বিয়ে ঠিক হওয়ার আগে বললেও হতো। শা/লার ভাগ্যটাই খারাপ‌।

“বুঝলাম। মেয়েটা কিন্তু মেয়েটা কে?”

”ওই, না…

সারফারাজ উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “নাজিয়া!”
“হ্যাঁ, তুই জানলি কি করে?” দুজন মুখোমুখি তাকাল। ফরহাত সামনে তাকিয়ে দেখল স্বয়ং নাজিয়া দাঁড়ানো। ওহ নাজিয়া তার দুঃসম্পর্কের বোন। ফরহাত ওকেও ছাড়েনি। হতভম্ব হয়ে ফিরে তাকাল। ফরহাত হেসে বলল, “চুপসে যাবি। আগের কথা কিছু বলবি না হ্যাঁ!”

“ও আমার বোন হয় ফরহাত।“

“তাতে কি? আপন তো না। মেয়েটা ভালো। অনেকদিন ধরেই পিছনে পড়ে ছিল তাই পাত্তা দিলাম।

”তোর পিছনে নাজিয়া পড়ে ছিল! আর কিছু!”

“তুমি আর কি বুঝবা আমার খেল। আমি যে কি তা তো জানো না!”

“ক্যারেক্টারলেস!”

”ছিঃ রোজার মাসে এসব বাজে কথা কেউ বলে নাকি?”

সারফারাজ আড়চোখে তাকাল। ফিরল নাজিয়ার দিকে। বেচারি যেন ফরহাত কে দেখে শরমে মরে যায়। ফরহাত সত্যি তাহলে মিথ্যে কিছু বলেনি। ও পাক্কা প্লে বয়।‌ আত্মীয় স্বজন আরো আসতে শুরু করেছে। অর্নিলা বড় ফুফু, ছোট ফুফু চলে এলো। তাদের ছেলে মেয়ে ও বটে। ছোট ফুপুর মেয়ে ইরা হুট করে অর্নিলার হাত টেনে আড়ালে চলে গেল। জিজ্ঞেস করল, ”কি রে? কি শুনলাম এসব! তোর আর সারফারাজের মধ্যে নাকি কিছুই হয় নাই।”

#চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে