চৈত্রের_রাঙায়_রচিত_প্রণয় পর্ব-১৪

0
509

#চৈত্রের_রাঙায়_রচিত_প্রণয়
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_১৪

বিছানায় এদিক থেকে ওদিক ঘুরে যাচ্ছে অনি। ঘুম আসছে না তার। বিছানা ছেড়ে নেমে পা বাড়াল ফারাজ ভাইয়ের ঘরের দিকে। দরজার কাছে এসে হাত রাখতেই বুঝে গেল দরজা বন্ধ। কি আশ্চর্য! দুটো মানুষই থাকে এই বাড়ির মধ্যে‌ তাও ফারাজ ভাই এভাবে দরজা বন্ধ করে রাখতে পারল। ভ্রু যুগল কুঁচকে মুখ কালো করে ফেলল। ধ্যাত, ছাতার মাথা। ঘুমটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আর ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না এখন। দরজার দিকে চেয়ে রইল একমনে। হঠাৎ মনে হলো দরজা খুলে যাচ্ছে। সত্যি সত্যি তাই হলো। দরজার খুলে সারফারাজ হত’ভম্ব! হতবাক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল অর্নিলা। তার দৃষ্টিতে বিস্ময় ঘুরপাক খাচ্ছে। মনের কথা এভাবে সত্য হয়ে যায় সে জানত না। সারফারাজ গম্ভীর স্বরে শুধায়, “এতো‌ রাতে এভাবে ঘুরাঘুরি কেন করছো অনি?”

“ঘুম আসছে না তাই, কিন্তু আপনি কি করছেন ফারাজ ভাই? আপনিও তো জেগেই আছেন।

”ঘুম না আসলে গিয়ে পড়তে বসো। এখানে ওখানে ঘুরাঘুরির কি আছে? সামনে না তোমার এডমিশন।”

অর্নিলা বাঁকা চোখে ফিরে তাকিয়ে জবাব দিল, ”যাচ্ছি!”

সারফারাজ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে বলল, “তোমার স্বপ্ন কোনটা অনি? কোন ইউনিভার্সিটি?”

অনি পিছন ফিরে বলল, ”ঢাকা ইউনিভার্সিটি!”

“তাহলে এভাবে আমার পিছু ঘুরাঘুরি না করে পড়তে বসো তাহলে কিছু চান্স থাকবে। যারা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেতে তারা সারা দিনরাত পড়তে থাকে এভাবে ঘোরাঘুরি করে না। যদি তোমার স্বপ্ন সত্যিই পূরণ করতে চাও তাহলে গিয়ে পড়তে বসো।”

অর্নিলা মাথা নাড়ল। ঘরে এসেই বিছানায় বই খাতা নিয়ে বসে পড়ল। এই ঘরে শুধু একটা আলমারি আর বিছানা। কোন টেবিল নেই। বিছানায় বসে কোলের মধ্যে বালিশ নিয়ে বই খুলে পড়তে বসল। সে মোটেও এতোদিন ঘুরাঘুরি করেনি। পড়েছেও বটে। ফারাজ ভাইয়ের চোখ থাকতেও নেই। তার দিকে তো কোন নজরই নেই,‌দেখবে কি করে? পেন্সিল হাতে নিল, বইটা বের করে পড়তে শুরু করল। খাতায় একটু একটু করে নোট করতে লাগল। আধ ঘন্টা বাদে দরজায় কড়া নাড়ল কেউ। অনি পিছন ফিরে তাকাল। ফারাজ ভাই দাঁড়িয়ে। মুচকি হেসে বলল, ”বউয়ের ঘরে আসতে আবার অনুমতি লাগে নাকি ফারাজ ভাই?”

“আগে তো বউ ছিলো না জানতাম না, জেনে নিলাম!”

এগিয়ে এসে ল্যাম্পশেডের পাশে কফির মগটা রেখে দিল। বলল, “ঘুম আসলে ঘুমিয়ে পড়, জোর করে রাত জেগে পড়ার কিছু নেই।”

“আপনি বানিয়েছেন আমার জন্য কফি? ভাবা যায়!“

“রাতে ভাত তরকারি রান্না করে খাইয়েছি এখন কফি দেখে তোর ঢং শুরু হলো!” মাথায় টোকা মেরে বলল, ”কোন বই লাগলে তার লিস্ট করে রাখবি। আমি কাল নিয়ে আসব।”

“আপনার ইন্টার্নশিপ কবে থেকে শুরু ফারাজ ভাই?”

”সময় আছে ঢের, সেসব তোকে জানতে হবে না। তুই পড়তে থাক।”

“ক্ষিদে পেয়েছে ভাই!”

”কফি খেয়ে নে।”

“এটা খেলে পেট ভরবে?”

”বিস্কুট নিয়ে আসছি!”

বেরিয়ে গেল ফারাজ। অনি মজা লাগছে। ফারাজ ভাই তাকে ভালো বাসুক আর না বাসুক তাকে তো ভালো বাসিয়েই ছাড়বে। দরকার পড়লে জোর করে আদায় করে নিবে। ফারাজ ভাইয়ের যত্ন তার চাই, ফারাজ ভাই ইচ্ছে করে না করলে সেটাও জোর করে আদায় করে নিবে।

কফি হাতে নিয়ে পাইচারি করতে করতে পড়ছে। অনেক পড়তে হবে, যেভাবেই হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হবে। এটা শুধু তার স্বপ্নই না, আরো অনেক কিছু। ফারাজ ভাইকে সে চমকে দিবে। ফারাজ ভাই মনে করে তাকে দিয়ে কিছু হবে না, ঢাবিতে চান্স পেয়ে দেখিয়ে দিবে সে নিজেও কিছু কম না। সারফারাজ শেহদাত যদি ঢাকা মেডিকেল এ চান্স পেতে পারে তার বউ অর্নিলা অথৈ শেহদাত ও ঢাবিতে চান্স পেতে পারে, হুহ!

অনেকক্ষণ পেরুলো। বিস্কুট নিয়ে এখনো ঘরের মধ্যে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ নাকে এসে ঘ্রাণ ভিড়ল। অনি একগাল হেসে বিছানায় বসে পড়ল। সারফারাজ বাটিতে করে নুডলস্ নিয়ে হাজির হলো। বলল, “ঘরে বিস্কুট নেই, এটাই খেয়ে নে!”

অনি চামচ দিয়ে নেড়ে দেখল। একগাদা পানি আর মসলা দিয়ে শর্টকাটে বানানো নুডলস। হেসে বলল, “এই সস্তা নুডলস্ বানানো কার কাছ থেকে শিখলেন ফারাজ ভাই!“

“সস্তা নুডলস্ খেয়ে পেট ভরা। আমি গেলাম!”

অনি হাসল। চটপট করতে গিয়ে গরম নুডলস মুখে হা হু করতে লাগল। সারফারাজ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে শুধায়, “অনি, তোর বিছানায় পড়তে কষ্ট হয়?”

“না তো, ভালো লাগে। আরামে শুয়ে বসে পড়া যায়।”

”আরামে থাকলে পড়ালেখা হয় না!”

চলে গেল ফারাজ ভাই। অনি ব্যঙ্গ করে বলে উঠলো, ”হুহ, আরামে থাকলে পড়ালেখা হয় না, আসছে!” বাটিতে ফুঁ দিয়ে খেতে লাগল সে!
.
ভোর হয়েছে অনেকক্ষণ। সারফারাজের ঘুম এভাবেই কম। গতরাতে ওতো দেরিতে ঘুমানোর পরেও খুব সকালেই উঠে পড়ল সে। অনির ঘরের সামনে এসে দরজায় হাত বাড়াল। মনে পড়ল গত রাতের কথা, ”বউয়ের ঘরে আসতে আবার অনুমতি লাগে নাকি?” দরজায় কড়া নাড়ল না। পর্দা সরিয়ে উঁকি মারল। অনি বিছানায় ঘুমাচ্ছে এলোমেলো ভাবে। এদিক ওদিক বই ছড়িয়ে আছে। নুডলসের বাটিটাও বিছানায় পড়া, খালি কফি মগটাও সেখানে। নোট, পেন্সিল কিছুই গোছানো নেই। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সবকিছু গোছাতে লাগল সারফারাজ। ঘরের কোনের দিকে তাকিয়ে ভাবল। অতঃপর নুডলসের বাটি, মগ তুলে নিয়ে চলে গেল রান্নাঘরে। ফের আবারো ঘরে আসল। অনির মাথার কাছে বালিশ নিচে পড়ে আছে। উঠিয়ে তার মাথায় তলে রাখল। চাদরটা এগিয়ে দিয়ে ফ্যানের বাতাস কমিয়ে দিয়ে চলে গেল সে। তার এতোটুকু যত্ন, আদর, ভালোবাসা কোন কিছুই টের পেলো না অনি। সারফারাজ জানাতেও চায় না। নিশ্চুপে এসে সবকিছু করে দূরে সরে যায়। সে চায় না, কেউ এসব জানুক,‌জানতে পারুক।

বিকেলের মধ্যে একটা টেবিলের ব্যবস্থা করে দিল অনির জন্য। সারফারাজ কাজের ক্ষেত্রে এতো চালু এটা সে জানত না। শুধু তাই নয়,‌সন্ধ্যার মধ্যেই একগাদা বই নিয়ে এলো নীলক্ষেত থেকে। নীলক্ষেতের নাম অনেক আগেই শুনেছে অনি। দেখার খুব ইচ্ছে। শুনেছে সেখানে নাকি বইয়ের স্তূপ। নিজের কল্পনায় সাজালো সবটা। বলল, ”ফারাজ ভাই, নীলক্ষেত এ কোন জমির ক্ষেত আছে তার চারদিকে বইয়ের দোকান?”

সারফারাজ না হেসে পারল না। এভাবেই গরমের মধ্যে এভাবে ছুটে এসে বেচারা ক্লান্ত। গায়ের শার্ট ভিজে গেছে ঘামে। এর মধ্যে অর্নিলার বোকা বোকা কথা শুনে সে জোরে হেসে উঠল। অনি খানিকটা লজ্জা পেলো। বুঝতেই পারল বোকামি হয়েছে। বইয়ের স্তূপ টেনে ঘরে চলে গেল। সারফারাজ দরজার কাছে এসে বলল, ”তোকে একদিন নিয়ে যাবো নীলক্ষেত, দেখে আসিস কোন জমির ক্ষেত আছে!”

”ধুর, আমি কোথাও যাবো না আপনার সাথে।”

”আচ্ছা যাস না!”
চলে গেল। কি অদ্ভুত। আরেকবার তো সাধতে পারত। ফারাজ ভাই কি কিছুই বুঝে না!
.
নতুন একটা কোচিং এ ও ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। অর্নিলা রাস্তাঘাট তেমন কিছুই চিনে না। তবে কোচিং টা বাড়ির কাছেই। সপ্তাহে তিন দিন যেতে হয়। বাসার সামনে থেকে একটা রিক্সায় চড়ে সে যায় আবার রিক্সায় চড়েই ফিরে আসে। ইদানিং পড়াশোনা করছে ধুমিয়ে। সারফারাজ সকাল বেলা উঠে নাস্তা বানিয়ে চলে যায় মেডিকেলে। সন্ধ্যার আগে আগেই ফিরে আসে। রান্না চাপায়। এক বেলার রান্নাতেই তাদের হয়ে যায়। দুজন মানুষের আর কতো! অর্নিলার রান্নাঘরে আসা ঘোর বারণ। টেবিল ছেড়ে সে উঠতেই পারে না। সারাক্ষণ পড়াশোনা।

সারফারাজ দেখছে,মেয়েটা প্রচুর পরিশ্রম করছে। এবার যদি টিকে যায় তাহলেই হয়। ওর মতো তো আরো হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও পরিশ্রম করছে। সবার লক্ষ্য একটাই। কিন্তু কার ভাগ্যে আছে বিধাতায় ভালো জানে। তবু নিরাশ হলে চলবে না। প্লেটে এক কাপ চা আর দুটো বিস্কুট নিয়ে হাজির হয়। টেবিলের কোণায় রেখে অনিকে দেখে। তাকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে। চোখ মেলে তাকাতে পারছে না এমন হাল। তবুও মেয়েটা হাসে। সারফারাজের কি হয় সেই জানে। আনমনে তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, “একটু ঘুমিয়ে নে, অনি!”

”এই তো এই পাতাটা পড়ে শেষ করে নেই, এরপর ঘুমাবো!”

”এতো চিন্তার কিছু নেই, দেখবি তুই পারবি!”

অর্নিলা হাসে। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলে, “তুমি যখন বলেছো তখন আমি পারবোই!”

সারফারাজ দাঁড়িয়ে থাকে। পুরো খাতা নোট করা, কালো রঙের কলম দিয়ে গুটি গুটি লেখা। অর্নিলা চায়ের কাপে বিস্কুট ডুবিয়ে খায়। বলে, ”তোমার অনেক কষ্ট হয়, তাই না ফারাজ ভাই। সকাল সকাল এই নাস্তা বানাও, মেডিকেলে যাও আবার এসে ঘরের কাজ করো!”

“ঘরের কাজ আর কোথায় করি,‌একটু রান্নাবান্না করি। এ আমি আগেও করতাম। তোর এতো ভাবনার দরকার নেই।”

এক চুমুকে চায়ের কাপ শেষ করে বলে, “আচ্ছা!”

“অনি, সামনের সপ্তাহে চট্টগ্রামে পরিক্ষা শুরু হবে? তুই দিতে যাবি না?”

”না ভাই!

”কেন? আবেদন করিস নি? করলি না কেন? আমার বিশ্বাস ছিলো, চট্টগ্রামে পরিক্ষা দিলে তুই টিকতি। রাজশাহী তেও তোর চান্স হতো।”

অর্নিলা উঠে দাঁড়ায়। বিছানার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে,
“আমি ঢাকাতেই পড়ব ফারাজ ভাই। ও চান্স পেলেও আমি যাবো না। আপনাকে ছেড়ে আমি দূরে কোথাও যাবো না!”

বালিশে মুখ গুজে সে। সারফারাজ ঈষৎ হতবাক হয়ে যায়। খেয়াল করে,‌মেয়েটা এক কাপ চা খেয়েও ঘুমাতে চলে গেল। অনেক ক্লান্ত ছিল বোধহয়। সারাটে দিন পড়াশোনা করে যাচ্ছে। টেবিল গুছিয়ে রাখে। অর্নিলার গায়ে চাদর টেনে নিঃশব্দে বের হয়ে যায়।
.
সোফার উপর বসে পড়ছে অর্নিলা। আর দুদিন বাদেই ঢাবিতে পরিক্ষা। নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে পড়ে যাচ্ছে। আগের পড়াগুলো রিভিশন দিচ্ছে। আলস দুপুর। অর্নিলা জোরে জোরে পড়ছে। তার পড়ার আওয়াজ রান্নাঘর অবধি যাচ্ছে। সারফারাজ গরম গরম ভাতের থালা নিয়ে হাজির হলো। সোফায় বসে ভাত মাখিয়ে লোকমা তুলে ধরল অনির সামনে। অনি একদিকে খাচ্ছে অন্যদিকে পড়ে যাচ্ছে। এই ছোট ছোট ব্যাপারগুলো অনেক সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই দেখা যায়,‌ সারফারাজ তাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর সে পড়ে যাচ্ছে। তার অজান্তেই ফারাজ ভাই তার জীবনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে যেমনটা চাইছিলো তার চেয়েও বেশি কিছু পাচ্ছিল। কিন্তু ওতো মন দিয়ে বোঝার বোধ টা অর্নিলার তখনো হয়নি। হবে কি করে? ভালোবাসা আর কতোটুকুই বুঝে সে। ভালোবাসা যে বিস্তর। সেখানের এক ক্ষুদ্রাংশ সবে মাত্র ছুঁইয়েছে তাকে। এর মধ্যে নিজেকে মিশিয়ে নেওয়া এখনো যে বাকি!
.
পরীক্ষা শেষ হলো। পরীক্ষার আগে যতো ঝামেলা যতো কিছু গেলো পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হলো। এবার সে ঘুমিয়েছে। চেঞ্জ অবধি করেনি। কতো ক্লান্ত, মলিন মুখটা শুকিয়ে গেছে। দেখে মনে হয় দীর্ঘদিন ধরে ঘুমায় না। তার এমন ক্লান্তি মুখ দেখে মায়া হয় সারফারাজের। মেয়েটা সত্যিই বড্ড লড়েছে, সে নিজে সাক্ষী। এবার জিতলেই হয়। কিন্তু সবাই জিতবে না সে নিজেও জানে!

দিনকতেক গেলো। সারফারাজ ল্যাপটপ ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। ছুটে আসল অর্নিলার ঘরের সামনে। অনি শক্ত হয়ে বিছানায় বসে আছে। দু একবার ডাক দিলো, “অনি, এই অনি!” অনি সাড়া দিলো না। কাছে এসে দাঁড়াল। অনিল ঘোর ভাঙল। মুখ তুলে তাকানোর আগেই ডুকরে কেঁদে উঠলো সে। সারফারাজ চেয়ার টেনে বসে তাকে সামলাতে লাগল। এই হার সে মেনে নিতে পারেনি, তার স্বপ্ন ছিলো এটা, তার জীবন ছিল। এতো পরিশ্রম, এতো রাত জাগা সবকিছুই কি বৃথা হয়ে গেল। বিধাতা এতোটা নির্দয় না হলেও পারত। সারফারাজ জড়িয়ে ধরল তাকে। তার শার্টটা আঁকড়ে ধরে কাঁদছে অনি। সাত্বনা দেবার মতো কিছু নেই। তবুও বলছে, “কিছু হয়নি অনি, কিছু না। এখানে সব শেষ না। এখনো অনেক ভার্সিটি আছে। জাহাঙ্গীরনগর, গুচ্ছ, সাতকলেজ। একটাতে তোর চান্স হয়েই যাবে। এতো কাঁদার কিছু নেই!” বললেই হলো নেই। রাত জেগে যেই স্বপ্ন সে জাগিয়েছিলো তা তো ভেঙে গেল। কখনো চোখে দেখেনি, দেখেনি সেখানকার রাস্তা ঘাট তাও মনের ভেতর সবকিছু সাজিয়েছিল। না দেখেই এতো করে চাইল তবু পেলো না। সারফারাজ মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কান্নার রেশ কমেছে কষ্ট নয়। সারফারাজ মলিন কণ্ঠে বলল, “হয়েছে অনি, এতো কাঁদার মতো কিছু হয়নি। যার ভাগ্যে যা ছিল তাই পেয়েছে। গিয়ে দেখো, তোমার চেয়েও কারো কাছে সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তুমি হয়তো না পেয়ে ক’দিন কাঁদতে কিন্তু তাকে সারাজীবন ভুগতে হতো। বিধাতা যা করে ভালোর জন্যই করে। এখানে সবকিছুরই শেষ না, থামো!”

অনি মুখ তুলে তাকাল। চোখের কার্নিশ বেয়ে নোনা অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। সারফারাজ মুছে দিল অশ্রুকণা। স্বচোখে, তার সামনে কপালে চুমু খেলো আলতো করে। হেসে বলল, ”চল ঘুরে আসি। তৈরি হয়ে নে,‌আমরা আজ বাইরে যাবো!” অর্নিলা বিস্মিত নয়নে চেয়ে রইল শুধু!

#চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে