চৈত্রের প্রেম পর্ব-০৩

0
83

#চৈত্রের_প্রেম
#লেখিকা_আলো_ইসলাম
(৩)

পুলিশের লোক শুনে শ্রাবণ শারিয়ারের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। শ্রাবণ শারিয়ার অফিসার দুজনের মাথা থেকে পা পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। হারুন রশীদের বয়স আনুমানিক ৪৫ থেকে ৫০ এর ঘরের মধ্যে হবে আর মামুনুর সাহেব তরুণ অফিসার। বয়স ২৬-২৭। শ্রাবণ শারিয়ার, মামুনুর সাহেবের দিকে কিছুক্ষণ স্থির চাহনি রাখে। শ্রাবণ শারিয়ারের ভাবনা জুড়ে মামুনুর সাহেব। এই অল্প বয়সে বেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে ছেলেটা।

এবার আসল কথায় আসা যাক? হারুন রশীদ, শ্রাবণ শারিয়ারের ভাবনা ছেদ করে বলে। শ্রাবণ শারিয়ার একটু নড়েচড়ে বলে জ্বি বলুন। এরই মাঝে চা নিয়ে আসে রাশেদা বেগম। হারুন রশীদ তার দিকে তাকিয়ে বলে ইনি কে?
উনি আমাদের বাড়ির পরিচারিকা। এখন সম্পর্কে শ্বাশুড়িও হয়। শ্রাবণ বলে নির্লিপ্ত ভাবে।

ঠিক বুঝলাম না আপনার কথা? মামুনুর বলেন কৌতুহল নিয়ে।

আপনারা কি আমার বাড়ির মেম্বারশিপ সম্পর্কে ইন্টারভিউ নিতে এসেছেন নাকি অন্য কোনো দরকারে? এবার একটু কঠোর হয় শ্রাবণ।

অবশ্যই ব্যাপারটা অন্য। মূল পয়েন্টে আসছি।

আপনার লাস্ট বইয়ের নাম ❝আঁধারে আড়ালে সে❞। সে বইয়ে আপনি থ্রিলার কাহিনি হিসেবে তুলে ধরেছেন একজন খুনি, ঠিক খুনি বলা যায় না সাইকো। একজন সাইকো দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ওইসব নারী পুরুষকে মে’রে ফেলছে যারা স্বামী বা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অন্যত্র সম্পর্ক করতো৷ আই মিন পরোকিয়া করে বেড়ায়। সাইকো খুনি তাদেরই খুঁজে খুঁজে হত্যা করে চলেছে অথচ তার কেউ কোনো হদিসও পাচ্ছে না। ভুমিকা ঠিক আছে?

শ্রাবণ শারিয়ার ভ্রু কুচকে সায় দেয়। কিন্তু আপনারা এইসব কথা আমাকে কেনো শোনাচ্ছেন। আমার বই আমি তো জানি সে বইয়ে কি আছে না আছে। কি সমস্যা বলুন তো? শ্রাবণ শারিয়ার এবার উদ্বেগ কন্ঠে বলে।

অপেক্ষা করুন মিস্টার শারিয়ার, আমরা পর্যায়ক্রমে যাচ্ছি আপনাকে সমস্যা বুঝানোর জন্য। এইজন্যই তো আসা আমাদের। হারুন রশীদ বলেন ঠোঁটে এক চিলতে রহস্যময় হাসি দুলিয়ে।

এরই মাঝে সাঁঝি আসে শ্রাবণ শারিয়ারের জন্য কফি নিয়ে।
ইনি কে? সাঁঝিকে উদ্দেশ্য করে বলে হারুন রশীদ। সাঁঝিও আগ্রহ পূর্ণ চোখে তাকিয়ে আছে অফিসারের দিকে।
ইনি আমার স্ত্রী সাঁঝি। স্বাভাবিক ভাবে জবাব দেয় শ্রাবণ।
দেখে মনে হচ্ছে নবদম্পতি? মামুনুর সাহেব বলেন।

জ্বি ঠিকই ধরেছেন৷ আমাদের বিয়ে হয়েছে একদিন হলো মাত্র।
ওহ আচ্ছা! কংগ্রাচুলেশনস। বেশ সাদরে হাত বাড়িয়ে দেয় মামুনুর সাহেব৷ শ্রাবণও হাসার চেষ্টা করে থ্যাংকস দেয় হাত বাড়িয়ে দিয়ে। কিন্তু হারুন রশীদ গম্ভীর হয়ে যান আগের তুলনায়। সাঁঝি রহস্যময় চাহনি রাখে দুজনের দিকে।

তো কথাবার্তা এগিয়ে নেওয়া যাক। হারুন রশীদের কথায় শ্রাবণ সাঁঝিকে বলে ঘরে যেতে। কিন্তু তিনি বাধা দিয়ে বলে সাঁঝি এখানে থাক। তারও তো কিছু বিষয় জানা দরকার তার বর্তমান স্বামী সম্পর্কে।

আপনি ঠিক কি বলতে চাইছেন খোলসা করে বলবেন প্লিজ৷ সাঁঝির কি জানা দরকার, কিসের কথা বলছেন আপনি? শ্রাবণ এবার অস্থির হয়ে যায়।

শান্ত হোন মিস্টার শ্রাবণ শারিয়ার। উত্তেজিত হওয়া একদমই ভালো কথা নয়।

সাঁঝি তুমি বসো। তুমি করে বলছি বলে কিছু মনে করো না। কারণ তোমার বয়সী একটা মেয়ে আমারও আছে। হারুন রশীদ সাঁঝিকে উদ্দেশ্য করে বললে সাঁঝি শ্রাবণের দিকে তাকায়। শ্রাবণ ইশারা করে বসতে বললে সাঁঝি শ্রাবণের পাশে গিয়ে বসে।

মিস্টার শারিয়ার কোনো রকম ভণিতা ছাড়াই বলছি, তার আগে বলুন আপনার বইয়ে কয়টা খু’নের কথা উল্লেখ করা আছে?

১১ টি! তবে খুনি ১১ নাম্বার খুন করার আগে ধরা পড়ে যায়। শ্রাবণ বলে।

আপনি কি জানেন আপনার বইয়ের কাহিনির সাথে হুবুহু কপি করে দেশে খুন হচ্ছে। এবং অলরেডি ৯ টা খুন হয়ে গেছে। হারুন রশীদ শান্ত স্থির মনোভাব নিক্ষেপ করে কথাগুলো বলে। কিন্তু শ্রাবণ শারিয়ার যেনো লাফ দিয়ে উঠে কথাটা শুনে৷ চমকে উঠে বলে হোয়াট? কি যা-তা বলছেন? কে করছে এমনটা আর কেনো? সাঁঝিও শ্রাবণের উদ্বেগ লক্ষ্য করার চেষ্টা করে। তবে সাঁঝিকে দেখে মনে হচ্ছে না সে অতটা বিচলিত হয়েছে যতটা বিচলিত হয়ে পড়ে শ্রাবণ শারিয়ার। সে তো ভাবতেও পারছে না এমন কেউ করতে পারে।

কিন্তু অফিসার, আমি তো এইসবের কিছুই জানিনা ইনফ্যাক্ট জানতামও না৷ মাত্রই আপনার থেকে শুনছি।
কেউ যে বাস্তবে এমন করতে পারে আমার ভাবনার উর্ধ্বে। আমি শুধু মাত্র আমার কল্পনার জগৎটাকে সাঁজিয়ে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করি। এর বেশি কিছু নয়।

এই পর্যন্ত ৯ টা খুন হয়ে গেছে অলরেডি। মামুনুর সাহেব বলেন এবার। শ্রাবণ এবার হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে যায়। তার কাধ ভেঙে যায় চিন্তায়।

আমার মনে হয় কেউ ইচ্ছে করে এইসব করছে যাতে আমাকে ফাঁসাতে পারে। শ্রাবণ বলে নির্লিপ্ত ভাবে।

তবে আমাদের কাছে তার উল্টো ব্যাখ্যা আছে মিস্টার শারিয়ার। হারুন রশীদের কথায় শ্রাবণ ভ্রু কুচকে বলে যেমন?

আমার তো মনে হয় আপনি এইসব করছেন আপনার বইয়ের সেল বাড়ানোর জন্য। আপনি কি জানেন আপনার ৪৮ টি বইয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সেল হয়েছে এই বইটা। এমনকি এখনো মানুষের চাহিদার যোগান দিয়ে উঠতে পারছে না প্রকাশনী গুলো।

হ্যাঁ আমি জানি আমার সব বইয়ের তুলনায় আমার এই বইটার চাহিদা তুঙ্গে। কারণ পাঠক বরাবরই রোমাঞ্চকর, চাঞ্চল্যকর রহস্যময় কাহিনি হজম করে বেশি। যার দিকে নজর রেখে আমার এই বইটা লেখা৷ আমার প্রতিটি বই-ই বেশ সফল, তবে এটা অনেক বেশি। ইনফ্যাক্ট কিছুদিন আগে কয়েকটা প্রকাশনী থেকে ফোন আসে আমার কাছে৷ এবং তারা জানায় আরো এক হাজার কপি করে বইটা বাধতে চাই তারা৷ এখন বুঝতে পারছি কেনো এতো চাহিদা বইটার৷ কিন্তু অফিসার, বইয়ের সফলতার দিকে আমাকে কখনো তাকাতে হয়নি৷ এমনি আমার বই মার্কেটে সফল প্রথম থেকে এখন তো আরও বেশি চাহিদা। পাঠক অপেক্ষা করে থাকে কখন আমার নতুন বই মার্কেটে আসছে৷ সেখানে জনপ্রিয়তার জন্য এইসব নোংরামি করার প্রশ্নই আসে না আমার।

তাছাড়া জনপ্রিয়তার যদি দরকারই হয় তাহলে আমি আগে করতে পারতাম এমন। যখন আমার বইয়ের চাহিদা পাঠক মহলে সবে পরিচিত হচ্ছে। কিন্তু এখন তো একদমই আমার জনপ্রিয়তার কথা ভাবার অবকাশ নেই। কারণ আমি অলরেডি ইস্টাবলিশ
আপনারা ভুল ব্যাখ্যা করছেন আমার মনে হয়।

আচ্ছা কোনো ফ্যানও তো এমনটা করতে পারে। অনেকে আছে না শ্রাবণ ভাইজানের অন্ধভক্ত। তারাই হয়তো এই বই থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এইসব কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে৷ আমরা তো এমন অনেক কাহিনি শুনেছি এবং নিউজও দেখেছি। সাঁঝি বেশ আগ্রহ নিয়ে বলে কথাগুলো। শ্রাবণ শারিয়ারের ভালো লাগে সাঁঝির কথা শুনে৷ তবে সবার সামনে ভাইজান বলায় একটু বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। কিন্তু এই সিরিয়াস মোমেন্টে এইসব নিয়ে ভাবার সময় নেই।

আপনার কথায় যুক্তি আছে মিসেস শারিয়ার৷ তবে কতটা গ্রহণ যোগ্য ভেবে দেখার বিষয়। যেমন ধরুন!যদি কোনো ফ্যান এইসব করে থাকে তাহলে তো সে জানে তার প্রিয় লেখক এইসবে ফেসে যাবে। আর আমরা তারই ফ্যান বা ভক্ত হয় যাদের আমরা পছন্দ করি,ভালোবাসি তাই না? সেহেতু আমরা কখনোই চাই না আমাদের পছন্দের মানুষ কোনো বিপদে পড়ুক। আর দ্বিতীয় ব্যাখ্যা যদি করতে যাই তাহলে বলতে হয়, যদি সরাসরি কেউ মিস্টার শারিয়ারের ক্ষতি চেয়ে থাকে তার শত্রু হয়ে থাকে তাহলে সে এমন কাজ করতে পারে তাকে ফাঁসানোর জন্য, তবে এই ভিত্তিটা খুবই দুর্বল আমরা অনুমানে ধরে নিচ্ছি৷

যাই হোক! মিস্টার শারিয়ার আপনি গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত কোথায় ছিলেন? হারুন রশীদ ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে।

কাল আমি প্রকাশনীতে ছিলাম সন্ধ্যায়। নতুন একটা বই বের হবে আমার তারই কথাবার্তা বলতে। শ্রাবণ জবাব দিতেই মামুনুর সাহেব বলেন ১২ টা পর্যন্ত কি সেখানেই ছিলেন?

না! প্রায় এগারো টা পর্যন্ত ছিলাম এরপর আমরা কয়টা ফ্রেন্ড মিলে একটা চা-এর দোকানে আড্ডা দিতে ছিলাম। এরপর বাড়ি ফিরে আসি।

এর কোনো প্রুফ আছে? হারুন রশীদের কথায় শ্রাবণ প্রকাশনীর ঠিকানা দিয়ে খোঁজ নিতে বলে, সাথে বন্ধুদের থেকেও খোঁজ নিতে বলে।

তার আর দরকার হবে না, আপাতত আমরা আপনার কথা বিশ্বাস করছি। তবে দরকার পড়লে আমরা তদন্ত করবো। তবে একটা কথা! যতদিন না এই কেসের সমাধান হচ্ছে ততদিন আপনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। শুধু দেশের বাইরে নয় এই শহর ছেড়েও কোথাও যেতে পারবেন না। আপাতত আপনি আমাদের হেফাজতে আছেন ধরে নিবেন। আপনার উপর আমাদের নজর থাকবে সর্বদা। উপর মহল থেকে চাপ আসছে এই কেস দ্রুত সমাধান করার জন্য। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আছে এই ব্যাপারটা নিয়ে। যে-বা যারা এই কেসের সাথে জড়িয়ে কেউ ছাড় পাবে না এটা মনে রাখবেন। হারুন রশীদের কন্ঠস্বরটা এবার কঠিন শোনায়।

অফিসার আমার একটা প্রোগ্রাম আছে আগামী পরশু। আমাকে চট্রগ্রাম যেতে হবে। সেখানে আমার অনেক অনেক ফ্যান ফলোয়ার অপেক্ষা করে থাকবে আমার জন্যে। শ্রাবণ বলে উত্তেজিত কন্ঠে।

আগে নিজেকে বাঁচান তারপর নাহয় ভক্তদের কথা ভাববেন মিস্টার শারিয়ার। আমরা এসেছিলাম আপনাকে গ্রেফতার করতে। কিন্তু আপনার কথা আমাদের বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে এবং আপনার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত আমরা কোনো আইনি প্রমাণ পাইনি তাই হেফাজতে নিতে পারছি না৷ তবে আপনি গৃহবন্দি থাকবেন এখন। আজ আমরা আসি বলে উঠে দাঁড়ায় দুজন অফিসার। হারুন রশীদ সাঁঝির দিকে তীব্র একটা চাহনি রেখে হনহন করে বেরিয়ে যায়।

শ্রাবণ শারিয়ার হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কে এমন করতে পারে তার সাথে ভেবে পাইনা।

চিন্তা করবেন না, সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনি যদি কোনো অন্যায় না করেন তাহলে কেউ আপনাকে অপরাধীর আসনে বসাতে পারবে না সাঁঝি সান্ত্বনা দিয়ে বলে শ্রাবণ শারিয়ারকে। শ্রাবণ অসহায় চোখে সাঁঝির দিকে তাকায় কিন্তু মুখে কিছু বলে না।

এইভাবে কেটে যায় সপ্তাহখানিক। এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গেছে শ্রাবণ শারিয়ারের জীবনে। প্রতিদিন নিয়ম করে দুই বেলা রিপোর্টার আসছে তার ইন্টারভিউ নিতে৷ এই কেসের ব্যাপারে বারবার তাকে খোঁচানো হচ্ছে। শ্রাবণ সবাইকে একই কথা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। আর নিতে পারছে না এইসব। যে সকল নিউজ রিপোর্টার শ্রাবণ শারিয়ারের একটা ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য সদা উৎসুক থাকতো তার একটা ডেটের জন্য অপেক্ষা করতো মাসের পর মাস আজ তারাই এসে শ্রাবণকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে মাটিতে ফেলার চেষ্টা করছে। পুলিশ বাড়িতে আসার পর থেকে এই রিপোর্টারদের অত্যাচার শুরু হয়েছে। তার আগে কেউ এই সম্পর্কে আসার সাহস পাইনি।

আজ সন্ধ্যাও একটা চ্যানেল থেকে শ্রাবণ শারিয়ারের একটা ইন্টারভিউ নেওয়ার কথা ছিলো কিন্তু শ্রাবণ তাদের বারণ করে দেয় অসুস্থ বলে।

রুম অন্ধকার করে বসে আছে শ্রাবণ তার পড়ার টেবিলে। কোনো কিছুই তার ভালো লাগছে। নতুন যে বই আসার কথা ছিলো কিছুদিন আগে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ সে এখনো পর্যন্ত লেখা জমা দিতে পারেনি৷ এইসবের মধ্যে তার মাথা কাজ করছে না৷ যার ফলে শ্রাবণ শারিয়ার গুছিয়ে লিখে উঠতেও পারিনি। সাঁঝি এই কয়দিন শ্রাবণকে একা ছেড়ে দিয়েছে। সাঁঝির মনে হয়েছে শ্রাবণ শারিয়ারের এই মুহুর্তে নিজেকে সময় দেওয়া দরকার। সাঁঝি তার কলেজ, কোচিং সব ঠিকঠাক ভাবে করে গেছে।

রাত ১০ টা! সাঁঝি শ্রাবণের খাবার নিয়ে আসে রুমে। এই কয়দিন শ্রাবণ রুমে খাওয়া দাওয়া করছে। সাঁঝি এসে শ্রাবণের খাবার দিয়ে যায়। শিরীন আক্তার তার বোনের বাড়ি গিয়েছে বেশ কিছুদিন হলো। তাকে এই সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। কারণ তার হার্টের সমস্যা আছে। এইসব শুনে তিনি সহ্য করতে পারবে না। যার ফলে শ্রাবণ এবং সাঁঝি কৌশলে পাঠিয়ে দেন৷ যাতে করে এই সকল সমস্যা থেকে তিনি দূরে থাকেন।

সাঁঝি রুমে এসে দেখে শ্রাবণ রুম অন্ধকার করে বসে আছে। সাঁঝি খাবারের ট্রে সেন্টার টেবিলে রেখে কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে৷ আসলে সে দ্বিধায় আছে আলো জ্বালাবে নাকি জ্বালাবে না। আলো জ্বালালে শ্রাবণ যদি রাগ করে। শ্রাবণ হয়তো সাঁঝির উপস্থিতি বুঝতে পারেনি। সে আছে তার ভাবনায়। সাঁঝি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্ধকারে শ্রাবণের অব্যয়ের দিকে এগিয়ে যায়। শ্রাবণের পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষীণ কন্ঠে ডেকে উঠে ভাইজান বলে।

সাঁঝির কন্ঠস্বর পেয়ে শ্রাবণ যেনো একটু হকচকিয়ে উঠে এরপর সে নিজেকে সামলে নিয়ে অদ্ভুত একটা কান্ড করে বসে। সাঁঝির কোমর ধরে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে দুই হাতে। নিজেকে আবৃত করার চেষ্টা তার সাঁঝির মাঝে। এহেন কাজে সাঁঝি কিছুটা ভয় পেয়ে যায় এবং একটা ঘোরের মধ্যে ডুবে যায়। অজানা একটা অনুভূতিতে কেঁপে ওঠে কিছুটা। শরীর জুড়ে এক অদ্ভুত কম্পনের সৃষ্টি সাথে একরাশ ভালোলাগার উজ্জ্বল রোদ্দুর।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে