চাহিদা পর্ব ৭
(ভালো না লাগলে ইগ্নোর করুন,বাজে কমেন্ট করলে ব্যান করা হবে)
।
শাওনের উত্তর শুনে সাদিক লিজা দুজনেই অবাক।
এসব সিমা জানতে পারলো কিভাবে? দুজনেই নিরব হয়ে গেলো শাওনের কথায়।
।
কিছুক্ষন পর লিজা বললো….. কি কি বলেছে তোকে সিমা?
।
কেন যা বলছে তা তো বললাম ই। আর এটাও বলছে যে সাদিক ভাইয়া কোন দিন বাবা হতে পারবে না।
।
এবার লিজা পুরো হতভম্ব হয়ে গেলো।
কারণ এসব নিয়ে সে সাদিকের সাথে গতকাল রাতে কথা বলছে।
আর এরই মধ্যে সিমা জেনে গেলো?
কিভাবে?
।
ওদিকে সাদিক মাথা নিচু করে ভাবছে
এটাই ছিলো আমার প্রপ্য। আমার স্ত্রীর থেকে সন্তানের দাবি করছে তার প্রেমিক। সেটাও আমার মুখের উপর।
একজন পুরুষের কাছে এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে?
।
দেখ শাওন আমি ঠিক জানি না সিমা তোকে কি এবং কেন বলছে।
তবে সত্যি এটাই যে সামিরা সাদিকের মেয়ে। (লিজা)
।
হাহা,,,,,, যে কোনদিন বাবা হতেই পারবে না। সে সামিরার বাবা?
।
দেখ শাওন,,,, আমরা এমনিতেই ঝমেলার মধ্য আছি। তাই তুই চলে যা বলছি।
।
আমি এখানে থাকতে আসি নি। সামিরাকে দাও আমি চলে যাচ্ছি।
।
সাদিক এখনো চুপ….. কারণ ও এখনো বুঝতে পারছে না সিমা এসব জানলো কিভাবে?
যেখানে আমি কিনা শুনলাম কাল যে আমি নাকি বাবা হতে পারবো না।
যদিও আমি মানি না যে আমি বাবা হতে পারবো না। আর না মানার কারণ ও আছে
।
সামিরাকে তুই কোন দিন ই পাবি না। কারণ সামিরা আমার আর সাদিকের মেয়ে। এটা মেনে নে আর চলে যা এখান থেকে।
।
আমি সামিরাকে না নিয়ে যাবো না।
।
কি প্রমান আছে তোর কাছে যে তুই বলছিস সামিরা তোরই মেয়ে?
।
প্রমান আমি নিজে। প্রমান সিমা।
আর ভাইয়া তুমি কেমন পুরুষ তুমি অন্য কারো মেয়েকে নিজের মেয়ে বলো??
।
দেখ শাওন আমি তোকে এই বিষয়ে এখনি কিছু বলতে চাই না। তবে হ্যা
আমি বাবা হতে অক্ষম না। এটা জেনে রাখিস। (সাদিক)
।
তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছো সামিরা তোমার মেয়ে?
।
সাদিক কিছু বলতে যাবে,,,, তখনি লিজা বললো..
।
তুমি যাবি এখান থেকে? নাকি দারোয়ান দিয়ে বের করে দেব???
।
ঠিক আছে আমি যাচ্ছি,,৷ ,,, তবে হ্যা, যাচ্ছে বলে এটা ভেবো না যে আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি। সামিরা আমার মেয়ে। আমি ওকে নিয়ে যাবোই।
এই বলে চলে গেলো শাওন।
।
সাদিক সোফায় বসে পড়লো।
লিজা ঠাই দাড়িয়ে আছে।
।
সন্ধায় সিমা,, সামিরার স্কুল ও প্রাইভেট শেষে পিক করে বাসায় নিয়ে আসে।
।
সামিরা বাসায় ঢুকেই
আব্বু………….
বলে দৌরে গিয়ে সাদিকের গলা ধরে গালে চুমু খেয়ে বলল
কি হয়েছে আব্বু মন খারাপ কেন??
।
না আম্মু,,ও কিছু না,, তোমার স্কুল প্রইভেট কেমন হলো??
।
ভালো,,আব্বু
সাদিক মনে মনে ভাবছে সামিরা কাছে আসলেই আমার মন ভরে যায়। সব শুন্যতা দুর হয়। সব ক্লান্তি দুর হয় ওর মুখ টা দেখলে ও কাছে আসলেই যেন সব ভুলে যাই।।
তাহলে কি করে সামিরা আমার মেয়ে না।
অন্য কারো মেয়ের প্রতি তো এরকম ফিলিংস আসার কথা না। আর আসবে ও না।
।
সিমা, লিজা দারিয়ে থেকে সাদিক আর সামিরাকে দেখছিলো।
তারপর লিজা বললো
সিমা এদিকে আয়
।
জ্বী ভাবি। বলেন,,,
।
আম্মু তুমি তোমার আব্বু সাথে উপরে যাও আমি আসতেছি,,, কেমন??
।
সাদিক ও বুঝতে পারলো লিজা কি মিন করছে
তাই ও সামিরাকে নিয়ে উপরে চলে যায়।
।
এবার বল সিমা,, আমি তোর কি ক্ষতি করেছি। যার জন্য তুই আমার এতো বড় ক্ষতি করতে চাচ্ছিস??
।
,,ক্ষতি মানে? (অবাক হয়ে)
।
এখন ন্যাকা সাজার চেষ্টা করছিস?
তুই শাওনকে কিসের জন্য বলেছিস যে শাওন সামিরার বাবা?
।
কি বলছেন এসব? আপনি ঠিক আছেন??
পানি খাবেন,, নাকি ভাইয়া কিছু বলছে??
।
আমি জানি তুই গভীর জলের মাছ তুই শাওন মিলে নিশ্চই কিছু একটা করছিস।। সেটা এতোদিনে না বুঝলেও আজ হারেহারে টের পাচ্ছি।
কিন্তু আমাকে শুধু এটা বল তুই এসব করছিস কেন???
কেন আমার সংসার টা ভাঙ্গতে চাচ্ছিস??
হ্যা,,, আমি জানি আসল দোষটা আমার আমি দোষী। আমি শাওনের কাছে গেছিলাম নিজের চাহিদার জন্য। কিন্তু সেটার সাথে সামিরার সম্পর্ক কি??
আর এসব আমি সাদিকের সাথে প্রায় সব কিছু ঠিক করে নিয়েছিলাম। আমি জানতাম ও সামিরা আর আমাকে অনেক ভালো বাসে।
কোন কারণেও ও সামিরাকে হারাতে চায় না। তাহলে তুই মিটে যাওয়া ঝামেলা কেন আবার শুরু করলি
তুই কি বুঝতে পারছিস না
তুই আমার সাথে আরো দুইটা জীবন নষ্ট করছিস??
একবার সাদিকের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখেছিস?
কি দোষ ওর?
ওকে কেন কষ্ট দিতে চাচ্ছিস তুই?
তোকে তো বোন ডেকেছিলাম আমি
তাহলে কেন?
।
ভাবি আমি সত্যিই কিছু বুঝতে পারছি না। আপনি এসব আমাকে কেন বলছেন ।।। আর আমি এখন যাই মাথা ব্যাথা করছে। আর অনেক কাজ ও আছে।
বলেই চলে গেলো সিমা।
লিজা ওকে আটকানোর চেষ্টা করলো না।
কারণ সত্যের উপর কোন জুলুম চলে না।
সে তার আপন গতীতেই চলে।
।
রাত ১০ টা……
লিজা সামিরাকে নিয়ে ডিনার করে ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে,,রুমে এসে দেখে সাদিক জানালার গ্রিল ধরে দারিয়ে আছে।
।
ঘুমাকে না?( লিজা)
।
সামিরা ঘুমিয়েছে??
।
হুমমম ওকে ঘুমিয়ে দিয়ে আসলাম।
।
ওওও তুমি শুয়ে পরো।
।
ওকে,, তারাতারি এসো,,
।
হুমমম,,, আচ্ছা লিজা শাওন কি সামিরাকে নিয়ে যাবে??
।
না সাদিক আমি ওকে সামিরাকে নিয়ে যেতে দেবো না।
।
একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে সাদিক বললো সামিরাকে ছাড়া আমি বাচবো না লিজা,,,আমি এটা মানি না সামিরা আমার মেয়ে না।
দেখেছো,, তুমি তোমার ইচ্ছা,চাহিদা মেটাতে গিয়ে নিজের সাথে আমাদেরও কোথায় দাড় করিয়েছো??
।
আম্মু.……. পিছন থেকে লিজাকে জরিয়ে ধরে বললো সামিরা
।
একি আম্মু তুমি ঘুমাও নি??
।
নাহহ ঘুম আসছে না। আজ আমি তোমারদের সাথে ঘুমাবো প্লিজ প্লিজ শুধু আজ,,,, প্লিজ আম্মু, প্লিজ আব্বু
।
ওকে,,,,,আসো,,,আমার লক্ষি মেয়ে।
আসো সাদিক ঘুমিয়ে পরো।
টেনশন করো না। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।
।
আচ্ছা লিজা,,,, তুমি কি জানে সিমা এসব কেন করছে?
কেন সিমা শাওনকে উস্কে দিচ্চে এসব বলে?
।
নাহ,,, আর আমিও এই বিষয় টা এখনো বুঝতে পারছি না। সিমা এসব করছে কেন??
টেনশন করো না,,,ঘুমিয়ে পরো
।
অতঃপর সাদিক, লিজা,সামিরা ঘুমিয়ে পড়লো।
।
গভীর রাতে ঘুম ভাঙ্গে সাদিকের
খেয়াল করে দেখে সামিরা ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।
সাদিক সামিরার মাথায় হাত বুলাচ্ছে আর ভাবছে
আমি সত্যিই সামিরার বাবা না???
এই প্রশ্নটার সাথে আরো একটা প্রশ্ন ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটা হলো।
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
শ্যামলি সেদিন তাহলে কার বাচ্চার কথা বলছিলো আমায়??
ও তো বলেছিলো যে ওর বাচ্চার বাবা আমি। ওর গর্ভে আমার সন্তান। তাহলে???
এসব ভাবছে আর
এপাশ ওপাশ করতে লাগলো কিন্তু ঘুম আসছে না সাদিকের।
লিজার মুখে বাবা হতে পারবে না কথাটা শোনার পর থেকে সাদিক কিছুটা চুপচাপ হয়ে যায়। করণ এই দুইটা প্রশ্নের উত্তর খোজতেই ব্যাস্ত সে।
আর ব্যাস্ত হওয়াই কথা।
কেউ যদি হঠাৎ কোন পুরুষ কে বলে যে সে বাবা হতে পারবে না। তাহলে সে এমনিতেই একটু চিন্তায় পরে যায়।
আর সাদিক তো তার স্ত্রীর থেকে শুনেছে।
।
।
এদিকে সিমা ডিনার করে সব কিছু ঘুছিয়ে রেখে নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পরবে
তখনি ওর ফোনটা বেজে উঠলো।
মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে শাওনের কল।
তারাতারি করে রিসিভ করলো।
।
রিসিভ করতেই শাওন বললো
সব ঠিকঠাক আছে তো???
।
।
।
>>>>চলবে?