#চন্দ্ররঙা_প্রেম_২
#পর্বঃ৩
#আর্শিয়া_সেহের
চারিদিকে পাখিদের কিচিরমিচির শুরু হয়েছে। ভোরের আলো ফুটেছে বেশ আগে। রুশান বিছানার এপাশ থেকে ওপাশে গড়াগড়ি করছে। দরজার ওপাশ থেকে পাঁচ মিনিট যাবৎ শান্ত রুশানকে ডেকে চলেছে। অলস রুশান ঘুমের জন্য চোখই মেলতে পারছে না। শান্ত ডাকাডাকি করে একসময় হাঁপিয়ে গেলো। ওপাশ থেকে চেঁচিয়ে বললো,
-“আমি জানি তুমি উঠেছো , কিন্তু ডাক শুনতেছো না। আমি একটু পরেই স্কুলে চলে যাবো এজন্য দেখা করতে এসেছিলাম। তুমি তো আজই চলে যাবা শুনলাম।
সাঁঝের মতো তুমিও আমাকে দাম দিলে না। যাই হোক,কোনো ব্যাপার না। আমি ডাক্তার হওয়ার পর তোমরাও আমার কাছে পাত্তা পাবা না।
আর আমি এইযে বলে গেলাম, পুনম আপু তোমাকে উঠতে বসতে এই ঘুমের জন্য উদুম ক্যালাবে। মিলিয়ে নিও ,হুহ।”
শান্তর কথা শুনে রুশান চোখ বন্ধ অবস্থাতেই মৃদু হাসলো। খুব কষ্টে এক চোখ মেলে দেখলো সাতটা পঁচিশ বাজে। আটটার এলার্ম সেট করা আছে ফোনে। রুশান আরো পঁয়ত্রিশ মিনিট ঘুমানোর লক্ষ্যে বিছানায় মিশে গেলো।
.
-” আর কত ঘুমাবেন? উঠেন এখন। সাঁঝকে স্কুলে ভর্তি করতে যেতে হবে আজ। ভুলে গেছেন নাকি?”
রুমঝুমের কথাগুলো শান শুনতে পেলো কি না তা বোঝা গেলো না। সে নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লো।
রুমঝুম শানের পাশে বসে ওকে ধাক্কানো শুরু করলো। শান ঘুমের মধ্যেই কপাল কুঁচকে রুমঝুমকে বুকে টেনে নিলো। শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো বুকের মধ্যে।
রুমঝুম হাঁসফাঁস করতে করতে বললো,
-“আরে ছাড়ুন। দরজা খোলা। সাঁঝ এসে যাবে। ছাড়ুন আমাকে।”
শান ছাড়লো না। আরো গভীরভাবে জড়িয়ে ধরলো । রুমঝুম হতাশ হয়ে শানের বুকের পশম ধরে টান দিলো। শান ধড়পড়িয়ে উঠে বসলো। বুকে হাত বুলাতে বুলাতে রাগী দৃষ্টিতে তাকালো রুমঝুমের দিকে। রুমঝুম হাঁসতে হাঁসতে উঠে বসলো বিছানায়।
সেই হাসির শব্দে শানের রাগ গলে পানি হয়ে গেলো। শান মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো বিছানায়।
রুমঝুমের হাঁসি থামছেই না। সে হেঁসেই যাচ্ছে। রুমঝুমের হাঁসি দেখে শান মুখ ফুলিয়েও থাকতে পারলো না। মুচকি হেঁসে রুমঝুমের চুল টেনে দিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে পড়লো।
রুমঝুম বিছানা গুছিয়ে নিচে নেমে এলো। ব্রেকফাস্ট রেডি হয়ে গেছে। শান্ত আর সাঁঝের খাবার রেডি করে দিলো রুমঝুম । প্রতিদিন সকালে শান্ত সাঁঝকে খাইয়ে দেয়। সাঁঝের ছোট্ট বয়স থেকেই এটা করে শান্ত। রুমঝুম ওদের খাবার দিয়ে রুশানকে ডেকে তুললো।
..
সকাল সাড়ে আটটার মধ্যেই পিহু রুশানের পাঠানো ঠিকানায় চলে এলো। সামনে বড় একটা সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘মাহমুদ গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ’ ।
পিহু গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে রুশানকে কল করলো। রুশান তখন সবার সাথে বসে খাচ্ছিলো। পিহুর নাম্বার দেখে রুশান ফোন রিসিভ করলো।
-“শুভ সকাল,মিস পিহু। ”
-“শুভ সকাল। আমি তো চলে এসেছি।”
রুশান হাত ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে বললো,
-“এতো তাড়াতাড়ি কেন? আপনাকে তো আরো আধ ঘন্টা পর আসতে বলেছিলাম।”
পিহু আমতা আমতা করে বললো,
-“ওই আসলে এক্সাইটমেন্টের জন্য আর কি।”
রুশান হেঁসে ফেললো। কান থেকে ফোন নামিয়ে শানের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“ভাইয়া,ওই মেয়েটা চলে এসেছে।”
শান খেতে খেতে বললো,
-“ওকে ভেতরে বসতে বলো। আমরা নয়টার মধ্যে পৌঁছে যাবো।”
রুশান পুনরায় ফোন কানে নিয়ে বললো,
-“আপনি ভেতরে গিয়ে বসুন। আমরা নয়টার মধ্যে আসছি।”
পিহু গেইটের ফাঁক দিয়ে ভেতরে একবার তাকিয়ে বললো,
-“আচ্ছা। সাবধানে আসুন।”
খাওয়া শেষে রুশান একবারে রেডি হয়ে বেরিয়ে এলো। শানের অফিস থেকে সোজা যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে সে।
রুশান সদর দরজার সামনে গিয়ে শানের জন্য অপেক্ষা করছিলো। তখনি সাঁঝ কোথা থেকে দৌড়ে এলো রুশানের কাছে। রুশান সাঁঝকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,
-“আমার সাঁঝ মামনি এতো দৌড়াদৌড়ি করে কেন?”
সাঁঝ রুশানের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললো,
-“তুমি চলে যাচ্ছো কেন, মামা? আরেকটু থাকো না। আর মাত্র একুশ দিন থাকো।”
-“মামা আবার আসবে, সাঁঝ। তুমি ভেতরে যাও। মামা আর পাপা এখন বাইরে যাবে।”
রুমঝুমের কথায় সাঁঝের মুখটা মলিন হয়ে গেলো। রুশান সাঁঝের গালে চুমু দিয়ে বললো,
-“গেস্ট রুমের বিছানার উপর আমি সাঁঝ বুড়ির জন্য কিছু একটা রেখে এসেছি। সে চাইলে নিতে পারে।”
সাঁঝ চোখ বড় বড় করে উচ্ছাসিত বললো,
-“চকোলেট?”
রুশান সাঁঝকে কোল থেকে নামিয়ে বললো,
-“নিজেই দেখে নাও গিয়ে।”
সাঁঝ দৌড়ে ভেতরে চলে গেলো। রুশান প্রতিবারই যাওয়ার সময় তাকে চকোলেট দিয়ে যায় অনেক গুলো।
সাঁঝ চলে যাওয়া মাত্রই শান বেরিয়ে এলো। রুমঝুমের কপালে চুমু দিয়ে বললো,
-“সাঁঝকে নিয়ে তৈরি থেকো। আমি দশটার মধ্যে এসে তোমাদের নিয়ে স্কুলে যাবো।ওকে?”
রুমঝুম মুচকি হেঁসে মাথা দোলালো।
রুশান বললো,
-“আপনি গাড়ি নিয়ে যান ভাইয়া। আমি বাইক নিয়ে আসতেছি ।”
শান ‘ওকে’ বলে বেরিয়ে গেলো।
রুশান রুমঝুমের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“তুমি কি আমায় কিছু বলবে আপু?”
রুমঝুম রুশানের সামনে এসে দাঁড়ালো। কিছুটা রাগী স্বরে বললো,
-“পুনমের ফোন রিসিভ করছিস না কেন?”
রুশান মাথা চুলকে ভ্যাবলার মতো হেঁসে বললো,
-“আসলে আপু ওর উপর রাগ করেছি একটু । এজন্য আর কি।”
রুমঝুম রুশানের কান টেনে বললো,
-“এতো রাগ করতে হবে না। গিয়ে সরি বলবি। মেয়েটা আমাকে ফোন দিয়ে কেঁদে ভাসাচ্ছিলো।”
রুশান মুখ বাঁকিয়ে বললো,
-” ও কান্না ছাড়া পারে কি বলো তো?”
-“তোর জানতে হবে না কি পারে। সাবধানে যা। বাড়িতে গিয়ে কল করিস আমাকে।”
রুশান হেঁসে বললো,
-“আচ্ছা। নিজের খেয়াল রেখো আপু। আর আমার পিচ্চি মামারও খেয়াল রেখো।”
..
রুশান অফিসে পৌঁছে দেখলো পিহু জড়োসড়ো হয়ে এক কোনায় একটা চেয়ারে বসে আছে। রুশান পিহুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। ধীর কন্ঠে বললো,
-“মিস পিহু,আর ইউ ওকে?”
পরিচিত কন্ঠ পেয়ে পিহু ঝট করে মাথা তুললো। রুশানের মুখটা চোখের সামনে স্পষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই পিহুর সমস্ত ভয় দূর হয়ে গেলো।রুশানের সেই পাতলা ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা হাঁসিতে হারিয়ে ফেললো নিজেকে।
রুশান পিহুর সামনে তুড়ি বাজিয়ে বললো,
-“কোথায় হারালেন আপনি? ভেতরে চলুন। ভাইয়া অপেক্ষা করছে।”
পিহু থতমত খেয়ে গেলো। নিজেকে ধাতস্থ করে মিষ্টি করে হেঁসে উঠে দাঁড়ালো। রুশানের পিছু পিছু হেঁটে শানের কেবিনের সামনে এসে দাঁড়ালো।
রুশানেই দরজায় নক করতেই শান ভেতর থেকে বললো,
-“কাম ইন।”
শান মুখ তুলে তাকালো। রুশানের পেছনেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটি। চোখে মুখে বেশ উত্তেজনা বিরাজমান। শান মুচকি হেঁসে বললো,
-“সিট ডাউন।”
রুশান আর পিহু শানের মুখোমুখি বসলো। পিহু তার ফাইলটা এগিয়ে দিলো শানের দিকে।
শান সব কিছু চেক করে বললো,
-“গুড স্টুডেন্ট। তো মিস পিহুক , আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হওয়া সত্ত্বেও আমি আপনাকে কাজটা কেন দিবো? এ ব্যাপারে কিছু বলার আছে আপনার?”
পিহু একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো,
-“স.স্যার ,আমার মনে হয় কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে আগ্রহ আর দক্ষতার প্রয়োজন হয় বেশি। আগ্রহ তো আমার আছে আর আশা কারছি দক্ষতাও হয়ে যাবে অল্প দিনে।
-“ব্যাস এটুকুই?”
পিহু এবার নড়েচড়ে রুশানের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো। শান মুচকি হেঁসে বললো,
–“রিল্যাক্স মিস পিহুক। এতোটা ভয় পাওয়ার মতো কিছু বলিনি আমি। আপনাকে কথা বলার দক্ষতা আগে অর্জন করতে হবে। সবার প্রশ্নের এবং কটু কথার জবাব দিতে হবে। এই নরম সরম মানুষটাকে শক্ত খোলসের মধ্যে লুকিয়ে ফেলতে হবে। আমি কি বলতে চেয়েছি, আশা করি সেটা আপনি বুঝেছেন।”
পিহু এবার শানের চোখে চোখ রেখে বললো,
-“আমি বুঝেছি স্যার। আই উইল ট্রাই।”
শান পিহুর ফাইল বন্ধ করে বললো,
-“আপনি কাল থেকে জয়েন করুন। কাল সকাল নয়টায় চলে আসবেন। আপনাকে আপনার কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
পিহু কৃতজ্ঞতায় মাথা নিচু করে ফেললো। কান্না আটকে বললো,
-“অনেক অনেক ধন্যবাদ স্যার। আপনি আমার অনেক বড় উপকার করলেন।”
শান হেঁসে বললো,
-“আমি আর কি করলাম। ধন্যবাদ আপনার পাশে বসা মানুষটিকে জানান।”
রুশান দাঁড়িয়ে বললো,
-“কোনো দরকার নেই ধন্যবাদের। এটা মানুষ হিসেবে অন্য মানুষের প্রতি কর্তব্য আমি মনে করি।
যাই হোক ভাইয়া,আমি আসি। একটু পরেই যশোর চলে যাবো। ভালো থাকবেন আপনারা। ”
-“হুম সে না হয় থাকবো ভালো। তুমিও ভালো থেকো। নিজের খেয়াল রেখো এন্ড বি কেয়ারফুল।”
রুশান হাঁসলো। শানকে বিদায় জানিয়ে পিহুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। পিহু বাইরে এসেই রুশানকে বললো,
-“আপনার এই উপকার আমি কখনো ভুলবো না। অনেক বড় উপকার করলেন আমার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।”
রুশান কোনো উত্তর না দিয়ে শুধু হাঁসলো।
গেটের কাছে আসতেই পিহুর ফোন বেজে উঠলো। বেশ কয়েকবার বাজার পরও পিহু রিসিভ করলো না দেখে রুশান পিহুর দিকে তাকালো। পিহু ভয়ার্ত মুখে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। রুশান কাছে এসে স্কীনে তাকিয়ে দেখলো আরিয়ান কল করেছে।
রুশান পিহুকে আশ্বাস দিয়ে বললো,
-“রিসিভ করুন।”
পিহু কাঁপা হাতে ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আরিয়ানের কর্কশ কন্ঠ ভেসে এলো।
-“কি ভাবছোস তুই? চাকরি করলেই আমি তোরে শান্তিতে থাকতে দেবো? নতুন নাগর জুটাইছোস তুই? তোর জীবন এবার নরক করবো আমি। খালি দ্যাখ তুই। সাড়ে পাঁচ মাস তোর সংসারে টাকা দিছি। সেই সব টাকা ফিরায় দিবি আজকেই। তারপর তোরে দেখতেছি আমি।”
পিহু কল কেটে ভয় জড়ানো কন্ঠে বললো,
-“এই ছেলেটা আমাকে বাঁচতে দিবে না। শেষ করে দিবে আমাকে।”
রুশান কিছুক্ষণ ভেবে তনিমের নাম্বারে কল করলো। তনিমকে এড্রেস পাঠিয়ে বিশ মিনিটের মধ্যে আসতে বললো।
বাইশ মিনিটের মাথায় তনিম এসে হাজির হলো। রুশানের সামনে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,
-“সরি স্যার। দুই মিনিট লেট হলো।”
রুশান হালকা হেঁসে বললো,
-“দুই মিনিট লেটের জন্য তোমাকে কঠিন একটা শাস্তি দিয়ে যাবো, তনিম।”
তনিম শুকনো মুখে বললো,
-“কি শাস্তি স্যার?”
রুশান পিহুকে ডাক দিলো। তনিম একনজর পিহুর দিকে তাকালো। ফর্সা না হলেও নিঃসন্দেহে সুন্দরী মেয়েটা। পিহু ধীর পায়ে হেঁটে এসে রুশানের পাশে দাঁড়ালো।
রুশান তনিমের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“এটাই তোমার শাস্তি।”
তনিম বুঝতে না পেরে বললো,
-“ঠিক বুঝলাম না স্যার।”
রুশান তনিমকে পিহুর সাথে ঘটা সবকিছুই সংক্ষিপ্ত আকারে বললো। একটু আগে আরিয়ানের ফোন করে হুমকির ব্যাপারটিও বললো। সবকিছু শুনে তনিমের মাথায় রাগ উঠে গেলো। মানুষ হয়ে মানুষের সাথে এমন অমানবিক আচরণ কিভাবে করে এরা?
রুশান তনিমকে বললো,
-“তোমার শাস্তি হলো কাজের পাশাপাশি এই মেয়েটিকে তার বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করা।”
তনিম হেঁসে মাথা নিচু করে বললো,
-“যথা আজ্ঞা,মহারাজ।”
রুশান পিহুর দিকে তাকিয়ে বললো,
-” সাড়ে পাঁচ মাসে কত টাকা দিয়েছে সে তোমার পরিবারে?”
পিহু একটু ভেবে বললো,
-“চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ হাজারের মতো দিয়েছে।”
রুশান তনিমের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“এই টাকাটা তুমি দিয়ে দিয়ো, তনিম। ”
পিহু আঁতকে উঠে বললো,
-“না না,কোনো দরকার নেই। আমি ম্যানেজ করতে পারবো।”
তনিম বুকে হাত বেঁধে বললো,
-“ওহ তাই নাকি? তা কোথা থেকে ম্যানেজ করবেন?”
পিহু চুপ হয়ে গেলো। আসলেই তো। কোথা থেকে ম্যানেজ করবে সে।
রুশান বাইকের কাছে এগিয়ে গেলো। বাইকে বসে বললো,
-“আটাতত আমাদের সাহায্য গ্রহণ করো। পরে না হয় সুযোগ মতো পরিশোধ করে দিয়ো।”
রুশানের কথা শুনে মুচকি হাসলো পিহু। তনিম আর পিহুর থেকে বিদায় নিয়ে রুশান রওনা হলো যশোরের উদ্দেশ্যে।
…
রুশান যখন বাড়ি পৌঁছালো তখন সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়েছে। কিছুক্ষণ পরই সন্ধ্যা নামবে। রুশান গান গাইতে গাইতে ভেতরে বাইক থামিয়ে ভেতরে ঢুকছিলো তখনি বাড়ির পেছন দিক থেকে তাহমিদ দৌড়াতে দৌড়াতে এলো। রুশানকে দেখেই দৌড়ে এসে রুশানের কোলে উঠে গেলো। রুশানের গলা জড়িয়ে ধরে বললো,
-“চাচ্চু,তুমি বাড়ির মধ্যে যেও না।”
রুশান তাহমিদকে জড়িয়ে নিয়ে বললো,
-“কেন যাবো না চাচ্চু?”
তাহমিদ ফিসফিস করে বললো,
-“পুনম আন্টি ভেতরে বসে আছে।”
রুশান হা হয়ে গেলো।চোখ বড় বড় করে বললো,
-“ও কখন এসেছে? ও কিভাবে জানলো আমি আসছি?”
তাহমিদ একটু চিন্তা করে বললো,
-“ফুপি বলেছে তুমি আসবা তাই। দুপুরের থেকেই বসে আছে সোফায়। আজকে তোমার একটা ব্যবস্থা করে যাবে বলেছে।”
রুশান তাহমিদকে নিয়ে বাড়ির পেছনে লুকিয়ে পড়লো। পুনম সন্ধ্যার আগেই বেরিয়ে যাবে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত। তাহমিদ রুশানের কোলে থেকে বললো,
-“আমাকে নামিয়ে দাও ,চাচ্চু। আমি দেখে আসি পুনম আন্টি কি করছে। ”
রুশান তাহমিদকে নামিয়ে দিলো। তাহমিদ বাড়ির মধ্যে ঢুকতেই উপরের বেলকনি দিয়ে রুশানকে ডাকলো মেঘা। রুমেল-মেঘার ঘরের বেলকনি দিয়ে বাড়ির পেছনটা দেখা যায় ভালো মতো।
রুশান মাথা ঘুরিয়ে মেঘার দিকে তাকালো। অসহায়ভাবে চেয়ে হাতজোড় করে অনুরোধের ভঙ্গিতে বললো,
-“আজকের মতো বাচিয়ে দাও ভাবি, প্লিজ।”
মেঘা মুচকি হেঁসে ভেতরে চলে গেলো। তার মিনিট পাঁচেক পরই পুনম বেরিয়ে গেলো বাড়ি থেকে। রুশান বুকে হাত দিয়ে লম্বা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো,’আজকের মতো বেঁচে গেলাম।’
চলবে…….
(রি-চেক দেওয়া হয়নি। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)