গল্প:-বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:- (০৮,শেষ)
লেখা_AL_Mohammad_Sourav
!!
সুন্দরী একটা বউ থাকতে আরেকটা বিয়ে কেনো করতে যাবো? ভাবি তোমার বোনকে তুমি ইচ্ছে করে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে তোমার বোনের জীবনটা নষ্ট করতে চাচ্ছো কেনো?
ভাবি:- নষ্ট কেনো করবো বরং তোমার সাথে মনি এর বিয়ে হবার কিছু দিন পর তোমার আগের বউ তসিবা নিজে থেকে বাড়ী ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে।
তসিবা:- ও তাই নাকী আপনি নিজেকে অনেক বেশি চালাক মনে করেন তাইনা ভাবি। এতক্ষন চুপ ছিলাম কারন সৌরভ আমার পাশে ছিলোনা। এখন সৌরভ আমার পাশে আছে তাই বলে দেয় তোমার চুক্তির কাগজটা একটু মনোযোগ সহকারে পড়ে দেখ।
ভাবি:- মানে?
তসিবা:- মানে তোমার চুক্তির কাগজটা আমি লিখাইছি কম্পিউটার টাইপ করেছে আমি যেই ভাবে বলছি সেই ভাবে।
আমি:- ভাবি তুমি একটু কষ্ট করে পড়ে নাও আর তোমার বোনকে আজকে নিজ দায়িত্বে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিও। (ভাবি কাগজ গুলি পড়ে বসে পরেছে আর মাথায় হাত দিয়ে ভাইয়ার পায়ে পড়ে কান্না কাটি শুরু করেছে)
ভাইয়া:- আরে এমন করছো কেনো কি লিখা আছে কাগজে?
ভাবি:- যতদিন আমি বেচে থাকবো ততদিন তোমার বাবা মায়ের কথা মত চলতে হবে। আর আমি চাইলে তোমাদের পরিবারের কারো সাথে কোনো রকম খারাপ আচরন করতে না পারি।
তসিবা:- ঐ আসলটা তো বলেন নাই বাড়ীটা যে আমার শ্বশুড়ের নামে আছে।
ভাবি:- আব্বাজান আম্মাজান আমি যা করেছি সব কিছুর জন্য আমাকে ক্ষমা করে দেন।
আম্মা:- ছিঃ বউ তোমার জন্য আজ আমাদের সংসারে অনেক অশান্তি তৈরি হয়ছে। তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি তবে তোমরা এই বাড়ীতে থাকতে পারবেনা।
আব্বা:- সাহেদ তুই সব জানতি কিন্তু তোর বউকে বাধা দেসনি বরং তুই উৎসাহ প্রধান করেছিস। আমি চাই তোরা আগের যায়গা চলে যা আমি সৌরভকে নিয়ে থাকবো।
ভাইয়া:- আব্বা আম্মা আমাকে ক্ষমা করা দেন আর আপনাদের পায়ে শেষ বারের মত যায়গা দেন। আপনাদের বউ আর জীবনেও এমন কোনো দরনের খারাপ কাজে নিজেকে জড়াবে না।
আমি:- আম্মা আব্বা ওদের ক্ষমা করে দেন। যা হবার হয়ে গেছে মানুষ মাত্রই ভুল করে আর ক্ষমা করাটা সবচেয়ে মহৎ কাজ।
তসিবা:- হ্যা আপনারা ওনাদের ক্ষমা করে দেন। আমি তো অনেক অন্যায় করেছি আমাকেও ক্ষমা করে দেন।
আম্মা:- ঠিক আছে আজ থেকে তোরা আমার দুইটা মেয়ে ছোট মেয়ে আর বড় মেয়ে।
আব্বা:- তাহলে আমিও ক্ষমা করে দিলাম। এখন সবাই খেতে এসো আমার অনেক খিদা লাগছে। আর মনি তুমি কাল সকালে তোমাদের বাড়ীতে চলে যাবে আমি চাইনা কোনো রকম অশান্তি তৈরি হোক।
মনি:- সবাই তো অনেক কিছুই বলছেন আসলে সত্যি ববলতে আমি কিন্তু এখানে সৌরভকে বিয়ে করতে আসিনি। এসেছি কিছুদিন থাকবো বলে তখনি আপু আমাকে বলে সৌরভকে বিয়ে করতে কিন্তু রাজি হয়নি তবে আপু জোর করে আমাকে রাজি করিয়েছে। সরি আপনাদের সবাইকে আমার জন্য অনেক কষ্ট পেতে হয়ছে আমি আজকে রাতের বাসে বাড়ীতে চলে যাবো।
আব্বা:- ঠিক আছে তাই হবে সাহেদ তুই মনিকে বাসে তুলে দিয়ে আসিস এখন সবাই খেতে বসো।
ভাইয়া:- ঠিক আছে তাই হবে। (সবাই খেতে বসেছি আজকে রান্না নিয়ে কোনো জ্বামেলা হয়নি সবাই খেয়ে নিয়েছে)
মনি:- তাহলে আমি চলে যাচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন বাই। (মনিকে নিয়ে ভাইয়া বের হয়ছে আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মারতেছি কিন্তু তসিবা কোনো সারা দিচ্ছেনা চুপ চাপ দাঁড়িয়ে আছে।)
আব্বা:- তাহলে সবাই যার যার রুমে চলে যাও আর আজকের পর আর কোনো অশান্তি চাইনা আমি।
আমি:- ঠিক আছে! তসিবা এসো বলে আমি রুমে চলে এসেছি কিন্তু তসিবার আসার কোনো খবর নেই কখন ধরে অপেক্ষা করতেছি প্রায় ৪০ মিনিট পর তসিবা রুমে এসেছে। কোথায় ছিলে এতক্ষন তুমি?
তসিবা:- কোথায় আবার কাজের মেয়ের তো অনেক কাজ থাকে সেই গুলি শেষ করে এসেছি। দেখি সরো আমি বারান্দায় ঘুমাবো বলে তসিবা বালিশ নিয়ে হাটা দিয়েছে আর আমি পেছন থেকে সোজা কুলে তুলে নিয়েছি।
আমি:- এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে আরো দেরি করতে চাও নাকী?
তসিবা:- মানে কিসের দেরি হয়ছে?
আমি:- তোমার মেয়ে তানুশা আশার জন্য অপেক্ষা করতেছে ওকে আনবে না?
তসিবা:- কি তুমি তাহলে এখন রোমান্টিক মুডে চলে গেছো? না আনবোনা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো আমি তোমাকে কিছু দিবোনা।
আমি:- ঠিক আছে তাহলে আমিই নিবো বলে ওর কপালে আলতু ছুয়ে দিয়েছি তসিবা চোখ বন্ধ করে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আজকে রাতটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মধুর রাত পার হয়েছে। সকালে সোনালী রৌদে ঘুম ভাংগছে তসিবার দিকে তাকিয়ে দেখি তসিবা ঘুমিয়ে আছে আর ওকে আরো সুন্দর লাগছে। তসিবার ঘুমন্ত চেহারাটা খুব মায়াবি লাগছে। ওর কপালে চুমু খেতেই চোখ খুলে ফেলছে।
তসিবা:- কি করছো তুমি?
আমি:- আদর করতেছি।
তসিবা:- ঠিক আছে করো বলে আমার বুকের মাঝে ওর মুখ লুকিয়ে নিয়েছে। দুজনে কিছুটা রোমান্সস করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। সকালে নাস্তা করে অফিসের জন্য বের হয়েছি অফিসে এসে তসিবাকে ফোন করে বলছি। তসিবা এখন আগের চাইতে অনেকটা গুচিয়ে নিয়েছে নিজেকে। ভালোই চলছে আমাদের বিয়ের বন্ধন কাজ শেষ করেছি তসিবা ফোন করেছে।
তসিবা:- আমি তোমার অফিসের নিচে আছি তুমি এসো দুজনে কেনা কাটা করবো।
আমি:- তুমি থাকো আমি আসতেছি। তাড়া তাড়ি করে নিচে এসেছি তসিবা আজ বোরকা পড়ে এসেছে ভালোই লাগছে তসিবাকে নিজের বউ বলে কথা। দুজনে মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনা কাটা করে নিয়েছি। রাতে বাহিরে ডিনার করে বাসায় এসেছি রাত ১১টার দিকে। দেখতে দেখতে আজ তসিবা মা হতে চলছে সময়টা ভালোই কাটছিলো আমাদের আর ভালোবাসাটা এতদিন ধরে কিন্তু হঠাত করে আব্বু ফোন করে বলে সৌরভ তাড়া তাড়ি করে হাসপাতালে আয় বউমাকে নিয়ে আমরা সবাই কুূমিটুলা হাসপাতালে আছি। আব্বু কথাটা বলে ফোনটা কেটে দিয়ে বুকের বা পাশ চিন চিন করতে শুরু করেছে তাড়া হুড়া করে হাসপাতালে গেছি গিয়ে দেখি তসিবা শুয়ে।
আব্বা:- ডাক্তার বলছে চিন্তার কোনো কারন নেই বউ মা ঠিক আছে আর তোদের মেয়ে ঠিক আছে।
আম্মা:- দেখ সৌরভ মেয়েটা ঠিক দেখতে তোর মত হয়েছে।
আমি:- হ্যা তাই তো কিন্তু তসিবা কথা বলছেনা কেনো?
এই তসিবা কি হলো কথা বলো তখনি আমার কান ধরে কাছে নিয়ে বলে।
তসিবা:- চেচাচ্ছো কেনো? তোমাকে একা রেখে আমি যাবো কোথায়?
আমি:- তোমাকে কোথাও যেতে দিলে তো তানুশাকে আম্মা আমাদের মাঝে দিয়ে সবাই বেড়িয়ে গেছে। দেখছো আমার মেয়ে ঠিক আমার মত দেখতে হয়েছে।
তসিবা:- তবে সব আচরন আমার মত হবে দেখো কপালে হাত রেখে কি সুন্দর ঘুমাচ্ছে দুজনে।
আমি:- ঠিক তাই বলে তসিবা কপালে চুমু খেয়ে চোখ বেয়ে পানি চলে আসছে আমার। বাবা হওয়ার সাধ তো পেয়ে গেলাম কিন্তু যার জন্য পেয়েছি তার যে কি পরিমান কষ্ট হয়েছে সেইটা সেই বুঝতে পারছে তাই এখন থেকে তসিবাকে আমি আরো বেশি ভালোবাসি যার ফলে তসিবা ওর সব কষ্ট সহজে ভুলে গেছে তানুশাকে নিয়ে সুন্দর ভাবে চলছে আমাদের সূখের সংসার আর যদিও কিছুটা কষ্ট পেয়েছি বিয়ের প্রথমে এখন সেই কষ্টটা আর নেই আমাদের দুজনের মাঝে।
!!
গল্পটা লিখার মাঝে লম্বা একটা গেপ হয়েছে যার কারনে গল্পটা সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে পারিনি। যদি কোনো ভুল ত্রুটি হয়ে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আর হ্যা তাও আপনারা সবাই গল্পটা কেমন হয়ছে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন প্লিজ। নতুন গল্প লিখবো কিছুদিন পর থেকে সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য আপনারা সবাই ভালো থাকবেন আস্সালামু আলাইকুম।
!!
………………………………সমাপ্তি……………………………….