গল্প:-বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৭)
লেখা_AL_Mohammad_Sourav
!!
পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ভাবি তসিবাকে থাপ্পড় দিয়েছে আর তসিবা মাথা ঘুরে নিচে পড়ে গেছে। আমি দৌরে তসিবার কাছে গেছি তখনি আম্মা বলে।
আম্মু:- সৌরভ তুই অফিসে যাসনি?
আমি:- নাহ যেতে ছিলাম কিন্তু ভাবি তুমি তসিবাকে থাপ্পড় দিলে কেনো?
ভাবি:- তোমার বউ দেখো আমার গায়ের উপর গরম চা ছুড়ে মারছে। আমার শাড়ীটা নষ্ট করে ফেলছে আর আমি বসে থাকবো।
আমি:- চা টা তো মনে হয় ঠান্ডা হয়ে গেছে সেই কখন। আর তাছাড়া তসিবা শুধু শুধু তোমার উপর চা ফেলতে যাবে কেনো?
ভাবি:- তসিবাকে বলেছি বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে তাই চা ছুড়ে মারছে।
আমি:- সেইটা তুমি বলার কে?
ভাবি:- সৌরভ তুমি এই কথাটা বলতে পারলে?
আমি:- হ্যা পারছি! তখনি তসিবাকে ধরে উঠায়ছি তসিবার ঠোট কেটে গেছে আমি রুমে নিয়ে গেছে। তুলা দিয়ে রক্ত মুছে দিলাম আর কিছুটা মেডিসিন দিয়ে দিলাম। তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তসিবা:- আমাকে ক্ষমা করা যায়না?
আমি:- মানে কিসের জন্য ক্ষমা করবো শুনি?
তসিবা:- আমি যা করেছি তোমার সাথে তার জন্য।
আমি:- আচ্ছা তোমার মতলব কি শুনি?
তসিবা:- কিসের মতলব?
আমি:- তুমি আমাদের বাড়ীতে এসেছো কেনো? তোমার মতি গতি আমার কাছে সুবিধার লাগছেনা। মনে হচ্ছে তুমি নতুন কোনো প্লান করে এসেছো।
তসিবা:- তোমাদের বাড়ীতে এসেছি মানে আমি তো আমার স্বামীর বাড়ীতে এসেছি। আর প্লান করবো কেনো আমি ইচ্ছে করলে এখনো তোমাকে জেলের ভাত খাওয়াতে পারি তবে তা করবো না।
আমি:- তাহলে কেনো এসেছো শুনি?
তসিবা:- আমার ভুলের ক্ষমা চাইতে তুমি ক্ষমা করে দিলে আমি চলে যাবো।
আমি:- ঠিক আছে তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি তাহলে তুমি চলে যাও।
তসিবা:- একা যাবো কি করে তুমি নিয়ে দিয়ে এসো।
আমি:- ঠিক আছে তুমি রেডি হয়ে থেকো আমি অফিস থেকে এসে তোমাকে নিয়ে যাবো। এখন আমি অফিসে যাচ্ছি বলে বেড়িয়ে সোজা অফিসের জন্য রওনা হলাম। ভাবি আম্মা আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু আমি কারো দিকে না তাকিয়ে চলে এসেছি বাইক নিয়ে অফিসে এসেছি। অফিসে কাজ করতেছি। ঘন্টা পাঁচেক কাজ করা শেষ হয়েছে তখনি পিয়ন এসেছে সাথে আরেকটা মেয়ে এসেছে আমি দেখে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেছি আরে রিপা তুমি এখানে কেনো?
রিপা:- ভাইয়া আপনি তসিবা আপুকে কষ্ট দিতেছেন কেনো?
আমি:- তোমার আপু কি করছে তুমি দেখুনি?
রিপা:- আপু যা করছে সব আপনাকে বড় করার জন্য করছে। আব্বু আম্মু আর সবাই বলে আপনাকে নাকী ওরা কিনে নিয়েছে ঘর জামাই দিয়ে নাকী সব ধরনের কাজ করানো যায়। আর ওরা আপুকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে তাই আপু আপনার আব্বুর সাথে কথা বলে এমন ব্যবহার করছে। আর আপনার ভাবি যে টাকা দিয়েছে সেই টাকাটা কিন্তু তসিবা আপু দিয়েছে আপনার আব্বুকে।
আমি:- কি বলো তুমি?
রিপা:- হ্যা বিশ্বাস না হলে আপনি আপনার আব্বুকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে সব বুঝতে পারবেন। আমি একটু আগে আপনাদের বাসায় গেছিলাম দেখি তসিবা আপু ফ্লোর মুছতেছে। আপু আপনাকে অনেক ভালোবাসে যার জন্য সে আজ আপনাদের বাড়ীর চাকরানী হয়ে আছে।
আমি:- তুমি যা বলছো সব সত্যি বলছো?
রিপা:- হ্যা ভাইয়া আপু আপনাকে অনেক ভালোবাসে, আর আপু তো আপনাকে বিয়ের আগে থেকেই পছন্দ করতো বাসর রাতে আমার সাথে ফোনে কথা বলার সময় আপনাকে শুনিয়ে শুনিয়ে আমাকে জানু বলে ডাকছে।
আমি:- কিন্তু তসিবা যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে আমার সাথে এমনটা করছে কেনো?
রিপা:- কারন অনেক ছেলেড়া বিয়ের পর ভালো ভালো ব্যবহার করে এর পর কিছুদিন গেলে খারাপ আচরন করে তার জন্য প্রথম থেকেই আপনার সাথে এমন ব্যবহার করছে প্লিজ ভাইয়া আপনি আপুকে আর কষ্ট দিয়েন না প্লিজ।
আমি:- ঠিক আছে চেষ্টা করবো।
রিপা:- তাহলে এখন আমি যাই আর আপুকে আপনি একটু দেখে রাখবেন আপনার কাছে আমার অনুরুদ রইলো।
আমি:- ঠিক আছে ধন্যবাদ! রিপা চলে গেছে আমি কাজে মন দিয়েছি কিন্তু মনটা তসিবার কাছে চলে গেছে। কাজ গুলি গুচিয়ে নিয়েছি বেড় হবো তখনি ইরা মেম এসেছে।
ইরা:- সৌরভ চলো আজকে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।
আমি:- মেম আপনার বর আছে ওকে নিয়ে ঘুরতে যান কেনো আমাকে নিয়ে টানাটানি করেন?
ইরা:- তুমি কি বললে সৌরভ আমার বর আছে তো কি হয়ছে? একজনকে দিয়ে কি আর সারা জীবন চলে নাকী?
আমি:- আপনার যদি না চলে তাহলে অন্য একটা খুঁজে নেন আমি এখন থেকে আপনার সাথে কোথাও যেতে পারবোনা। আর আমার বউ আছে ওকে আমার সময় দেওয়াটা জুরুরী। আশা করি আপনি বুঝতে পারছেন ইরা মেম আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে এসেছি তসিবার কথা মনে করতে করতে বাইক চালাচ্ছি ৪০ মিনিট পরে বাড়ীতে এসেছি দেখি ভাবি মনি নিচে বসে আছে।
ভাবি:- সৌরভ তুমি আজকে তাড়াতাড়ি চলে এসেছো বাসায়?
আমি:- হ্যা তোমার কোনো সমস্যা?
ভাবি:- আমার সমস্যা হবে কেনো? তবে যেহেতু এসেছো সেহেতু মনিকে নিয়ে একটু ঘুরে আসোনা। মনি অনেক দিন পর এসেছে ওতো এলাকাটা ভালো করে চিনেনা।
আমি:- পারবোনা তুমি নিয়ে গিয়ে ঘুরে আসো তোমার বোনকে নিয়ে। ভাবি তাকিয়ে আছে আমি উপরে যেতেছি তখনি তসিবা তার ব্যাগ নিয়ে নিচে নামতেছে আমাকে দেখেই বলে।
তসিবা:- আপনাকে কষ্ট করে তোমাকে নিয়ে যেতে হবেনা আমি নিজেই চলে যেতে পারবো বলে তসিবা চলে আসতে ছিলো আমি ওর হাতটা ধরে নিয়েছি। কি হলো হাত ধরলে কেনো?
আমি:- কোথাও যেতে হবেনা তোমার স্যরি আমারো তোমাকে বুঝা উচিত ছিলো।
ভাবি:- সৌরভ তসিবা যেতে চাচ্ছে তাকে যেতে দাও। কেনো তাকে আটকিয়ে রাখছো তুমি?
আমি:- ভাবি তোমার মাথা ব্যথাটা কি বেড়ে যেতেছে নাকী আমার বউকে আমি আটকাবো না যেতে দিবো সেইটা আমার ব্যপার। তসিবা আসো রুমে কথা আছে তোমার সাথে।
তসিবা:- আমার আর কোনো কথা নেই তোমার সাথে। আমার হাতটা ছাড়ো আমি যাবো বলে তসিবা হাত ছাড়িয়ে নিতে চায়ছে তখনি আমি তসিবাকে কোলে তুলে নিয়েছি। কি হচ্ছে কোলে নিলে কেনো ছাড়ো বলছি তানা হলে ভালো হবেনা কিন্তু?
আমি:- ছাড়বো তো তবে এখানে নয় রুমে নিয়ে। আমি তসিবাকে কোলে নিয়ে রুমের দিকে যাচ্ছি আম্মু আব্বু তাকিয়ে দেখছে আর ভাবি মনি তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। রুমে এসে তসিবাকে খাঠের উপর শুয়ে দিয়েছি।
তসিবা:- তুমি না বলছো আমাকে বাড়ীতে নিয়ে দিয়ে আসবে তাহলে যেতে দাও তুমি কেনো আমাকে আটকিয়ে রাখছো?
আমি:- রিপা সবকিছু বলে দিয়েছে আমাকে তখনি তসিবা চুপ হয়ে গেছে আমার দিকে তাকিয়ে লজ্জা লাল হয়ে গেছে। তুমি আমাকে এত ভালোবাসো তাহলে কেনো এমন করছো?
তসিবা:- তোমাকে কিছুটা পরীক্ষা করেছি কিন্তু নিজেই সেই কষ্টটা পেয়েছি।
আমি:- আর কষ্ট পেতে হবে না এখন শুধু ভালোবাসা বলে তসিবার কপালে আলতু করে ছুয়ে দিলাম।
তসিবা:- আমিও তোমাকে ভালোবাসতে চাই বলে আমার কপালে আলতু করে ছুয়ে দিয়েছে। দুজনে কিছুটা নিজেদের কষ্ট গুলো দূর করে ভালোবাসাটা মাঝে নিয়ে আসলাম। তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখছে আমিও দুজনে জড়িয়ে ধরে কথা বলতেছি।
আমি:- তসিবা আমরা দুজনে দুজনকে একটু বুঝতে চেষ্টা করবো। আর যাই হোক তুমি আমাকে ভুল বুঝবেনা আর আমি তো তোমাকে অনেক বিশ্বাস করি আর করবো। চলো এখন নিচে যাই সবার আমার কথা গুলি যানা দরকার। তসিবাকে নিয়ে নিচে এসেছি সবাই আমাদের দেখে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেছে। আব্বু আমি সবটা জেনে গেছি আর তসিবা আমাকে মেনে নিয়েছে আমরা এখন থেকে দুজনকে বুঝতে চেষ্টা করবো। তসিবাই এই বাড়ীর ছোট বউয়ের অধিকার নিয়ে থাকবে।
ভাবি:- মানে তাহলে আমার বোন মনি কি হবে?
আমি:- মানে কি বলছে মনি ওর কি হবে মানে?
ভাবি:- মনি সাথে তোমার বিয়ে দিবে বলে তোমার মা মনিকে এখানে নিয়ে এসেছে।
আমি:- আম্মু ভাবি কি বলছে এসব?
আম্মু:- হ্যা কিন্তু বউমা আমি তো বলছি যদি তসিবার সাথে ডির্ভোস হয়ে যায় তাহলে বিয়ে দিবো।
ভাবি:- তাই তাহলে এই চুক্তিতে লিখা আছে সৌরভ মনিকে বিয়ে করবে আগামী মাসের ৫ তারিখে আর এখানে সৌরভের সাইন আছে।
আমি:- কখন সাইন করেছি?
ভাবি:- তোমার আব্বু নিজের টাকা আমার একাউন্টে জমা দিয়েছে আর আমি চালাকি করে সেই টাকা তোমাকে দিবো বলে ব্যাংকিং নাম করে এই চুক্তিতে তোমাকে দিয়ে সাইন করে নিয়েছি। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৫ তারিখে তোমার সাথে মনি বিয়ে হবে।
আমি:- তুমি বললে আমি রাজি হবো তা কি করে হয়? তসিবা আমার বউ আর বউ হয়ে থাকবে।
ভাবি:- তুমি বললে হবে নাকী তসিবা তোমার বউ থাকলে আমার বোনের কোনো আপত্তি নেই মনি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি আছে।
আমি:- তুমি বললে হবে?
ভাবি:- যদি বিয়ে না করো তাহলে এই বাড়ীটা আমার বোনের নামে হয়ে যাবে। এবার তুমি চিন্তা করো বাড়ী বাচাবে নাকী বিয়ে করবে? To be continue,,,