গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৬)

0
1116

গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৬)
লেখা_AL_Mohammad_Sourav
!!
বউ দাঁড়িয়ে পেছন থেকে ডাকছে আমি শুনেও না শুনার বান করে হেটে চলে আসছি। ইচ্ছে করছে তসিবার সাথে ওদের বাড়ী থেকে যাই কিন্তু ওর ব্যবহার গুলি মনে করিয়ে দেয় ওর জীবনে আমার কোনো যায়গা নেই। সি এন জি করে বাড়ীতে আসতে আসতে রাত ২টা বেজে গেছে ভাড়া দিয়ে বাড়ীর ভীতরে ঢুকেছি।

আম্মু:- এত দেরি করলি কেনো কোথায় ছিলি তুই?

আমি:- একটু কাজ ছিলো।

আম্মু:- আয় খাবার খাবি!

আমি:- নাহ এখন খাবোনা তুমি ঘুমিয়ে পড়ো আমি রুমে যাচ্ছি। আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রুমে চলে আসছি। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়েছি তখনি মোবাইলে রিং বেজে উঠেছে হাতে নিয়ে দেখি তসিবার নাম্বার রিসিব করিনি কেটে দিয়েছি তাও বার বার ফোন করছে ৬ বারের মাথায় রিসিব করতেই বলে।

তসিবা:- কোথায় তুমি ফোন রিসিব করছোনা কেনো? তোমার জন্য কত চিন্তা করতেছি আমি। বাসায় পৌছাই গেছো নাকী এখনো রাস্তায় আছো?

আমি:- আমার জন্য এত চিন্তা করতে হবেনা! আর তাছাড়া আমি তোমার কে যে আমার জন্য চিন্তা করবে? আমাকে তো জেলের ভাত খাওয়াতে চাইছো আজ সকালে এখনি এত মায় আর চিন্তা কোথা থেকে আসে শুনি।

তসিবা:- এমন করে কথা বলছো কেনো?

আমি:- কেমন করে বলবো?

তসিবা:- ফোন করাটা আমার ভুল হয়ছে।

আমি:- তাহলে ফোন করতে কে বলছে তোমাকে? আর কোনো সময় আমাকে ফোন করবে না। আর শুনো কিছু দিনের মধ্যে তোমার ডির্ভোস পেপার পেয়ে যাবে সাথে তোমার কাবিনের টাকা গুলি। এখন থেকে আমাকে আর বিরক্ত করবেনা ফোন করে কথাটা বলে ফোনটা কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে ঘুমায় গেছি। সকালে আজান শুনে ঘুম ভাঙ্গছে ফজরের নামায পড়ে এসে ফ্রেশ হয়ে নিছে এসেছি।

ভাবি:- সৌরভ তোমার অফিস ছুটি হবার পর বাসায় আসার সময় বাস স্ট্যান্ড থেকে আমার বোন মনিকে নিয়ে এসো।

আমি:- ঠিক আছে! কিন্তু মনির তো বিয়ে হবার কথা ছিলো?

ভাবি:- হ্যা বিয়ে তো দেরি আছে এখন কিছু দিন বেড়াবে আমার সাথে তাই আমি ওকে আসতে বলছি তুমি মনে করে ওকে নিয়ে এসো কিন্তু।

আমি:- ঠিক আছে! হাল্কা নাস্তা করে অফিসের জন্য বেড়িয়ে পড়েছি বাইক নিয়ে। অফিসে এসে কাজ করতেছি ইরা মেম আজকে তেমন একটা ডিস্টার্ব করছেনা কাজ গুলি খুব তাড়া তাড়ি হয়ে গেছে। আজকে একটু তাড়া তাড়ি অফিস থেকে বেড়িয়ে এলাম কারন মনিকে রিসিব করতে হবে বাস স্ট্যান্ড এসেছি চেয়ে দেখি মনি দাঁড়িয়ে আছে আমাকে দেখে এগিয়ে এসেছে।

মনি:- কেমন আছো তুমি?

আমি:- আল্লাহ পাক রাখছে ভালো তুমি কেমন আছো?

মনি:- ভালো! কত দিন পর তোমাকে দেখলাম তা তোমার বউ কেমন আছে? তোমার সাথে নাকী ছাড়া ছাড়ি হয়ে গেছে?

আমি:- এখনো হয়নি তবে হবে কিছু দিনের মধ্যে এখন বসো। মনি বাইকে বসেছে আমি বাইক চালাচ্ছি দুজনে গল্প করতেছি রাস্তায় জ্যামে পড়েছি। হঠাত খেয়াল করে দেখি তসিবার গাড়ী আমার বরাবর আর তসিবা আমার দিকে চোখ গুলো বড় বড় করে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে আমাকে কাচা গিলে খাবে। আমিও তসিবাকে দেখিয়ে দেখিয়ে মনির সাথে দুষ্টমি করতেছি জ্যাম ছুটেছে আমি বাইক নিয়ে চলে এসেছি সুজা বাসায়।

মনি:- ধন্যবাদ আমাকে এত সুন্দর করে বাসায় আনার জন্য।

আমি:- ধন্যবাদ দিতে হবেনা। চলো ভীতরে যাওয়া যাক দুজনে বাড়ীর ভীতরে ঢুকলাম। মনি সবার সাথে কথা বলছে আমি রুমে এসেছি। কাপড় চেন্জ করে হাত মুখ দুয়ে নিছে এসে তো আমি পুরাই অবাক আরে ও আসছে আবার কোন মতলব নিয়ে।

ভাবি:- তসিবা তুমি এই বাড়ীতে এসেছো কেনো?

তসিবা:- আমার স্বামীর বাড়ীতে আমি আসবোনা তো কে আসবে?

আম্মু:- তোমার স্বামীর বাড়ী মানে? তুমি তো সৌরভকে জেলের ভাত খাওয়াতে চাইছো আর এখন এসেছো স্বামীর বাড়ী বলতে।

তসিবা:- শ্বাশুমা আপনি ভালো মানুষ আপনি চুপ থাকেন আপনার বদজাত ছেলেটা কোথায় দুইদিন আমরা আলাদা ছিলাম এতেই অন্য মেয়ে নিয়ে ফুস্টি নুষ্টি শুরু করেছে।

আব্বা:- তসিবা কি সব বলছো তুমি?

তসিবা:- ঠিকই বলছি কোথায় আপনার ভদ্র ছেলেটা?

আমি:- কি হয়ছে চেচাচ্ছো কেনো? আর তুমি আমাদের বাড়ীতে এসেছো কেনো?

তসিবা:- এইটা আমারো বাড়ী এখানে আমার স্বামী থাকে আজ থেকে আমিও থাকবো এই বাড়ীতে।

আমি:- তুমি থাকবে মানে তোমার তো টাকা দরকার সেই টাকা আর ডির্ভোস পেপার তোমাদের বাড়ীতে পাঠিয়ে দিবো। এখন তুমি যাও আমাদের বাড়ী থেকে।

তসিবা:- যত দিন টাকা আর ডির্ভোস পেপার হাতে না পাচ্ছি ততদিন এই বাড়ীতে থাকবো।

আমি:- মানে তুমি এখানে কিসের অধিকারে থাকবে?

তসিবা:- অধিকার কিসের সেইটা সময় বলে দিবে। আর তোমাকে ভালো করে বলছি এখনো সময় আছে নিজেকে শুদরে নাও তানা হলে জীবনে অনেক বড় আগাতটা তুমি পাবে।

আমি:- এই ৬ মাসে কম আগাত পেয়েছি নাকী নতুন করে আর কি আগাত পাবো। আম্মু আমার খিদা লাগছে আমাকে খেতে দাও। তসিবা কোনো কথা না বলে উপরে চলে গেছে আমরা সবাই বসে খাওয়া দাওয়া করে নিলাম। রুমে গিয়ে দেখি তসিবা খাঠের উপর শুয়ে আছে কোনো কথা না বলে সুজা টান মেরে খাঠ থেকে নিছে ফেলে দিয়েছি আর তসিবা জুড়ে চিৎকার দিয়ে উঠেছে। তসিবার কান্নার শব্দ শুনে সবাই দরজায় এসে কন্ক করছে আমি সবাইকে বলে দিয়েছে কিছুনা এমনিতেই ঢং করে শব্দ করছে।

তসিবা:- আমি ঢং করে শব্দ করছি?

আমি:- হ্যা নয়ত কি?

তসিবা:- আমাকে এমন ভাবে ফেলতে তোমার একটুও মায় হয়নি?

আমি:- কার জন্য মায়া হবে? তুমি আমার রুমে কি করছো বের হও আমার রুম থেকে।

তসিবা:- যতদিন ডির্ভোস না হচ্ছে ততদিন এই রুমটা আমারো আর মিস্টার ভুলে যাবেন না এখনো আমি আপনার বউ।

আমি:- বউ না চায় তুমি রুমে থাকবে তবে খাঠের উপর নয় যাও তোমার স্থান হলো বারান্দায় আজ থেকে তুমি বারান্দায় ঘুমাবে। আমার কোনো কিছু স্পর্শ করবেনা বাড়ীর রান্না বান্না দুয়া বালি যত কাজ আছে সব কাজ তুমি করবে। যদি রাজি থাকো তাহলে তোমাকে এই বাড়ীতে থাকতে দিবো তুমি রাজি আছো?

তসিবা:- যেহেতু নিজে থেকে এসেছি সেহেতু তোমার অপমান গুলি কিছুটা সহ্য করতে তো হবেই কথাটা বলে বারান্দায় চলে গেছে। আমি খাঠের উপর শুয়েছি তখনি মনে পরে গেছে তসিবা তো কিছুই খায়নি আর ওর তো খিদা একদম সহ্য হয়না। নিছে গিয়ে কিছু খাবার রুমে নিয়ে এসে তসিবাকে প্লেটটা এগিয়ে দিয়ে বলি খাবারটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো আর তানা হলে রাতে ডাকলে রুম থেকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবো।

তসিবা:- তোমাকে ডাকবো কেনো আর আমার খিদা নেই তুমি নিশ চিন্তে ঘুমাতে পারো তোমাকে কোনো ডিস্টার্ব করবোনা।

আমি:- বাহ ভালোই তো তবে তোমার মধ্যে এতটা পরিবর্তন কি করে হলো আমার ভাবতেই অবাক লাগছে। তাতে আমার কিছু যায় আসেনা বলে এসে ঘুমিয়ে পড়েছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার গায়ের উপর চাদর দেওয়া বাহ চাদরটা দিলো কে? চেয়ে দেখি তসিবা বারান্দায় নেই আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে গেছি দেখি ভাবি তসিবাকে বকা জকা করছে।

ভাবি:- এত বড় মেয়ে হয়েছো নাস্তাটা ঠিক করে বানাতে পারোনা আবার এসেছো বউ হয়ে লজ্জা করেনা তোমার? চাটা ঠিক করে বানাতে শিখোনা কি করতে এসেছো?

আমি:- ওকে দিয়ে এগুলা বানাতে বলছো কেনো? কাজের মেয়ে কোথায়?

আম্মু:- কাজের মেয়েকে বিদায় করে দিয়েছি আজ থেকে সব কাজ তসিবা করবে আর সৌরভ তুই এই ব্যপারে কিছু বলবিনা। আজকের নাস্তাটা বাহিরে করে নিশ কারন বাড়ীর নাস্তার অবস্তা দেখলে তোর খিদে মিঠে যাবে।

আমি:- ঠিক আছে! তসিবার দিকে তাকিয়ে দেখি তসিবা অজরে কান্না করছে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে আমার বুকের ভীতরটা কেমন একটা মুচুর দিয়ে উঠলো। তাও কিছু না বলে অফিসের জন্য বেড়িয়ে এসেছি তবে তসিবা আমাদের বাড়ীতে কেনো এসেছে তাহলে কি তসিবা আমাকে ভালোবেসে এসেছে নাকী অন্য কোনো মতলব নিয়ে এই প্রশ্নটা বার বার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ঠিক তখনি,,, To be continue,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে