গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৫)

0
1144

গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৫)
লেখা_AL_Mohammad_Sourav
!!
কাল তাহলে তুমি জেলে যাচ্ছো? বলেছিলাম তোমাকে জেলের ভাত আর মশার কামড় খায়িয়ে ছাড়বো। তবে তোমাকে একটা শর্তে জেল থেকে মুক্তি দিতে পারি। (তসিবা)

আমি:- আমি জেলে যাবো তাও তোমার কোনো শর্তে রাজি হবোনা। তবে তুমি আজকের দিনটার জন্য অনেক আপছুস করবে।

তসিবা:- কে আপছুস করবে আমি? আরে তোমার মত ছেলের জন্য আমি আপছুস করবো? বরং তুমি আমার জন্য পাগল হয়ে আছো। কাল থেকে তোমার কষ্টের দিন শুরু হচ্ছে আমার অনেক দিনের ইচ্ছে পূরুন হবে।

আমি:- হ্যা তোমার ইচ্ছে পূরুন হবে কিনা সেইটা সময় বলে দিবে। এখন আমি যাই আর কোনো দিন এই বাড়ীতে আসবোনা হয়ত তোমার সাথে আমার দেখা নাও হতে পারে ভালো থেকো আমি গেলাম।

তসিবা:- কালকে দেখা হবে কারন তোমাকে জেলে পাঠাতে হবে তো আমার।

আমি:- ভালো আগামীকাল বলা যাবে এখন যাই! ব্যাগটা হাতে নিয়ে বেড়িয়ে এসেছি নিছে দেখি সবাই বসে আছে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম বাড়ীতে কলিং বেল বাজাতে আম্মু এসে দরজা খুলে দিয়ে বলে।

আম্মু:- সৌরভ তুই হাতে ব্যাগ তখনি আব্বা আর বড় ভাই ভাবি এসেছে।

আমি:- হ্যা এসেছি তারপর তসিবার সাথে যা হয়ছে সবার কাছে বললাম। সবাই সব কিছু শুনেছে আমি মন খারাপ করে রুমে এসেছি। ব্যাগটা রেখে ফ্রেশ হয়ে নিয়েছি কিছুক্ষণ পর ভাবি এসে আমার হাতে একটা চেক দিয়ে বলে।

ভাবি:- সৌরভ নাও কাল সকালে তসিবার আব্বাকে চেকটা দিয়ে চুক্তির কাগজ গুলি নিয়ে নিবে। আর তসিবাকে ডির্ভোস দিয়ে চলে আসবে।

আমি:- কিন্তু ভাবি তোমার জমানো টাকা কেনো আমাকে দিবে?

ভাবি:- আমার টাকা তো কি হয়ছে যদি আমার ছোট ভাই এমন সমস্যায় পড়তো তাহলে কি আমি চেয়ে চেয়ে দেখতাম?

আমি:- ভাবি তোমাকে ধন্যবাদ ভাবি আমাকে শান্তনা দিয়ে চলে গেছে আমি তসিবার মোবাইলে কিছু ইমুজ মেসেজ করে মোবাইল বন্ধ করে ঘুমিয়ে গেছি। সকাল ৯টায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভাবি আব্বা সহ আমরা উকিলের কাছে গেছি। দেখি তসিবার আব্বা আম্মা আর তসিবা বসে আছে আমাকে দেখে উঠে বসেছে আমি কাছে গিয়ে তসিবার আব্বাকে চেক দিয়ে বলি। নেন আপনার দেওয়ার টাকা আর আমার চুক্তির কাগজ দেন।

শ্বশুড়:- কিন্তু টাকা দিলে তো হবেনা তসিবা যদি চাই তোমাকে জেলে পাঠাতে পারবে।

আব্বা:- চুক্তির শেষ পাতায় ছোট করে লিখা আছে যদি এক সাথে সব টাকা দেয় তাহলে সৌরভ তসিবার কোনো কিছুই শুনতে বাধ্য নয়।

শ্বশুড়:- জশিম তুমিও চাচ্ছো বিয়েটা ভেংগে যাক।

আব্বা:- আপনার মেয়ে আমার ছেলেকে অনেক কষ্ট দিয়েছে আর কালকে আপনার মেয়ে আমার ছেলেকে কি সব ব্যাবহার করছে। আপনি আপনার মেয়েকে তো কিছুই বলেনন নাই তাই আমি চাই আমার ছেলে সুন্দর করে জীবন জাপন করুক।

তসিবা:- মানে আমাকে ডির্ভোস দিলে জেলে যাবেনা তাহলে আমি ডির্ভোস দিবোনা।

আমি:- তুমি না চাইলেও এখন আমি ডির্ভোস দিবো। উকিল সাহেব আপনি সব কিছু রেডি করেন আজকে আপদ বিদায় করে দিবো।

তসিবা:- ঐ তুই আপদ কাকে বলছিস তবেরে বলে( আমার দিকে এগিয়ে এসে আমাকে থাপ্পড় দিতে ছিলো আমি হাত ধরে নিয়েছি)

আমি:- তোমার এত বড় সাহোস আমাকে থাপ্পড় দিতে আসো বলে ওর হাত জুড়ে মুচুর দিয়েছি আর ব্যাথা পেয়েছে। তসিবা চোখ লাল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে কান্না করে দিবে আমি হাতটা ছেড়ে দিয়েছি।

শ্বশুড়:- তসিবা তুই কি সৌরভকে ডির্ভোস দিবি এখন?

তসিবা:- নাহ!

আমি:- যদি ডির্ভোস না দাও তাহলে আমার সাথে আমাদের বাড়ীতে থাকতে হবে। আমি যা বলবো তাই করতে হবে রাজি থাকলে ডির্ভোস হবেনা না হলে আমি ডির্ভোস দিয়ে দিবো।

তসিবা:- তোমার কোনো শর্তে আমি রাজি নয় আমাকে পারলে তুমি ডির্ভোস দিয়ে দাও। আব্বু আমি গেলাম আর মিস্টার সৌরভ তোমাকে এর মাশুল দিতে হবে আমাকে অপমান করার জন্য। কথা গুলি বলে তসিবা বেড়িয়ে গেছে।

শ্বশুড়:- বাবা সৌরভ প্লিজ তুমি একটু তসিবাকে বুঝার চেস্টা করো। তসিবা একটু রাগি তবে অনেক ভালো মেয়ে।

আমি:- কিছু করতে পারবোনা আচ্ছা উকিল সাহেব যদি আমি কাবিনের সব টাকা দিয়ে ওকে ডির্ভোস পেপার পাঠাই তাহলে কি আমার কোনো সমস্যা হবে?

উকিল:- হ্যা যদি মেয়ে নারী নির্যাতন মামলা করে তাহলে কিছুটা জামেলা হবে। আর কাবিনের টাকা তো অনেক এখন আছে কি আপনার কাছে?

আমি:- নাহ এখন তো এত টাকা আমার কাছে নেই তবে মাস দুইয়েক এর মাঝে জুগার করে নিবো।

উকিল:- তাহলে দুই মাস পরে দেখা করেন কেমন।

আমি:- আচ্ছা।

আব্বা:- নেন স্যার আপনার টাকা আর দেন চুক্তির কাগজ গুলি।

শ্বশুড়:- জশিম তুমি একদিন আমার কাছে কথা দিয়েছিলে আমার মেয়েকে তোমার ছেলের বউ হিসাবে অনেক সূখে রাখবে কিন্তু কি হলো? তবে আমার মেয়ে যদি কোনো রকম কষ্ট পাই তাহলে তোমাকে আর তোমার ছেলেকে জেলের ভাত খায়িয়ে আমি ছাড়বো।

আব্বা:- সেইটা সময় হলে দেখা যাবে। চেকটা দিয়ে কাগজ গুলি নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি।

আমি:- আব্বা আপনারা বাসায় যান আমি আসতেছি।

ভাবি:- কোথায় যাবে তুমি?

আমি:- একটু কাজ আছে তোমরা যাও আমি আসতেছি। ওনাদের বিদায় করে দিয়ে আমি অফিসে গেলাম দুপরের দিকে। অফিসে ঢুকতেই ইরা মেম এসেছে।

ইরা:- সৌরভ তোমার নাকী ডির্ভোস হয়ে গেছে তোমার স্ত্রীর সাথে?

আমি:- না এখনো হয়নি তবে মনে হয় হবে খুব তাড়া তাড়ি। আমার কিছু কাজ আছে কাজ গুলি করতে হবে পরে কথা হবে। কাজ গুলি করতেছি নিজের মত করে কাজ করতে করতে কখন যে রাত ৮টা বেজে গেছে বলতে পারবোনা।

ইরা:- সৌরভ রাত হয়ে গেছে বাসায় যাবেনা?

আমি:- যাবো কিছু কাজ বাকী আছে শেষ করে নেই কেমন?

ইরা:- না অনেক হয়ছে কাজ এখন চলো তোমাকে নিয়ে আজকে ক্লাবে যাবো আমার কাজিন পার্ঠি থ্রু করেছে।

আমি:- নাহ আমি ক্লাবে যেতে পারবোনা আমার কাছে খারাপ লাগে। (তখনি ইরা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়ীতে বসিয়েছে)

ইরা:- আমার বরিং লাগবে তাই তোমাকে সাথে নিয়ে যেতেছি। আর পার্ঠিতে গিয়ে একটু মজ মাস্তি করবে দেখবে অনেক ভালো লাগবে। (আমি চুপ করে বসে আছি ইরা ডাইভিং করে নিয়ে এসেছে। গাড়ী থেকে নেমেছি তখনি ইরা আমার বাম হাত জড়িয়ে ধরে বলে)
সৌরভ চলো ভীতরে যাওয়া যাক?

আমি:- হাতটা ছাড়েন কেও দেখলে কি বলবে?

ইরা:- যা বলার বলবে এতে আমার কিছু যাই আসেনা। (দুজনে ভীতরে ঢুকেছি আমাকে ইরা মেম ওর কাজিনের সাথে অফিস কলিক হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।সবাই অনেক আনন্দ করছে আর নানান রকম ড্রিংক্স করছে আমি শুধু দেখতেছি তখনি খেয়াল করেছি তসিবা একটা ছেলের সাথে তর্ক করতেছে। আমি একটু এগিয়ে গেছি তখনি তসিবা ঐ ছেলেটাকে বলতেছে)

তসিবা:- সুন্দর মেয়ে দেখলে টাচ্ করতে মন চাই?

ছেলে:- আপনাকে আমি টাচ্ করিনি আর এইটা ক্লাব এখানে মেয়েরা আসে তো টাচ্ খাওয়ার জন্য। তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে একটু কম টাচ্ খেয়েছো এই রাফি আয় ওনাকে একটু টাচ্ করে দে।

তসিবা:- তোর এত বড় সাহোস বলে (ছেলেটাকে একটা থাপ্পড় দিয়েছে তখনি ছেলেটা তসিবার হাত ধরে নিয়েছে।) হাতটা ছাড় বলছি তানা হলে ভালো হবেনা কিন্তু?

ছেলে:- কেনো কি করবে গু বলে তসিবাকে কাছে নিয়ে যেতে ছিলো তখনি আমি পেছন থেকে তসিবার আরেকটা হাত ধরেছি। তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে তখনি ছেলেটা বলে। ঐ তুই কে ছাড় বলছি ওকে?

আমি:- আমাকে না চিনলে ভালো তবে ওর হাতটা ছেড়ে দিলে ভালো হবে।

ছেলে:- যদি না ছাড়ি তাহলে কি করবি?

আমি:- কি আর করবো জোর করে ছাড়িয়ে নিবো বলে তসিবাকে জুড়ে টান দিয়ে আমার কাছে নিয়ে এসেছি। তখনি ছেলেটা আমার ক্লার ধরেছে। ওর সাথে ছোট বড় একটু হাতা হাতি হয়ে গেছে। এক প্রকার ঝগড়া তৈরি হয়ে গেছে ও গ্লাস ভেংগে আমাকে আগাত করতে ছিলো আমি সরে গেছি আর তসিবার হাতের উপরে লেগে কেটে গেছে তা দেখে ছেলে গুলি তাড়াহুরা করে বেড়িয়ে গেছে। তসিবা রক্ত দেখে অজ্ঞান হয়ে যাবার মত অবস্তা হয়ছে রুমাল দিয়ে ওর হাতটা বেদে সুজা হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার বেন্ডিজ করে দিয়েছে তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি কিছুই বলছিনা। ডাক্তার কিছু মেডিসিন লিখে দিছে আমি মেডিসিন গুলি কিনে এনেছি। আচ্ছা ডাক্তার ওকে কি বাসায় নিতে পারবো?

ডাক্তার:- হ্যা নিতে পারবেন আর ৫ দিন পর এসে ডেসিং করিয়ে নিবেন কেমন?

আমি:- ওকে! তসিবা আসো তসিবা চুপ করে আছে হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে এসেছি। তসিবা তোমাকে একটা রিক্সা করে দেয় তুমি বাসায় চলে যাও। আমার জন্য ইরা মেম ক্লাবে অপেক্ষা করবে ওনাকে নিয়ে যেতে হবে।

তসিবা:- এত রাতে আমি একা একা বাসায় যাবো আমার অনেক ভয় করছে। প্লিজ তুমি আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসো।

আমি:- কিন্তু ইরা মেম আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আর ওনার সাথে আমি ক্লাবে গেছিলাম তুমি যার সাথে এসেছো তাকে ফোন করো সে এসে তোমাকে নিয়ে যাবে।

তসিবা:- আমি যার সাথে এসেছি সে অনেক আগে চলে গেছে। তুমি আমাকে বাসায় দিয়ে আসো প্লিজ।

আমি:- যদি ইরা রাজি হয় তাহলে দিয়ে আসবো। ইরাকে ফোন করেছি সে বলছে ওর কাজিনের সাথে বাসায় চলে গেছে কিন্তু তসিবাকে বুঝতে দেওয়া যাবেনা তাই ফোনে উল্টা পাল্টা বলতেছি। তসিবাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক সুন্দর আর গুচিয়ে কথা বলতেছি আরো কিছু রোমান্টিক কথা বাত্রা বলছি। ইরা অনুমতি দিয়েছে চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।

তসিবা:- ইরাকে তো মেম বলতে এখন শুধু ইরা বলো কেনো?

আমি:- ইচ্ছে হয়ছে তাই তুমি দাঁড়াও আমি সি এন জি ডাক দিতেছি। একটা সি এন জি এনেছি দুজনে বসেছি ৩০ মিনিট সময় লাগছে তসিবাদের বাড়ীতে আসতে। দুজনে নেমেছি আচ্ছা তসিবা তুমি বাসার ভীতরে যাও আমি এই সি এন জি করে বাড়ীতে চলে যাবো।

তসিবা:- এত রাতে বাড়ীতে যেতে হবেনা তুমি আজকে আমার সাথে আমাদের বাড়ীতে থেকে যাও।

আমি:- ধন্যবাদ তবে তোমার সাথে তোমাদের বাড়ীতে জীবনেও থাকবোনা। আর আমার মত একটা ছেলেকে তোমাদের বাড়ীতে নিবে কেনো? তুমি যাও আমি বাড়ীতে চলে যাবো। আমি চলে আসছি তখনি তসিবা আমার হাতটা টান দিয়ে ধরে বলে।

তসিবা:- বলছি তো এত রাতে যাওয়ার কোনো দরকার নেই। এসো আজকে আমাদের বাড়ীতে রাতটা থেকে সকালে চলে যেয়ো। তখনি তসিবার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলি।

আমি:- তুমি আমার কে যে তোমার সাথে তোমার বাড়ীতে থাকবো তখনি মোবাইল বেজে উঠেছে হাত নিতেই দেখি ইরা মেম ফোন করেছে তসিবা তাকিয়ে আছে আমি রিসিব করে কথা বলতে বলতে চলে এসেছি আর তসিবা চেয়ে আছে আমার দিকে।
!!
To be continue,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে