গল্প:-বাল্য বিবাহ পর্ব:-(০৪) শেষ পার্ট

1
5858
গল্প:-বাল্য বিবাহ পর্ব:-(০৪) শেষ পার্ট লেখা_মোহাম্মদ_সৌরভ !! আমার বউ যখন অন্য ছেলেকে ভালোবাসে তখন তো তাদের মাঝে ফাটল ধরাতে হবেই। স্নেহার থাপ্পড়টা একটু জুড়ে পড়ছে। এভার যদি কিছুটা ফাটল ধরে গাড়ীতে বসে আছি কিছুক্ষণ পর স্নেহা রাজ আর রুজি এসেছে। ওরা গাড়ীতে বসে বলে,, স্নেহা:- সৌরভ গাড়ী চালাও। আমি:- হ্যা চালাচ্ছি, (আরে স্নেহা এতটা নরমাল ব্যাবহার করছে কেনো? দূর আমার কি আমি গাড়ী চালাই। ১ ঘন্টা চালিয়ে বাড়ীতে এসেছি সবাই নেমে বাড়ীর ভীতরে ঢুকছে। আমি গাড়ীটা পার্কিং করে ভীতরে ঢুকে দেখি সবাই দাঁড়িয়ে আছে। কাছে যেতেই আঙ্কেল এসে আমাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে,,,) আঙ্কেল:- তোর এত বড় সাহোস আমার মেয়ের হাতে জামাই বাবাকে থাপ্পড় খায়িয়েছিস।? যা আজ থেকে তোর চাকরি নেই। এই নে তোর বেতনের টাকা। (টাকা আমার দিকে ছুড়ে মারছে আমার শরীরের উপর এসে পড়ছে।) আমি:- কিন্তু আমার কথাটা তো শুনবেন? স্নেহা:- তোর মত ছোট লোকের কি কথা শুনবে? এখান থেকে চলে যা বলছি তা না হলে তোর খবর করে ছাড়বো বলে দিলাম। আমি:- ঠিক আছে তবে মিস স্নেহা এর জন্য আপনি একদিন আপসুস করবেন। নানু আপনি ভালো থাকবেন আর রুজি আমাকে ক্ষমা করে দিও কেমন। কথা গুলি বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে খালাম্মার বাসায় এসেছি। খালাম্মা:- সৌরভ তুই আমাদের বাড়ীতে আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না। তানু বলছে তুই চট্রগ্রাম কিন্তু আমি বিশ্বাস করিনি। আমি:- হ্যা অনেক দিন ধরে আপনাদের দেখিনা তাই এসেছি। খালাম্মা:- আয় বাবা ভীতরে আয়। ( খালাম্মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ভীতরে নিয়েছে। আমাকে তানু দেখে বলে,,,) তানু:- আম্মা এভার তো বিশ্বাস হয়েছে তোমার। খালাম্মা:- হ্যা বিশ্বাস হয়েছে। যা ওকে রুমে নিয়ে যা আমাকে তানু রুমে নিয়ে এসেছে। আমি রুমো ঢুকে তানুকে বের করে দিয়ে শাওয়ার নিতে গেলাম। স্নেহাকে মন থেকে মুছে ফেলার চেস্টা করেছি। তানুর সাথে দুষ্টমি আর খালাম্মার সাথে কথা বলে দুই তিন দিন কাটিয়ে দিয়েছি। তানু:- সৌরভ চলো না আমরা কোথাও থেকে ঘুরে আসি। (আমি না করেছি তাও তানু জুড় করে আমাকে টেনে নিয়ে গেছে ঘুরতে। তানু আমাকে অনেকটা ভালোবাসে ওর চোখ বলছে আমার জন্য সব কিছু করতে পারে। রাস্থায় দুজনে হাটতেছি এমনি দেখি কিছু লোক জড়ো হয়ে আছে কাছে যেতেই দেখি স্নেহা মাটিতে পরে আছে রক্ত মাখা শরীরে আর রাজ সাহায্য চাচ্ছে সবার কাছে,,, আমাকে দেখে বলে,,, রাজ:- সৌরভ প্লিজ তুমি স্নেহাকে হাসপাতালে নিতে সাহায্য করো। আমি আর তানু দুজনে মিলে স্নেহাকে আর রাজকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। স্নেহার বাবা মা এনাদের খবর দিয়েছি। ওনারা এসেছে আমাকে দেখে আন্টি বলে,,, আন্টি:- সৌরভ তুমি এখানে আমার মেয়ে কোথায়? আমি:- আই সি ইউতে ভর্তি আছে ঐ দিকে ওনি ছুটে গেছে। রাজকে কিছুটা বেন্ডিজ করে ছেড়ে দিয়েছে। রাজকে জিগেস করেছি এক্সিডেন্ট হলো কি করে? রাজ:- পেছন থেকে একটা গাড়ী এসে ধাক্কা দেয় আর আমরা পরে যাই। আমার মাথায় হেমলেট ছিলো তাই তেমন কিছু হয়নি। আর স্নেহার মাথায় হেমলেট ছিলোনা অনেক আঘাত পায়ছে মাথায়। আমি:- কিন্তু আপনি ওকে নিয়ে বাইকে যাচ্ছিলেন কেনো? রাজ:- স্নেহা গাড়ীতে বলছিলো যাবে কিন্তু আমি জোড় করাতে বাইকে যেতে রাজি হলো। তখনি ডাক্তার বেরিয়ে এসে বলে,,,, ডাক্তার:- এখন কিছু বলা যাচ্ছেনা জ্ঞান ফিরার পর বলতে পারবো। তবে মাথায় অনেক আঘাত পায়ছে যার ফলে চোখ অথবা মাথা খারাপ হয়ে যেতে পারে। আঙ্কেল:- প্লিজ ডাক্তার যত টাকা লাগে আমি দিবো আমার মেয়েকে সুস্থ করে তুলেন। ( ডাক্তার আঙ্কেলের দিকে তাকিয়ে কেবিনে চলে গেছে। আমি তানু সহ সবাই বসে আছি।) তানু:- সৌরভ চলো আমরা চলে যাই আম্মু চিন্তা করবে আমাদের জন্য। আমি:- হ্যা চলো। তানুকে নিয়ে আমি সোজা বাড়ীতে চলে এসেছি রাতটা কাটিয়ে সকালে হাসপাতালে গেলাম। দেখি আন্টি আঙ্কেল রাজ ওরা কান্না করছে। আমাকে দেখে আঙ্কেল এসে বলে,,, আঙ্কেল:- সৌরভ তোমার একটা চোখ দিবে আমার মেয়েকে। যত টাকা চাইবে দিবো শুধু একটা চোখ। ( আঙ্কেলর কথায় বুঝতে পারছি স্নেহার চোখ গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাও আমি ওনাকে জিগেস করেছি) আমি:- কি হয়েছে। আঙ্কেল:- স্নেহার চোখ দুইটা নষ্ট হয়ে গেছে আর এখন সে কিছুই দেখতে পায়না। এখন ডাক্তার বলছে যদি এক সাপ্তাহ মধ্যে একটা চোখ হলে লাগাতে হবে তা না হলে পরে আর চোখ লাগালে দেখতে পাবে না। আমি:- তাহলে রাজকে বলেন ও তো স্নেহাকে একটা চোখ দিতে পারে। আঙ্কেল:- রাজ চোখ দিতে রাজি নয় আর ওর বাবা মা এতে রাজি হচ্ছে না। (কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটু চিন্তা করে বলছি,,,) আমি:- ঠিক আছে আমি চোখ দিবো। তখনি আঙ্কেল অনেক খুশি হয়েছে। ওনি ডাক্তারকে ডেকে এনে বলছে আমি চোখ দিবো। ডাক্তার আমাকে দেখে বলছে তাহলে কাল রাতে অপেরেশন হবে। আমি চলে এসেছি বাসায় রাতটা কাটিয়ে সকালে খালাম্মাকে বলছি আমি ঢাকা চলে যাবো। তানু আমাকে অনেক রিকুয়েস্ট করছে কিন্তু না করে দিয়েছি। ঢাকা যাবার নাম করে দুপুরে হাসপাতালে চলে এসেছি। আমার কিছু পরীক্ষা করে রাতে আই সি ইউ তে নিয়ে গেছে স্নেহা আর আমার বেড পাশা পাশি। ডাক্তারের হাতে একটা হাম দিয়েছি,, ডাক্তার:- এইটা কি? আমি:- এইটা আপনি স্নেহার হাতে দিবেন ওর চোখেরর বেন্ডিজ যেদিন খুলবেন সেইদিন। প্লিজ এর আগে কাওকে দিবেন না এইটা। আর আমার বেন্ডিজ কবে খুলবেন? ডাক্তার:- বলতে পারছি না তবে ৫-৬ দিন পর। আমি আর কোনো কথা বলিনি রাত ১০ টার দিকে আমাদের অপেরেশন করানো হলো আমার বা চোখটা স্নেহাকে দিয়ে দিয়েছি। আর স্নেহার নষ্ট চোখটা আমার বা চোখে ডাক্তার লাগিয়ে দিয়েছে। কারন কেও যাতে বুঝতে না পারে আমি এক চোখে দেখিনা। সব কিছু ঠিক ঠাক মত হয়েছে হাসপাতালে কেটে গেলো ৫ দিন ৬ দিনের মাথায় আমার বেন্ডিজ খুলে দিয়েছে আর কিছু মেডিসিন দিয়েছে। আমি ওনাদের কাওকে না বলে সোজা ঢাকা চলে এসেছি,,, আম্মু আমাকে দেখে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলে,,, আম্মু:- সৌরভ তুই কোথায় ছিলি ৬ দিন যাবত তোর মোবাইল বন্ধ তোর খালাম্মা বলছে তুই ঢাকা চলে আসছিস। আমি থানায় তোর জন্য একটা হারানো জেডি করে আসছি আমার তো চিন্তায় দম বেরিয়ে যাচ্ছিলো। আমি:- হ্যা ঠিক বলছে তারপর আম্মুকে সব কিছু বলছি আম্মু সব কিছু শুনে বলে,,, আম্মু:- ভালো করেছিস এখন রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে আমি খাবার রেডি করছি। আমি:- হ্যা ডাক্তারের কাছে স্নেহার ডির্ভোস পেপার দিয়ে আসছি। আমি ও মনে করি স্নেহা আমার জীবনে আর আসবেনা। আম্মু:- তবে তোর খালাম্মা বলছে আমাকে তানু তোকে বিয়ে করতে চাই। তুই কি বলিস? আমি:- কিছুটা সময় দাও তারপর বলবো। আম্মু:- ঠিক আছে এখন রুমে যা চেহারাটা একদম শুকিয়ে গেছে। আমি:- ঠিক আছে! রুমে গিয়ে ব্যাগটা রাখবো তখনি দেখি একজন সেজে গুজে বসে আছে একদম নতুন বউ। তখনি ভূত বলে এক চিৎকার দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে এসেছি,,,, আম্মু:- কিরে চেচ্ছালি কেনো? আমি:- রুমে ভূত আছে একটা মেয়ে বউ সেজে বসে আছে তখনি আম্মি মুচকি হেসে বলে,,, আম্মু:- ভূত বউ কোথায় চল তো দেখি আম্মু আমাকে রুমে নিয়ে গেছে আরে রুমে তো কেও নেই। কিরে ভূত কোথায় বোকা ছেলে কোথাকার। যা ফ্রেশ হয়ে নিছে আয়,,, আম্মু চলে গেছে আমি শাওয়ার নিয়ে আবার রুমে এসে দেখি বউ সেজে বসে আছে এভার পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আম্মুকে জুড়ে ডাক দিলাম। আম্মু সহ স্নেহার মা আর বাবা দুজনে এক সাথে ভীতরে এসেছে। আমি:- আরে আপনারা এখানে কেনো? আম্মু:- সৌরভ ওরা এখানে এসেছে সকালে আর আমাকে সব কিছু বলছে। আমার কাছে ক্ষমা চাইছে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি এবার তুই ওনাদের ক্ষমা করে দিয়ে স্নেহাকে তোর কাছে রেখে দে। আমি:- আম্মু আপনি একটু আমাকে বলতে দেন। স্নেহা তুমি আমার বাড়ী থেকে যাও আর আপনারা যান। তখনি স্নেহা আমার পায়ে পরে গেছে,,, স্নেহা:- প্লিজ সৌরভ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি বুঝতে পারিনি তুমি আমাকে এতটা ভালোবাসো। আম্মু:- সৌরভ ক্ষমা করে দে মেয়েটি তার ভূল বুঝতে পারছে। আমি:- না আম্মা আমি পারবো না স্নেহা দেখি ছাড়ো বলে স্নেহাকে ছাড়িয়ে টেনে বাহিরে নিয়ে এসেছি। তোমার ডির্ভোস পেপার তো তুমি পেয়ে গেছো এখানে কেনো এসেছো। আমি তোমাকে চোখ দিয়েছি বলে তুমি আমাকে বর হিসাবে মানতে এসেছো? স্নেহা:- আমার ভূল হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি তো জানতাম না তুমি আমার সেই ছোট বেলার বর। আমি:- তুমি এখন আমার বাড়ী থেকে বেরিয়ে যাও তানা হলে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবো। আর আপনারা এখানে কেনো এসেছেন যান বলছি তা না হলে আপনাদের একি অবস্থা হবে। স্নেহা:- আমি চলে গেলে তুমি খুশি হবে ঠিক আছে চলে গেলাম। তবে আমার অধিকার আমি ঠিকই আদায় করে নিবো। আমি:- কিছুদিন পর আমি বিয়ে করবো তখন দেখবেন। স্নেহা কান্না করতে করতে চলে গেছে। আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে আছে রাগি চোখে আমি সোজা রুমে এসে দরজা বন্ধ করে এক ঘুম দিয়েছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এসেছি এমনি কেও একজন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,,, আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ। স্নেহা কথা গুলি কান্না করতে করতে বলছে মনে হয় সারা রাত কান্না করেছে। আর হঠাত করে অজ্ঞান হয়ে গেছে আমি স্নেহাকে কুলে তুলে নিয়েছি। স্নেহাকে নিয়ে বাড়ীর ভীতরে নিয়ে এসে আমার রুমে শুয়িয়ে দিয়েছি। আম্মু ডাক্তারকে ফোন করেছে ওনি এসেছে ২০ মিনিট পর। স্নেহাকে দেখে বলে,, ডাক্তার:- ভয়ের কারন নেই রেস্ট নিতে বলেন আর কিছুটা যত্ন নিবেন। মনে হয় দুই দিন যাবত কিছু খায়নাই তাই অজ্ঞান হয়ে গেছে। আম্মু:- ঠিক আছে। আম্মু ডাক্তার সাহেবকে এগিয়ে দিতে গেছে। আমি স্নেহার পাশে বসে আছি। স্নেহা:- আমাকে ভালোবেসে তোমার একটা চোখ দিয়েছো এইবার ক্ষমা করে বউয়ের অধিকারটা দিয়ে দাও। আমি কথা দিতেছি সারা জীবন তোমার পায়ের কাছে থাকবো তুমি যা বলবে তাই হবে প্লিজ সৌরভ। আমি:- ঠিক আছে শুধু বউ হয়ে থাকবে কোনো দিন আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না কথাটা বলে চলে আসবো তখনি স্নেহা আমার হাত ধরে টান মেরে বুকের মাঝে নিয়ে গেছে। স্নেহা:- এমনিতেই অনেক কষ্ট দিয়েছি আর অনেক আদর মিস করেছি আর না এবার একটু আদর করি বলে আমাকে গালে কপালে কিস করে দিয়েছে। আমি:- আরে কি করছো কে শুনে কার কথা স্নেহা এক প্রকার জুর করে ওর অধিকার নিয়ে নিয়েছে। স্নেহাকে আস্তে আস্তে আমিও আগের মত ভালোবাসতে শুরু করেছি তবে ওর বাপের বাড়ীতে একদম যায়না কারন আমি পছন্দ করিনা। দেখতে দেখতে ওর আব্বু আম্মু আর আমার আম্মু সহ সবাই এখন অনেকটা খুশি আছে আমাদের ভালোবাসা দেখে এভাবে চলছে আমাদের জীবন। !! গল্পটা ছোট করে শেষ করে দিলাম। গল্পটা কেমন হয়ছে যানাবেন যদিও সবার মনের মত করতে পারিনি তাও কিছু লিখে যাবেন কমেন্ট বক্সে। নতুন গল্প লিখবো কাল থেকেই। ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,সমাপ্তি,,,,,,,,,,,,,,,,,

( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।)
Facebook Id link ???

https://www.facebook.com/shohrab.ampp

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে