গল্প : ফাজিল আপু

0
4932

গল্প : ফাজিল আপু

Writer : Tannoy(পিচ্ছি ফাজিল)

আবির ভাইয়ার বাসাতে আমি প্রাইভেট পড়তে যাই, আবার কোনদিন ওনি আমাদের বাসাই এসে পড়িয়ে যান।
আবির ভাইয়ার ছোট বোন মুনি, আবির
ভাইয়ার ছোট হলে ও আমার থেকে এক
বছর এর বড়।
কোনদিন আবির ভাইয়া না থাকলে আপু আমাকে শিখাই দিত।
আহা আপুকে দেখতে যা সুন্দর ছিল, মনে
হত চাঁদের একটা সাইট দিয়ে তাকে
তৈরি করা হয়েছে, হি হি।
যে দেখতে তেমনি একটা বাঁদরনী ছিল,
তাকে দেখলেই তো আমার বুকের
মধ্যে ঝড় বয়ে যেত।
আমি তখন দশম শ্রেণীতে পড়তাম, আর আপু
পড়ত একাদশ শ্রেণীতে।
আমি শুধু সুযোগ খুঁজতাম কখন আবির
ভাইয়া বাসাই থাকে না, আর তখনি
পড়তে যেতাম আর মুনি আপুর কাছে ঝোক
ধরতাম তখন সে পড়া দেখাই দিত।
আহা কী দেখতে,
ওহ্যা আমার নাম তন্নয় সামনে সামনে আমার এস এস সি পরিক্ষা তাই ভাল করে
পড়তেছি, আর শুধু আপুর চিন্তা ।
আমাকে ছাঁদ আর মুনি আপুদের ছাঁদ
পাশাপাশি ছিল।
মুনি আপু যখন ছাঁদে তার বান্ধবীদের
সাথে দুষ্টুমি করত আর আমি লুকাই
লুকাই দেখতাম।
আসেন তার কিছু দুষ্টুমির কথা বলি।
বাসার নিচে দিয়ে যদি কোন ছেলে যেত
ওমনি তার মাথাই পানি ঢেলে দিয়ে
দৌঁড়ে রুমে আসত, হি হি।
একদিন একটা পোলা তাকে একটা চিঠি
দিছিল,
সে তো পড়েই নি ওমনি আবির ভাইয়ার পকেটে
ঢুকাই দিছিল,
আর রাতে দুইজন পড়তে পড়তে কী হাঁসি,
এমন ও হয় ভাবেন, বড় ভাইয়ের পকেটে
তার লাভ লেটার ঢুকাই দিছিল।
একদিন পড়তে যাচ্ছি যেই না সিঁড়ি দিয়ে
উঠব উমনি ধাক্কা,
– আপু লাগেনি তো।
– তোমারে দেখলে আমি ফিদা হয়ে যাই লাগবে কেন।
– কেমন মেয়েরে বাবা, এটাই সুযোগ ভালবাসার
কথাটা বলার।
– আপু একটা কথা বলার ছিল।
– হুমমমমম বলুন জাহাপানা।
– আপু আমি তোমাকে ভালবাসি।
– ও মা তাই, ওই তুই তো আমার থেকে ও
পাতলা, আর দেখ আমার থেকে ২” পিচ্চি।
আচ্ছা প্রেম করতে পারি যদি আমাদের বেড়াতে
নিয়ে যাস।
– ওকে নো টেনসন, আমার এক্সামটা শুধু শেষ
হোক।
l
– আচ্ছা ওকে।
এমন করেই দিন কাঁটছিল, আপু বিকেলে
ছাঁদে আসত, আমি লুকাই লুকাই দেখতাম।
ওনার বাবা বাইরে যেতে দিত না তাই,
বাসাতেই সব দুষ্টুমি করত।

একদিন ওনার মাকে বলতেছে, মা আমি কেমনে হলাম, ভাবেন একবার কেমন ফাজিল।
আর সারাদিন টিভি দেখে বাচ্চাদের মতো
সব কার্টুন দেখে।

এর মধ্যে আমার এক্সাম শেষ।

আমি আপু আর তার বান্ধবীদের সাথে আছি
তাই আংকেল কিছু বলে নাই।

অনেক ঘুরতেছি,
হঠাৎ আপু বলল, তন্নয় তুই তো আমাকে
ভালবাসিস তাই না।
– হুমমমমম।
– আমি ও তোরে ভালবাসতে পারি যদি তুই
এই খানের কোন মেয়েরে প্রপোজ করতে পারিস।
দেখি কেমন তোর সাহস।
– কী মেয়েরে বাবা, ওই তো সামনে একটা
মেয়ে দৌড়ে গিয়ে তাকে প্রপোজ করে।
আবার দৌড়ে চলে আসছি।
আপু তো হেঁসে হেঁসে শেষ।

আপু চলো আজকে আমি তোমাদের
খাওয়াব।
বলতে যা দেরি ওমনি বলল চল।
ওই খানে নতুন একটা রেস্টুরেন্ট
হয়েছে নতুন ওইটাতে গেলাম।
ওরে বাবা মেয়ে না রাক্ষসী।
আমার পকেট একদম ফাঁকা করে
দিছে।
বাসাই চলে আসলাম।
কয়েক দিন পড় আমার চান্স হল
চট্টগ্রাম কলেজে।
আমাদের বাসা থেকে বেশ খানিকটা
দূরে।
তাই মেসে থাকতে হয়।
আপুরে ছেরে যেতে ভাল লাগে না তবু ও যেতে
হয়।
একদিন বাসাই আসছি।
– কীরে ওই খানের নতুন মেয়ে পেয়ে তো,
আমাকে ভুলেই গেছিস মনে হয়।
– আরে কী বল আপু, তোর রূপে কাছে
ওই মেয়ে গুলা কিচ্ছু না

ভালই চলছিল প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে এসে
দেখা করা।
এর মধ্যে আপুর পরিক্ষা ও শেষ হয়ে গেল।
আমি তখন ইন্টার ২য় বর্ষে।

একদিন বাসাই এসে আপুর সাথে দেখা
করতে গিয়েছি।
আপু বলল আমাকেতো দেখতে আসছে বিয়ের
জন্য।
– কীইইইইই, তাহলে কী করব এখন।
– তুই ভাবিস না তোরে নিয়া পালাই যামু। হি হি
– আমি আছি চিন্তাই আর ওনার ফাজলেমি
গেল না।
আবার চলে গেলাম কয়েক দিন পর
শুনলাম আপুর নাকি আজ বিয়ে।

পরাণডা ফেঁটে যাচ্ছিল,
বসাই এসে দেখি আপু হাঁসি হাঁসি মুখেই
আছে।
একটু পড়ে বিয়ে হয়ে গেল, আমার দিকে
চোখ পড়তেই ফিক করে হেঁসে দিল।
তার জামাই কে তার পাশে বসতে দেওয়া হল,
একটু পড় দেখলাম ফাজিল মেয়ে তার।
বরের কোলে শরবত ঢেলে দিছে,
কেমন ফাজিল মেয়ে বুঝেন।

আর কষ্ট হচ্ছে না এখন আর করণ,
আমি সিওর আমার সাথে ও দুষ্টুমি করছে।
একটু পড়ে আপু সবাইরে টাটা বাই বাই বলে
চলে গেল।
আর আমি তো হাবুলের মতো তাকাই আছি।
ফাজিল মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেল।

কী কপাল আমার।।।।

>>সমাপ্ত< < >>The End<<

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে