গল্প : পাগল একটা পাগলি একটা !!!
Writer : Writer : Tannoy (পিচ্ছি ফাজিল)
– আমমমমমমম্মু, তুমি কই গেলা
আমি তো মইরা যমু আর একটু
পড়।
– কী হয়েছে কী, এত্ত চিল্লাচিল্লি করছিস
কেন।
– আম্মু শেষ বারের মতো তোমার
পোলাডার মুখ দর্শন কইরা নাও।
– আবার কিন্তুু থাপ্পড় খাবি, ফাজলামি
চেরে বল কীইইই হইছে।
– আমি না চকলেট মনে করে
তোমার যেই ভাঙ্গা লিপস্টিক আছে
না ওইটা খেয়ে ফেলছি।
– কীইইই,, এত্ত চকলেট ক্যান তোর
খাওয়া লাগবে বলতো, আর কত
জ্বালাবি আমাকে।
– হ্যালো নিধি কই তুই।
– এই তো আন্টি মেডিকেল থেকে
মাত্র বাসাই আসলাম।
– একটু তারাতারি আয় না মা আমাদের
বাসাই।
– কেন আন্টি কীইইই হইছে আবার।
– আর বলিস না বাঁদরটা আজকে
চকলেট মনে করে আমার লিপস্টিক
খেয়ে ফেলছে।
– কীইইই, আজকে ওর একদিন
কী আমার একদিন, নিজেতো
শান্তিতে থাকতে পারে না, কাউকে
থাকতে ও দিবে না, আমি এক্ষুনি
আসতেছি।
– আম্মু আমি মনে হয় মইরা যামু,
আমার মাথা ঘুরতেছে, বুমি বুমি
ভাব হইতেছে,
আল্লারে আল্লাহ আমি এখন মইরা
যামু তো, কীইইই হইব আমার।
– ঐ থামবি তুই, নিধি তো আসতেছেই।
– কীইইই তুমি ওই ডাইনিরে ক্যান
আসতে বলছ, ও আসলে তো আমারে
এমনিই মেরে ফেলবে।
আমার কীইইই হইলরে, আর জীবনে ও
চকলেট খামু না আমি।
– ক্যান খাবি না ক্যান আরো খা, মানা
করছে কে (নিধি)।
– ডাইনিটারে দেখে আরো জোরে জোরে
চিল্লানি দিতাছি,
আমি আর বাঁচমু নারে, ও আল্লাহ আমার
এমন হইতেছে ক্যান,
– ঐ চুপ কর হারামি, লিপস্টিক খেলে
কেউ মরে হুমমমম, বাঁদরামি করার জায়গা
পাশ না।
আসলে মানে আমি নিধিরে যেন ডেকে
আনে সেই জন্য এই প্লানটা করা,
কাল থেকে নিধিরে দেখি নাই তাই,
ও হ্যা আমাদের পরিচয় টা দিয়ে ফেলি,
আমি তন্নয় আমার সম্পর্কে না
জানাই ভালো পুরো বাঁদর একটা।
আর ঐটা হল আমার জানের জান
নিধি।
অনেক ভাল স্টুডেন্ট মেডিকেল এ
পড়ে একদম ফাস্ট গার্ল,
আমার যত সমস্যা সব নিধিই ঠিক করে।
বয়সে কিন্তুু আমার থেকে দুই বছর এর বড়,
কিন্তুু আমি জীবনে ও সম্মান করি না।
সারাদিন ঝগড়া করি, আমি ওরে সেই কবে
থেকে ভালবাসি, আমি জানি নিধি ও
ভালবাসে, না হলে কোন মেয়ে আমার
দিকে একটু তাকালে ওই মেয়েরে বকা
দেই হি হি,
নিধির ও কোন ছেলে বন্ধু নেই,
সারাদিন পড়াশুনা আর আমাকে
নিয়েই থাকে।
আমি তো জাতের একটা গর্ধব,হি হি
– ঐ ফাজিল হা করে কী দেখছিস,
আর হ্যা তুই আবার ক্লাস টেষ্ট পরিক্ষাই
ফেল করছিস।
– ঐ তুমি কেমনে জানলে।
– কীইইই তার মানে সত্যি সত্যি ফেল করছিস।
– হায় হায় সত্যিটাই বলে দিছি।
– দাঁড়া আন্টিরে বলতেছি।
– পিলিজ পিলিজ আম্মুরে বইল না,
আমারে সারাদিন পিটাবে।
– হুমমমম, সেটাই তো চাই আমি, দাঁড়া
বলতেছি, আন্টি আন্টি।
– কীরে নিধি কীইইই হয়েছে।
– তোমার গুনধর ছেলের পড়ালেখার যে হাল
এমন চলতে থাকলে, আচ্ছা কিছু না
আমার এক্সাম শেষ হয়েছে, ওরে আমার কাছে
পড়তে পাঠাই দিও।
– হুমমমম রে মা তুই একটু পড়ালেতো
ভালই হয়, তাও যদি বাঁদরামিটা ওর
মাথা থেকে যায়।
– আম্মু আমি ওর কাছে পড়ব না,
এমনি আমারে খালি মাইর দেই,
– কীইইই আর একবার বলতো শুনি।
– না না কিছু না পড়ব তো।
– হুমমমম, আজকে থেকেই পড়বি। (নিধি)।
– আল্লাহ আমার জীবনটা এবার গেল,
এমনিতো ও একটা বইপোকা, আমারে
ও তাই বানাইব।
দূর জেনে শুনে খাল কেটে কুমির
আনলাম মনে হয়।
– ওই এবার যা বই নিয়ে আয়।
– কীইইই এখনই।
– হুমমমম যা বলছি তাই কর না হলে
কিন্তুু মাইর খাবি।
– দূর ভাল লাগে না, যেদিকে যে পারে খালি
মাইর দেই।
বই নিয়ে আসলাম।
– চল এবার ছাদে যাই।
– হুমমমম চলো।
– দেখি বই, এই গুলো না দেখে
বল।
– হি হি কোনদিন পড়িই নি আবার
না দেখে।
– কীইইই…. আচ্ছা না পড়লে কেমনে
হবে বল।
– আমার পড়া ভাল লাগে না তো।
– ওমনি আমার চুল ধরে টান দিল,
আর সাথে সাথে আমার চোখ দিয়ে
পানি বের হয়ে গেছে।
আমার চোখে পানি দেখে।
– খুব জোরে লেগেছে তাই না, আচ্ছা সরি,
নিধির চোখে ও পানি চলে আসছে,
– হি হি হি।
– ঐ হাঁসতেছিস কেন।
– না মানে এমনি, এই প্রথম দেখলাম
কেউ কাউকে মনে আবার নিজেই কাঁনতেছে।
– কীইইই বললি কুত্তা, আমি কাঁদতেছি।
– হি হি হুমমমম তাই তো, আচ্ছা তোমার
কোলে মাথা দিয়ে পড়ি কেমন পিলিজ।
কী জানি একটু ভেঁবে হ্যা বলল।
আমি নিধির কোলে মাথা
রেখে পড়তেছি, আহা কীইইই যে শান্তি
ইসসসস এমন হলে তো আমি
সারাজীবন পড়তাম,
আহা মাথাই হাত বুলাই ও দিতাছে,
মনে হয় ঘুমাই পড়ব এক্ষুনি।
এমন সময় আম্মুর ডাক।
– নিধি মা বাঁদরটাকে নিয়ে খেতে আয়।
– হুমমমম আন্টি যাচ্ছি।
ওই এবার উঠ।
– দূর কেবল একটু পড়াই মন বসল
এমন করলে পড়া হয় নাকি।
– হুমমম হয়েছে এবার চল।
– তার পড়ে খেতে চলে গেলাম,
আম্মু আমাদের খাবার দিয়ে চলে গেল।
– ঐ খা, এমন ভাবে বসে আছিস ক্যান।
– আমারে একটু খাইয়ে দাও না পিলিজ।
– অনেক সাহস হয়ে গেছে তাই না, এবার
মাইর খাবি কিন্তুু ।
– ওকে ওকে দিতে হবে না।
এর মধ্যে নিধি আপুর মা আসল,
আমার আম্মু বলল ভাবি কীইইই
হয়েছে হঠাৎ এমন সময় কেন।
– আর বলিস না, নিধির সেই কোন
সম্পর্কের দাদু নাকি নিধিরে দেখবে।
গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন দিছিল,
আমরা তো যেতে পারব না অনেক
কাজ,
আর তন্নয় কে যদি নিধির সাথে
যেত।
– আরে কীইইই যে বলেন না ভাবি, হুমমম
যাবে সমস্যা কই।
– ওদের কথা শুনে আমি তে হাতে চাঁদ
পাওয়ার মতো অবস্থা নিধি আপুর সাথে
এ কয়দিন থাকতে পারব আহা।
– কিন্তুু মা আমি যাব না, গ্রামে
গেলেই সবাই কেমন করে,
এত বড় হয়ে গেছিস অনেক সুন্দরি হয়েছি।
আমি যাব না ব্যাস।
– ঐ যাবে না মানে কী হুমমমম, আন্টি আপনি
কোন চিন্তা কইরেন না আমি রাজি করাই
তেছি আজকে কালকে সকালেই আমরা রওনা
দিব।
তারপরে অনেক কষ্টে নিধি পাগলিটাকে
বুঝাইলাম।
তারপরে পরেরদিন সকালে রওনা
দিলাম, খলেসপুরী গ্রামের উদ্দেশ্যে।
কিন্তুু বাসের মধ্যে পাকাই ফেলছি
ভেজাল,
আমিও বসব জানালার সাইটে নিধি
ও বসবে জানালার সাইটে,
অতপর দুই জনকেই বাস ত্যাগ
করে চলে গেল,
রাস্তাই হাঁটতেছি দুইজন।
– আমি এজন্য তোর সাথে যাইতে
চাইছিলাম না, এবার নে হাঁট।
– আরে বাবা আমি জানি নাকি বাস
কন্টাক্টর এত্ত খারাপ হইব।
তার অনেক পরে আর একটা বাস ধরে
চলে গেলাম,
কিন্তুু তখন অনেক সন্ধা হয়ে গেছে।
এমনিতেই গ্রামের পথ,
একটু কাঁচা রাস্তা আর একটু আগে আসলে
নাকি ভ্যান পাওয়া যেত।
তাই বলছিল একটা চা ওয়ালা ।
কিচ্ছু করার নাই ম্যাডাম চলেন হাঁটা দেই।
তারপরে দুইজন হাঁটতে লাগলাম।
বিলের মাঝ পথে এসেই শুধু হল
ঝি ঝি পোকার ডাক, আর
শিয়ালের ডাক,
নিধি ভয়ে একদম চুপসে গেছে,
আমার হাত শক্ত করে ধরে আছে।
– আমি শুনছি এই রকম
রাস্তা দিয়ে নাকি আগে ভূত যাইত।
ওমনি আমাদের সামনে দিয়ে একটা
শিয়েল দৌড় দিল,
এবার নিধি আমাকে শক্ত করে জরাই
ধরে ফুফাইতেছে মনে হয় এই কেঁদে দিবে।
হি হি আরে পাগলি দূর, এমনি মজা
করলাম তো।
তার পড়ে চলে চলে আসলাম নিধির চাচার
বাড়ি।
যেতে না যেতেই সবাই নিধিকে নিয়েই
পড়ে আছে,
তারপরে আমরা সেদিন রাতে খেয়ে শুয়ে পড়লাম,
আমি এক রুমে নিধি এক রুমে,
সারারাত মশার কামড়ে ঘুম
হয়নি,
সকালে নিধির ডাকে ঘুম ভাংল।
– ঐ এমন মরার মতো ঘুমাইতেছিস
ক্যান।
– দুঃখের কথা কী আর কিতাম
সারা রাত মশার জ্বালাই ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
তার পড়ে সকালে খেয়ে ঘুরতে
গেলাম।
একটু দূরেই একটা নদী আর অনেক
বড় ব্রিজ স্রোত ও আছে অনেক।
পোলাপান লাফালাফি করছে,
আমি আগে থেকেই সাঁতার জানতাম।
না একটু মজা করি যদি ওর মুখ থেকে
ভালবাসার কথাটা শুনতে পাই।
– নিধি আমি না তোমাকে হেব্বি ভালবাসি
যদি না বলো তা হলে আমি ঐ নদীতে ঝাপ
দিয়ে মইরা যামু।
– হুমমমম জানা আছে তোর সাহস,
বয়েই গেছে তোরে ভালবাসতে।
– সত্যি সত্যি ঝাপ দিমু কইলাম।
– হুমমমম দে তো দেখি।
যেই কথা সেই কাজ, এক দৌড়ে
স্রোতের মধ্যে ঝাপ দিলাম।
হায় হায় কীইইই বিপদেই না পড়লাম,
এমন জোরে স্রোত আসল, মিনিটের মধ্যে
হারাই গেলাম।
আমি যানি নিধি এখন কান্না শুরু করে
দিছে,
মন স্থির করলাম না বেশি সাঁতার কাঁটা যাবে
না, যত দূরেই যাই,
দেহটাকে কন্ট্রোল করা লাগবে,
নিধির জন্য হলে ও বাঁচতে হবে।
অনেক দূরে চলে গেলাম, তার পড়ে উঠতে
পারছি,
উঠার পরে নিধির চাচার বাসাই যেতে
সন্ধা লেগে গেল।
হায় হায় এত্ত মানুষ ক্যান,
সবাই বলা বলি করছে এই বাড়িতে
একটা ছেরে বেড়াতে এসে ডুবে মারা
গেলে, অনেক চেষ্টা করে ও
তার লাশ নাকি পাওয়া যায় নি,
আর একটা মেয়ে নাকি পাগল এর মতো
আচরণ করছে।
আমি একজন কে বললাম
ভাই কীইইই হইছে।
– আরে মিয়া একটা পোরা নদীতে ঝাপ
দিয়া মইরা গেছে।
হায় হায় জলজান্ত একটা
পোলারে মাইরা দিল,
বাড়িতে ঢুকতেই পারছি না,
আরে ভাই যেই পোলা মইরা গেছে
সেটাই আমি চিৎকার করে
বললাম।
ওমনি সবাই থেমে গেল,
হায় হায় আব্বু আম্মু আন্টি আংকেল
সবাই আসছে।
– আম্মু কেঁদে কেঁদে শেষ এসেই একটা চর
ঠাসসসসসসসসসসসস,
তার পরে আব্বু একটা,
আম্মু জরাই ধরে কাঁনতেছে।
আরে যার জন্য লাফ দিলাম
সে কই,
দেখি নিধি অজ্ঞান হয়ে আছে, কাঁনতে
কাঁনতে এমন হয়ে গেছে।
সবাই তো কী বকা আমারে,
অমনি আমি মুখ ফসকে বলে দিলাম
আরে তখন ও আমাকে ভালবাসে
বললেই তো হত।
তার পরে নিধির কাছে
গিয়ে বললাম উঠরে পাগলি পিলিজ
আর দুষ্টুমি করব না,
এই কান ধরছি,
একটু পর নিধির জ্ঞান ফিরল,
সবার মাঝে ও আমাকে
জরাই ধরে বলল অনেক ভাল বাসিরে
অনেক,
প্রায় ২ ঘন্টা পর ওর ফিক থামছে।
পরে সবাই ডিসিশন নিল,
এই পাগল পাগলি দুইটারেই
বিয়ে দেওয়া লাগবে।
ওখানেই আমাদের বিয়ে দিয়ে দিল।
তার পর এই তো এখন পাগলি কাঁধে
মাথা দিয়ে বাসার দিকে
আসতেছি।।।।। হি হি ভালা ভাগ্যিস
ঝাপটা দিছিলাম।।। বউ প্লাস একটা
ডাক্তার ও ফ্রি তে পেয়ে গেলাম। হা হা হা।
>>The End <<