গল্প:- নব_দম্পতি পর্ব:-(০৮)

0
1125

গল্প:- নব_দম্পতি পর্ব:-(০৮)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
তসিবার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে যাচ্ছি তখনি আম্মু বলে! সৌরভ তসিবাকে নিয়ে উপরে যাচ্ছিস কেনো? কিছুক্ষনের মধ্যে তোর আর রিপার আংটি বদল হবে। আয় নিচে আয় তসিবার সাথে কথা বললে পরে বলিস।

আমি:- আম্মা আমার এখুনি কথা বলতে হবে। বলে তসিবাকে নিয়ে সোজা রুমের দিকে হাটা দিয়েছি। রিপা সহ বাড়ীর সব মেহমানরা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। রুমে এসে দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছি।

তসিবা:- দরজা লাগালেন কেনো?

আমি:- তুমি ঐ ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কি কথা বলছো শুনি?

তসিবা:- ও এই কথা জানার জন্য আমাকে টেনে রুমে নিয়ে এসেছেন?

আমি:- কথা না ঘুরিয়ে সোজা উত্তর দাও কেনো ঐ ছেলেটার সাথে হেসে কথা বলছো?

তসিবা:- তা আপনাকে বলতে যাবো কেনো?

আমি:- মানে?

তসিবা:- ছেলেটা মনে হয় আমাকে ভালোবেসে ফেলছে! আর তাছাড়া কিছু দিন পরে তো আপনি আমাকে বিদায় করে দিবেন তখন তো আমার থাকার একটা যায়গা লাগবে নাকী?

আমি:- তোমার কথা বুঝতেছিনা যা বলবে সোজা সুজি বলো?

তসিবা:- আমি তো বাংলা বলতেছি এখানে না বুঝার কি আছে?

আমি:- বুঝতে পারছি ঠিক আছে সমস্যা নেই তোমার যা ইচ্ছা করো তাতে আমার কিছু হবেনা। আর সরি তোমাকে এমন ভাবে ধরে আনার জন্য।

তসিবা:- সরি বলতে হবেনা আমি তো ছেলেটার মোবাইল নাম্বার রেখে দিয়েছি। আমাকে একটা মোবাইল কিনে দিবেন?

আমি:- তোমাকে দিবো মোবাইল কিনে আমার মাথা খারাপ নাকী। তখনি ভাবি দরজা নক করছে।

ভাবি:- সৌরভ তোমাকে আম্মাজান নিচে যেতে ডাকছে। সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।

আমি:- হ্যা ভাবি আসছি! আমি চলে আসবো তখনি তসিবা আমাকে বলে।

তসিবা:- আমাকে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে আর কফি কালার চুড়িদারে নাকী অনেক ধারুন মানিয়েছে।

আমি:- কে বলছে তোমাকে একদম বিশ্রি দেখাচ্ছে।

তসিবা:- কিন্তু সাহেদ তো বলছে আমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। যার চোখে আমাকে সুন্দর দেখায় সে আমাকে প্রকৃত ভালোবাসে।

আমি:- সাহেদটা আবার কে?

তসিবা:- ঐ আমার সাথে যে হেসে হেসে কথা বলছে। ওর নাম সাহেদ ছেলে সারাক্ষন আমার পিছু পিছু ঘুর ঘুর করছে।

আমি:- ভালোই যাক তাহলে তো আর তোমার চিন্তা নেই! আচ্ছা তাহলে আমি রিপার সাথে আংটি বদল করে নিবো? (তসিবা একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলে)

তসিবা:- হ্যা যান মানা কে করছে? আমাকে কেনো জিজ্ঞেস করছেন আমি না করবো কেনো এখন তো আমাকে ভালোবাসার মানুষ পেয়ে গেছি।

আমি:- ঠিক আছে! তাহলে এক সাথে তোমাদের আংটি বদল করে নিতে।

তসিবা:- আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করতে হবেনা যান দেরি হয়ে যাচ্ছে।

আমি:- ঠিক আছে তুমি যেহেতু বলছো তাহলে কি করে মিস করি। তসিবাকে রেখে আমি নিচে চলে এসেছি।

আম্মা:- সৌরভ তসিবার সাথে কথা শেষ হয়ছে? আর কি এমন জুরুরী কথা যে এখুনি বলতে হলো।

আমি:- দরকার ছিলো তাই বলেছি! এখন বলেন কি করতে হবে আমার অনেক ক্লান্ত লাগছে।

রিপার বাবা:- বাবা সৌরভ নাও রিপাকে আংটিটা পড়িয়ে দাও।

আমি:- হ্যা দেন! আংটিটা হাতে নিয়ে তসিবার দিকে তাকিয়েছি দেখি তসিবা সাহেদর সাথে দিব্যি গল্প করছে। আর তসিবাকে বেশ হাসি খুশি লাগছে।

রিপা:- সৌরভ তুমি ঠিক আছো তো? (রিপার কথা শুনে আমি বলতে ছিলাম যে রিপা আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা ঠিক তখনি ভাবি বলে)

ভাবি:- হ্যা ঠিক আছে মনে হচ্ছে কিছুটা নার্ভাস লাগছে। সৌরভ রিপাকে আংটিটা পড়িয়ে দাও।

আমি:- হ্যা দিচ্ছি! রিপাকে অবশেষে আংটিটা পড়িয়ে দিয়েছি। রিপা আমাকে আংটি পড়িয়ে দিয়েছে। সবাই অনেক খুশি হয়েছে আমি বার বার তসিবার দিকে দেখছি। দেখতে দেখতে অনুষ্টান শেষ হয়ে গেছে। রিপা তার বাবা মা, বোন সহ সবাই চলে গেছে। আমি রুমে এসে দেখি তসিবা তার পরনের গহনা ঘাটি খুলছে। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরেছি কিছুক্ষণ পর তসিরা মলম আর ঔষধ নিয়ে এসেছে।

তসিবা:- মলমটা পিঠে লাগিয়ে দিবেন?

আমি:- পারবোনা তোমার প্রেমিক সাহেদকে বলো এসে লাগিয়ে যেতে।

তসিবা:- আমার কাছে তো মোবাইল নেই থাকলে ফোন করলে সাহেদ চলে আসবে নিশ্চয়ই।

আমি:- নাও আমার মোবাইল দিয়ে ফোন করো!( মনে মনে বলছি একবার নাম্বারটা পাই ওর গুষ্টি উদ্দার করবো)

তসিবা:- সরি আপনার মোবাইল দিয়ে ফোন করবোনা পরে যদি আপনি ফোন করে খারাপ ব্যাবহার করেন। আচ্ছা এখন কথা না বাড়িয়ে মলমটা লাগিয়ে দেন।

আমি:- তুমি আগের চাইতে অনেকটা চালাক হয়ে গেছো। দাও লাগিয়ে দিচ্ছি তসিবা ঘুরে বসেছে আমি মলম লাগিয়ে দিয়েছি। এখন আর এতটা দাগ নেই অনেকটা মুছে গেছে।

তসিবা:- জানেন সাহেদ আমাকে খুব পছন্দ করছে আর আমার অনেক প্রশংসা করছে। আমি নাকী দেখতে খুব সুন্দর আমার চুল গুলির উপর নাকী ফিদা হয়ে গেছে।(তসিবা বক বক করছে আর আমার ভিতরে জ্বলছে কানে তুলা দিয়ে শুয়ে পড়েছি)

আমি:- বক বক শেষ হলে এসে শুয়ে পড়। (তসিবা কি বলছে আমি স্পষ্ট বুঝিনি কিন্তু মনে হচ্ছে সেই একিই কথা বলছে। কিছুক্ষণ পরে দেখি তসিবা নিছে যায়গা করছে) তসিবা কি করছো নিছে বিছানা বিছানা করছো কেনো?

তসিবা:- এখন থেকে আমরা আলাদা করে শুইবো। সাহেদ আমাকে খুব বিশ্বাস করে আর সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করাটা ঠিক হবেনা। আর তাছাড়া কিছু দিনের মধ্যে আমারা দুজন দুজনকে ছেড়ে চলে যাবো তখন তো আলাদা ঘুমাতে হবে তাই আগে থেকে অব্যাশ করা ভালো।

আমি:- তোমার যা ইচ্ছা হয় করো আমি ঘুমালাম। চোখ বন্ধ করে রাখছি কিন্তু ঘুম তো আর আসছেনা কিছু একটা মিস করছি সেইটা হলো তসিবাকে। দুই মাস ধরে তসিবা বুকের উপর ঘুমাত এখন তো সে নিচে গিয়ে কি সুন্দর আরামছে ঘুমাচ্ছে। দূর আর পারবোনা যাই গিয়ে নিচে ওর পাশে শুয়ে পরি। তসিবার পাশে শুয়েছি তসিবা আমার উপড়ে পা তুলে দিয়েছে। আমি সুযোগে জড়িয়ে ধরেছি এবার খুব সহজে চোখে ঘুম চলে এসেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আলতু করে তসিবার কপালে চুুমু দিয়ে আমি ফ্রেশ হতে গেছি। নামায পড়তে যাওয়ার আগে তসিবাকে তুলে দিয়েছে।

তসিবা:- আমি সজাগ ছিলাম আজকের মত কিছু বলিনি এরপর যদি আমার পাশে এসে শুয়ে থাকেন তাহলে এর পরিনাম ভালো হবেনা।

আমি:- দুই মাসের অব্যাশ এত তাড়াতাড়ি বদলাবো কি করে তার জন্য তো কিছুটা সময় দিতে হবে নাকী?

তসিবা:- তাহলে রিপার কাছে চলে যাবেন তাও আমার পাশে আসবেন না। বলে তসিবা চলে গেছে। এই মেয়েটাকে নিয়ে কি যে করি দূর তাড়া তাড়ি নামায পড়তে যাই। নামায পড়ে কিছুটা হাটা হাটি করে এসেছি বাড়ীতে। আজকে তসিবাকে একটু বেশি অন্য রকম সুন্দর লাগছে কিন্তু তসিবা তো আমাকে পাত্তা দিচ্ছেনা।

আমি:- আম্মা আমি অফিসে যাচ্ছি আমার কাজ আছে জুরুরী!

আম্মা:- নাস্তা করে যা।

আমি:- নাহ করবোনা আচ্ছা গেলাম। তসিবা আমি অফিসে যাচ্ছি কিন্তু তসিবার কোনো খবর নেই। একদিনে তসিবা কি করে এতটা পাল্টে গেলো চিন্তা করতে করতে অফিসের জন্য রওনা হলাম। অফিসে এসেছি এসে নিজের মত করে কাজ করছি এমনি মোবাইলটা বেজে উঠেছে হাতে নিয়ে দেখি রিপা। রিসিব করেছি হ্যা রিপা বলো?

রিপা:- অফিস শেষে আমার সাথে দেখা করবে আজকে আমরা বাহিরে ডিনার করবো কেমন।

আমি:- আচ্ছা! ফোনটা কেটে দিয়েছি এই রিপাটা আমাকে ফকির করার ধান্ধা। রিপার থেকে তসিবা আমার জন্য পার্ফেক্ট হবে। কাজ গুলি শেষ করেছি আবার রিপা ফোন করেছে রিসিব করিনি কিছুক্ষণ পরে দেখি রিপা মেসেজ করে বলছে।

রিপা:- তোমার অফিসের নিচে দাঁড়িয়ে আছি কতক্ষণ সময় লাগবে তোমার?

আমি:- এই মেয়েটা তো আমাকে ফকির করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। যাই আজকে একদম ভর্তা দিয়ে ডিনার করাবো। কাজ গুলি শেষ করে নিচে গেছি তখনি রিপা এসেছে।

রিপা:- সৌরভ চলো আমার খুব খিদা লাগছে!

আমি:- কেনো বাড়ীতে কিছু খাওনি?

রিপা:- মানে?

আমি:- কিছুনা মজা করেছি চলো। রিপাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেছি রিপার অডার শুনে আমি মনে মনে রাক্ষসী ডাইনী ডেকে শেষ করে দিয়েছি। দুজনে ডিনার করলাম বিল দেখে মাথাটা ঘুরে গেছে। বিলটা দিয়ে রিপাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে ওর বাড়ীতে ওকে নামিয়ে দিয়ে সোজা বাইক নিয়ে চলে এসেছি। বাড়ীতে এসে কলিং বেল বাজিয়েছি তখনি তসিবা এসে দরজা খুলে দিয়েছে। আমি ছোট করে একটা হাসি দিয়েছি কিন্তু তসিবা আমার দিকে না তাকিয়ে চলে গেছে। তসিবা সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতেছে আমি ওর পিছু পিছু যাচ্ছি যখনি রুমে গেছি তখনি তসিবা বলে।

তসিবা:- একটা জিনিস দেখবেন? (আমি অনেক আগ্রহো নিয়ে বলছি)

আমি:- হ্যা দেখবো। (তখনি তসিবা একটা দামী মোবাইল এনে আমাকে দেখাচ্ছে) মোবাইল পেলে কোথায়?

তসিবা:- পায়নি সাহেদ গিফট করছে আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে গিফট পেলাম। সাহেদ আমার সাথে কথা বলতে চাই তাই গিফট করছে। তখনি মোবাইলে ফোন এসেছে।

আমি:- কে ফোন করছে?

তসিবা:- আমার জানু বাবু সোনা সাহেদ মাই লাভ আপনি বসেন আমি একটু রোমান্টিক কথা বলে আসি। জানু উম্মা উম্মা ফোনে কিস করতে করতে তসিবা আমার সামনে থেকে বেড়িয়ে গেছে। তসিবার এমন কাজ দেখে আমি রিতিমত অবাক হয়ে যাচ্ছি! এইটা কি আমার বউ তসিবা নাকী তার জমজ বোন? মনের মাঝে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়ে গেলো!!To be continue,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে