গল্প:-নব_দম্পতি পর্ব:-(০৫)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
সৌরভ রিপার সাথে তোমার ব্রেকাপ হয়ে গেছে? আর তুমি বিয়ে করেছো কবে? রিপা জানে তুমি বিয়ে করেছো যে? (আমি একদম ভয়ে চুপসে গেছি কি বলবো কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা তখনি রিপার বড় বোন রুসি আপু দমক দিয়ে বলতেছে) কি হলো বলো? তুমি আমার বোনের সাথে প্রেম করে এখন অন্য মেয়ে রেস্টুরেন্ট এসে রাতের ডিনার করতেছো আমি তোমার হাত ধরাটা ছবি তুলে নিয়েছি। রিপার কাছে ছবি গুলি পাঠিয়ে দিবো কি?
আমি:- আপু প্লিজ আপনি এই কাজ করবেন না! আপনি আমার কথাটা শুনেন আগে প্লিজ।
রুসি:- কোনো কথা শুনবোনা আজকে আরো আমি আব্বুকে বলছি তোমার আর রিপার সম্পর্কের কথা আর তুমি কিনা এখানে অন্য মেয়ে নিয়ে ডিনার করতে এসেছো? (তখনি তসিবা বলে,,,)
তসিবা:- আপনার সমস্যা কি বলেন তো কখন থেকে অন্য মেয়ে অন্য মেয়ে বলে যাচ্ছেন।
আমি:- তসিবা তুমি চুপ থাকো।
তসিবা:- চুপ থাকবো কেনো? আর আপনি বলে দেন আমি আপনার বউ তাহলে তো সব জামেলা শেষ।
রুসি:- কি আমি জামেলা আমার বোন জামেলা। সৌরভ আজকের পর তুমি আমার বোনের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করবেনা। যদি আমার বোনের কিছু হয় তাহলে তোমাকে আমি ক্ষমা করবোনা বলে দিলাম।
তসিবা:- আপনি বললে হলো আমার স্বামীর কি দোষ আপনার বোনকে বলে দিবেন আমার স্বামীর সাথে যেনো কোনো রকম যোগাযোগ না করে। যদি যোগাযোগ করে তাহলে আপনার বোনের কপালে খারাপি আছে।
আমি:- তসিবা কি হয়ছে মাথা ঠিক আছে তো কেনো ঝগড়া করছো ওনি রিপার বড় বোন যাকে আমি ভালোবাসি তার বড় বোন। তোমাকে তো আমি সব বলেছি তাও তুমি কেনো এমন করছো?
তসিবা:- তো কি হয়ছে ওনি আপনাকে যাতা বলে দিবে আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবো নাকী? এই শুনেন আপনি এখন যান আমাদের ডিনার করতে দেন। তখনি আমি তসিবাকে একটা থাপ্পড় দিয়েছি তসিবা গালে হাত দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলে দিয়েছে।
আমি:- এবার হয়ছে আর যদি চুপচাপ থাকতে না পারো তাহলে বেরিয়ে যাও তাও আমার ভালোবাসার সম্পর্কটা নষ্ট করোনা প্লিজ।( তখনি তসিবা সোজা দরজার দিকে হেটে চলে গেছে আমি তাকিয়ে আছি তসিবা বেরিয়ে গেছে রেস্টুরেন্ট থেকে)
রুসি:- তোমার বউ তোমাকে একটু বেশি ভালোবাসে দেখছি। যাক বউ নিয়ে থাকো আমার বোনের সাথে যোগাযোগ না করলে খুশি হবো।
আমি:- প্লিজ আপু আপনি আমার কথাটা একবার শুনেন। রুসি আপুকে অনেক রিকুয়েস্ট করার পর ওনি রাজি হয়েছে। তারপর আমি তসিবার সাথে যা যা বলছি সব কিছু ওনাকে বুঝিয়ে বলছি আর রুসি আপুর কাছ থেকে ছয় মাসের সময় নিয়েছি।
রুসি:- শুনো সৌরভ তোমার প্রতি আমার বোন রিপা একটু বেশি দূর্বল তাই তোমাকে এই ছয় মাস সময় দিয়েছি। এই ছয় মাসের মধ্যে তসিবাকে ডির্ভোস দিয়ে দিবে কথাটা মনে থাকে যেনো?
আমি:- হ্যা থাকবে আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। রুসি আপু চলে গেছে তখনি তসিবার কথা মনে পরেছে। আমি তাড়াতাড়ি করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়েছি। তসিবাকে কোথাও দেখছিনা এখন কোথায় খুঁজবো মেয়েটাকে মাথাটাই কোনো কিছু কাজ করছেনা। দেখি তো রেস্টুরেন্টের ভিতরে বাগানটাই আছে কিনা? বাগানটার চারদিকে খুঁজতে আরম্ভ করেছি যখনি পেছনে গেছি দেখি একটা ব্যাঞ্চে তসিবা বসে আছে আর আকাঁশে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। তসিবাকে দেখে আমার প্রানটা মনে হয় ফিরে এসেছে। আমি আস্তে আস্তে ওর কাছে গিয়ে ব্যাঞ্চে উপর যখনি তসিবার পাশে বসেছি। ঠিক তখনি তসিবা উঠে চলে যাচ্ছিলো তখনি আমি ওর হাত ধরে নিয়েছি।
তসিবা:- হাত ধরেছেন কেনো ছারেন আমাকে।
আমি:- প্লিজ রাগ করোনা আগে আমার কথাটা শুনো প্লিজ।
তসিবা:- আমি কে আমি কার সাথে রাগ করবো? আমার কপালটা খারাপ তানা হলে ছোট বেলা মা ছেরে চলে যাই আর সারা জীবন মানুষের মারদর খেয়ে বড় হতে হয়। ভাবছি বিয়ের পর স্বামী আমাকে অনেক ভালোবাসবে আর সূখে রাখবে কিন্তু এখন স্বামীও আমাকে মারে।
আমি:- সরি এই কান ধরতেছি আর জীবনেও তোমার গায়ের উপর হাত উঠাবোনা এবারের মত ক্ষমা করে দাও প্লিজ।
তসিবা:- আপনি আমাকে বকা দিতে পারেন আমাকে ঘৃনা করতে পারেন কিন্তু আমাকে থাপ্পড় দিবেন এইটা আমি কোনো দিন কল্পনা করিনি।
আমি:- বলছি তো সরি আর কান ধরেছি এবারের মত ক্ষমা করে দাও প্লিজ।
তসিবা:- আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন কেনো আমি তো আপনার কেও না। সমস্যা নেই আমি আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্ত করে দিবো তখন আপনার ভালোবাসার মানুষের সাথে থাকতে পারবেন। রাত অনেক হয়ে যাচ্ছে। এখন দয়া করে আমাকে একটু বাড়ীতে নিয়ে যাবেন কি?
আমি:- ঠিক আছে চলো। তসিবাকে নিয়ে বাইকের সামনে এসেছি। তসিবা তুমি দ্বাড়াও আমি আসতেছি।
তসিবা:- কোথায় যাবেন?
আমি:- এই এখানে! তসিবাকে রেখে আমি রেস্টুরেন্টের ভিতরে এসে কিছু খাবার পার্সেল নিয়ে এসেছি।
তসিবা:- এই গুলো কি আনছেন?
আমি:- খাবার এনেছি বাসায় গিয়ে দুজনে খাবো। তসিবা কিছু বলেনি আমি বাইকে বসেছি তসিবা বসেছে তবে কিছুটা ফাক রেখেছে। আমি ব্রেক মেরেছি তখনি তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে
তসিবা:- এইটা কি হলো?
আমি:- যদি পরে যাও তখন তো আমার সমস্যা হবে! তসিবা চুপ করে বসে আছে আমি বাইক চালাচ্ছি ভালোই লাগছে রাতের সুন্দরয্যটা। ঘন্টা খানেক পরে বাড়ীতে এসেছি কলিং বেল চাপ দিয়েছি কিছুক্ষণ পরে তসিবার বাবা এসে দরজাটা খুলে দিয়েছে।
শ্বশুড়:- সৌরভ এত দেরি করলে কেনো?
আমি:- ডাক্তারের সাথে কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়ে গেছে। তখন চেয়ে দেখি তসিবার মা সহ অনেক লোক বসে আছে। আমাকে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে গেছে।
শ্বাশুড়ি:- ভাইজান এই ছেলেটা আমাকে অপমান করেছে। তখনি একজন লোক আমার দিকে এগিয়ে আসছে আর তসিবা ভয়ে একদম কাতর হয়ে আছে।
আমি:- তসিবা ওনারা কে? (তসিবা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে তখনি জুড়ে দমক দিয়ে বলছি) কানে শুনতে পাওনি আমি কি বলছি? ওনারা কে এখানে এসেছে কেনো?
তসিবা:- আম্মুর ভাই বোন আমার মামা লাগে।
আমি:- তার মানে ওদের ডেকে আনছে! তখনি লোক এসে আমার সামনে দাঁড়িয়েছে।
ঐ তুই আমার বোনকে আর ছেলেকে কি বলেছিস?
আমি:- বলিনি করেছি আপনার ছেলেকে মেরেছি কারন সে আমার বউকে খারাপ কথা আর খারাপ আচরন করেছে। আচ্ছা আপনার বউকে বা আপনার মেয়েকে যদি কেও খারাপ কিছু বলে বা করে তাহলে আপনি কি করবেন?
আমার পরিবারের সাথে ঐ মেয়েটার তুলনা করেছিস?
আমি:- কেনো তসিবা কি করেছে আপনাদের? তসিবা ইচ্ছে করলে আপনাদের সবাইকে জেলের ভাত খাওয়াতে পারে। আজকে আপনাদের সবার নামে আমি জিডি করে এসেছি। যদি তসিবার কিছু হয় তাহলে দায় থাকবেন আপনারা।
শ্বাশুড়ি:- ভাই তোরা ওর কথা বিশ্বাস করিসনা সব মিথ্যা বলছে কোনো জিডি ফিডি করেনি।
আমি:- আচ্ছা আপনার বোনের তো কোনো সন্তান নেই যদি মারা যায় তাহলে সব সম্পত্তি তসিবা পাবে তাহলে কেনো আপনারা অন্যের সম্পত্তির জন্য এমন করছেন?
হ্যা কথাটা তো মন্দ বলোনি আপা তোর কোনো দিন সন্তান হবেনা তাহলে এই ঝগড়া ঝাটি করে কি লাভ। বরং তসিবার সাথে মিলে মিশে থাকাটা আমাদের ভালো হবে।
আমি:- হ্যা একদম সত্যি বলছেন দেখুন তসিবা তো এই বাড়ীতে থাকবেনা ও থাকবে ওর স্বামীর বাড়ীতে। যদিও নতুন নতুন আসবে কিছুদিন এরপর তো আর আসতে চাইবেনা। তখন তো সবকিছু আপনার থাকবে।
তসিবা:- আমার আপন মা তো ছোট বেলা আমাকে রেখে চলে গেছে আপনি তো এখন আমার মা। আমাকে ভালোবেসে একবার বুকে জড়িয়ে নেন তাহলে আমার আর কিছুই লাগবেনা।
আমি:- দেখুন তসিবা চাইলে আপনাদের রাস্তায় নামিয়ে দিতে পারে। সৎ বলতে কিছুই নেই সম্পর্কটা কেমন আছে সেইটা আগে বুঝতে হবে। জন্ম দিলে সবাই মা হয়না যারা লালন পালন করে মায়া মমতা আর স্নেহ দিয়ে বড় করে তারাই তো প্রকৃত মা।
শ্বাশুড়ি:- আমি এত সহজে সব কিছু মেনে নিবো তা কিরে ভাবছো। ভাই তোরা ওর কথা শুনছিস কেনো?
আমরা তোর সাথে নেই অনেক হয়েছে মা হারা মেয়েটার সাথে অনেক অন্যায় করেছি মা তসিবা আমাকে ক্ষমা করে দিস। এই নাদিম চল তকে আর এই বাড়ীতে থাকার কোনো দরকার নেই। সবাই চলে গেছে শ্বাশুড়ি আমার দিকে অভাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
তসিবা:- বাহা আপনি তো একদিনে সবার মন জয় করে নিয়েছেন। উম্মা তসিবা কিস করে সোজা চলে গেছে।
আমি:- শ্বাশুমা এখনো সময় আছে সব ভুলে যান তানা হলে রাস্তায় থাকতে হবে। আংকেল আপনি কোনো চিন্তা করবেনা আমি সব ঠিক করে দিবো।
শ্বশুড়:- সত্যি বাবা তুমি অনেক ভালো কাজ করেছো আমার মেয়েটাকে সূখে দেখে যেতে পারলে আমি খুশি।
আমি:- হ্যা তসিবা অনেক সূখে থাকবে। ওনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রুমে এসেছি দেখি তসিবা খাবার রেডি করছে। আমি ফ্রেশ হতে চলে গেছি কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছি।
তসিবা:- আসেন আপনাকে আজকে নিজের হাতে খায়ে দিবো।
আমি:- থাক দরকার নেই। আমি নিজেই খেতে পারবো।
তসিবা:- তাহলে আমাকে খায়িয়ে দেন।
আমি:- পারবোনা!
তসিবা:- তাহলে আমি খাবোনা বলে তসিবা উঠে যেতেছিল আমি হাত ধরে বসিয়ে দিয়েছি।
আমি:- আচ্ছা আমি খায়িয়ে দিতেছি! তসিবা অনেক খুশি হয়েছে তসিবাকে খায়িয়ে দিতেছি। তসিবাকে খায়িয়ে দিয়ে আমিও খেয়েছি। তুমি বসো আমি সব পরিস্কার করতেছি কিছুক্ষনের মধ্যে সব কিছু পরিস্কার করে নিলাম। তসিবাকে ঔষধ গুলি খায়িয়ে পিটে মলম লাগিয়ে দিয়েছি।
তসিবা:- আমাকে কি সারা জীবন এমন ভাবে ভালোবাসবেন?
আমি:- ছয় মাস এর পরে তো ডির্ভোস। আচ্ছা এখন ঘুমাও রাত দুইটা বাজতেছে। আমি শুয়ে পড়েছি তখনি তসিবা আমার বুকের উপর মাথা রেখে শুয়েছে। কি হলো আমার বুকের উপর শুয়েছো কেনো?
তসিবা:- ডক্টর কি বলছে মনে নেই?
আমি:- মনে আছে ওনি তো আমার বুকের উপর ঘুমাতে বলেনি। দেখি উঠে আমার ঘুম আসবেনা তো।
তসিবা:- ঘুম না আসলে জেগে থাকেন আর আমার চুলের খুশবোর ঘ্রাণ শুনের আর মাথায় হাত ভুলিয়ে দেন। আমি যতদিন আপনার কাছে থাকবো ততদিন আপনার বুকের উপর ঘুমাবো।
আমি:- বুঝেছি ঘুমাও! উম্মা উম্মা আমাকে তসিবা কিস করে দিয়েছে। আমিও তসিবার কপালে কিস করে দিয়েছি তসিবা ঘুমিয়ে গেছে আমি তসিবাকে দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেছি ঘুম ভাঙছে একদম সকাল এগারোটার দিকে। দেখি তসিবা রুমে নেই ফ্রেশ হয়ে নিচে গেছি দেখি তসিবা রান্না করতেছে। আমি গিয়ে তসিবাকে সাহায্য করতে লাগলাম তসিবা অনেক খুশি হয়েছে।
তসিবা:- আমার জীবনের বেস্ট ঘুম হয়ছে আজকে রাতে।
আমি:- তসিবা আজকে আমরা বাড়ীতে যাবো আম্মু ফোন করেছে তাড়াতাড়ি যেতে।
তসিবা:- কিন্তু শ্বাশুমা কিছু বলবেনা তো?
আমি:- তুমি চিন্তা করোনা আমি আছি। আর আম্মা তো বলছে যেতে সকালে নাস্তা করে শ্বশুড়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরুলাম। তসিবা আমার হাতটা জড়িয়ে ধরে বসে আছে। বিকালের দিকে আমাদের বাড়ীতে গেছি। দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজিয়েছি কিছুক্ষণ পরে ভাবি এসে দরজা খুলে দিয়েছে। তসিবা আমার পিছু পিছু ঢুকছে তখনি চেয়ে দেখি রিপা আর ওর আব্বা আম্মা বসে আছে। রিপা আমাকে দেখে দৌরে এসে জড়িয়ে ধরেছে।
রিপা:- সৌরভ আব্বা আম্মা আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে আমি অনেক খুশি। আমার পরীক্ষার পর পরিই আমাদের বিয়ে দিতে চাই।
রিপার বাবা:- সৌরভ তোমার সাথে ঐ মেয়েটা কে? তখনি আম্মু বলে,,
আম্মা:- ওর নাম তসিবা আমার বোনের মেয়ে ও বোবা কথা বলতে পারেনা এখানে কিছুদিন থাকবে তাই সৌরভ ওকে আনতে গেছে বাস স্ট্যান্ড। তখনি তসিবা কখা বলতে ছিলো আমি তসিবাকে ইশারা করে না করেছি কথা বলতে তসিবা কোনো কথা না বলে সোজা হেটে উপরের দিকে চলে গেছে। To be continue,,,