গল্প :কিউট পিচ্চির ভালবাসা

0
3313

গল্প :কিউট পিচ্চির ভালবাসা
Writer : Tannoy(পিচ্ছি ফাজিল)

সকাল বেলা লাফাইতে লাফাইতে যাচ্ছি
হঠাৎ একটা সাইকেলের সাথে ধাক্কা
খেলাম ও মা গো মাইরা ফেলছেরে।
ঘুরে তাকাতেই দেখি একটা মেয়ে,
মেয়ে তো না যেন একটা পরী।
হায় হায় কী ভাবছি পরী আবার সাইকেল
চালাই নাকি, পরী তো উঁড়ে উঁড়ে বেড়ায়।হি হি

– ওই পোলা লাফাইতে লাফাইতে এসে আমার
সাইকেলের সাথে ধাক্কা লাগা লাগবে। (পরি)
– আমি কই লাগছি আমি যাচ্ছি তুমি লেগে দিছ।
– একটা চর দিমু, আমার সাইকেলটার চাকা বাঁকা হয়ে গেছে এখন ঠিক করে দাও।
না হলে কান্না করমু।
– এহহহহহ ওনি কান্না করবে আর আমি বসে
বসে দেখমু, আমি ও দৌড় দিমু হুমমমমম।
বলেই দৌড় হি হি।

আর যাই হোক মেয়েটা অনেক ভাল ওর নাম
লিপা আমরা একে অপরকে আগে থেকেই
চিনতাম একি এলাকাই থাকি তো তাই।
ও হ্যা আমার নাম তন্নয়, লিপা আর আমি
একই সাথে পড়ি।

বাসাই এসে আব্বু ১০০ টাকা দাও।
– কেন কী করবি।
– ওই যে লিপা আছে না ওর সাইকেল
ভেঙ্গে ফেলছি, আজকে সকালে।
– ওই তোর এই সাইজ এ কোন খেলনা
সাইকেল ও ভাঙ্গবে না, এই নে ধর ১০
টাকা।
– মাত্র ১০ টাকা, এটা দিয়ে কী হবে।
– কম কই মাত্র তো একটা ০ কম দিছি,
তোর দাদু আমাকে ২ টাকা করে দিত।
আর আমি তো তবু ৮ টাকা বেশি দেই।

হুমমমমম তোমার টাকা তোমার কাছে রেখে
দাও, আমার লাগব না ধরো।
– আচ্ছা আচ্ছা এই নে আরো ১০ টাকা,
এবার যা।

এই হলো আমার বাপ পুরা কিপ্টুস মার্কা
কলেজে পড়ি আর দেই ১০ টাকা।

কী আর করার গেলাম কলেজে।
কলেজের গেট পার হতেই একটা 7up
এর বোতল দেখতে পেলাম,
আর দিলাম একটা শর্ট আর
ফট করে গিয়ে লাগছ একটা বড়
ভাইয়ের মাথাই।
আমি তো দৌড় আড়াল থেকে দেখলাম
ভাইয়া এদিক ওদিক দেখতেছে কাউকে
না পেয়ে চলে গেল।

যাক বাঁচলাম বলে যেই একটা শান্তির নিশ্বাস
নিব, তার আগেই কেউ পিছন থেকে
শার্টের কলার চেপে ধরছে।
পিছনে ঘুরতেই দেখি লিপা রাগে
ফুসতেছে।

টেনে টেনে একটা জায়গা নিয়ে গেল,
– ওই ১৫০ টাকা দে।
– কেন।
– আমার সাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে
আমার সাইকের নষ্ট করছস ৫০ টাকা,
আর আমার পায়ে লাগছে তার ১০০ টাকা।
তারাতারি টাকা দে।
– আমার কাছে তো অত টাকা নাই, আব্বু মাত্র
২০ টাকা আছে চলবে।
– ওই বিশটাকা দিয়ে কীইইই করমু হুমমমমম।
রেগে রেগে।
– আমার আব্বু তো অনেক গুলো টাকা আমারে
দেই না, আগে ১০ টাকা দিত, এখন তবু ও ২০
টাকা দেই, আমি প্রতিদিন ২০ টাকা করে এনে
তোমাকে দিয়ে দিব।
কথা বলা শেষে দেখলাম লিপা আমার
দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
– হুমমমমম ঠিক আছে, এবার যাও।

একটু দূরে যেতেই শুনতে পেলাম লিপা
বান্ধবীরা বলছে।
– কীরে লিপা ছেলেটা কিন্তুু অনেকটা বাচ্চাদের
মতো আর অনেক কিউট।
– ওই তোরা ওর দিকে তাকাইলে চোক তুলে
ফেলব।
– তাহলে ওমন রেগে রেগে কী বলছিলি।
– আরে ওহহহ অনেক দুষ্টু আবার তার
থেকে বেশি ভীতু, আর ভীতু হলে ছেরেটাকে
অনেক কিউট লাগে তাই।

মনে মনে ভাবছি এই মেয়ের উদ্দেশ্যটা কীইইই,
কিন্তুু আর যাই হোক প্রেম এ পড়া যাবে না।
আমার বাপজান আমার মাত্র দেই ২০ টাকা
প্রেম করলে টাকা পামু কই।

দূর এই সব ভেঁবে লাভ নাই ক্লাসে যাই।
ক্লাস করতেছি, একটু সাইটে তাকাতেই
দেখলাম লিপা ও আমাকে দেখছে।

দূর এই মেয়ে খালি আমারে দেখে কেন
আমার লজ্জা করে তো।

ক্লাস শেষ করে বাইরে এসে প্রজাপতি ধরার জন্য চুপিচুপি যাচ্ছি।
ওমনি লিপা এসে আমার হাত ধরে টেনে টেনে
নিয়ে আসর একটু দূরে।
– ওই আমাকে বেড়াতে নিয়ে চল।
– আমার কাছে আছে মাত্র ২০ টাকা কেমনে
নিয়ে যাব শুনি।
– আমি জানি না নিয়ে যাবি ব্যাস।
– আরে রিক্সা ওয়ালা মামারে টাকা না দিতে পাড়লে খুব মাইর দিবে।
– ঠিকআছে, একটা শর্তে মানলে আমার টাকা
ও দিতে হবে না, আবার সব টাকা ও আমি
দিব।
– সত্যি কীইইই কথা বলো।
– আমার সাথে প্রতিদিন ঘুরতে যাবি, আর
আমি যা বলব শুনতে হবে রাজি।
– হুমমমমম।
– তো এখন চলো বাবু।
– কই যাব শুনি,
– কই আবার নদীর পারে।
– আচ্ছা চলো।
নদীর পারে বসে আছি, সবাই দেখলে
বলবে আমরা প্রেম করছি।
কারণ লিপা একদম আমার গা ঘেঁসে
বসে আছে।
আমি সরে যাচ্ছি আমার ধমক দিয়ে
কাছে আনছে।
– আচ্ছা তন্নয় তুমি এমন কিউট কেন,
কতো স্মার্ট ছেলে আমার পিছে ঘুরে আমি
পাত্তা দেই না, আর আমি দেখ
কেমন তোমার পিছনে ঘুরি, কেন
বলতো।
– আমি কিউট তাই হি হি হি।
লিপা আমার দিকে তাকাই আছে
কেমন ক্ষীণ নয়নে।
মেয়েটা আসলেই অনেক মায়াবী।

একটু পরে লিপা ফোনে কল আসল।
– হ্যালো আম্মু, আমি তন্নয় সাথে
বসে আছি, আচ্ছা যাচ্ছি একটু পড়ে।

-ওই এইটা কী বললে আমার সাথে আছ
কেন বললে , এখন তো আমার ভয় লাগবে
দূর তোমার তো একটা দুলাভাই আছে যদি
মাইর দেই আমাকে।

– আরে গাধা আমার আব্বু আম্মুর এক মাত্র
মেয়ে এখন আমি আমাকে সবাই অনেক ভালবাসে বুঝলে।
– তবুও তোমার দুলাভাই কেমন গুন্ডার মতো।
– হুমমমমম হয়েছে ভয় করা লাগবে না
চলো এবার।

লিপা ওদের বাসাই চলে গেল, আমার ফোন
নাম্বারটা ও নিছে।
মনে মনে ভাবছি না এই মেয়ের থেকে দূরে
থাকব ওর দুলাভাই জানতে পারলে মেরেই
ফেলবে আমাকে।

রাতে লিপা ফোন দিছে আমি ভয়ে ফোনটা
অফ করে ঘুমাই গেছি।

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই কয়েকটা ছেলে এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেল,
আব্বু বাসাই ছিল না। একটা বড়ো ফ্যাক্টরি
এর মধ্যে আমাকে চেয়ারে বসে
বেঁধে রাখা হয়েছে ।

একটু পড়ে দেখলাম লিপার দুলাভাই কেমন
গুন্ডার মতো দেখলেই ভয় লাগে।
আমার কাছে আসল।
– তুমি নাকি লিপারে ডিস্টার্ব করো, রাতে নাকি
ফোন দাও এস এম এস দাও, ওই
ওরে এমন করে ক্যান বাঁধছস খুলে দে,
বাবুর হাত লাল হয়ে গেছে।

– না ভাইয়া আমি ওরে ফোন দেই
না ওই আমারে ফোন দেই।
– কীইইই বল্লা।
-লিপা এই দিকে আয় তো
এই সেই ছেলে নাকি।
লিপা কই থেকে আসল।
– হুমমমমম ভাইয়া।
– যা এখন যা বলার বল ওকে।
– ওই কাল রাতে আমার ফোন ধরনী কেন,
কত গুলো এস এম এস দিছি।
– তোমার দুলাভাই এর ভয়ে, যদি মাইর
দেই।
– এখন যদি না ধরো তা হলে মাইর দিবে।
ওই এখন থেকে আমার পিচ্চি বোনটার
ফোন ধরবি আর যা বলবে তাই করবি।
– হুমমমমম ভাইয়া।
– চলো এখন ভিতুর ডিম একটা।
লিপার সাথে বাইরে এসে মনে হর বেঁচে
আছি।
আমার চেহারা দেখে তো লিপা হেঁসে হেঁসে শেষ।

সেদিন আর কলেজে যাই নাই বাসাই
বসে বসে গেমস খেলে সময় পার।
রাতে মুভি দেখছি ।

এখন বাজে রাত ১১ টা লিপার ফোন।
– তন্নয় কই তুমি।
– আমি এখন বাসাই কেন।
– এক্ষুনি আমাদের বাসার নিচে আসো।
– কেন।
– যা বলছি তাই করবা, আর হ্যা শুধু শার্ট পড়ে
আসবা কেমন।
– অনেক শীত তো এখন।
– ওই যা বলছি তাই করবা না হলে কিন্তুু।
– আচ্ছা যাচ্ছি,
কাঁপতে কাঁপতে যাচ্ছি, যেতেই দেখলাম
লিপা দাঁড়াই আছে একটা বড় চাদর নিয়ে।

– আমার কাঁপা দেখে এসে বলল,
আমাকে ভালবাসো।
– না মানে।
– ওই সত্যি বলবা।
– হুমমমমম।
– তাহলে এসো।
– কই।
বলার সাথে লিপা আমারে তার চাঁদরে ডুকাই
নিল।
আর আমার কানে কানে বলল অনেক
ভালবাসি সুইট বাবুটারে।

আমার কাঁপা দেখে শক্ত করে জরাই ধরল।
আর আমার ঠোঁটে তার ঠোঁট দিয়ে হি হি
আর বলব না,
যাও তোমাদের লজ্জা নাই হুমমমমম।
তখন থেকে পড়েই যাচ্ছে পড়েই যাচ্ছে।

>>সমাপ্ত< < >>The E

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে