গল্পের নাম প্রেমের শুরু পর্ব-০১

0
2600

গল্পের_নাম_প্রেমের_শুরু
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১

~তোর বউকে কোনোদিন সময় দিয়েছিস? কোনোদিন চেষ্টা করেছিস মেয়েটার মনের অবস্থা বোঝার?
বোন হিয়ার কথা শুনে ইলহাম অবাক দৃষ্টিতে হিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো সে তো কোনো অভাবে রাখেনি তার বউ হেমন্তিকে।ইলহামের চাহনি দেখে হিয়া নিঃশব্দে হেসে বললো,
~ইলহাম,আমরা জমজ ভাই-বোন তোর মনের অবস্থা আমি একটু হলেও বুঝি।
ইলহাম আমতা আমতা করে বললো,
~তুই কী বলছিস বুঝতে পারছিনা?
হিয়া বিছানা ছেড়ে উঠে বুকে হাত গুজে বললো,
~গতকাল ড্রিংক করে বাসায় কেন এসেছিলি?
ইলহাম আবারো অবাক হলো বোনের কথায় হিয়া বললো,
~বিয়ে হয়েছে বলে বাসার কোনো খবর আমি রাখবোনা সেই ভুল ধারনা তুই ছেড়ে দে।জামিল চাচা আমায় সব বলেছে হেমন্তি তোকে কী ভাবে সামলিয়েছে তাও বলেছে।
ইলহাম মাথানিচু করে রইলো বিয়ের ৬মাস হয়েছে এখনই সে ক্লান্ত হিয়া বললো,
~হেমন্তিকে তোর ভালো লাগে না তাই তো?
ইলহান অক্ষি যুগল তুলে বোনের দিকে তাকালো হিয়া বললো,
~আমি তোর বিয়ে করিয়েছিলাম যাতে তুই একা না হয়ে পরিস বাবা-মা নেই আমাদের তাই ভেবেছি তোর একটা গতি করে দেই।তোকে আমি জিজ্ঞেসও করেছিলাম তোর কোনো পছন্দ আছে কিনা?কিন্তু তুই সেসময় সম্পন্ন না বললি এই ব্যাপারে তাই তো আমি হেমন্তিকে এবাসার বউ করে নিয়ে আসলাম।
ইলহাম বোনের প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো তারপর বললো,
~হিয়া,তুই যা ভাবছিস তেমন কিছু না আসলে হেমন্তি আমাকে ভয় পায়। সবসময় আমার থেকে দূরে থাকতে চায়
হিয়া বললো,
~এটার কারণ কী জানিস?
ইলহাম বললো,
~নাহ।
হিয়া বললো,
~বিয়ের দ্বিতীয় দিন তুই ওকে শার্ট দেওয়ার জন্য ধমক দিয়েছিলি।
হিয়ার কথা শুনে ইলহামের মনে পরলো বিয়ের পরের দিন হেমন্তি তাকে একটা শার্ট এনে দেয় সেটা দেখে ইলহাম রেগে যায় নতুন বউ কেন কাজ করবে?তাই তো সে হেমন্তিকে ধমক দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল।হিয়া ইলহামের ভাবনা দেখে বললো,
~আমি আজকে এসেছি হেমন্তিকে কিছুদিন আমার কাছে নিয়ে যাবো তাই।ওকে এই সংসার থেকে দূরে নিয়ে যাই কিছু দিনের জন্য তুইও রেস্ট নে কিছুদিন।
হেমন্তিকে নিয়ে চলে যাবে সে কথা শুনতেই ইলহামের বুকটা ধ্বক করে উঠলো ইলহামের মুখশ্রী দেখে হিয়া মুখ টিপে হেসে বললো,
~তোর ভাইয়া এসে পরবে রাতের খাবার সেরে হেমন্তিকে নিয়ে আমরা রওনা দিয়ে দিবো।
ইলহাম শুকনো ঢোক গিলে বললো,
~ওকে এখন নিয়ে না গেলে হয় না কারণ আমার অফিসে এখন অনেক কাজ।
হিয়া মুখে গম্ভীরতা নিয়ে বললো,
~তোর অফিসে কাজ সেটাতে হেমন্তির কেন প্রয়োজন?
ইলহাম কিছু না বলে বসা থেকে দাড়িয়ে সোজা রুম থেকে বের হয়ে আসলো। পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে সে নিজ রুমের দিকে হাঁটতে লাগলো তখনই রান্নাঘর থেকে গুনগুন করে গান গাওয়ার আওয়াজ আসতেই তার পা থেমে গেলো।সে নিজ ঠিকানা পরিবর্তন করে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলো সেখানে পৌছে ইলহাম দেখলো তার অর্ধাঙ্গিনী কোমড়ে শাড়ির আঁচল গুজে চুলগুলো হাত খোপা করে রান্নায় ব্যস্ত।ইলহাম ধীরপায়ে হেমন্তির পিছে গিয়ে দাড়ালো কারো উপস্থিতি টের পেয়ে হেমন্তি হকচকিয়ে পিছে ঘুরতেই ইলহামকে দেখে সে অনেকটাই ভয় পেয়ে গেলো।হেমন্তি ইলহামের থেকে চোখ সরিয়ে বললো,
~আপনার কী কিছু লাগবে?
ইলহামের ঘোর কেটে যায় হেমন্তির কথা শুনে সে দুকদম পিছিয়ে বললো,
~পানি নিতে এসেছি।
হেমন্তি রান্নাঘর থেকে উঁকি দিয়ে টেবিলের দিকে ইশারা করে বললো,
~টেবিলে পানির জগ রাখা আছে।
ইলহাম বিব্রতবোধ করলো সে হেমন্তির দিকে একবার তাকিয়ে রান্নাঘর থেকে বের আসলো।ইলহাম যেতেই হেমন্তি একটা স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লো হেমন্তি আবার নিজ কাজে মনোযোগ দিলো ননদ আর ননদের জামাইয়ের জন্য সে রান্না করছে আজ।

_____♥_____

হেমন্তির পুরো নাম নাবিলা ইসলাম হেমন্তি সবাই তাকে হেমন্তি বলেই ডাকে।বাবার নাম ইমরান খান সে চাকরি করে আর মায়ের নাম ইরিনা বেগম সে গৃহিণী। হেমন্তির একটা ছোট বোন আছে তার নাম কেয়া।হেমন্তি অর্নাসের ১ম বর্ষের ছাত্রী বিয়ের পরও ইলহাম তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছে এতে তার কোনো আপত্তি নেই।
ইলহামের পুরো নাম ইলহাম হোসেন অয়ন তাকে সবাই ইলহাম বলেই ডাকে বাবা-মা কেউ জীবিত নেই তার শুধু একটা জমজ বোন আছে তার নাম হিয়া।হিয়ার বিয়ে হয়েছে ২বছর তার স্বামীর নাম ওমর ফারুক সে একজন চাকরিজীবি মানুষ।ইলহামও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে ভালোই বেতন পায় সে।হিয়া হেমন্তিকে দেখে পছন্দ করে ইলহামের সাথে বিয়ে দিয়েছে হেমন্তির বাবা-মাও এতো ভালো পাত্র পেয়ে হাত ছাড়া করেনি খুবই সামান্য ভাবে তাদের বিয়েটা হয়ে যায়।হেমন্তি সংসার সামলিয়ে নিতে পারলেও ইলহামকে সামলাতে পারিনি আর ইলহামও হেমন্তিকে আপন করে নিতে পারেনি।দুজনের মধ্যেই এক প্রকার জড়তা কাজ করছে কিন্তু ইলহাম এখন হেমন্তিতে অভস্ত তাই তো ঘাবড়ে গেলো হিয়ার কথা শুনে।
হিয়া হেমন্তির সাথে সাহায্য করছে রান্নার কাজে হিয়া হেমন্তিকে দেখে অনেক খুশী খুশী লাগে সংসারটাকে সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে সে।হিয়ার চাহনি দেখে হেমন্তি বললো,
~আপু এভাবে কী দেখছো?
হিয়া হাতে থাকা চাকুটা সাইডে রেখে বললো,
~হেমন্তি,সংসার তো সামলে নিলে ইলহামকে কবে সামলাবে?
হেমন্তি হিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো হিয়া বললো,
~আমার ভাই অনেকটাই চাপা স্বভাবের তাই হয়তো নিজ অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেনা একটু খেয়াল রেখো তার।
হিয়া একনাগাড়ে কথা গুলো বলে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে আসলো।হেমন্তি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিড়বিড় করে বললো,
~আপনার ভাই তো আমাকে দূরে ঠেলে দেয় তাহলে আমি কীভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাবো?
রাতের খাবারের সময় হিয়া,ফারুক,ইলহাম,হেমন্তি একসাথে খেতে বসেছে। হিয়া প্লেটে খাবার নিতে নিতে বললো,
~হেমন্তি ব্যাগ গুছিয়ে ফেলো তুমি আমাদের সাথে যাবে কিছুদিন আমার সঙ্গী হবে।
হেমন্তি একবার ইলহামের দিকে তাকালো বিয়ের ৬মাসে সে বাবার বাড়ি থেকেছে শুধু ২রাত। কারণ ইলহাম তাকে থাকতে দেয়নি মুখে কিছু না বললেও সে অধিকার খাটিয়ে তাকে এ বাসায় নিয়ে আসে।ইলহামকে নিশ্চিন্তে খেতে দেখে হেমন্তি হিয়াকে বললো,
~ঠিক আছে আপু আমি ব্যাগ গুছিয়ে রাখছি।
হেমন্তির বলা শেষ হতেই ইলহাম মুখের খাবার শেষ করে জোর গলায় বলে উঠলো,
~হেমন্তি কোথাও যেতে পারবেনা তার পরীক্ষা অতি দ্রুত শুরু হবে।আর তোর বাসায় ওর পড়া হবেনা।
ফারুক ভ্রুকুচকে বললো,
~কেন হবে না?আমরা খেয়াল রাখবো তুমি চিন্তা করোনা এসব বিষয়ে।
ইলহাম এবার রেগে বললো,
~আমি যেটা বলিছি সেটাই হবে।
বলে সে প্লেট হেমন্তির দিকে ঠেলে দিয়ে গটগট করে রুমে চলে গেলো।হিয়া আর ফারুক নিজ খাওয়ায় মনোযোগ দিলো হেমন্তি তাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আপনারা কিছু মনে করবেন না উনি হয়তো কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত।
ফারুক চিকেন রোস্ট চিবুতে চিবুতে বললো,
~সে কোনো ব্যাপার না আমিও আমার বউকে নিজ থেকে দূরে রাখতে পারিনা।
ফারুকের কথা শুনে হেমন্তি লজ্জায় লাল হয়ে গেলো তা দেখে হিয়া বললো,
~এতো লজ্জা না দেখিয়ে যাও তোমার বরকে খাবারটা দিয়ে আসো।
হেমন্তি একটু ভয় পেয়ে বললো,
~রেগে আছে আপু।বকা দিবে
হিয়া হালকা হেসে বললো,
~খাবার প্লেট সামনে রেখে বলবে তুমি কোথাও যাচ্ছোনা তাহলেই হবে।
হেমন্তি আর কিছু না বলে প্লেটটা হাতে নিয়ে রুমের কাছে চলে আসলো।ফারুক হিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
~তোমার কী মনে হয় তোমার গম্ভীর ভাই মনের কথা বলবে?
হিয়া বললো,
~সময় লাগবে সবকিছু ঠিক হতে হেমন্তি অবশ্যই পারবে।

_____♥_____

হেমন্তি ঘরের দরজা ঠেলে কাঁপা কাঁপা পায়ে ভিতরে প্রবেশ করলো ইলহাম বিছানায় শুয়ে আছে তার একহাত কপালে রাখা তার চোখ দুটো বন্ধ। হেমন্তি প্লেটটা টেবিলের ওপর রেখে বললো,
~খাবারটা খেয়ে নিন।
ইলহাম ফটফট করে চোখ খুলে ফেললো হেমন্তির দিকে তাকাতেই হেমন্তি বললো,
~আপু বলেছে আমি কোথাও যাবো না এখানে থাকবো।
এতটুকু বলে হেমন্তি ভো দৌড় দিলো ইলহাম হেমন্তির এভাবে চলে যাওয়াটাকে বাচ্চামি ভেবে হালকা হাসলো।খাবারের প্লেটটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো হেমন্তির রান্নার হাতটা ভালো ইদানিং অনেক পাকা হয়ে গেছে রান্নাবান্নায়।ইলহাম খাবার শেষ করল প্লেটটা রেখে ওয়াশরুমে হাত ধুতে চলে গেলো।
হেমন্তি হিয়ার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে ফারুক টিভি দেখতে ব্যস্ত।হিয়া আর ফারুক আজ এখানেই থাকবে ইলহাম সেখানে এসে ফারুকের পাশে বসে পরলো। হিয়া ইলহামকে দেখে বললো,
~ইলহাম,তোর অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটির ব্যবস্থা করলে ভালো হতো গ্রামের বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করছে।বাবা-মায়ের কবরটা যিয়ারত করতে মন চাইছে গ্রামের সবার সাথে দেখা করতে মন চাইছে।
ইলহাম টিভির দিকে তাকিয়ে বললো,
~এখন সম্ভব না অনেক বড় প্রযেক্টে কাজ করছি ছুটি নিলে স্যার আমাকে আজীবনের জন্য ছুটি দিয়ে দিবে।
ইলহামের কথা শুনে হেমন্তি ফিক করে হেসে উঠলো তার হাসির আওয়াজ পেয়ে তিনজনই হেমন্তির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।হেমন্তি শুকনো ঢোক গিলে আবার চুপ করে বসে রইলো হিয়া বললো,
~ঠিক আছে তোর যখন সময় হয় তখনই আমরা পরিকল্পনা করবো।
ইলহাম বললো,
~হুমম।
তারা কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে যার যার রুমে চলে গেলো হেমন্তি রুমে এসেই ওয়াশরুমে চলে গেলো।ইলহাম বিছানায় শুয়ে পরলো তার ঘুম আসছেনা তবুও সে শুয়ে রইলো।কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসলো হেমন্তি টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুলে বেনুনি করতে লাগলো।ইলহাম আড়চোখে হেমন্তিকে একবার দেখে পাশ ফিরে শুয়ে পরলো।হেমন্তির কাজ শেষ হলে সে বিছানার একপাশে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পরলো দুজন দুদিকে শুয়ে আছে।পুরো ঘরে শুধু তাদের দীর্ঘশ্বাসের শব্দ।শীতের রাত তাই চারপাশ নিস্তব্ধতায় ঘেরা ইলহাম একবার ওপাশ ফিরে দেখলো হেমন্তি অপরপাশে মুখ করে শুয়ে আছে।
ইলহাম সাহস নিয়ে আলতো স্বরে বললো,
~হেমন্তি ঘুমিয়ে পরেছো?
ইলহামের ডাক শুনে হেমন্তি অনেকটাই বিচলিত সে ইলহামের দিকে ঘুরে বললো,
~নাহ জেগে আছি।
ইলহাম হেমন্তির দিকে একপলক তাকিয়ে বললো,
~তোমার কী মন খারাপ আমি তোমাকে যেতে দেইনি তাই?
হেমন্তি বললো,
~নাহ মন খারাপ হয়নি আমি কোথাও গেলে আপনার কষ্ট হয়ে যাবে।
ইলহাম হেমন্তির কথা শুনে একগাল হেসে বললো,
~আমার কেন কষ্ট হবে?
হেমন্তি বললো,
~আপনার সকল প্রয়োজনীয় জিনিস তো আমি গুছিয়ে রাখি আপনার সব জিনিসের খেয়াল রাখতে হয় আমার।
ইলহাম বললো,
~তাতো ঠিক।
হেমন্তি বললো,
~একটা প্রশ্ন করি?

____♥____

ইলহাম বললো,
~করো।
হেমন্তি বললো,
~আপনি কালকে মদ খেয়ে এসেছিলেন কেন?
ইলহাম হেমন্তির প্রশ্ন শুনে অনেকটাই বিব্রতবোধ করলো ইলহাম বললো,
~আসলে বন্ধুদের সাথে বসেছিলাম তাই একটু
হেমন্তি বললো,
~আপনি আমার একটা কথা রাখবেন?
ইলহাম হেমন্তির দিকে একটু এগিয়ে বললো,
~রাখবো।
হেমন্তি বললো,
~এসব ছাইপাঁশ খেয়ে এ বাসায় আসবেন না।পবিত্রতা নষ্ট হয় এতে সংসারে রহমত কমে যায়।
ইলহাম বললো,
~কথা দিলাম আর কোনোদিন এসব খেয়ে বাসায় আসবো না।
হেমন্তি হালকা হেসে বললো,
~ধন্যবাদ এখন ঘুমিয়ে পরুন।
হেমন্তি কথা শেষ করে আবার ওপাশ ফিরে শুয়ে পরলো।হেমন্তির দিকে তাকিয়ে ইলহাম একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেও ওপাশ ফিরে শুয়ে পরলো।
রাত যতো গভীর হচ্ছে ঘুমের দেশে তলিয়ে যাচ্ছে তারা দুজন দুরত্ব বজায় রাখলেও তারা দুজন দুজনার অভ্যাস হয়ে উঠেছে।
মধুর ধ্বনিতে ফজরের আযান কানে আসতেই হেমন্তির ঘুম ভেঙ্গে গেলো হেমন্তি উঠে পরে আড়মোড়া ভেঙ্গে। বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুম থেকে ওযু করে বের হয়ে আসলো তারপর ইলহামের কাছে গিয়ে আলতো করে ডেকে উঠলো,
~এই উঠুন নামাজের সময় হয়ে গেছে।
ইলহাম কোনো জবাব না দিয়ে একপাশ থেকে আরেকপাশে ফিরে শুয়ে পরলো।হেমন্তি বুঝতে পারলো আজও ইলহাম নামাজের জন্য উঠবেনা হেমন্তি সময় অপচয় না করে নামাজে দাড়িয়ে পরলো।হেমন্তি নামাজ শেষ করে রান্নাঘরে চলে গেলো নাস্তা তৈরি করে ইলহাম আর ফারুকের জন্য লাঞ্চ বক্স রেডি করতে থাকলো।হিয়া রান্নাঘরে এসে হেমন্তির কাজ দেখে মুগ্ধ হলো একা হাতে সে খুব সুন্দর করে কাজ করছে।হিয়া ভাবছে এবার ইলহামকে বলতে হবে একটা বুয়া ঠিক করতে মেয়েটা এতো কাজ কীভাবে একা করে?হেমন্তি হিয়াকে দেখে বললো,
~আপু সব তৈরি হয়ে গেছে তুমি টেনশন করোনা।
হিয়া বললো,
~তুমি থাকতে কীসের টেনশন?
হেমন্তি ফিক করে হেসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল ৮টা হেমন্তি দাঁত দিয়ে জিভ কেটে বললো,
~ওনার অফিসের জন্য সব কিছু রেডি করতে হবে।
হেমন্তি কথা শেষ করে এক প্রকার দৌড়ে সে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে আসলো।হিয়া হেমন্তির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,
~অনুভূতি তো অবশ্যই আছে কিন্তু কেউ মুখে স্বীকার করে না।

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে