গল্পের নামঃ “heart touch love”
পর্ব : ৫
প্রথমেই বলে রাখছি লাইক কমেন্ট না পাইলে পরের পার্ট আর পোস্ট করা হবে না???
বেশ কয়েক দিন ছুটি কাটিয়ে আমি আবার ঢাকা চলে আসলাম, এবার অবশ্য আমি দিনে অন্তত ১ বার সামিয়ার সাথে কথা বলতাম।
খুব বেশি হলে ১ মিনিট। হয়তো এটা প্রয়োজন তাই…
আমার বদলী হয়ে গেলো নীলফামারী তে, যদিও আমি একটা গোপন কাজে সেখানে গেছিলাম, এজন্য আম্মু বার বার বলার পর ও আমি সামিয়াকে নিয়ে যেতে রাজী হয় নি।
এভাবে ২ মাস পার হয়ে গেলো… ভাবলাম এই কাজ টা শেষ হলে এবার যখন ছুটি পাবো সামিয়ার সাথে কিছুটা হলেও দূরত্ব মিটিয়ে নিবো।
অনেক হয়েছে মেয়েটার শাস্তি, আম্মু বলল, এই ২ মাসে নাকি সে বাবার বাড়ী যায় নি।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সামিয়া বলল, এমনি যায় নি, আপনি আসেন তারপর যাবো।
বুঝলাম, সিমেলের বউ যখন একা বাপের বাড়ী যায় তখন আমি সামিয়াকে শুনিয়ে সিমেলকে যে কথা বলেছিলাম সে কথা সামিয়া এখন ও মনে করে আছে।
ভালো, তবে আমি তো এতো খারাপ স্বামী হতে চাই নি।
আমি সামিয়া কে বললাম, যাও বাবার বাড়ী, আমার আসতে দেরি হবে।
।।
।।
মাস খানিক পরের কথা!
আমি যে বাড়ীতে ভাড়া থাকতাম, উনি স্কুলের একজন শিক্ষক। অনেক ভালো মানুষ, সেই এক মাত্র মানুষ, যাকে বিশ্বাস করে আমি আমার আসল পরিচয় দিয়েছিলাম।
আমার কাজ তখন প্রায় শেষ, আর ৪ দিন পর আমি চলে আসবো, ইচ্ছা আছে ওখান থেকে সোজা আগে বাড়ী আসবো। ২-৩ দিন বউ এর সাথে সময় পার করবো তারপর ঢাকা যাবো।
সামিয়া কে সারপ্রাইজ দিবো। মেয়েটাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি আর না। এতো কষ্ট দিলাম, কিন্তু কাউকে কিছু বুঝতে দিলো না।
এবার আমি তাকে বুঝাবো, আমি তাকে কতো ভালো বাসতে পারি, ফোনেই তাকে বুঝাতে পারতাম কিন্তু আমি চাই কথাই না ব্যাবহারে আমি তাকে বুঝাবো, যে আমি তার যোগ্য স্বামী।
।।
কিন্তু ভাগ্যে মনে হয় অন্য কিছু লিখা আছে…
আমি যে দিন চলে আসবো তার আগের দিন!
হটাৎ শুনলাম যে আমার বাড়ীর মালিক মানে সেই মাস্টার সাহেব এক্সিডেন্ট করেছে, আমি দৌড় দিয়ে হাসপাতালে গেলাম।
অবস্থা খুব একটা ভালো না, ওনার পরিবারে কে কে ছিল আমার জানা ছিল না, কারণ উনি একা থাকতেন।
আমি বাইরে বসে আছি, একজন বলল, এখানে আরিয়ান সাহেব কে?
আমি বললাম আমি। কি হয়েছে বলেন।
সে বলল, রোগী আপনাকে ডাকছে।
আমি ভিতরে গেলাম। দেখলাম ভিতরে ৪-৫ জন আছে।
।।
স্যার আমাকে ডেকেছেন?
মাস্টার সাহেবঃ বাবা, এখানে আসো।
আমিঃ জি বলেন।
মাস্টার সাহেবঃ দেখো বাবা, আমি মনে হয় বেশিক্ষণ বাঁচবো না। এটা আমার মেয়ে বৃষ্টি, মেয়েটাকে নিয়ে অনেক বিপদ এজন্য তাকে আমার থেকে আলাদা করে রাখতাম,
কিন্তু আমি যাবার পর এই মেয়ের কি হবে? মেয়েটার শখ সে একজন ভালো শিক্ষক হবে, কিন্তু তার এই স্বপ্ন এখন কে পূরণ করবে? আমি চাই বাবা, তুমি আমার মেয়েটাকে বিয়ে করো।
আমিঃ চাচা, আমি বিবাহিত, আপনি তো মনে হয় সেটা জানেন।
মাস্টার সাহেবঃ হ্যাঁ, জানি বাবা!
আমিঃ তারপর ও কিভাবে বলছেন?
মাস্টার সাহেবঃ দেখো বাবা, বাবা হিসাবে আমার দায়িত্ব মেয়েকে একটা ভালো ছেলের হাতে তুলে দেওয়া যে তার মেয়েকে সুখে রাখবে আর আমি জানি তুমি
আমার মেয়েকে সুখে রাখবে তার সব স্বপ্ন তুমি পূরণ করবে। তুমি আর না বলো না বাবা।
আমিঃ কিন্তু?
মাস্টার সাহেবঃ কোন কিন্তু না, এই নাও আমার মেয়ের হাত তোমার হাতে দিলাম, সাথে সব দায়িত্ব।
আমিঃ কিন্তু চাচা…।।
।।
এই কথা বলার সাথে সাথেই চাচা আমাদের ছেড়ে চলে গেলো।
মেয়েটা মানে বৃষ্টি কাঁদতে লাগলো… কিন্তু আমি তো চারদিকে অন্ধকার দেখতে লাগলাম, কি হলো আমার জীবনে।
আমি তো সামিয়াকে নিয়ে সুখী হতে চেয়ে ছিলাম। মাঝখান থেকে এই মেয়ে এলো কোথা থেকে? এখন আমি সামিয়া কে কি বলবো? কোন মুখে তার সামনে দাঁড়াবো?
চলবে