গল্প:”ঊন একশ” – কলমে:মারুফুর রহমান

0
1217

#গল্পপোকা_ছোটগল্প_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০২০

গল্প:”ঊন একশ”
কলমে:মারুফুর রহমান

প্রফেস’র আজমল ডেটা ডিস্ট্রিবিউটর কম্পিউটারে থার্ড গ্রেডের এ মানুষটির প্রোফাইল দেখতে লাগলেন।তার ডি.এন.এ-র ব্লু-প্রিন্টটি বারবার করে দেখলেন তবে তেমন কোনো জটিল অসামঞ্জস্যতার লক্ষণ নেই।তার মধ্য বয়সে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে জেনেই ফেডারেল হতে কিছু সিনথেটিক রোবট তার রক্তের মধ্যে মিশিয়ে দেয়া হয়।উদ্দেশ্য ছিল ফুসফুস ও নাকের মাঝের এই পুরো পথের অভ্যন্তরীণ টিস্যুগুলো হতে তুলনামূলকভাবে কম লসিকা নিঃসরণ করা।সিনথেটিক রোবটগুলির কাজ হলো কোষের আর.এন.এ-কে গোপন কোড সরবরাহ করা,যার মাধ্যমে কোষের লসিকা নির্গমনের হরমোন এর উৎপাদন কম করা ও শ্বাসনালি প্রশস্থ করা।এছাড়াও হরমোনগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি-না তাও পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করা।

সমস্যাটা এখানেই।তার টেস্ট রিপোর্ট অস্বাভাবিক।ফেডারেল হতে রোগীর মেডিকেল কোড লাল অক্ষরে লেখা।তার মানে রোগীর শরীরে এমন কিছু ঘটছে যা ফেডারেলের চিকিৎসা সীমার বাইরে।গত দুইশ বছরের পৃথিবীর সব রোগীদের রোগের তথ্য ফেডারেলের ডেটা সার্ভারে জমা আছে।এসব তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হাজারো মানুষের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই মানুষটির জন্য ফেডারেলের কাছে কোনো চিকিৎসা নেই।

থার্ড গ্রেডের এই মানুষটি কোনো সাধারণ মানুষ না। জীববৈচিত্র ও বনভূমি রক্ষার জন্য দীর্ঘ তিনটি যুগ সংগ্রাম আর অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। প্রকৃতি আর সবুজ মায়ের অকুতোভয় এক সৈনিক।লোভ লালসা আর আর্থিক সমৃদ্ধিকে নির্দ্বিধায় পায়ে ছুঁড়ে বরণ করেছেন সাধারণের জীবনযাপন। অসম্ভব এ মেধাবী মানুষটির ফেডারেলের ফার্স্ট গ্রেডের অভিজাত সমাজে থাকার কথা প্রকৃতির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার কারণেই এ মানুষটি জঙ্গলের থার্ড গ্রেডের এই জীবন বেছে নিয়েছেন।

একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই মানুষ শিল্প বিপ্লবের নামে ধ্বংস করতে থাকে কৃষি জমি, খাল,বিল, নদ-নদী, বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি। শত চেষ্টা করেও রক্ষা করা যাচ্ছিল না প্রকৃতির প্রাণ এসব সবুজ বনভূমি। বঙ্গোপসাগরীয় উপকূলের লাখ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর মাঝে দেবদূতের মতই জন্ম হয় এ মানুষটির।তার পূর্বপুরুষেরাও বংশ পরম্পরায় বুকের রক্ত দিয়ে রক্ষা করে গেছেন পৃথিবীর অনিন্দ্য সুন্দর এই টাইডাল বন ও এর জীববৈচিত্র।তিনি অর্থলোভী ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে গঠিত সংগ্রাম পরিষদের একজন সাহসী কর্মী ও প্রধান সংগঠক।

-“অধ্যাপক,আমার সমস্যাটা কি ধরা পড়েছে?”
-“হ্যাঁ।”
-“বনের সব পানিই কি তারা এভাবে দূষিত করেছে?”
-“হ্যাঁ। বনের সব পানিতেই বিশেষ ধরনের পদার্থের অস্তিত্ব আছে।তবে এটাকে অন্যসব মানুষের জন্য দূষণ বলা যাবেনা।এটাকে বলা যাবে সিলেক্টিভ দূষণ,যা শুধু আপনাকে আক্রমণ করার জন্যই পানিতে মেশানো হয়েছিল।আপনাকে রক্ষা করার জন্য যে সিনথেটিক রোবটগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল তাই আজ আপনার শরীরে মাদকের মতো কাজ করে আপনার শরীরকে সংকটপূর্ণ করে তুলেছে।”
-“বনভূমি রক্ষা পেলে শুধু কী আমিই সুফল ভোগ করতাম,নাকি পৃথিবীর সবাই?”
-“সবুজ বন রক্ষা পেলে আমরা বেঁচে থাকবো,এই সহজ সত্যটা এখনো অনেক মানুষকেই বোঝাতে পারছি না।সবুজ বনভূমি উজাড় করে পরোক্ষভাবে এরা আসলে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেই উজার করে দিচ্ছে।আপনার দুই মেয়েকে আমা হচ্ছে। এখনি তারা এসে পরবে। দয়া করে তাদের সান্ত্বনা দিবেন, এবং উৎসাহিত করেন যেন তারা একজন কৃতি ও সত্যিকারের মানুষের সন্তান হিসেবে মাথা উঁচু করে পৃথিবীতে বাঁচতে শেখে।”

ফেডারেল থেকে তার রক্তে মেশানো সিনথেটিক রোবটগুলোর পরিবর্তিত হয়ে গেছে। নিউরোট্রান্সমিটার নামে যেসব প্রোটিনগুলো নিউরন থেকে নিউরনে তথ্য আদান প্রদান করে থাকে এই রোবটগুলো হঠাৎ করেই তাদের গঠনগত পরিবর্তন করতে শুরু করে।ফলে শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির সঠিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে দ্রুত।নতুন আচরণের নিউরোট্রান্সমিটারগুলো তথ্য বিনিময়ের সময় খুব দ্রুততার সাথে তথ্যের সামান্য পরিবর্তন করে দিচ্ছে।ফলে ব্রেইন সঠিক তথ্য পাচ্ছে না।যার কারণে ব্রেইনের প্রতিক্রিয়াশীল সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করাও সম্ভব হচ্ছে না। ফেডারেলের বিজ্ঞানীরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছেন এই আইসোটোপগুলির রেডিয়েশনের কারণে তার শরীরে প্রয়োগ করা সিনথেটিক রোবটের আণবিক গঠনে কিছু পরিবর্তন আসে।ঠিক তখনই এরা নিজে থেকেই মিউটেশন করার ক্ষমতা অর্জন করে।শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা এগুলোর মিউটেশন নিয়ে তেমন চিন্তিত না হলেও পরে এদের আচরণে তারা স্তম্ভিত হয়ে পরে।রোবটগুলো একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় আসার পরে হঠাৎ করেই ভোল পাল্টে ফেলে।তাদেরকে যে কাজের জন্য প্রোগ্রাম করা হয়েছিল তা না করে এরা নিউরোট্রান্সমিটারের প্রোটিন কোড পরিবর্তন করতে শুরু করে।এতে পাল্টে যেতে থাকে নিউরোট্রান্সমিটারের তথ্য প্রবাহের সূক্ষ্মতা।দেখা দেয় বিরাট এক শারীরিক বিপর্যয় যা ফেডারেলের আয়ত্বের বাইরে।তবে এরা অজানা কোনো ব্রেইন কোষগুলিকে অক্ষত রেখেছে,যা ফেডারেলের বিজ্ঞানীদের ফেলে দিয়েছে সমস্যার আরো গভীরে।এমন একজন সংগ্রামী ও প্রকৃতি প্রেমিক মানুষের অসময়ে মৃত্যু বিরাট এক শূন্যতার সৃষ্টি করবে পৃথিবীকে।আর এ কারণে ফেডারেল তার মতো সৎ ও নির্ভীক এই মানুষটাকে ফ্রিজ করবে ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানীদের ভরসায়।

হিমাংকেরও পাঁচ হাজার ডিগ্রির নিচে তরল নাইট্রোজেন ও কিছু জৈব তরলের মিশ্রণের তার শরীরটাকে ডুবিয়ে রাখা হবে ভবিষৎ কোনো এক দিনের অপেক্ষায়।তার শরীর পরিণত হবে ক্রিস্টালে।অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে থেমে যাবে তার সমস্ত চিন্তা,চেতনা ও জৈবিক কার্যক্রম।

অধ্যাপক বেশ আগ্রহ নিয়ে লোকটির পাশে বসে আছেন।তার শেষ মুহূর্তের আচরণগুলির খুঁটিনাটি বিষয় গুলো পর্যবেক্ষণ করছেন।তার সন্তান দুটিকে আনা হয়েছে। বাচ্চা দুটি তাদের বাবার দুইপাশে বসে বাবার দুই হাত কোলের কাছে শক্ত করে ধরে আছে।মনিটরে হার্ট অস্বাভাবিক বিট দিচ্ছে।লোকটির আচরণে কিছু পরিবর্তন আসছে।রক্তে সিনথেটিক রোবটের সংখ্যা বাড়ছে।বেশি দেরি করা যাবে না।তাহলে হয়ত আর তাকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না।সন্তানদের নিয়ে যাওয়া দরকার।তারপরও অধ্যাপক কিছু সময় দেখতে চায় প্রিয়জনের সান্নিধ্য তার শরীরে হরমোনগত পরিবর্তন আনা যায় কি-না।অধ্যাপক জানে শরীরে অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের ক্ষতিকর দিকগুলো ঠেকাতে শরীর নিজ থেকেই কোনো কোনো সময় অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। এমন কোনো কিছু যদি দৈবক্রমে তৈরি হয় তাহলে সিনথেটিক রোবটগুলির মিউটেশন থামাতে পারলে লোকটির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।

-“বাবা,তুমি কি মারা যাবে?”
-“না মা।আমি ঘুমিয়ে থাকবো।”
-“তুমি কী অনেকদিন ঘুমাবে বাবা?”
-“হ্যাঁ মা।”
-“বাবা জানো,আমি গুনতে শিখছি।তোমাকে শোনাই?”
-“কত পর্যন্ত গুনতে শিখেছ?”
-“১০০ পর্যন্ত।বাবা,শুনবে?”
-“আচ্ছা শোনাও।”
-“মেয়েটি গুনতে থাকে,এক,দুই,তিন…..।”

লোকটির চোখের আইরিশ প্রশস্ত হতে থাকে।রক্ত চলাচল ধীর হচ্ছে।এক অদ্ভুত প্রশান্তি তার মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে। পেশিগুলি শিথিল হতে থাকে।মেয়েটি গুনেই চলেছে, আটানব্বই,নিরানব্বই, একশ।

-“বাবা,নিরানব্বই কেন হলো? ঊন একশ বললে কী হতো? ঊন সত্তুর হলো,ঊন আশি হলো তাহলে ঊন একশ কেন হলো না?”
-“আমি জানি নারে মা।”
-“বাবা তুমি বই আলাদের বলবে তো যেন ঊন একশ লিখে।”
-“ঠিক আছে।আমি ঘুম থেকে জেগে উঠলে বলে দেব।”
-“বাবা,তুমি কবে জেগে উঠবে?একদিন পরে,না তিনদিন পরে?”
-“তুমি এক,দুই করে যখন একশ দিন গোনা শেষ করবে,দেখবে আমি জেগে উঠেছি।”

অধ্যাপক হাতের ইশারা করে।লোকটি বুঝতে পরে তার সন্তানদের বিদায় দেওয়া দরকার। সিকিউরিটি সিগন্যাল জ্বলে উঠলো, বাচ্চাদুটি বুঝে গেল তাদের সময় শেষ।তারা হাত ধরে রুম থেকে বের হয়ে যেতে থাকে।তারা কাঁদছে।তাদের চলার গতি ক্রমশ ধীর হয়ে যায়। বড় মেয়েটি পেছনে ঘুরে ঘুরে বারবার তাদের বাবাকে দেখছে আর হাঁটছে।দুই বেনি করে চুল বাঁধা।সে জানে দুই বেনি করে চুল বাঁধা তার বাবা খুব পছন্দ করে। বাবা কাছে থাকলে নিজ হাতে দুই বেনি করে চুল বেঁধে দিত।তারপর সামনে রেখে কিছুক্ষন তর দিকে তাকিয়ে থাকতো।তারপর প্রতিদিনই বলতো,

-“আকাশের সবচেয়ে সুন্দর তারাটি কোথায় আছে জানো মা?”
-“কোথায় আছে,বাবা?”
-“আমার ঘরে।এই আমার সামনে।তুমি হলে আমার আকাশের সবচেয়ে সুন্দর তারা।”

তাকে যে ক্যাপসুলে রাখা হবে তার শেষ ধাপের পর্যবেক্ষণ করছে কিছু ফ্লাইং রোবট।এরা ক্যাপসুলের আণবিক পর্যায়ের ত্রুটিগুলো পর্যবেক্ষণ করছে।দুজন নার্স লোকটিকে সাবধানে কন্ট্রোল রুমে নিয়ে এলো।একটা ওয়ানওয়ে কাঁচের ঘর।তাকে রেখে আসা হলো একা।বন্ধ করে দেওয়া হলো সব দরজা।সমস্ত ঘর এখন এয়ারটাইট। লোকটি উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। কী যেন ভাবছে।কপালের চামড়ায় সামান্য ভাঁজ দেখা যাচ্ছে।

-“অধ্যাপক,আপনি কি আপনার কথা শুনছেন?আমি কি মারা যাব?”
-“আপনি জীবন আর মৃত্যুর মাঝামাঝি একটা পর্যায়ে থাকবেন। আমারাও ঠিক জানি না এটার অভিজ্ঞতা কেমন।”
-“আমার জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?”
-“আমি জানি না।তবে ভবিষ্যতের মানুষেরা বলতে পারবে।আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি,ভবিষ্যতের মানুষেরা আপনাদের অবশ্যই সফলভাবে ফেরত আনবে।”
-“আমি কি তাহলে বৃদ্ধ হয়ে যাবো?”
-“না।তবে ঠিক কেমন হবেন আমিও জানি না।আমরা যেদিন আপনার সমস্যার উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারবো সেদিন আপনাকে ফেরত এনে চিকিৎসা করে বাঁচানো হবে।”
-“অধ্যাপক,আমি কি তাহলে অমর হতে চলেছি?”
-“জানি না।আমরা অমরত্ব ব্যাপারটিতে এখনো স্থির হতে পারি নি।”
-“অধ্যাপক,আপনাকে একটা অনুরোধ করবো?”
-“হ্যাঁ।”
-“আপনি বইতে ঊন একশ প্রচলন করতে পারবেন?”
-“ফেডারেলকে বলে চেষ্টা করে দেখবো।”
-“অধ্যাপক, আপনি গান শোনেন?”
-“হ্যাঁ,তবে মাঝে মাঝে।পুরাতন ধরনের গান।কেন বলুন তো?”
-“আমাকে একটা গান শোনাবেন?একবিংশ শতাব্দীর কোনো গান,এক লাইন হলেও শোনাবেন।”

ক্যাপসুল সীল করা শেষ।সমস্ত ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি ঠিকমতো ভেতরে কাজ করছে কী না শেষবারের মতো দেখে নেওয়া হলো। কয়েকটি সেন্সরের সাহায্যে আল্ট্রা সাউন্ডের মাধ্যমে তার শরীরের সমস্ত কোষকে প্রায় স্থির করে দেওয়া হলো।ক্যাপসুলের ভিতরের দেয়ালে রাখা কয়েকশ কম্পিউটার সেন্সর লোকটির শরীর সম্পর্কে প্রতি মুহূর্তের তথ্য সংগ্রহ করছে।কোনো কারণে যদি লোকটি হার্টফেল করে মারা যায় তাহলে পুরো প্রক্রিয়াটিই ব্যর্থ হয়ে যাবে।কাজই প্রতিটি মুহূর্তের তথ্য পরবর্তী প্রকল্প ও গবেষণার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দলিল।ফ্রিজিং তরল মিশ্রণের পাইপের মুখ খুলে গেল।দুই সেকেন্ডের মধ্যে ক্যাপসুলটি ভরে যাবে।একবিংশ শতাব্দীর গানের সুর ভেসে বেড়াচ্ছে সমস্ত ঘরে।তারই পছন্দের গান।সুরের সাথে সাথে তার শরীরের মধ্যেও এক ধরনের শীতল স্রোত বয়ে গেল।সাথে সাথেই সব স্থির।গানটি এখনো বেজে চলেছে……..

“একবার যেতে দে মা,
আমার ছোট্ট, সোনার গাঁয়…..”
(সমাপ্ত)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে