গল্পঃ ফুল শর্য্যায় ছ্যাকা পর্ব ১০
লেখকঃ রাইসার_আব্বু
—–হইছে বাবা,অার কান ধরতে হবেনা, ওই দেখো মম কান্না করছে। আর মমকে কাদানোর শাস্তি হচ্ছে মমকে জড়িয়ে ধরে বলবে, আর কখনো ছেঁড়ে যাবেনা মমকে, মমকে সারাজীবন আগলে রাখবে,। সারাজীবন আমায় বাবাই হয়ে থাকবে। মমকে কখনো কান্না করতে দিবে না। বল বাবাই রাজি নইলে আমি ওই দূর আকাশের তারা হয়ে যাবে( কেদে দিয়ে রাইসা)
এদিকে অপরিচিতা আর আমি দু’জন দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছি।কি করবো বুজতেছি না!
…
—- কি হলো বাবাই মম’কে জড়িয়ে ধরবে, এতো তাকানোর কি আছে.।
…
—- এদিকে অপরিচিতায় কাছে যাচ্ছি, যতই কাছে যাচ্ছি ততই, কথার কথা মনে পড়ছে। আর এদিকে রাইসা কাদঁতেছে কিছু ভেবে পারছিনা।
…
— অপরিচিতায় কাছাকাছি এসতেই দেখি অপরিচিতা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে অপরিচিতায় হাতটা, ধরতেই কেমন যানি, কেঁপে উঠলো, চোখ দু’টি বন্ধ করে ফেলে।
…
—- এদিকে তাকিয়ে দেখি, রাইসাকে , হাত তালি দিচ্ছে আর বলছে, কি মজা কি,মজা বাবাই আর মমকে কষ্ট দিবেনা, মমকে জড়িয়ে ধরবে, হি হি হি!
…
— যখনি অপরিচিতাকে জড়িয়ে ধরতে যাবো তখনি ধপ করে ফ্লোরে রাইসা পড়ে যায়!
…
— অপরিচিতাকে দেখি দৌড়ে রাইসাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলতেছে মামনি মা,, আমার কি হয়েছে,রাজ দেখো তো আমার কলিজায় টুকরা এর কি হল?
…
—– রাইসা এখন হসপিটালে অনেক্ষণ ধরে রুমের বাহিরে বসে আছি!!
…
— অপরিচিতা কান্না করে করে বলছে, রাজ আমার কলিজায় টুকরাটার কিছু হলে বাঁচবোনা, সবাইকে হারিয়ে, রাইসাকে অবলম্বন করে বেঁচে আছি। বলো রাজ আমি কি অপরাধ করেছি? যার জন্য আল্লাহ আমার শেষ অবলম্বনটাকেও কেড়ে নিতে চাচ্ছে,।রাজ আমি রাইসাকে ছাড়া কি নিয়ে বাচঁবো? (অপরিচিতা)
…
——প্লিজ অপরিচিতা, চিন্তা করোনা,আমার মহারানীটার কিছুই হবেনা।
…
—- রাজ তোমার কথায় যেনো সত্যি হয়, তা না হলে আমি যে বাচঁবো না ( অপরিচিতা)
…
——আপনাদের পেসেন্টের সেন্স ফিরেছে!( নার্স)
…
—- নার্সের কথা শুনে, রাইসার কেবিনে ঘিরে বসলাম, কি সুন্দর চাঁদ মুখ খানা, মনে হচ্ছে পূর্ণিমার চাঁদে গ্রহণ লেগেছে।
…
——পাশে যেতেই, রাইসা সন্ধা তারার মতো, নিভু নিভু করে চোখ জুড়া খুলছে।
…
—- বাবাই, বাবাই, আমি এখানে থাকবো না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে, বাবা আমি মরে গেলে তুমি মমকে, ছেড়ে চলে যাবে কী? বাবাই, আমি কী সত্যি তারা হয়ে যাবে? (রাইসা)
…
—–মামনি, মা আমার এমন কথা বলোনা, তাহলে তোমার মম যে বাঁচবে না। অার কখনো তারা হওয়ার কথা বলবে না (অপরিচিতা)
…
—- মহারানী, তোমার কিচ্ছু হবেনা। আর তুমি, এমন কথা বলো না, কেমন?( আমি)
…
—- বাবাই, আমি আর হসপিটালে থাকবো না। চলো বাসায় চলে যাবো বাবা’ই। আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এখানে।
…
— আচ্ছা মামনি তুমি একটু ঘুমাও তোমার ডাক্তার আঙ্কেল কে বলে তোমাকে বাসায় নিয়ে যাবো।
…
—– এদিকে, অপরিচিতা আর আমি ডাক্তারের কাছে বসে আছি। ডাক্তার রাইসার রিপোট গুলো দেখছে, খুব মনোযোগ দিয়ে।
…
—- রাজ সাহেব, আপনাদের মেয়ে লাস্ট সেশনে আছে, লাস্ট এক মাউথ এর মাঝে কিডনী ডোনেন্ট করতে হবে। আর আশে পাসে অনেক হসপিটালে, আমি খুজ নিয়ে দেখেছি, AB – গ্রুপের কিডনী কোথাও নেই। আপনারা যদি পারেন এক মাউথ এর মাঝে, কিডনী ম্যানেজ করেন, আর যদি না পারেন, তাহলে আর আমাদের কিছু করার নেই।
…
—- আচ্ছা ডক্টর আপনি সব কিছু রেডি করেন, কিডনীর ব্যবস্হা হয়ে যাবে।আমরা কি রাইসা কে নিয়ে বাসায় যেতে পারি? ( আমি)
…
—- হুম নিয়ে যেতে পারেন, আর সবসময় ওকে সময় দিবেন, যে কোন সময় সেন্সলেনস হওয়ার চান্স থাকবে। আমি রিলিজ করে দিচ্ছি। ( ডাক্তার)
…
—- রাইসাকে বাসায় নিয়ে এসে, অফিস চলে গেলা।।
…
অফিস থেকে বের হতেই, রাজ চলো গাড়িতে ওঠো ( অপরিচিতা)
…
-যখনি গাড়িতে উঠবো, তখনি দেখি ফোনটা বাজছে, তাই ফোনটা ধরতেই,,
…
— হ্যালো রাজ! আমি, তোমার পছন্দের সেই নদীর পাড়ে আছি। তুমি কি যানি বলতে চেয়েছিলা, তুমি কি আসবে?( পাখি)
…
—- হুম তুমি থাকো! আমি আসতেছি,,। অপরিচিতাকে, বলে, নদীর পাড়ে চলে গেলাম।
…
—-নদীর পাড়ে যেতেই একটু দূরে দেখি, পাখি বসে আছে, কাছে যেতেই অনেকটা অবাক হলাম,যে মেয়ে কোন দিন, শাড়ি পড়েনি, আজ সে নীল শাড়ি পড়েছে। কাশফুলে ঘেরা নদীর পাড়ে,হিম -হিম বাতাসে এলোমেলো চুলগুলো চোখের উপর এসে পড়ছে।
…
—-রাজ, কি যেনো বলবে? আমার তাড়া আছে, একটু তাড়াতাড়ি বলো। (পাখি)
…
—- হুম, বলছি! আচ্ছা তুমি চাকরির,ছেড়ে দিয়েছো কেনো?
…
— যানো রাজ, আমি জানি, তোমাকে কোনদিনই পাবোনা, আমি যেমন তোমায় ভালবাসি, তেমনি অপরিচিতা ম্যাডাম ও ভালোবাসে! সাথে ফুলের মতো পবিএ একটা মেয়ে, তার হৃদয়ে তোমাকে বাবার, স্হান দিয়েছে! আর তুমি ভালবাসো কথাকে, যে কিনা তোমাকে কষ্ট ছাড়া কিছু দেয়নি! বাদ দাও এইসব কথা। যানে রাজ তোমাকে যতবারই ভুলতে চেয়েছি, ততবারই তোমার মায়াবী, মুখটা ভেসে ওঠে।
তাই ভাবছি তোমার থেকে দূরে চলে গেলে স্মৃতিগুলো হয়তো আর কষ্ট দিবেনা, যা তোমাকে দেখলে পাবো। তাই ডিসিশন নিয়েছি চাকরিটা ছেড়ে দিবো,।ম্যাডামকে রিজাইন লেটার পাঠিয়েছি। ক্ষমা করবে আমায়, রাজ অনেক বিরক্ত করেছি, রাএিবেলা তোমাকে ব্লেকমেল করে জড়িয়ে ধরেছি, সত্যি তুমি খুব ভালো, তোমার জায়গায় অন্য যেকোন পুরুষ হলে, আমার দুর্বলতার সুযোগ টা কাজে লাগাতে। তোমার মতো বন্ধু পেয়েছিলাম তাতেই আমি সুখী। ( পাখি)
…
— যানো পাখি,পৃথিবীতে সবার ভালবাসা পূর্ণতা পায়না, আকাশ যেমন মাটিকে ভালবাসে, মাটিও তেমন আকাশকে ভালবাসে, কিন্তু তাদের ভালবাসায় আকাশ পাতাল ব্যবধান। একটা কথা বলি, তুমি যদি আমায় সত্যি ভালবাসো, তাহলে চাকরিটা ছেড়ে দিয়োনা।( আমি)
…
—– চাকরীটা না ছাড়লে, তুমি খুশি? (পাখি)
…
— হুম অনেকটা খুসি হবো।
…
— আচ্ছা কাল থেকে, অফিসে জয়েন্ট করবো। (পাখি)
…
…
— হ্যালো, মাই সুইট হার্ট, কেমন আছো ( সজিব)
…
— কথা ভাবছে রাজ কিন্তু কন্ঠটা শুনে বুঝতে বাকি থাকলো, না এটা রাজ না এইটা সজিব।
…
— কিসের জন্য ফোন দিয়েছেন,?
…
— সুইর্ট হার্ট আমি দেশে এসেছি, তাই এসেই প্রথম তোমায় ফোন দিলাম, মন খারাপ করেছো সুইর্ট হার্ট? আমার ফিরতে দেরি হওয়ায়। আর হ্যা তুমি কি জানি নাম,ও হ্যাঁ এতিমের বাচ্চা রাজকে ডির্ভোস দিয়েছো কি?
…
— সজিবের কাছে,রাজকে নিয়ে এমন কথা শুনে মনে মনে, ভাবলো, আজ আমার জন্যই একটা নর্দমার কীট আমার স্বামীকে এতিমের বাচ্চা বলছে, আমি অনেক বড়ো অপরাধী না বুঝে কতইনা কষ্ট দিয়েছি, যার পায়ের নিচে আল্লাহ আমার বেহেশতো রেখেছে, আল্লাহ কী আমায় ক্ষমা করবে, আমার প্রাণীর স্বামী রাজকি আমায় ক্ষমা করবে। আমি তো তাকে বাসর রাতে,স্বামীর অধিকারটুকু পর্যন্ত দেয়নি, এসব ভাবতে, ভাবতে, কথায় চোখ দিয়ে, অশ্রুয় ফোয়ারা নামতে শুরু করলো,
…
—– সুইট হার্ট কথা বলছো না কেনো? ছোটলোক টাকে ডির্ভোস দিয়েছে, আমি জানি, ওই এতিমটার সাথে, আমার সুইর্ট হার্ট টার একই ছাদের নিচে থাকতে অনেক কষ্ট হয়েছে.।তাই ভাবছি কাল হোটেলে পার্টি দিবো হোটেলে, সবার সাথে আমার সুইর্ট হার্ট টাকে পরিচয় করিয়ে দিবো, (সজিব)
…
— সজিবের মুখে রাজকে, এতিম,ছোটলোক ডাকতে শুনে, কথার আবারো কান্না পেলো, যেমনটা পেতো আজ থেকে ১৫ বছর আগে, প্রাইমারী জীবনে, কথা মনে মনে ভাবলে সজীবের মতো নর্দমার কীর্টের জন্য আমার স্বামীকে কতইনা কষ্ট দিয়েছি, তাই এর একটা উচিত শিক্ষা দিবো।
…
— কথা সজিব কে বললো, তুমি সব কিছু ব্যবস্হা করো আমি আসবে।
…
—ওকে, মাই সুইর্ট হার্ট এখন রাখি,? ( সজিব)
…
—– ওকে,বলে ফোনটা কেটে দিয়ে, তাকিয়ে দেখি রাত ১১.টা। তাই দেরি হওয়া সত্বেও এশার নামায পড়ে, মোনাজাতে বলতে লাগলো, আল্লাহ ও আমার পরওয়ারদেগায়, আমি গোনাহগার বান্দী তোমার দরবারে,হাত তুলেছি, কোনদিন তোমার কাছে কিছু চায়নি, আমি জানি, আমি খুব অপরাধী, তুমি তো মহান,আল্লাহ আমি সারাজীবন তোমার ইবাদত করে কাটিয়ে দিবো, বিনিময়ে, আমা স্বামীর পায়ের নিচে জায়গা করে দাও, তোমার পবিএ কালামকে সাক্ষী রেখে যে সম্পর্ক তৈরী হয়েছিলো, তা কে মিথ্যা করে দিয়ো না, মোনাজাত শেষ করে কথাকে নিয়ে রাজের লেখা সেই ডায়রিটা নিয়ে কেদে কেদে ঘুমিয়ে গেলো,
— হঠাৎ কথা ——-
—– ওকে,বলে ফোনটা কেটে দিয়ে, তাকিয়ে দেখি রাত ১১.টা। তাই দেরি হওয়া সত্বেও এশার নামায পড়ে, মোনাজাতে বলতে লাগলো, আল্লাহ ও আমার পরওয়ারদেগায়, আমি গোনাহগার বান্দী তোমার দরবারে,হাত তুলেছি, কোনদিন তোমার কাছে কিছু চায়নি, আমি জানি, আমি খুব অপরাধী, তুমি তো মহান,আল্লাহ আমি সারাজীবন তোমার ইবাদত করে কাটিয়ে দিবো, বিনিময়ে, আমা স্বামীর পায়ের নিচে জায়গা করে দাও, তোমার পবিএ কালামকে সাক্ষী রেখে যে সম্পর্ক তৈরী হয়েছিলো, তা কে মিথ্যা করে দিয়ো না, মোনাজাত শেষ করে কথাকে নিয়ে রাজের লেখা সেই ডায়রিটা নিয়ে কেদে কেদে ঘুমিয়ে গেলো,
— হঠাৎ কথা দেখছে , একটা বাড়ি অনেক সুন্দর করে , সাজানো! বাড়ির চতুপাশে, নীল,, লাল, ম্যাজিক বাতিতে বাড়িটা,রৃপ বদল করছে। মনে হচ্ছে কারো বিয়ে।কিন্তু একি রাজ বরের বেশে বসে আছে, পাশে অপরিচিতা। এমন দৃশ্য দেখে, অপরিচিতার মনে হচ্ছে দেহ থেকে প্রাণটা বের হয়ে যাচ্ছে, রাজ না কথার স্বামী । কথা কোন ভাবেই রাজের বিয়ে মেনে নিতে পাচ্ছে না। হঠাৎ দেখে অপরিচিতাকে কবুল বলতে যাচ্ছে।এ বিয়ে হবেনা, রাজ আমার স্বামী আল্লাহর পবিএ কালামকে স্বাক্ষী রেখে বিয়ে করেছে। কথা টা বলতেই ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। ঘুমটা ভাঙ্গেতেই দেখি সকাল হয়ে গেছে।
…
—- কথা হাফ ছেড়ে বাঁচলো। কথা ভাবছে যে ভাবেই হোক রাজের কাছে ক্ষমা চেয়ে রাজের পায়ের নিচে জায়গা করে নিবে।
…
— কথা বুঝে গিয়েছে রাজকে ছাড়া বাচতে, পারবে না, কথা এখন চোখ বন্ধ করলেও রাজকে দেখে। কথা মনে মনে ভাবছে রাজের পা জাপটে ধরে ক্ষমা চাইবে। যতক্ষণ না ভুল ক্ষমা, করবে ততক্ষণ পর্যন্ত পা ধরেই থাকবে। রাজ যে তার স্বামী কত না অবহেলা করেছে, কত কষ্ট দিয়েছে রাজকে, রাজ কি আমায় ক্ষমা করবে। এই সব ভাবতে ভাবতে কথায় চোখে আবার অশ্রু এসে বিড় করে।
…
— কথা,, রাজের পছন্দের সেই নীল শাড়ি,সাথে নীল চুড়ি পড়ে, গাড়িতে করে বের হলো।
…
—— এদিকে, পাখি রাজের অনুরোধে আজ অফিসে জয়েেন্ট হচ্ছে আবার,। বুকে পাথর পরিমাণ কষ্ট চাপা দিয়ে, ভালবাসার মানুষটার কথা রাখতে অপিস যাচ্ছে। নিউমাকেট মোড়ে যথাসময়ে বাস এসে থামল। প্রতিদিনের মতো আজও তড়িগড়ি করে বাসে উঠে সিটে বসতেই অবাক হয়ে যায়! পাসের সিটে “রিসান” কে দেখে ,। “এইতো সেই রিসান যার সাথে ছোট থেকে বড় হয় পাখি”।খানিকটা নীরবতা ভেঙ্গে কাপা কাপা গলায়, পাখি বললো” কেমন আছে রিসান “?
…
—– পাখিকে দেখে প্রশ্নের উওর না দিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চেয়ে আছে রিসান।
…
—- কি হলো, কথা বলছো না কেনো?
…
— ও, হুম ভালো আছি, বেশ ভালোই আছি।
…
—- বাসায় সবাই কেমন, আছে?
…
—–বাবা মারা গিয়েছে বৃদ্ধ মা’কে নিয়ে একটা ফ্ল্যাটে উঠেছি। আর আঙ্কেল কেমন আছে পাখি?
…
— বাবা দু’মাস আগে মারা যায়। কথাটা বলতেই চোখ মুছঁলো পাখি।
…
— সরি! আমি জানতাম না, জানলে হয়তো বলতাম না। ( রিসান)
…
—– না! ” রিসান ” ঠিক আছে। আর সরি এস.এস.সি পরীক্ষা দেওয়ার পর, বাবার বদলি হওয়াতে ঢাকায় চলে আসতে হয়। আর সেদিন, সকালে তোমাকে বাসায় বলতে গিয়েছিলাম, পরে শুনি তোমরা নানু বাড়িতে গিয়েছিলে। অনেক মিস করছি স্কুল লাইফের সেই বন্ধুত্বের দিনগুলি।
…
— আচ্ছা মন খারাপ করতে হবেনা পাখি! আমাদের বন্ধুত্বের বিশ্বাস ছিল যে আবার আমাদের দেখা হবে।
…
— হুম, সেই জন্যই আবার দেখা। আচ্ছা বাদ দাও সকাল সকাল অফিস যাওয়া হচ্ছে নাকি? (পাখি)
…
—- হুম গত এক সপ্তাহ আগে একটা জব হয়েছে। হয়তো আল্লাহ গরীবের দিকে চেয়ে দেখেছে। (রিসান)
…
—-যাক, প্রথম দেখাতেই সুসংবাদ ! আর কোন জায়গায় চাকরি হয়েছে? আর আমাকে সামনের ফ্রাইডেটে ট্টিট দিতে হবে? ( পাখি)
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
…
—- ওহ্ ! আচ্ছা! ট্টিট পেয়ে যাবে। আর আমার জবটা একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে হয়েছে। কোম্পানির নাম” রাইসা ইন্টারন্যাশনাল কম্পানি লিমিটেড”
…
— রিসানের মুখে ” রাইসা ইন্টারন্যাশনাল কম্পানির নামটা শুনতেই, পাখি বিস্মিত হলো!
…
— হঠাৎ জোরে একটা ধাক্কা খেলে পাখি, মনে হচ্ছে চোখ দুটি বন্ধ হয়ে আসছে! ঝাপসা ঝাপসা চোখে, পাখি খেয়াল করছে কে যেনো তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। গাড়ির কাচ গুলো ভেঙ্গে তার উপরে পড়ছে বৃষ্টির শিলের মতো ! কপাল ফেটে রক্ত বেয়ে বেয়ে চোখের পাতায় এসে পড়ছে। মনে হচ্ছে আজই জীবনের শেষ দিন। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে,।, গাড়িটা ধুমড়ে মুচড়ে, রাস্তায় পাশে একটা খালে গিয়ে পড়লো, তার পরও কে যেনো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে তার মাথা থেকে ফুলকি দিয়ে, রক্ত বের হচ্ছে আমার মুখে রক্ত এসে পড়ছে,, কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না।। সব কিছুই দুঃস্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে । এর পর আর কিছু মনে নেই।
…
—- সেন্স ফিরে পাওয়ার পর! পাখি নিজেকে হসপিটালে আবিষ্কার করে! উঠতে যাবো তখনি দেখে তার এক হাতে স্যালাইন যাচ্ছে! অন্য হাতে রক্ত পোষ্ট হচ্ছে।
…
— হঠাৎ! ম্যাডাম উঠবেন না। আপনি এখনো অসুস্হ! ( নার্স)
…
—- আমার কি হয়েছিল, আমি এখানে কেনো? ( পাখি)
..
—– ম্যাডাম! আপনি যে গাড়িতে করে অফিস যাচ্ছিলেন তা সকালে, একটা ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে, খালে গিয়ে পড়ে, আর বাসের তিনজন ছাড়া প্রায় সবাই মারা গেছে,।আপনার ভাগ্যটা অনেক ভালো, সময় মতো যদি কেউ না নিয়ে আসতো, তাহলে আমাদের কিছুই করার থাকতো। (নার্স)
…
—– এদিকে, পাখি নার্সের কাছে এইসব, শুনে বললো কি সেই মানুষ যে আমার জীবন বাঁচালো?
…
—– দেখবেন তাকে?
…
—– পাখি বিস্মিত কন্ঠে বললো, হুম দেখবো, যে আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালো।
…
—– ও আরেকটা কথা! সে মানুষটাই আপনাকে, বাঁচাতে নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে রক্ত দেয়! হসপিটালে কোথাও আপনার রক্ত পাওয়া না গেলে। ( নার্স)
…
—-” সিস্টার”প্লিজ বলেন না কে আমাকে এখানে নিয়ে আসলো। কে আমাকে বাঁচালো, সে মানুষটাকে বড্ড বেশি দেখতে ইচ্ছে করছে। (পাখি)
…
—- এদিকে কারো আসার শব্দ শোনা যাচ্ছে, পাখির হার্ট বির্ট বাড়ছে সে মহান পুরুষটাকে দেখবে বলে! হঠাৎ, মিঃ রিসান আস্তে ব্যথা পাবেন।
…
— এই যে ম্যাডাম, মিঃ রিসান সাহেব, আপনাকে হসপিটালে নিয়ে আসে। তিনিও ওই গাড়ির যাএী ছিলো, তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির কাছ ডুকে ছিল, তা বের করে ডেসিং করে দেওয়া হয়েছে।(নার্স)
…
—– এদিকে নার্সের কথা শুনে পাখির আর বুঝতে বাকি থাকেনা!! যে গাড়ির ভিতর পাখিকে বাঁচানোর জন্য রিসান জড়িয়ে ধরেছিল। আর যার ফলে গাড়ির কাচ গুলো তার পিঠে গিয়ে ডুকে।
…
—- রিসান! কেনো নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে! আমাকে বাঁচালে? (পাখি)
…
—- রিসান! মুচকি হেসে বললো! পাখি এটা আমার বন্ধুকে বাচানোর জন্য কর্তব্য ছিলো।
…
— তাই বলে নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে এভাবে?
…
— পাখি, আমাকে ক্ষমা করো বন্ধু হিসেবে তোমাকে, পোটেক্ট করতে পারিনাই তোমার অনেক ব্লাড গেছে। আর ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি তোমাকে জড়িয়ে ধরার জন্য। এছাড়া হয়তো তোমাকে বাচানো যেতো না।( রিসান)
…
—- রিসান কি বলছো! কেনো ক্ষমা চাচ্ছো তুমি যা করেছো সব আমার জীবন বাঁচানোর জন্য! কথাটা শেষ করতে না করতে দেখে রাজ!
…
—- রাজ ! তুমি এখানে,? (পাখি)
…
— শুনলাম তুমি নাকি একসেডেন্ট করেছো তাই আর সকালে ব্রেকফাস্ট হয়নি বাহিরে অপরিচিতা গাড়ি পার্ক করে আসছে ! ( রাজ)
…
—- এদিকে, পাখি চেয়ে দেখে রাজের চোখে পানি।
…
— রাজ, আমার কিছু হয়নি তো, আর হলেও তো, তোমার ভালো হতো কেউ বিরক্ত করতো না।আর তোমার চোখে পানি কেন? (পাখি)
…
—- কি বলছো পাখি! তুমি আমার বন্ধু! আমার জীবনের একটি অংশ, আর এমন বলবে না, তোমার জীবন রাঙাতে, আমার চেয়ে ভালো কেউ আসবে,।
….
— হঠাৎ পাশে তাকাতেই দেখে রিসান! রাজ পাখিকে, অবাক করে রিসানকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো দোস্ত তোর কিছু হয়নি তো?
…
— কি বলিস রাজ, তোর মতো বন্ধু যার আছে, তার কী কিছু হবে! (রিসান)
…
—‘ রাজ “তুমি রিসানকে কেমনে চেনো? (পাখি)
…
—- ওহ! শুনো রিসান আর আমার পরিচয়, একটা সমাজসেবা মূলক কাজে দুজনই রোহিঙ্গাদের জন্য এাণ নিওয়ার পথে একটা দুর্ঘটনায় রিসান আহতো হয় তার পর ওকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে রিসান তাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। আর আমার মা না থাকাই রিসানের মা, আমাকে সন্তানের অধিকার দেয়। তার পর থেকেই আমরা দুজন বন্ধু।
…
—- ও তাহলে ভালোই! (পাখি)
…
— “পাখি “তুমি কেমনে রিসানকে চেনো?
…
—- রাজ! রিসান আর আমি একি স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করি। তারপর বাবার বদলি হওয়াই ৭ বছর দেখা হয়নি! তবে সাতবছর পর আজ প্রথম দেখাতেই হসপিটালে! (পাখি)
…
—- পাখি, আর রিসান তোমাদের হসপিটাল বিল পেমেন্ট করে দিয়েছি! বিকেলে রিলিজ করে দিবি! আপাতত যতদিন সুস্হ না হচ্ছো ততদিন অফিসে আসতে হবে না। ( অপরিচিতা)
…
— এদিকে হসপিটাল থেকে বের হয়ে অফিসে কিছু গুরুত্বপূণ ফাইলের কাজ শেষ করে। বাসার গেটে গাড়িটা, ধার করাতেই দাড়োয়ান বললো ” স্যার একটা মেয়ে, সকালে এসে আপনার খুজ করেছে, আমি বলছি, স্যারের আসতে লেট হবে।
…
—- ও আচ্ছা তুমি গেট খুলে দাও!
…
— স্যার ওই মেয়েটা যায়নি, প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে বাড়ির সাইর্ডে বেঞ্চটাতে বসে কাদঁছে আর কিছুক্ষণ পরপর রাস্তায় দিকে তাকাচ্ছে…….
চলবে…..