গল্পঃঅটুট_বন্ধন(বালিকা বধূ)পর্বঃ২
#লেখকঃShamil_Yasar_Ongkur
মালটা সেই না।অন্য জন বলল আপু সাইজ কত। আবির বাইক নিয়ে ভার্সিটিতে ঢুকতেই কথা গুলো তার কানে এলো।
সেদিকে তাকাতেই দেখল নীলা পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে আর তাকে দেখে কিছু বখাটে ছেলে ঐ বাজে কমেন্ট করেছে।
আবিরের রাগে টমেটোর মতো লাল হয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে ঐ ছেলে গুলো কে আচ্ছা মতো ধোলাই করতে। নীলার উপর ও ভিসন রাগ হচ্ছে। কাল এতো কিছু বলল তাও মেয়েটা আজকেও সেম ড্রেস পরে আসছে। আসলে এরা বড়ো লোক বাপের বিগড়ে যাওয়া মেয়ে এদের হাজার বুঝালেও এরা বুঝবে না কথাটা মনে মনে ভাবল আবির।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
ক্লাসে ঢুকেই আবির নীলাকে দাঁড়াতে বললো।
আবির: নীলা তোমাকে না কালি বললাম এসব ফালতু ড্রেস পরে আর ক্লাসে আসবে না। তাহলে আজ আবার সেম ড্রেস পরেছ কেনো।
একজন ছাত্র পেছন থেকে বলল কাল তাও ঢিলা ঢালা ড্রেস পরেছিল আজ তো একদম টাইট ফিটিং ড্রেস পরে আসছে বেয়াদব মেয়ে।
নীলা সেদিকে না তাকিয়ে বলতে শুরু করল। দেখুন স্যার এটা স্কুলো না কলেজো না যে আপনার চিপ রুলস গুলো ফলো করতে হবে আমাকে। বিশেষ করে এই ড্রেসের বেপারটা তো আমি কখনোই মানতে পারবো না। এটা ভার্সিটি সো আমি এখানে কি পরে আসবো সেটা নিশ্চয়ই আপনি ঠিক করে দিবেন না।
হুম বুঝলাম তাহলে তুমি বলতে চাইছ যে তুমি এসব ড্রেস পরেই আসবে তাই তো।
হুম ঠিক ধরেছেন।আর একটা কথা কাল চুপ করে ছিলাম বলে ভাববেন না আমি কথা বলতে পারিনা।
ওকে এখন বসো ।
ওহ্ স্যার আসল কথা বলতেই তো ভুলে গেছি।
আবির বিরক্তি নিয়ে বলল হুম কি বলবে বল ।
নীলা: আমরা সবাই মানি আপনি অনেক ভালো টিচার। আপনি অনেক সুন্দর করে পাড়াতে পারেন। অনেক সুন্দর করে বুঝাতে পারেন। কিন্তু তাই বলে আমাদের নৌতিক শিক্ষার অভাব। বাবা মা আমাদের নৌতিক শিক্ষা দিতে পারেনি।এসব কথা বলার রাইট আপনাকে কেউ দেয়নি।সো পরবর্তী তে এসব না বললে খুশি হব।আর আমার মনে হয় আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে নৌতিক শিক্ষা সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে।
আবির আস্তে আস্তে বলে কেমন নৌতিক শিক্ষার সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে তা তো দেখতেই পাচ্ছি।স্যারের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটাই জানেনা।
নীলা: জী স্যার কিছু কি বললেন…?(আবিরের কথা নীলা শুনতে পারেনি)
আবির:না না কিছু না তুমি বলো
জী স্যার আপনি একজন শিক্ষক । আপনার কাজ হলো আমাদের পড়ানো।সো আপনি আসবেন পড়াবেন এর পর চলে যাবেন হুদাই হুদাই জ্ঞান দিতে আসবে না। আপনার আজাইরা কথা বা জ্ঞান যাই বলে এসব শুনতে আমরা এখানে আসিনি। আপনি স্যার স্যারের মতো থাকবেন বেশি লাফাবেন না। শেষে নীলা আস্তে করে বলল দুই টাকার স্যার আমাকে শিখাতে আসছে নৌতিক শিক্ষা।
নীলার এমন কথা শুনে পুরো ক্লাস স্তব্ধ হয়ে গেলো।কেউ ভাবতেই পারেনি নীলা স্যারকে এমন কথা বলবে। ক্লাসের সবাই নীলার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
নীলার বলা শেষ কথা শুনে আবিরের চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে। আবিরের চোখের কোণে জল চলে এসেছে। পেছন ফিরে ক্লাসের সকলের অগোচরে আবির রুমাল দিয়ে চোখের কোণে জমে থাকা জল মুছে। আবির ভাবতেও পারিনি নীলা তাকে এমন ভাবে অপমান করবে।সে কাল যা বলেছে সব তো নীলার ভালোর জন্যই বলেছে।
আসলে মানুষের ভালো করতে নেই। আবির অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে নীলাকে প্রশ্ন করে আমার কাজ পড়ানো তাই না…?
জী স্যার
তো পড়াশোনা করছো কিছু…?
নীলা স্বাভাবিক ভাবেই জবাব দেয় না স্যার।
ওকে তাহলে দাঁড়িয়ে থাকো।
দাড়িয়ে থাকবো মানে নীলা একটু জোরেই বলে কথাটা।
আকাশ বলে স্যার তো শুধু দাঁড়িয়ে থাকতেই বলেছেন কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেননি যে এটা তোর বাপের ভাগ্য।
নীলা: আকাশ তুই চুপ থাক আমি প্রশ্ন টা স্যারকে করেছি।
আবির: দাঁড়িয়ে থাকবে মানে দাঁড়িয়ে থাকবে।আর যদি দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে না করে তাহলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতে পারো দরজা খোলাই আছে।
নীলা আস্তে আস্তে বলে ঙঙঙঙ এমন ভাবে বেড়িয়ে যেতে বলছে যেনো ওর বাবার ভার্সিটি।
পাশ থেকে মুসকান ইশারায় নীলা কে চুপ করতে বলে।আবিরের চোখের আড়াল হয়না বিষয়টা ।
কিছু বললে কি
আপনাকে না স্যার মুসকান কে বললাম আজ কি বার।
ওহ্ ভালো আর মুসকান তোমাকে যেনো পরবর্তী ক্লাস থেকে নীলার পাশে বসতে না দেখি।
নীলা:স্যার এখন কি আপনি কার পাশে কে বসবে সেটাও ঠিক করে দিবেন।
আবির: আমি তোমার সাথে আর কোন কথা বলতে চাই না সো হয় তুমি চুপ চাপ দাঁড়িয়ে থাক আর না হয় ক্লাস থেকে বেরিয়ে যাও।
আর মুসকান আমার কথা অমান্য করলে একদম ট্রান্সফার করে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দিবো ।
নীলা ব্যাগ নিয়ে যেতে যেতে বলল ঙঙ আইছে আমার প্রধানমন্ত্রী উনি বললেন আর ট্রান্সফার হয়ে গেলো।
নীলা বেড়িয়ে যাওয়ার পর আবির পড়াতে শুরু করে। কিন্তু আবির কিছুতেই স্বাভাবিক ভাবে পড়াতে পারছিল না বারবার তার গলা জরিয়ে আসছিল।
সেদিন কোনো রকমে ক্লাস শেষে করে আবির তার কেবিনে গিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে বারবার চোখে মুখে পানি দিতে থাকে। ক্লাস টেন থেকে আবির ছাত্র ছাত্রীদের পড়াচ্ছে কেউ কোন দিন তাকে এই ভাবে অপমান করেনি।
কতো ছাত্রের পিঠে আবির লাঠি ভেঙ্গেছে।আর কতো ছাত্রকে পিটিয়ে সোজা করেছে।কেউ কোনো দিন একটা টু শব্দ পর্যন্ত করেনি।আর আজ তার সাথে কি হয়ে গেলো।
নীলা আকাশ আর বর্ষা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
আকাশ: দোস্ত তুই তো আজ ফাটিয়ে দিয়েছিস।আজ যে বাঁশ দিয়েছিস তাতে মনে হয় না স্যার next time আর তোর সাথে লাগতে আসবে।
নীলা: মামা সবে তো শুরু আগে আগে দেখো হোতাহে কেয়া।ঐ চান্দু আমাকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে আমি ওকে ভার্সিটি থেকে বের করে দিব। শালা নীলা চৌধুরী কে চেনেনা।
একটু পর মুসকান আর মাহি তাদের সাথে যোগ দেয়।
মুসকান: নীলা তুই আজ স্যারকে যেই কথা গুলো বললি ওগুলা বলার কি খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। জানিস তোর কথা শুনে স্যার কতটা কষ্ট পেয়েছেন।
নীলা: আইছে আরেক জন স্যারের চামচি। এতই যখন স্যারের জন্য কষ্ট হচ্ছে তাহলে টিস্যু দিয়ে স্যারের চোখের পানি মুছ গিয়ে।যা ভাগ এখান থেকে।
মুসকান নীলার কথা শুনে হন হন করে সেখান থেকে চলে যায়।
মাহি: নীলা তুই কিন্তু আজ বড্ড বেশি বেশি করে ফেলেছিস।স্যারের সাথে ঐ রকম রিয়াক্ট করা তোর মোটেও ঠিক হয়নি।স্যার আমাদের গুরু জন ।স্যার নাহয় একটু পার্সোনাল কথা বলেই ফেলেছেন।ঐ কথা গুলো হয়তো স্যার তোকে একা ডেকেও বলতে পারতেন। তাই বলে তুই সবার সামনে স্যারকে অপমান করতে পারলি।আর স্যার যা বলেছেন সব তো তোর ভালোর জন্যই বলেছেন।
নীলা: দেখে মাহি আমাকে জ্ঞান দিতে আসবি না। এখন তুই প্লিজ এখান থেকে যা তোকে দেখতেই আমার মাথা আবার গরম হয়ে যাচ্ছে।
মাহি: যাচ্ছি তবে নীলা মনে রাখিস আজ তুই যেটা করলি এর জন্য একদিন তোকে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে ।আর একটা কথা আবির স্যার তোকে তার সাথে দেখা করতে বলেছেন বলে মাহি চলে যায়।
নীলা আবিরের কেবিনের সামনে গিয়ে নক করে।স্যার আপনি আমায় ডেকে ছিলেন।
আবির গভীর মনোযোগ সহকারে কি যেনো ভাবছিল। নীলার কথায় ভাবনার ইতি টেনে নীলাকে দরজা বন্ধ করে ভিতরে আসতে বলে।
নীলা দরজা বন্ধ করার কথা শুনে একটু ভয় পেলেও বুকে সাহস নিয়ে নীলা আবির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
আবির বলতে শুরু করে দেখুন নীলা গতোকাল আমি আপনাকে যে কথাগুলো বলেছি আপনার ভালোর জন্যই বলেছি এতে করে আপনি যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি সরি। আসলে ঐ কথা গুলো হয়তো সবার সামনে না বলে আপনাকে একান্ত ভাবে বলার প্রয়োজন ছিল।আর আমার জানা ছিল না যে আপনি বখাটে ছেলেদের আজেবাজে কমেন্ট শুনে মজা পান।যায় হোক যেটা বলার জন্য আপনাকে এখানে ডেকেছি সেটা হলো লাইফটা আপনার আপনি যা ইচ্ছে করতে পারেন । আপনার পার্সোনাল বিষয়ে নাক গলানোর আমার কোন অধিকার নেই । তাই আমি আর আপনার পার্সোনাল বিষয়ে নাক গলাতে যাবো না।আর কখনো কোন ভুল করলেও আমি শুধরে দেতে যাবো না আপনার ভাষায় যেটাকে জ্ঞান দেওয়া বলে। আপনি এখন আসতে পারেন ।
স্যারের মুখে হঠাৎ আপনি ডাক শুনতে অসস্থি বোধ হলেও নীলা বেশ খুশি স্যার তাকে সরি বলেছেন ভাবা যাই…?
কিন্তু নীলা জানেও না সামনে তার কত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে…
চলবে……
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/