গল্পঃঅটুট বন্ধন(বালিকা বধূ)পর্বঃ১০
#লেখকঃShamil_Yasar_Ongkur
নীলা আবিরের ব্লেজার না দিয়ে দৌড়ে বাসার মধ্যে চলে গেল।
আবির শীতে কাঁপতে কাঁপতে বাড়ি চলে যায়।
এদিকে নীলা খাটে শুয়ে এপিঠ-ওপিঠ হতে থাকে। কিন্তু তার চোখে কোন ঘুম নাই। চোখ বন্ধ করলেই শুধু আবিরের ছবি ভেসে উঠছে। আবীরের সেই মারামারি দৃশ্য। আবিরের বকাঝকা। বারে বারে শুধু এসবই চলে আসছে নীলার চোখের সামনে। নীলা নিজেই বুঝতে পারছে না হঠাৎ তার সাথে এগুলো কি হচ্ছে। আবিরের ব্লেজার পরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে আর আবিরের কথা ভাবছে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
নীলা মোবাইল হাতে নিয়ে ফেসবুকে আবিরের নাম সার্চ করে। কিন্তু এত গুলা আইডি চলে আসে এর মধ্যে কোনটা আবিরের আইডি নিলাম বুঝে উঠতে পারেনা। প্রায় ঘন্টা খানেক খোঁজার পর আবিরের আইডি পাই।
প্রোফাইল পিক দেখেই তো নীলা ক্রাশ খেয়ে যায়। ইস আবির তুমি এত হ্যান্ডসাম কেন বলে আবিরের ছবিতে একটা চুমু খায়।
ছবি নিচে কমেন্ট করে ওই আর এসব ছবি দিবেন না। মেয়েরা তো আপনাকে দেখে আপনার প্রেমে পাগল হয়ে যাবে।
আবিরের করা প্রতিটা পোস্ট দেখতে থাকে নীলা। আবিরের প্রায় সব পোস্টে সুরভী ম্যাম কমেন্ট করেছে।
এই শাকচুন্নী তো আবার আবিরের সাথে লাইন মারতেছে না কথাটা নিলা মনে মনে ভাবে। যদি এমন কিছু হয় তাহলে নীলার কি হবে।
হুট করে নীলা মুসকান কে ফোন করে।
নীলা: আচ্ছা তোর ভাইয়ের কেমন মেয়ে পছন্দ রে
মুসকান ঘুমের ঘরে বলে যারা পর্দা করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে তাদের।
নীলা থ্যাংক ইউ বলে ফোন কেটে দেয়।
এদিকে মুসকান কিছু বুঝতে পারেনি ঘুমের ঘরে সে কাকে কি বললো।
নীলা কাবাড খুলে একের পর এক কাপড় বের করতে লাগলো। নীলার কাবাডে শুধু জিন্স আর টপ ছাড়া কিছুই নেই। নীলার নিজের উপরে খুব রাগ হচ্ছে কেন সে একটা বোরখা কিনল না। এতো রাতে অনলাইনে অর্ডার করলেও তো আজ আর পাওয়া যাবে না।
নীলা সারা রাত ঘুমোতে পারিনি ।সে যে প্রেম নামে একটি মহামারী রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
নীলাকে সালোয়ার-কামিজের দেখে ক্লাসের সবাই অবাক হয়ে গেল। নীলা আজ কোন মেকআপ করেনি আবার মাথায় ওড়না দিয়ে এসেছে।
নীলার হঠাৎ এমন পরিবর্তন ক্লাসের সবাই অবাক হয়ে গেছে। ক্লাসে সবাই বলাবলি করতেছে সূর্য আজ কোন দিকে থেকে উঠেছে। হঠাৎ করে নিলা এমন ভদ্র হলো কি করে।
মিলা কারো কথা কানে না নিয়ে সোজা মুস্কান এর পাশে গিয়ে বসলো। মুসকান একবার তার দিকে তাকালো এরপর সিট থেকে উঠে যেতে নিলেই নীলা শক্ত করে তার হাতটা ধরে।
নীলা: দেখ এতদিন আমি যা করেছি অনেক অন্যায় করেছি আমি তোর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি তুই প্লিজ আমাকে মাফ করে।
মুসকান: তোকে না বলছি তুই আমার আর আমার ভাইয়ের কাছ থেকে 100 হাত দূরে থাকবে।
নীলা: আরে বাবা সরি বললাম তো আচ্ছা এখন কি তোর পা ধরতে হবে। বল তাহলে আমি তাই ধরি। তাও তুই আমাকে ক্ষমা করে দে প্লিজ।
(শুধু তোর ভাইয়ের প্রেমে পড়েছি বলে তোকে সরি বললাম তাছাড়া নীলা চৌধুরী কাউকে সরি বলেনা নীলা মনে মনে বলল)
মুসকান: পা ধরতে হবে না যেটা বলেছি সেটা করলেয় হবে।
নীলা মুসকান কে পেছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে প্লিজ বোন ক্ষমা করে দে। এই তো কান ধরলাম বলে মুসকানের কান ধরে বলল আর কখনোই এমন হবে না।
মুসকান মুচকি হাসি দিয়ে বলল থাক আমার কান আর ধরতে হবে না কথাটা যেন মনে থাকে।
নীলা মুসকান এর গালে দুটো চুমু দিয়ে আচ্ছা মুসকান একটা কথা বলবি।
মুসকান: হুম বল
নীলা: আবির স্যারের কি কি পছন্দ রে….
মুসকান: কেন ভাইয়ার কি পছন্দ সেগুলো যেন তুই কি করবে…?
নীলা:না মানে জাস্ট এমনি জিজ্ঞেস করলাম আর কি।
মুসকান: আমি কিন্তু অন্য কিছুর গন্ধ পাচ্ছি।
নীলা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবির ক্লাস রুমে প্রবেশ করলো।
ক্লাসের শেষের দিকে আসিফ আবির কে বলল আচ্ছা স্যার সুরভী ম্যাম দেখি সবসময় আপনার খবর নাই।
আবির: উনি আমার ক্লাসমেট ছিলেন তো তাই হয়তো।
আসিফ: আমার মনে হয় কি স্যার ম্যাম আপনাকে পছন্দ করে। একটু আগেও দেখলাম ঘুরে গেল এখান থেকে। আচ্ছা স্যার ম্যাম কি আপনাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল…?
আসিফের এমন প্রশ্ন শুনে আবির সহ ক্লাসের সবাই অবাক হয়ে গেল।
মুসকান কিছু বলতে চাইছিল কিন্তু আবির তার আগেই ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল।
এখনকার ছেলেমেয়েদের সাথে ফিরি হওয়াও যাবে না কখন কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে শেষে মানসম্মান সব ধুলির সাথে মিশে যাবে আবির মনে মনে ভাবলো।
নীলা: আচ্ছা মুসকান সুরভী ম্যাম কি সত্যি স্যার কে পছন্দ করে।
মুসকান: হুম ম্যাম তো ভাইয়া বলতে পাগল। কয়বার যে প্রপোজ করছে তার ঠিক নাই। দুইবার তো হাত কেটেছে।
নীলা: কিহ ম্যাম স্যারের জন্য হাত কেটেছে।
মুসকান: হুম দেখবি ম্যামের বাম হাতে দুইটা কাটা দাগ রয়েছে।
নীলা: আচ্ছা স্যারো কি ম্যাম কে পছন্দ করে..
মুসকান: প্রকাশ্যে তো কিছু বলে না করতেও পারে।
মুসকানের কথা শুনে নীলার পুরো শরীর জ্বলতে শুরু করলো। আগে এই সুরভী শাকচুন্নী টাকে সাইজ করি তারপর তোর ভাইকে লাইনে আনব নীলা মনে মনে বলল।
নীলা প্রায় 15 দিন ধরে আবিরের পেছনে পেছনে ঘুরছে কিন্তু আবিরের বাচ্চা খাবির তাকে কোন টাইম দিচ্ছে না।
নীলা: স্যার আপনাকে একটা কথা বলার ছিল।
তোমার ফালতু কথা শোনার সময় আমার কাছে নেই কথাটা বলে আবির চলে গেল।
শালা বুদ্ধিজীবী তুই যখন কথা বলবি তখন তোর কথা মন দিয়ে শুনতে হবে আর আমার দুটা কথা শোনা সময় তোর নেই। আর কটা দিন সবুর করো তারপর তোমাকেও লাইনে আনবো।
আমাকে ভাব দেখানো তোমার ভাব আমি বের করব বুদ্ধিজীবী।
নীলা আকাশ আর বর্ষা এক গাছের নিচে বসে বসে গল্প করছে।
বর্ষা: আচ্ছা নীলা সত্যি করে একটা কথা বলবি।
নীলা: হুম বল
বর্ষা: তোর কি হয়েছে একটু বলবি। কয়দিন ধরে দেখছি তুই একদম পুরো চেঞ্জ হয়ে গেছিস।
আকাশ: নীলার ফোনের গ্যালারিতে ছবি দেখতে দেখতে বলল আমার মনে হয় নীলা প্রেমে পড়েছে।
বর্ষা:ধেত কি যে বলিস না নীলা তা আবার প্রেম কখনোই সম্ভব না।
নীলা একটু রেগে গিয়ে বলল কেন সম্ভব না।
বর্ষা: তার মানে তুই সত্যিই প্রেমে পড়েছিস।
নিলাম মুচকি হেসে হ্যাঁ সূচক মাথা ঝাঁকায়।
আকাশ: বলিস কি তা কার প্রেমে পড়লি শুনি।
নীলা একটু লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে বলল আবির স্যারের
আকাশ: কাম সারছে তুই না স্যার কে দুই চোখে দেখতে পারতিস না।
নীলা: হুম বাট এখন স্যারকে না দেখলে আমার রাতের ঘুম হয় না।
বর্ষা: শেষ পর্যন্ত বুদ্ধিজীবির প্রেমে পড়ে গেলি।
নীলা: ওই ওকে খবরদার বুদ্ধিজীবী বলবে না ওটা শুধু আমি বলব।
আকাশ: স্যারের সাথে বিয়ে হলে কিন্তু তোকে অনেক কিছু ছাড়তে হবে। স্যার পার্টি পছন্দ করেন না। টপ আর জিন্স পরা চিরদিনের জন্য বন্ধ। দেখবি বাড়ি থেকে বের হতে দেবে না তোকে।
নীলা: আমার কোন সমস্যা নেই আমি ওর জন্য সব কিছু ছাড়তে রাজি আছি।
বর্ষা: আকাশ মেয়ে বলে কি এ তো দেখি পুরাই প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
আকাশ: তাই তো দেখতেছি।
হঠাৎ আকাশ একটা ছবি দেখে ফোনটা নীলার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল এই ছোট্ট মেয়েটা কে রে।
নীলা ছবিটা দেখে বলল কে আবার এটা আমি। দেখছিস ছোটবেলায় আমি কত কিউট ছিলাম।
আকাশ: আচ্ছা তোর কি কোন জমজ বোন ছিল।
নীলা: না আমি একাই আমার কোন বোন নেই।
আকাশ: আমি না তোর মত একটা মেয়ের ছবি আবির স্যারের ফোনে দেখেছি। মেয়েটা একটা ছেলের বুকের উপর ঘুমিয়ে আছে।
নীল আকাশের হাত থেকে ফোন নিয়ে একটা ছবি বের করে বলল আচ্ছা ভালোমতো দেখতো এই ছবি ছিল নাকি।
আকাশ ভালো করে দেখে বললো হ্যাঁ এটাই তো ছিলো।
নীলা: সত্যি
হুম
আকাশের কথা শুনে নীলা তো আনন্দে নাচা শুরু করে দিল।
আচ্ছা তোরা থাক আমি এখন আসছি বলে নীলা এক দৌড় দিল।
নীলা বাড়ি গিয়ে তার বাবার হাত তার মাথায় রেখে বলল বাবা সত্যি করে বলবা আবির স্যার কে তুমি চেনো।
সাইফ চৌধুরি প্রথমে বলতে না চাইলেও নীলার জোরাজুরিতে শেষমেষ বলে দিও।
আবির তোর রায়হান আঙ্কেলের ছেলে। দেওয়ালে একটা ছবি টাঙানো ছিল সেটা দেখিয়ে তাকে বলল ওই যে ফর্সা নাদুস নুদুস ছেলেটাকে দেখছিস তোর মায়ের কোলে বসে আছে ওটাই আবির।
নীলা ওর বাবার গালে চুমু খেয়ে বলল বাবা আমি একেবারে ভালো হয়ে যাব তুমি শুধু আবির স্যারের সাথে আমার বিয়ের ব্যবস্থা কর…
সাইফ চৌধুরি তো মেয়েরা এমন কথা শুনে হতবাক হয়ে গেল…..
চলবে…..❤
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/