খেলাঘর পর্ব-৪৮
লেখা- সুলতানা ইতি
মিথিলা ভাবছে অন্য কথা, আজ এতো গুলো বছরের মধ্যে একবার ও আসেনি আজ কেনো এলো তা ও একেবারে পায়েশ রান্না করে নিয়ে এলো
মিসেস আয়মন- কিরে কি ভাবছিস?
মিথিলা- তেমন কিছুই না আপনি বসুন
মিসেস আয়মন- ইভুর কাছে শুনলাম আজ তোর বার্থডে তাই পায়েশ রেধে আনলাম
মিথিলা আগেই বুঝতে পেরেছিলো মা ছেলের মাঝে সব ঠিক হয়ে গেছে তাই এতো আদিক্ষেতা
মিসেস আয়মন হাসি মুখে মিথিলা কে বল্লো
– মা তোর জন্ম দিনে তোর কাছে থেকে আমার কিছু চাওয়ার আছে? বল মা তুই আমায় ফিরাবি না
মিথিলা- আমার সাধ্যের মধ্যে কিছু চাইলে আপনাকে খালি হাতে ফিরতে হবে না বলুন কি চান
মিসেস আয়মন- তুই ফিরে আয় আমার ঘরে আমার ইভুর জীবনে
মিথিলা-কি বলছেন কি আপনি? এটা জীবনে ও সম্ভব নয়
মিসেস আয়মন- কেনো সম্ভব নয়? আমার ইভু তো ঐ মেয়ের থেকে ফিরে এসেছে আর ওদের ডিভোর্স ও হয়ে গেছে। তা হলে ওর জীবনে ফিরতে পারবে না কেনো?
মিথিলা- এক নায়া আপনার ছেলের জীবন থেকে বিদায় হয়েছে। আরেক নায়া যে ওর জীবনে আসবে না এমনটা তো নয়
মিসেস আয়মন- দেখো মা নায়া ওর প্রথম ভালোবাসা ছিলো, আর সেটা যে ওর জন্য ভুল ছিলো তা প্রমান করার জন্য ই তোমার সাথে ওর বিয়ে দিই আমরা। তবুও ওকে শেষ রক্ষা করতে পারিনি ও তোমাকে রেখে ঐ মেয়ের কাছেই গেছে,যেমন গিয়েছে তেমন শিক্ষা ও পেয়েছে। আর জনমে ও এমন ভুল করবে না। এবার তো তুই ফিরে আয়
মিথিলা- তা সম্ভব নয়
মিসেস আয়মন- কেনো সম্ভব নয়।আমার ইভু তোকে খুব ভালোবাসে
মিথিলা শান্ত কন্ঠে বল্লো
– নায়ার কাছে প্রতারিত হয়ে আমাকে ভালোবেসেছে,এর আগে নয়
মিসেস আয়মন এবার রেগে যায় রাগে আগুন চক্ষু করে বলে
– মেয়েদের এতো তেজ থাকতে নেই ছেলেদের একটু আধটু অমন দোষ থাকেই তাই বলে মেয়েদের এত তেজ ভালো নয় আমার ছেলে তো তোমার কাছে ক্ষমা ছেয়েছে নানান ভাবে আর কি করতে হবে আমার ছেলে কে
মিথিলা উত্তেজিত না হয়ে শান্ত ভাবে মিসেস আয়মন কে বল্লো
– কেনো বলতে পারেন ছেলেরা দোষ করলে সেটা কোন অপরাধ নয়, মেয়েরা করলে সেটা পাহাড় সমান অপরাধ হয়ে যায়। আজ যদি এমন টা আমি করতাম আপনার ছেলে কি পারতো আমাকে মেনে নিতে
মিসেস আয়মন- শুনো মেয়ে সোনা বাকা হলে ও সোনা ই থাকে।ছেলেরা যতো ই অপরাধ করুক তবু ও সে ছেলে
মিথিলা নির্বাক হয়ে তাকিয়ে আছে মিসেস আয়মনের দিকে অন্তত উনার কাছে থেকে মিথিলা এমন কথা আশা করেনি
এই মুহুর্তে মায়ের একটা কথা খুব মনে পড়ছে মা বলতো কোদালের টান সব সময় বুকের দিকেই থাকে
আড়ালে দাঁড়িয়ে নির্ঝরী সব শুনছিলো মিথিলা কে চুপ হয়ে যেতে দেখে নির্ঝরিণী আড়াল থেকে বেরিয়ে বল্লো
– মাফ করবেন আমার মনে হয় বড়দের কথার মাঝে কথা বলা ঠিক হচ্ছে না তবু ও না বলে থাকতে পারছি না আন্টি
–সোনা বাকা হলে সেটা সোনা থাকলে ও আগের যে দাম টা আছে না সেটা আর থাকে না বাকা সোনা বাজারে বিক্রি করতে গেলে মূল দামের থেকে ফিফটি পার্সেন্ট ছাড় দিয়ে বিক্রি করতে হয় এ ক্ষেত্রে আপনার যুক্তি টা মেলেনি আপনার ছেলে আমার আপুর কাছে ক্ষমা চাইলে ও তার ভুল টা ক্ষমা করার অযোগ্য
মিসেস আয়মনে মেজাজ আর ও গরম হয়ে যায় উনি কিছু বলতে গেলে মিথিলা উনাকে থামিয়ে দিয়ে বল্লো
– দয়া করে আমার বোনের সাথে তর্কে যাবেন না ও ছোট মানুষ না বুঝে কথা বলেছে, আর আপনি আমার ভাই বোন দের সাথে ভালো থাকতে দিন প্লিজ, আপনি আমার জন্য পায়েশ রেধে এনেছেন আমি খুশি হয়েছে
আজ আপনি আমার বাসায় থাকুন আর ও খুশি হবো
মিসেস আয়মন রাগে গজ গজ করতে করতে বেরিয়ে গেলো
নির্ঝরিণী – মা ছেলের কতো সাহস দেখেছিস আপু
মিথিলা- তোর কিন্তু উনার সাথে এ ভাবে কথা বলা উচিত হয়নি
নির্ঝরিণী – বাদ দাও তো এই রকম দু চারটা বলতে হয় বুঝলে
মিথিলা- আচ্ছা বাদ দে কলেজে যাবি না? আর এক্সাম কখন তোর
মিথিলা- আচ্ছা আপু তোর সাথে একটু কথা
ছিলো
মিথিলা- বল
নির্ঝরিণী – আমাদের ফাইনাল এক্সাম সামনের মাস থেকে শুরু হবে।আর আমি চাই ‘লো’ নিয়ে পড়া শুনা করতে
মিথিলা- ওমা তুই না শিল্পি হতে চাস গান তোর পছন্দ
নির্ঝরিণী – হুম গান আমার শখ তাই তো গান ছাড়ছিনা গান গাইবো এখন ও গাই কিন্তু
পাশা পাশি আইন নিয়ে পড়া শুনা করবো। গানের পাশা পাশি একজন ভালো আইনজীবী হবো এটা আমার আরেক টা শখ
মিথিলা খুশি হয়ে বল্লো
– ঠিক আছে তুই যা ভালো মনে করিস, আমি তোর পাশে আছি
নির্ঝরিণী – আমার আরেকটা কথা
মিথিলা- বল
নির্ঝরিণী – যেদিন আমি সাকসেসফুল গাইকা হতে পারবো তার পরে আমি বিয়ে করে নেবো আর আমার লাইফ পার্টনার আমি পছন্দ করবো তুমি কিন্তু আমায় বকতে পারবে না
মিথিলা অবাক হলো তার পর নিজেকে সামলে নিয়ে বল্লো
– আছে নাকি এখন এমন কেউ
নির্ঝরিণী – থাকলে ও বলবো না তবে এখন নেই নিশ্চিন্ত থাকো। তোমাকে না জানিয়ে বিয়ে করিবো না
মিথিলা আর কিছু বল্লো না বোনের কথা না মানার কোন যুক্তি নেই আমি যে ধোকা খেয়েছি আমার বোন সেই ধোকা না খেলেই হলো
সাম্মি কোন খবর না দিয়ে ই ইহানের অফিসে চলে এসেছে
ইহান- কিরে অফিসে আসবি আগে বলিসনি কেনো
সাম্মি- আগে বললে কি হতো?
ইহান- দুপুরের লাঞ্চ দুজন এক সাথে করতাম,এখন তো আমি লাঞ্চ করে ফেলেছি
সাম্মি- সত্যি তুই আমার সাথে বসে লাঞ্চ করতি
ইহান- আরেহ লাঞ্চ ই তো করবো এতে অবিশ্বাসের কি আছে
সাম্মি- ইসস আমি যদি আর ও আগে আসতাম
ইহান- হুম সেটা ই
সাম্মি- আচ্ছা চল তোকে নিয়ে একটা জায়গাতে যাবো
ইহান- কোথায়? আমি এখন যেতে পারবো না দেখছিস না কতো কাজ পড়ে আছে
সাম্মি- উফফ সারা জীবন ই কাজ করবি উঠতো
সাম্মি ইহান কে হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে এলো
তার পর অফিসের পাশে একটা কফিশপের দিকে হাটা ধরলো
ইহান- আমরা কফি শপে যাচ্ছি কেনো?
সাম্মি- মানুষ কফি শপে কেনো যায়
ইহান দাঁড়িয়ে গেলো
– তোর কফি খেতে ইচ্ছে হয়েছে বললেই পারতি আমি অফিসেই ওয়ার্ডার করে দিতাম আমার কাজ ও হতো কফি খাওয়া ও হতো
সাম্মি- উফফ বেশি কথা বলিস না তো চলতো
ইহান কফি শপে গিয়ে একটা ধাক্কা খেলো আগে থেকে সেখানে মিথিলা ছিলো
সাম্মি ইহান কে মিথিলার পাশের চেয়ার বসতে বলে নিজে অন্য চেয়ার গিয়ে বসলো
ইহান- কিরে মিথি তুই এখানে কোম সমস্যা
মিথিলা- সাম্মি ডেকেছে আমায়
সাম্মি- উফফ ইহান মিথিলা কি শুধু প্রব্লেম
হলেই তোর সাথে দেখা করবে এমনি করবে না?.
আচ্ছা শুন তোরা অভ্যাস করে নে কারনে অকারনে দেখা করার
মিথিলা- কেনো
ইহানের ও এক ই প্রশ্ন
সাম্মি কোন ভনিতা না করে ইহানের হাতে মিথিলার হাত দিয়ে বল্লো
– এই দুজন কে এক করে দিলাম এই হাত আর ছাড়িস না।
ইহান মিথিলা লাইফে অনেক কষ্ট পেয়েছে ওর দুঃখ গুলো মুছে দেয়ার জন্য আমি তোর ছেয়ে পার্ফেক্ট কাউকে খুঁজে পাইনি
ইহান আর মিথিলা দুজনে দুজনের মুখের দিকে ছেয়ে আছে পুরো ব্যাপার টা তাদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে
সাম্মি বলেই যাচ্ছে
ইহান- তুই ভাবিস না আমি উকিল আংকেলের সাথে অনেক আগেই কথা বলেছি তোকে বলা হয়নি। উনি আগামি রবিবারে কাগজ পত্র পাঠিয়ে দিবে
ইহান- তার পর
সাম্মি – তার পর তোদের বিয়ে অব্দি থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয় আমি অস্ট্রিয়ায় ফিরে যাবো
কথা গুলো এক নিশ্বাসে বলেই সাম্মি বেরিয়ে যায়
ইহান আর মিথিলা অনেক্ষন চুপ করে বসে থেকে পরে ইহান কফিশপ থেকে বেরিয়ে যায়
আসলে এই মুহুর্তে কি করবে কিছু ই ভাবতে পারছে না ইহান
মিথিলার ও সেম অবস্থা তাই মিথিলা ও বাসায় চলে আসে একটা ই ভাবনা সাম্মি কেনো এসব চায়? ও কি জানেনা সম্পর্ক টা ভেঙে গেছে ঝোড়া লাগাতে গেলে দাগ থেকেই যাবে
ইভান এখন অনেক টা সুস্থ হয়ে গেছে মোটা মুটি ভাবে হাটতে পারছে যদি ও দৌড়াতে পারছে না
ডক্টর বল্লো সব ঠিক হয়ে যাবে একটু সময় নিলে
মিসেস আয়মন সেদিনের পর থেকে আর একবার মিথিলার কথা ইভান কে বলেনি
কিন্তু ইভান এক মুহুর্তের জন্য ও মনের আড়াল করতে পারেনি মিথিলা কে তাই আজ আর অপেক্ষা না করে নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়
আজ ইভানের ভাবনা অন্য রকম ওর দলে কেউ নেই আগে ওর দল টা ভারি করতে হবে আয়ান আর নির্ঝরিণী কে কনভেন্স করতে হবে
ইভান সোজা আয়ানদের কলেজে চলে গেছে কলেজ গেটে গিয়ে যা দেখলো তা দেখে সত্যি সারপ্রাইজ হয়েছে ইভান
নির্ঝরিণী একটা ছেলের হাত ঝড়িয়ে ধরে গাড়িতে উঠছে
ইভান তাড়া তাড়ি গাড়িটার সামনে গিয়ে নিজের গাড়ি থামালো
ততক্ষনে বিরক্ত হয়ে আয়াপ গাড়ি থেকে নেমে বল্লো
– কি প্রব্লেম আপনার আমার গাড়ির সামনে দাড়ালেন কেনো
ইভান মুছকি হেসে বল্লো
– কবে থেকে চলছে এই সব
আয়াপ- মানে
ইভান- মানে কিছু না গাড়ির মেয়েটি কে নামতে বলো
আয়াপ এবার ভড়কে যায় কোথাও উনি নির্ঝরিণীর কোন রিলেটিভ নয়তো তা হলে আর কোন রক্ষা নেই সোজা নির্ঝরিণীর বোনের কাছে কথা টা চলে যাবে
ইভান আয়াপের অবস্থা বুঝতে পেরে নিজেই গাড়ির জানালায় টোকা দিয়ে বলে এই যে ডার্লিং বেরিয়ে আসুন
নির্ঝরিণী ভয়ে ভয়ে নামলো ভেবেছিলো গাড়ি থেকে না নামলে ইভান ঝোর করবে না কিন্তু এখন দেখছি না নেমে কোন উপায় নেই
নির্ঝরিণী আয়াপের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো
আয়াপ ফিস ফিস করে নির্ঝরিণী কে বল্লো
– উনি কে নির্ঝু এভাবে কথা বলছে কেনো
নির্ঝরিণী – ইনি ইভান তোমাকে বলে ছিলাম না উনার কথা
আয়াপ- কিন্তু উনি যদি তোমার আপুর কাছে সব বলে দেয়
ইভান হো হো করে হেসে উঠে বল্লো
– তোমরা ফিসফাস করে কি বলছো হুম আর ভয়ে একটু খানি হয়ে আছো কেনো
নির্ঝরিণী ভিতু কন্ঠে বল্লো
– প্লিজ আপনি আপু কে কিছু বলবেন না
ইভান আবার ও হেসে উঠলো
– ওহ চুরি করে প্রেম করা হচ্ছে? মিথিলা জানে না? কিন্তু এক ই কলেজে পড়ে ব্যাপার টা আয়ান জানে না তা মানতে পারছি না
নির্ঝরিণী ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে
ইভান এবার আর ও ঝোরে হেসে বল্লো
– ভয় নেই মিথিলা কে কিচ্ছু বলবো না আমি। শত হলে আমার ই তো শ্যালিকা
তার পর আয়াপের কাদে হাত দিয়ে বল্লো কি ভায়েরা ভাই
-ভালোবাসো তো আমার শ্যালিকা কে
আয়াপ- ইয়ে মানে
ইভান – ভয় পাচ্ছো কেনো আমি তোমার ভবিষ্যৎ ভায়েরা ভাই বুঝেছো আমরা তো সব সময় এক থাকবো তাই না
দেখতে এসেছি শালা আর শ্যালিকা কে দেখা হয়ে গেছে ভায়েরার সাথে ওয়াও
আচ্ছা তোমরা কোথায় যাচ্ছিলে যাও আমি আয়ানের সাথে দেখা করে যাবো
এতোক্ষনে নির্ঝরিণীর ভয় কেটে গেলো কিন্তু কি বলবে বুঝতে পারছে না আজ আয়াপের সাথে ধরা না পড়লে কয়টা কটু কথা শুনিয়ে দিতো ইভান কে কিন্তু এখন সেই অবস্থা নেই।
আয়াপ- যেহেতু দুলাভাই সব জেনেই গেছে সেহেতু দুলাভাই আজ থেকে আমাদের দলে আর আমাদের হেল্প করবে
ইভান – তা তো অবশ্য ই
কিছুক্ষন পর আয়ান এলো আয়ান প্রথমে নির্ঝরিণী আর আয়াপে ব্যাপার টা নিয়ে ভয় পেলে ও পরে ভয় টা কেটে যায় চার জনে মিলে একটা রেস্টুরেন্ট এ যায় যেহেতু এখন ও কেউ লাঞ্চ করেনি তাই ইভান ভাবলো আজ সবাই মিলে বাইরে লাঞ্চ করবে খাবারের ওয়ার্ডার দেয়া শেষ খাবার আসতে দেরি
ইভান – তোমরা কি আমায় দুলাভাই হিসেবে মেনে নিতে পেরেছো?
আয়ান নির্ঝরিণী আয়াপ সবাই ইভানের কথা শুনে তার দিকে ছেয়ে আছে
আয়ান- মেনে না নিতে পারার কোন কারন আছে বলে কি আপনার মনে হয়
ইভান- এই দেখা শালা ভাই পিন মেরে কথা বলছো কেনো আমি সত্যি তোমাদের ভাই হতে চাই, ভুল মানুষ মাত্র ই হয় আমি ও ভুল করে ফেলেছি তোমাদের আপু না হয় আমায় ক্ষমা করতে পারছে না তাই বলে তোমরা ও আমায় ক্ষমা করবে না
আয়ান আর নির্ঝরিণী চুপ
আয়াপ বল্লো
– ওরা অবশ্যই আপনাকে ক্ষমা করবে আমি থাকতে আমার ভায়েরা ভাইয়ের উপরে কাউকে অভিমান করে থাকতেই দিবো না এই বলে নিজেই হেসে উঠলো
কিন্তু আয়ান নির্ঝরিণী কিছু বল্লো না
নির্ঝরিণী – আপনার মনে আছে দুলা ভাই আপনি আমায় একদিন কবুতরের একটা গল্প শুনিয়েছেন, আপনি ঠিক মেয়ে কবুতর টার মতো ই কিছুদিন অন্যের নীড়ে থেকে এখন আবার নিজের নীড়ে ফিরে এসেছেন,কিন্তু আবার যে অন্যের নীড়ে যাবেন না তা তো নয়
ইভান- তোমাদের সাথে কাটানো একটা মুহুর্ত আমি ভুলিনি। ঠিক বলেছো তুমি মেয়ে কবুতর টা ফিরে এসে আবার চলে যাওয়ার কারন ছিলো তার বর আইমিন ছেলে কবুতর টা ততদিনে অন্য আরেকটার সাথে ঝোড়া মিলে গেছে তাই সে ঠায় না পেয়ে গেছে
কিন্তু আমার ব্যাপার টা ভিন্ন তোমার আপু আমায় ক্ষমা না করলে ও আমি তোমার আপুর অপেক্ষায় সারা জীবন কাটিয়ে দিবো
আয়ান- আমি জানি না আপু আপনাকে ক্ষমা করবে কি না কিন্তু আমাদের আপনার উপর কোন রাগ নেই
ইভান কিছুটা আশ্বস্ত হলো তার পর সবাই মিলে খেতে খেতে গল্প ঝুড়ে দিলো
আজ শনিবার ইহানের কেনো জানি মনে হচ্ছে সাম্মির থেকে দূরে যাওয়া মানে বাবা মা কে কষ্ট দেয়া আমি যদি আপুর মতো করি তা হলে বাবা মা খুব কষ্ট পাবে আর এই কষ্ট টা আমি তাদের দিতে চাই না মিথিলার সাথে কথা বলতে হবে
ইহান মোবাইল হাতে নিলো মিথিলা কে কল দেয়ার জন্য তার আগেই মিথিলার কল এসেছে
ইহান- মিথি আমি তোকে কল করতে যাচ্ছিলাম
মিথিলা- কাল সকালে দেখা করতে পারবি
ইহান- হুম আমি তোর সাথে দেখা করতে চাই অনেক কথা বলার আছে কোথায় আসতে হবে বল
মিথিলা- কোথায় ও আসতে হবে না আমি তোর বাসায় আসবো সকালে তুই বাসায় থাকিস
মিথিলা কল অফ করে দিলো অনেক ভেবে মিথিলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে খুব হালকা লাগছে মন টা
মিথিলার মোবাইলে আবার কল আসলো এবার ইভান কল করেছে মিথিলা ইচ্ছে করেই কল রিসিভ করছে না
নির্ঝরিণী – আপু আসবো
মিথিলা- আয় কিছু বলবি
নির্ঝরিণী – না এমনি কেউ কল দিচ্ছে তোকে রিসিভ করছিস না কেনো
মিথিলা- রিসিভ করতে ইচ্ছে করছে না
নির্ঝরিণী – দুলা ভাই কল করেছে তাই তো
মিথিলা- হুম
নির্ঝরিণী – আপু আমি বলি কি দুলা ভাইকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখনা। উনি তো তোর কাছে ক্ষমা ছেয়েছে তা ছাড়া কেউ যদি ভালো হতে চায় তাকে ভালো হওয়ার একটা সুযোগ দেয়া উচিত
মিথিলা ভ্রু কুঁচকে নির্ঝরিণীর দিকে তাকায়
নির্ঝরিণী – না মানে আমার মনে হলো আর কি। তোমার যা ভালো মনে হয়
কথা শেষ করে নির্ঝরিণী উঠে চলে এলো নিজের রুমে
– উফফ এই দুলা ভাইয়ের হয়ে সাফাই গাইতে গিয়ে কখন বোনের হাতে থাপ্পড় খাই তার ঠিক নেই
নির্ঝরিণী হঠ্যাৎ পালটি খেলো কেনো এতো বছরে এই প্রথম নির্ঝর ইভানের হয়ে কথা বলেছে আমার সাথে। কিন্তু কেনো? তা হলে কি আমি ভুল করছি এটা নির্ঝরিণীর মনে হয়?
ধেৎ এগুলা নিয়ে পরে ভাবা যাবে
রবিবার দিন খুব সকালে মিথিলা ইহানের বাসায় এলো
ইহান মিথিলার জন্য অপেক্ষা করে ছিলো
মিথিলা বাসায় ডুকে বল্লো
– বাহ সাম্মির পছন্দের তারিপ না করলেই নয় খুব সুন্দর করে বাসা টা সাজিয়েছে, কিন্তু সাম্মি কোথায়
ইহান- ওতো সেদিন কফিশপ থেকে ফিরেই এই বাসা থেকে চলে গেছে
মিথিলা আর কিছু না বলেই একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লো
ইহান- আমি তোকে কিছু বলতে চাই মিথি
মিথিলা- হুম আমি ও
ইহান- ঠিক আছে আগে তুই বল
মিথিলা ভাবলেশহীন কন্ঠে বল্লো
-বিয়ে কোন ছেলেখেলা নয় ইহান জীবনের এই খেলাঘরে আমরা পুতুল খেলতে খেলতে বিয়ের মতো একটা পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে পুতুল খেলা শুরু করেছি এই খেলা আমাদের ই বন্ধ করতে হবে
আমি অনেক ভেবেছি সাম্মির কথা আমার মনে হয়েছে আবেগের বসে সাম্মি ভুল করছে
ইহান সাম্মি তোর বিয়ে করা বউ ওর উপর তোর অধিকার আছে তুই চাইলেই সাম্মি তোর থেকে আলাদা হবে না আমি সাম্মি কে দেখে ই বুঝতে পেরেছি সাম্মি অসম্ভব ভালোবাসে তোকে
তাই বলছি সাম্মি যা চায় তা আমি মানতে পারবো না
ইহান তোর সাথে পথ চলতে শুরু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়
ইহান- আমি ও এটা ই ভাবছিলাম মিথি যাক দুজনের ভাবনা মিলে গেছে আর তো কোন প্রব্লেম নেই
মিথিলা- আমার একটা রিকুয়েস্ট রাখতে হবে তোকে, বলতে পারিস তোর কাছে এটা ই আমার শেষ রিকুয়েস্ট
ইহান মিথিলার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে মিথিলার চোখের কোনে পানি চিক চিক করছে
– বল তোর যে কোন রিকুয়েস্ট আমি রাখতে প্রস্তুত
মিথিলা ভেজা গলায় বল্লো
– তুই সাম্মি কে নিয়ে দেশের বাইরে কোথাও চলে যা যেখানে মিথি নামের কেউ থাকে না যেখানে অরনি নামের কোন বন্ধু কে হারানোর কষ্ট নেই
দোয়া করি তোদের তোরা সুখি হও
মিথিলা ইহান কে আর একটা কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে যায় চোখ যে বড্ড অবুঝ ভুল মানুষের জন্য শ্রাবনেত মতো ঝরতে চায়
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
প্রিয় পাঠক আপনারা যদি আমাদের (গল্প পোকা ডট কম ) ওয়েব সাইটের অ্যাপ্লিকেশনটি এখনো ডাউনলোড না করে থাকেন তাহলে নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে এখনি গল্প পোকা মোবাইল অ্যাপসটি ডাউনলোড করুন => ??????
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.golpopoka.android