ক্রাশের সাথে বিয়ে পার্ট-০৩

0
3918

ক্রাশের সাথে বিয়ে পার্ট-০৩
#jannatul_ferdous

নিশাত রাগিনীকে সাজিয়ে বাসর ঘরে বসিয়ে দিয়ে আসলো।আজ রোদ-রাগিনীর বাসর রাত। সেই কখন থেকে রাগিনীকে শাড়ি পড়িয়ে বসিয়ে রাখছে কিন্তু রোদের কোনো পাত্তাই নেই।

আরো ১ঘন্টা পর রোদ আসলো।রাগিনীকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।শাড়ি পড়ে ভালো লাগছিলো না তাই রাগিনী রোদের শার্ট পড়ে বসে আছে।

রোদ-বাহ বাসর রাতে নতুন বউ বরের শার্ট পড়ে বসে আছে।

রাগিনী-তো সমস্যা কী?

রোদ-এই মেয়ে তুমি কী পাবনা থেকে এসেছো?

রাগিনী-না আমি তো আমার বাড়ি থেকে এসেছি।।

রোদ-ভাবতেছি তোমাকে পাবনা নিয়ে যাবো।

রাগিনী-আমাদের হানিমুন পাবনা হবে?না এটা হবে না।পাবনা না প্লিজ।

রোদ-আল্লাহ বলি এক,বুজে আরেক।উফফফ অসহ্যকর।

রোদ বারান্দায় চলে গেলো।রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে সে।আবারও রাগিনী আসলো রোদের কাছে।

রোদ-তুমি…..

রাগিনী-অনেক রাত তো হলো ঘুমাবেন না।আমি শাড়ি পড়ে ভালো লাগছিলো না আর আমার কোনো ড্রেস নেই দেখে এইগুলো পড়ছি।

রোদ-তুমি যাও ঘুমাও।

রাগিনী-আমাকে ক্ষমা করে দেন।

রোদ-আমি কিছু মনে করিনি যাও ঘুমাও।

রাগিনী-না আমার একা একা রুমে ভয় করে।

রোদ-আমি আছি তো এখানে।

রাগিনী-না আপনাকে যেতে হবে আমার সাথে।

রোদ-ঠিক আছে চলো।

রুমে গিয়েই রোদ বলে উঠলো–
আমরা কী এক বিছানায় ঘুমাবো নাকি?

রাগিনী-হুম ঘুমাবো।আমরা তো বর-বউ।

রোদ-না এই দেখো মাঝখানে কোলবালিশ থাকবে।তুমি ওইপাশে আর আমি এইপাশে।

রাগিনী-ঠিক আছে।

রোদ-কিছু খেয়েছো?

রাগিনী-না খাইনি।

রোদ-ক্ষিধা লাগে নাই।

রাগিনী-লাগছে।

রোদ-আচ্ছা খাবার আনছি।কিন্তু এখন খাবার সব ফ্রিজে।

রাগিনী-আমি চকলেট খাবো।

রোদ-এত রাতে চকলেট?

রাগিনী-হুম।

রোদ-নিশাতের চকলেট তো আছে মনে হয়।তুমি ওয়েট করো আমি আনছি।

রাগিনী-হুম।

রোদ চকলেট এনে দিতেই রাগিনী খেয়ে শুয়ে পরলো।রোদের ঘুম আসছিলো না দেখে ফেসবুকে লগ ইন করতেই দেখলো তার বিয়ের কথা সবাই জেনে গেছে।
ইনবক্সে মেসেজে ভরপুর।
একটাই কথা—ক্রাশ তুমি বিয়ে করেছো তো আমার কী হবে।

তাড়াতাড়ি অফলাইন হয়ে রাগিনীর দিকে তাকালো।মেয়েটা ঘুমোচ্ছে।ঘুমালে অনেক সুন্দর লাগে মেয়েটাকে।হঠাৎ করেই চুলগুলো মুখের উপর এসে পরতেই রোদ হাত দিয়ে সেগুলো সরিয়ে দিলো।তারপর রাগিনীর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পরলো রোদ।

সকালে—-
রাগিনী রোদকে জড়িয়ে ধরে আছে।ঘুম ভাঙ্গতেই রোদ দেখলো রোদের বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে রাগিনী।রোদ আস্তে করে সরাতে যেতেই রাগিনীর ঘুম ভেঙ্গে গেলো।

রোদ-গুড মর্নিং।

রাগিনী-সুপ্রভাত।

রাগিনী নিজেকে রোদের বুকে দেখে লজ্জায় তাড়াতাড়ি উঠে গেলো রোদের বুক থেকে।ফ্রেশ হয়ে নিছে যাবে এমন সময়——-

রোদ-ওয়ারড্রপে শাড়ি আছে,যাও পড়ো।

রাগিনী-আগে বলবা তো।

রোদ-আম্মু এনে রাখছিলো নতুন বউ এর জন্য রাখছিলো।এখন যাও পড়ে নাও।

কিছুক্ষন পর……

রাগিনী-শুনছো।

রোদ-আবার কী?

রাগিনী-আমি শাড়ি পড়তে পারি না।

রোদ-তো আমি কী করবো?

রাগিনী-পড়িয়ে দাও।

রোদ-উফফ এরকম মেয়ে কেন আমার কপালে জুটলো।

রাগিনী-একটা পড়িয়ে দিলে কী হয়।

রোদ-আমি…..

রাগিনী-তাহলল আমি এই ড্রেসে নিছে চলে যাবো।

রোদ-না দাও পড়িয়ে দিচ্ছি।

রোদ রাগিনীকে শাড়ি পড়িয়ে দিলো।রাগিনী নিছে চলে গেলো।কিছুক্ষনের মধ্যে রোদও নিছে নামলো।

রোদের আম্মু-আমার বউ মা টা তো খুব কিউট।

রাগিনী-শাশুড়ি আন্টি আমি রান্না করবো।

রোদ আর রোদের আব্বু একসাথে না বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো।

রোদের আম্মু-শাশুড়ি আন্টি মানে?

রাগিনী-আপনি তো আমার শাশুড়ি আর আমার আম্মু আছে তো।তাই আপনি শাশুড়ি আন্টি।

রোদের আম্মু-পাকা মেয়ে আমাকে আম্মু বলে ডাকবে।আর তোমরা চিৎকার দিচ্ছো কেনো?ও রান্না করুক সমস্যা কী?

রোদ-একবার রান্না খেলে বুজবে ঠ্যালা।

রোদের আব্বু-আরে এত তাড়াতাড়ি কেনো?

রাগিনী-আমি করবো মানে করবো।শাশুড়ি আম্মু…..

রোদের আম্মু-হুম করবা তো।চিৎকার দিয়ো না।চলো আমার সাথে।

রাগিনী চলে গেলো।রোদ রোদের আব্বুর দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে থেকে বললো—-
বিয়ে করাবে আমাকে,করাইছো।মেয়ে দেখছো নিজে।মেয়ে অনেক ভালো তাহলে ওই মেয়ে রে কেউ কইছে পালাইতো।এখন এটা কী জুটলো আমার কপালে।

রোদের আব্বু কিছু বলছে না।কিছুক্ষনের মধ্যেই নিশাত নিছে আসলো।

রোদ-বোন টাকা নে,বাইরে খেয়ে নিস।

রাগিনী-কেনো ও বাড়িতেই খাবে।

রোদ-এসে গেছে।

নিশাত-আমার দেরি হয়ে যাবে তো ভাবি।

রাগিনী-কিচ্ছু হবে না।এত পড়ালেখা করে কী হবে।আগে খাবার খাও।

নিশাত-ভাবি মুনতাহা ওয়েট করবে তো।

রাগিনী-মুনতাহাকে ফোন দিয়ে নিয়ে আসো।

নিশাত-না ভাবি দরকার নেই।আমি খাচ্ছি।

রোদ ইশারায় নিশাতকে খেতে নিশেধ করলো,নিশাতও খাবার খাচ্ছিলো না।

রাগিনী-ক্রাশ তুমি বসে আছো কেনো,খাও।

রোদ-সবাইকে ছেড়ে এবার আমারে ধরলো।

রাগিনী-কিছু বললে ক্রাশ বর?

রোদ-না আমি কী বলবো।খাচ্ছি তো।

রাগিনী-হুমম।

খাবার মুখে দিতেই………

চলবে………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে