ক্রাশের সাথে বিয়ে পর্ব-০১

0
4923

ক্রাশের সাথে বিয়ে পর্ব-০১
jannatul_ferdous

 

বিয়ে করবো না দেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসলাম।গায়ে বেনারসি শাড়ি, চেঞ্জ করার সময় টুকুও পাইনি।আমি দৌড়াচ্ছি পালাতে,তবে পিছনে কারা জানি দৌড়াচ্ছে।
হঠাৎ করেই কারা যেনো এসে জোর করে নিয়ে গেলো আমাকে।ভাবছিলাম হয়তো আব্বুর কাছে ধরা পড়ে গেছি।এত দৌড়িয়েও লাভ হলো না।মুখে অনেক বড় গোমটা থাকাতে কাউকে দেখলামও না।এদিকে পেটে ইন্দুর দৌড়াদৌড়ি করতাছে।মনে হয় যেনো প্রতিযোগীতা হচ্ছে।

আমি রাগিনী।বাবা মায়ের দুইমাত্র ভাই-বোন আমরা।তার মাঝে বড় মেয়ে,ছোট ভাই রনি।বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছিলো তাই পালাইছি।এখন আবার সেইম প্রভলেম,সবাই আমাকে পাত্রী ভেবে কার সাথে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।

;

বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হলো।সবাই মিলে কবুল বলতে বলছে কিন্তু বলছিলাম না।

কাজী-বলো মা কবুল।

রাগিনী-আরে বেডা আগে খাবার দিয়ে মানুষ বাঁচা তার পর তো কবুল।

কাজি-পাত্রী এগুলা কি কইতাছে।

তনয়া(আসল পাত্রী)মা-এই তুমি কে?আমার মেয়ের কন্ঠ তো এরকম না।

রাগিনী-যারে তুলে আনছেন।রাগিনী আমার নাম।আর আমি আপনার মেয়ে না।

তনয়ার মা গোমটা সরিয়ে মাথা ঘুরেই পড়ে গেলো।যাক বাবা আমি কী ভূতের মত দেখতে নাকি যে আমাকে দেখেই অজ্ঞান হয়ে গেলো।

এতক্ষনে সবাই জেনে গেলো পাত্রী বদলে গেছে।পাত্রপক্ষ রেগে আগুন হয়ে গেছে।তার মাঝে আমাকেও যেতে দিচ্ছে না।কেমন ডা লাগে।

তনয়ার বাবা-মা তুমি কে কই থেকে আসছো।আমি তো আমার মেয়েকে তুলে আনতে লোক পাঠাইছি,তুমি আসলে কীভাবে?

রাগিনী-শুনেন আমি বিয়ে করবো না দেখে বাড়ি থেকে পালাইছি,আপনাদের এই গুন্ডা লোকজন গুলা আমাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আসছে।আমি তো ভাবছি আমার আব্বু লোক পাঠাইছে।আমি জানি না কিছু।

পাত্র পক্ষের সবাই রুমে আসলো।ছেলেটারে দেখে তো আমি টাস্কিত।

আল্লাহ এই পোলা টা তো আমার ফেসবুক ক্রাশ।বজ্জাতের হাড্ডি পোলা আমার ফ্রেন্ড রিকু একচেপ্ট করে নাই।তোমারে তো বিয়ে করে ছাড়বোই–মনে মনে ভাবছে রাগিনী।

রোদ-বাবা মেয়ে যখন বদলে গেছে তখন আর বিয়ের কী দরকার।এখানে আসছো কেন?চলো বাড়িতে ফিরে যায়।

রাগিনী-আঙ্কেল শুনেন।

রোদের আব্বু-বলো মা।

রাগিনী-আমি কী দেখতে খারাপ?

রোদের আব্বু-না মা।

রাগিনী-দেখো আঙ্কেল ওই মেয়ে তো চলেই গেলো এখন আমি রাজি বিয়ে করতে।মান সম্মানের কথা একটু ভাবো আঙ্কেল।ছেলের বিয়ে দিতে এসে বিয়ে ভেঙ্গে গেলো কী লজ্জার ব্যাপার।

রোদের আব্বু-ঠিকেই বলছো মা।তোমাকে আমার পছন্দ হইছে,বিয়েটা করেই যায়।

তনয়ার আম্মু-তাহলে আমার মেয়ে।

রাগিনী-আপনার মেয়েরে কেউ পালাতে বলছে? চুপ থাকেন।

রোদের আব্বু-কিন্তু তোমার বাবা মা।

রাগিনী-ফোনটা দেন তো আঙ্কেল।

রোদের আব্বু-এই নাও।

রাগিনী-হ্যালো আম্মু।

রাগিনীর আম্মু-মা রে তুই কই।আমাদের মান সম্মান কিছুই রাখলি না।

রাগিনী-আম্মু আমি একটা ছেলেরে ভালোবাসি তারেই বিয়ে করতাছি।

রাগিনীর আম্মু-এটা তুই বলতে পারতি তো আমাদের।তাই তো দেখি ফেসবুকে কারে মেসেজ করোছ আর হাসতি।তখন-ই আমার বুজা দরকার ছিলো।এ আমার কী……

রাগিনী-অনেক ভালো বুজছো।এবার দোয়া করো।আব্বুরেও বইলো দোয়া করতে।এখন চিল্লানি দিয়ো না আর।

রাগিনীর আম্মু-আচ্ছা ঠিকানা দে আসতাছি।

রাগিনী ঠিকানা দিয়ে ফোন কেটে দিলো।

রাগিনী-আঙ্কেল আব্বু আম্মু আইতাছে।বলছে বিয়ে টা করে পেলতে।

রোদের আব্বু-আমিন।চল বাবা বস তুই।

রোদ-আরে চিনি না,জানি না কারে বিয়ে করবো।

রোদের আব্বু-বাবা রে অমত করিছ না মান সম্মানের ব্যাপার।

অনেক বুজিয়ে সুজিয়ে রোদকে রাজি করালো রোদের আব্বু।তারপর বিয়েটা হয়ে গেলো।বিয়ে শেষ হতেই রাগিনীর আব্বু আসলো।

রাগিনীর আব্বু-গুলি করবো।

কথাটা শুনেই তনয়ার আব্বু-আম্মু আবারও অজ্ঞান হয়ে গেলো।

 

চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে