ক্রাশেরসাথেবিয়ে পার্ট_০৮
#jannatul_ferdous
হঠাৎ করেই খবর আসলো একটা মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে।শনাক্ত করার জন্য রোদ সহ সবাইকে পুলিশ যেতে বললো।লাশ টা দেখতে গিয়ে রোদের হাত কাপছে।চোখ দিয়ে পানি ঝরছিলো।আজ রোদের জন্যই রাগিনী বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেটাও জানে না কেউ।কাপড়টা সরাতেই দেখলো মুখটা পুরো বিকৃত হয়ে গেছে।চিনার কোনো উপায় নেই।
অফিসার-সরি স্যার ওকে চিনার আর কোনো উপায় নেই।পুরো লাশটাই পচে গেছে।আর রাগিনীকে তো এখনো পাওয়া সম্ভব হয়নি।আমরা আমাদের সাধ্য মত চেষ্টা করছি।
রোদ-হুমম ওর খবর জানলে জানাবেন স্যার।
অফিসার-ঠিক আছে।
রোদ আর কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে বের হয়ে বাড়ি চলে আসলো।বাড়িতে আসতেই রিয়াকে দেখলো বের হয়ে যাচ্ছে।
রোদ-রিয়া।
রিয়া-বল।
রোদ-আমার রাগিনী কই?
রিয়া-আমি জানি না।
রোদ-আমি জানি তুই জানিস।
রিয়া-আমি যাচ্ছি।
রোদ-রিয়া আমার রাগিনীকে প্লিজ ফিরিয়ে দে।।
রিয়া-আচ্ছা তোর রাগিনীকে লাগবে?
রোদ-হুমমম।
রিয়া-চল ডিল করি।
রোদ-মানে?
রিয়া-রাগিনীর ফিরে আসতে হলো আমাকে বিয়ে করতে হবে।
রোদ-এটা সম্ভব না।
রিয়া-তাহলে রাগিনীর ফিরে আসে টা….
অফিসার-সম্ভব।চলুন আমাদের সাথে।
রিয়া-কেনো?
অফিসার-রাগিনীকে কিডন্যাপের দায়ে।
রিয়া-কোনো প্রমান আছে?
অফিসার-সেদিন কই ছিলেন যেদিন রাগিনীর কিডন্যাপ হয়ছিলো।
রিয়া-আমার ফ্রেন্ডের বাসায়।
অফিসার-আপনার বিরুদ্ধে এরেস্ট ওয়ারেন্ট আছে।চলুন, না হয় জোর করে নিতে বাধ্য হবো।
রিয়া-ঠিক আছে।
প্রায় ১বছর কেটে গেলো।রিয়া মানসিক ভাবে ভারসাম্য হীন হয়ে মানসিক হাসপাতালে সময় কাটাচ্ছে।রোদ নিয়মিত অফিস গেলেও প্রতিটা সময়ে মনে পড়ে রাগিনীর বাচ্চামি গুলো।
১বছর পর……
পরশ-আসবো স্যার?
রোদ-হুম আসো।
পরশ-স্যার,অফিসে একটা মেয়ে কী জানি কাজে আসছিলো। মেয়েটা ভাবির মতই দেখতে স্যার।
রোদ-তুমি ঠিক বলছো তো?
পরশ-জ্বি স্যার আমি সিউর।তবে নাম জিজ্ঞেস করতেই বললো ওর নাম শিমু।
রোদ-আচ্ছা পাঠিয়ে দাও।
শিমু ডুকতেই রোদ অবাক হয়ে গেলো।সেই ১বছর আগের বাচ্চামি গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলো।রোদ অবাক হয়ে তাকিয়েই আছে শিমুর দিকে।
শিমু-স্যার।কি হলো আপনার?
রোদ-হুমম।
শিমু-আমাকে ডেকেছেন?
রোদ-রাগিনী.
শিমু-সরি স্যার আমি শিমু।
রোদ-তুমি মিথ্যে বলছো কেনো।তুমিই আমার রাগিনী।
বলেই রোদ জড়িয়ে ধরলো শিমুকে।রোদকে ছাড়িয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো—
না আমি শিমু।
তারপরেই মাথা ধরে বসে পরলো শিমু।কিছুক্ষনের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে গেলো শিমু।
রোদ-রাগিনী কথা বলো।প্লিজ কিছু বলো।পরশ গাড়ি বের করো।
কোলে তুলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলো শিমুকে।ডাক্তার চেক আপ করে শিমুকে।
রোদ-ওর কী হয়েছে ডাক্তার।
ডাক্তার-ওর স্মৃতি ধ্বংস হয়ে গেছে।তাই মাথার উপর কেউ জোর দিয়ে কিছু বললে ও সেন্সলেস হয়ে যায়।আর বেশি জোর দিলে আরো খারাপ কিছুও হতে পারে।
রোদ-তাহলে আমার রাগিনীর স্মৃতি……
শিমুর আব্বু-কী হইছে আমার মেয়ের।
রোদ-ও আপনার মেয়ে?
শিমুর আব্বু-হ্যা ও আমার মেয়ে।
রোদ-মিথ্যে বলছেন কেনো ও আমার স্ত্রী রাগিনী।
শিমুর আব্বু-না ও আমার মেয়ে।
রোদ-প্লিজ সব খুলে বলুন।গত ১বছর আমি ওকে অনেক খুজেছি।
শিমুর আব্বু-হুম ও আমার মেয়ে না।ওর পরিচয় আমি নিজেও জানি না।সেদিন গাড়ির নিছে একটা মেয়ে এসে পরছিলো।আমিই ওকে হাসপাতালে আনি,তারপর থেকে ওর ট্রিটমেন্ট শুরু হয়।ডাক্তার শেষে বললো ওর স্মৃতি নেই।জ্ঞান ফিরতেই নিজের পরিচয় জানতে অস্থির হয়ে যায় মেয়েটা।তারপর থেকেই ও আমার মেয়ে শিমু।
জানো আমার কলিজার টুকরা মেয়েটার নাম ছিলো শিমু।ব্লাড ক্যান্সারে ওকে হারিয়ে পেলি,তারপরেই এই স্মৃতি হারা শিমুকে পাই আমি। তাই নিজের মেয়ের জায়গা দিয়েছি শিমুকে।
রোদ-আমার রাগিনী বেঁচে আছে এটাই আমার কাছে অনেক।
শিমুর আব্বু-একটা অনুরোধ করি?
রোদ-অনুরোধ বলছেন কেনো।আপনি আদেশ করেন।
শিমুর আব্বু-ওকে প্লিজ জোর করো না।ওকে কিছু মনে করাতে গেলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
রোদ-ঠিক আছে।আমার একটা কথা রাখবেন প্লিজ।
শিমুর আব্বু-বলো বাবা
রোদ-ওকে আমি আমার সাথে নিয়ে যেতে চাই।
শিমুর আব্বু-কী ভাবে নিবে।ও তো তোমাকে চিনবেই না।
রোদ-আমি ওকে আবার বিয়ে করতে চাই।আমার স্ত্রী রূপে আমার বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই যদি আপনি অনুমতি দেন।
শিমুর আব্বু-না বাবা তোমাকে দেখেই বুজা যাচ্ছে তুমি সব সত্যি বলছো।আমার কোনো আপত্তি নেই বাবা।তবে প্লিজ কখনো জোর করো না।
রোদ-ঠিক আছে আঙ্কেল।
ডাক্তার-ওর জ্ঞান আসছে।আপনারা ওর কাছে যেতে পারেন।
শিমুর আব্বু-চলো ওর কাছে চলো।
রোদ,শিমুর আব্বু ভিতরে আসলো। তারপর হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রোদ নিজে গিয়ে বাড়িতে ছেড়ে আসলো শিমুকে।রাগিনী শিমু রূপে বেঁচে আছে জানত পেরে পুরো বাড়িতে আনন্দের বন্যা বয়ে গেলো।
চলবে……
দয়া করে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।বুজতেই পারছেন অসুস্থ।লিখতে অনেক কষ্ট হইছে।তারপরেও লিখলাম।জানি গুছানো হয় নি।সব কিছুর জন্য ক্ষমা করবেন।????