কোন_সুতোয়_বাঁধবো_ঘর পর্ব-২৩+২৪

0
658

#কোন_সুতোয়_বাঁধবো_ঘর
#নুসাইবা_ইভানা
#-২৩

‘অফিসের প্রথমদিন কেমন আন কম্ফোর্ট ফিল করছে ইরহা৷ আরো দু’টো মেয়ে আছে অফিসে। টুকটাক কাজ করে নিজের জন্য কফি নিয়ে আসলো।
ডেক্সে বসতেই পাশের মেয়েটি বলল,স্যার অনেক রাগী। হয়তো খাবে নয়তো কাজ করবে৷ কিন্তু কাজ আর খাওয়া একসাথে করতে পারবে না৷
‘না, না এখন কিছু খাবো না।
‘তুমি তো কফি খাচ্ছো।
‘এটাতেও সমস্যা!আচ্ছা আর কোন সমস্যা ?
‘সেটা আস্তে আস্তে জেনে যাবে আজ স্যার নেই স্যারের মামা আছে৷
‘ধন্যবাদ
‘ওয়েলকাম। আমার নাম বীথী তোমার নাম কি?
‘ইরহা।
‘আচ্ছা এখন কাজ করি লাঞ্চের সময় কথা হবে।
আরো বেশ কিছুক্ষণ কাজ করে ইরহা ফোন বের করে বাসার নাম্বার ডায়াল করলো। ঠিক তখন বয়স্ক একজন ডেক্সের উপর বাড়ি দিয়ে বলে,’মিস ইরহা আপনি কি জানেননা অফিস টাইমে ফোন ব্যাবহার করা নিষেধ।
‘ইরহা মাথা তুলে তাকিয়ে বলে, আঙ্কেল আপনি?
‘তুমি! যাক ভালো হয়েছে তবে ধন্যবাদ দেবো না৷ ভুল করেছো নিজের ভুল শুধরে নিয়েছো।
‘জ্বি আঙ্কেল।
‘আঙ্কেল বলা যাবেনা। এটা অফিস আর আমি অফিসের সেকেন্ড বস। তাই স্যার বলবে।
‘জ্বি আঙ্কেল সরি স্যার৷
‘কিপ আপ দ্যা গুড ওয়ার্ক
‘ইয়েস আই উইল ট্রাই
মিস্টার সবুজ চলে গেলেন। এই বয়সেও খুব স্মার্ট চলাফেরা আর নিজের সব কাজ পার্ফেক্ট ভাবে করতে পছন্দ করেন সবুজ সাহেব। ওনার সব কিছু পার্ফেক্ট চাই।

রাতুল বসে আছে ড্রয়িং রুমে। নাদিম রাতুলের মুখোমুখি বসে আছে। দু’জনেই চুপ৷

নিরবতা ভেঙে নাদিম বলে, তোমাদের রিলেশন কতদিনের?
‘রাতুল বলে,ছয় মাস এগারোদিন পনেরো ঘন্টা।
‘তা এতো সিরিয়াস রিলেশনশিপ ব্রেকআপ হলো কেন?
‘ভাইয়া সপ্তাহ খানেক আগে, লাবুও মানে লাবিবাই আমার সাথে কোন কারণ ছাড়া ব্রেকআপ করে৷ আমি কারণ জিজ্ঞেস করলেও ওর দিক থেকে তেমন কোন রেসপন্স পাইনি। আমি ওকে স্টিল লাভ করি।
‘স্টিল আর পিতল নাকি তামা এসব আমি বুঝিনা৷ আমি শুধু চাই আমার বোন ভালো থাকুক৷ হোক সেটা তোমার সাথে নয়তো তোমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে। আজ এখানে কেন এসেছো নিশ্চয়ই লাবুকে দেখতে? তার আগে বলো হুট করে গতকাল রাতে ও এমন একটা ডিসিশন কেন নিলো? তোমাদের সম্পর্ক কতটুকু গভীর চিলো সত্যিটা বলবে এক বিন্দু ও মিথ্যে বলবে না।
‘ভাইয়া আপনি যেরকম ভাবছেন সেরকম কিছুই আমাদের মধ্যে নেই। আগামীকাল আমি লাবুর উপে জেদ করে একজনের সাথে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেই আর আমার মনে হচ্ছে এটাই কারণ।
‘তোমার সাথে ওর শেষ কথা কবে হয়েছে?
‘ব্রেকআপের পরেরদিন। তারপর আর কোন যোগাযোগ ও রাখেনি আমার সাথে।
‘এখন তুমি চা খেয়ে চলে যাও। লাবিবা সুস্থ হবে ওর সাথে কথা বলে আমি তোমাকে ডাকবো।এর আগে কোনরকম যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না।

‘ভাইয়া দূর থেকে একবার দেখবো শুধু।
‘আমি যা বলেছি সেটাই আমার শেষ কথা। আসতে পারো তুমি৷
‘রাতুলের মুখটা ছোট হয়ে গেলো। একবার না দেখে শান্তি পাচ্ছে না। উঠে দাঁড়িয়ে বলল আসি ভাইয়া।
‘এরমধ্যেই কলিং বেল বেজে উঠলো।

নাদিম যেয়ে দরজা খুলতেই জারিফকে দেখতে পায়। সালাম দিয়ে বলে,আপনি কে? আপনাকে তো চিনলাম না!
‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম আমি জারিফ আহসান। রাতুলের বড় ভাই।
‘তা এখানে কি?
‘আপনি একজন ম্যাচিউর পার্সন অবশ্যই ভদ্রতা রক্ষা করবেন।
‘আসুন বসুন।
‘আমি আপনার বোনের জন্য আমার ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গতকাল এসেছিলাম। কিন্তু আপনার বোন যা করলো। থাক সেসব বাদ দিলাম। হঠাৎ করে সকালে এমন খবর শুনে আমি কনফিউজড! আসলে আপনার বোন কি চায় সেটাই সে বুঝতে পারছে না। আমার মনে হয় আপনাদের ওর সাথে ঠান্ডা মাথায় কথা বলা উচিৎ!
‘আচ্ছা ধন্যবাদ আমি কথা বলে আপনাকে জানাবো।
এরমধ্যেই নওশাবার কান্নার আওয়াজ আসলো। নাদিম বলে,নিশাত আমার আম্মাজান কান্না করছে কেন? ওকে আমার কাছে দিয়ে যাও।

‘নিশাত নওশাবাকে দিয়ে গেলো। মামুর কোলে উঠে নওশাবা একদম চুপ হয়ে গেলো৷

‘জারিফ বলে,আপনার বোনের অতিত বর্তমান সবকিছুর দ্বায়িত্ব নিতে রাজি আমরা।
‘অতীত মানেই শেষ তাই অতীতের দায়িত্ব নেই তবে বর্তমানে দায়িত্ব নিতে চাইলে আগে আমি আমার বোনের সাথে কথা বলবো তারপর।

‘তাহলে আজ আসি।
‘বসুন নাস্তা করে যান।
‘কপালে থাকলে কত নাস্তা করতে পারবো আজ ব্যাস্ত।

জারিফ বের হয়ে গাড়িতে এসে বলে,বুঝলাম না এই মেয়ের মধ্যে তুই কি দেখলি?
‘ভাইয়া ভালোবাসা কিছু দেখে হয় না! ইট’স ম্যাজিক একটা অদ্ভুত অনূভুতি যার কোন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ নেই।যাকে ভালোবাসি তার সব কিছুই ভালোবাসি হোক তার একটু আধটু পাগলামি কিংবা ভুলচুক অথবা রাগ, অভিমান। তাকে ভালোবাসি মানে তার পুরো সত্তাটাকেই ভালোবাসি।
‘চুপ কর পুরা মাথা গেছে।এবার দেখ তোর ভালোবাসা রাজি হয় কি না।

‘নাদিম ফরিদা বেগমকে ডেকে বলল, আমার তো ছেলেকে পছন্দ হয়েছে তাহলে সমস্যা কি?
‘কি বলছিস! ইরহা কখনো রাজি হবে না বিয়েতে।
‘কেন রাজি হবে না!
‘জানিনা ছেলের কথাবার্তা আর সব শুনে আমারও পছন্দ হয়েছিল কিন্তু ইরহা বলে এ জীবনে আর বিয়ে নয়৷
‘আশ্চর্য ওকে কে বিয়ে করতে বলছে?
‘কেন ওই ছেলেটাই তো ওর ভাইয়ের জন্য ইরহার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল আবার বলেছে নওশাবাকেও মেনে নিবে।
‘আশ্চর্য ওর ভাইয়ের সাথে লাবিবার সম্পর্ক আর প্রস্তাব এটাই।
‘কিন্তু ছেলেট যে বলল ইরহার কথা।
‘হয়তো ছেলেটা জানেনা লাবিবাকে ইরহাকে তাই। আচ্ছা ছেলে যখন পছন্দ হয়েছে বিয়ে এখন ঠিক করে রাখবো ওর এইচএসসির পর হবে বাকি আনুষ্ঠানিকতা।
‘দেখ তুই যা ভালো মনে করিস। তবে ইরহার কথাটাও মাথায় রাখিস। আমার মেয়েটার সবে চব্বিশ বছর বয়স জীবনের আরো কতদিন পরে আছে। মেয়েদের চলতে গেলে স্বামী নামাক ছায়াটা লাগে। এক্ষুনি কিছু করতে হবেেনা। তবে খোঁজে রাখবি ভালো পেলে দিবো। জোড় তো নেই৷
‘মা এই কথাটা আর কখনো,মুখে আনবা না। ইরহা শুনলে কতটা কষ্ট পাবে। একবার ভেবে দেখেছো?

‘মা’তো ভুল কিছু বলেনি!আমদের কাছে আপু বোঝা না। তারমানে এটাও না তার জীবনটা এভাবেই কেটে যাবে।শুনো জড়িয়ে ধরে কাঁদার জন্য হোক বা মাঝে মাঝে ঝামেলা বা আবদার কারার জন্য হোক আমাদের একটা নিজস্ব মানুষ লাগে। এখন কিছু বলতে হবে বা এক্ষুণি করতে হবে এমন তো না, দেখতে থাকো ভালো পেলে তবেই কথা বাড়াবে। তারপর বাকি ডিসিশন আপুর।
ফরিদা বেগম বলেন,মা তুমি আমার মনের কথা বলেছো৷ হাজার বছর বেঁচে থাকো মা।

✨সেই কাক ডাকা ভোরে বাসে উঠেছে লামা,আর রবিন।যে চেহারা সব সময় প্রদর্শন করতো গর্বের সাথে আজ তা লুকিয়ে রেখেছে হিজাবের আড়ালে।
রবিন বলল,জান তুমি মুখ কেন লুকাবো! তুমিতো ভুল করোনি যারা ভুল করেছে তারা লুকাবে মুখ।
‘আসলে জান যারা ভিডিওটা দেখেছে তারা সবাই তো সত্যিটা জানেনা। তাই মুখ ঢেকে রেখেছি।
‘আমি সাথে থাকতে কিসের ভয়! ভয় নেই তোর সাথে জম।
‘লামা বলে,মানে?
‘আহা বেবি ভয় পাচ্ছো কেন?তোমার জন্য আমি সবার কাছে জম।যে তোমার দিকে আঙুল তুলবে তার জন্য জম।
‘হঠাৎ হঠাৎ তোমার কথা আমাকে ভয় পাইয়ে দেয়।
‘ভয় কে দূর করো,আর আমাদের হানিমুন কেমন কাটবে সেটা ভাবো বেব।
‘লামা বেশ কিছুক্ষণ রবিনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,
তুমি সত্যি আমাকে মেনে নিয়ে সংসারটা ঠিক ভাবে করবে এটা আমি ভাবতেও পারিনি!
‘জীবনে এমন অনেক কিছুই হয় যা আমরা কখনো ভাবনা-তো দূর চিন্তাও করি না৷
#চলবে

#কোন_সুতোয়_বাঁধবো_ঘর
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -২৪

ইরহা অফিস থেকে বের হয়ে,পাঁচ মিনিট হেঁটে বাসে উঠলো। সন্ধ্যা সাতটা বাজে। আজকের দিনটা খারাপ কাটেনি৷জীবনের সমীকরণ কখন কোন মোড়ে এসে হুট করে পাল্টে যায় কারো জানা নেই। জীবন যেনো এক প্রহেলিকা।সম্পর্কের সুঁতো কখন টানাটানি চলে আর কখনো ছিড়ে যায় বলা দায়! অদৃশ্য এক সুঁতোয় বাঁধা আমরা সবাই যে সুতোর নাম কারো কাছে মায়া,কারো কাছে ভালোবাসা তো কারো কাছে প্রেম। বাসায় পৌঁছতে পৌঁছতে রাতের প্রায় সাড়ে আটটা বেজে গেছে।বাসায় ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নওশাবাকে কোলে নিয়ে চুমু খেতেই ইরহার চোখ টলমলে হয়ে উঠলো। মেয়েটা সারাদিন মা’কে কাছে পায় না৷ আদরে ভরিয়ে দিচ্ছে নওশাবাকে।
ফরিদা বেগম বললেন, আগে খাবার খেয়ে নে৷ নানুমনিকে আমার কাছে দে।
নওশাবাকে ফরিদা বেগমের কোলে দিয়ে হাতের উল্টো পিঠে নিজের চোখের জল মুছে নিলো৷
‘মা’রে টিকে থাকতে হলে এতোটুকু লড়াই তো করতে হবেই! জীবন তো আর এতো সোজা না। নদীর মত বাঁকে বাঁকে মোর। তবে সব মোর কাটিয়ে নদী যেমন সাগরের মোহনায় পৌঁছে যায়,ঠিক মানুষ লড়াই করতে, করতে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়৷ শুধু ওই আঁকাবাঁকা মোড়গুলো ধৈর্য ধরে পার করতে হয়।
‘ইরহা খাবার খেয়ে নওশাবাকে নিয়ে লাবিবার কাছে আসলো৷ লাবিবা তখন বসেছিলো আনমনা হয়ে৷
‘কিরে লাবু কি ভাবছিস?
‘আমি কিভাবে এতো বড় ভুল করলাম আপু! আমাকে তোমরা ক্ষমা করবা তো?
‘বাদ দে আর শোন ওই রাতুলের নাম্বার দে। আমি কল করে কথা বলি।
‘কিছু বলতে হবে না আপু। যা হচ্ছে হোক সবাই সবার মত ভালো থাকুক।
‘লাবু তুই কি আমার প্রতি রেগে আছিস?
‘তুমি বোন হিসেবে আমাকে পরামর্শ দিয়েছো যেটা তোমার দ্বায়িত্ব।
‘শোন জীবনের তিক্ত অতীত আমাকে সব কিছুতে তিক্ততা দেখায়। তবে রাতুলের সাথে দেখা করবো আমি।
ফরিদা বেগম বলে, এসেছিলো আজ দুই ভাই। তোর ভাইয়ার সাথে কথা বলে গেছে।
‘লাবিবা বলে এসেছিল দু’ভাই মানে?
‘হুম রাতুল আর জারিফ।
‘জারিফ মানে ওই অসভ্য লোকটা?
‘অসভ্য কেন বলছিস ছেলে দুটো’ অনেক ভালো।সেদিন না বুঝে ছেলেটার সাথে ওসব করা ঠিক হয়নি।
‘না বুঝে মানে?
‘ফরিদা বেগম সবটা ইরহাকে বললো।
‘ইরহা বলে ইশশ বেচারা। তারই তো দোষ বলে,আপনার বেবি সহ মেনে নিতে ও সমস্যা নেই।
‘লাবিবা হেসে বলে,বেশ তো ভাইয়াকে বিয়ে করতে রাজী হয়ে যা। বেচারা বিয়ে করে নাই। তার মনের মত মানুষ ই নাকি খুঁজে পায় না৷ একটা মেয়েকে একবার হসপিটালে পছন্দ হয়েছিলো। তবে তাকে আর খুঁজে পায়নি।
‘দেখছো আম্মু তোমার বাচ্চা মেয়ের এখনি কত দরদ শ্বশুর বাড়ির জন্য। এরে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে বিদায় করে দাও।
‘লাবিবা লজ্জা পেয়ে চুপ হয়ে গেলো।
‘ওরেহহহ আমার পিচ্চি বোন লজ্জা পেতেও শিখে গেছে। দাঁড়া ভাইকে বলে বিদায় করার ব্যাবস্থা করছি।
সবাই চলে যেতেই লাবিবা নিজের মোবাইল অন করলো। অন করার সাথে সাথে মেসেজ আর মেসেজ। লাবিবা হেসে দিয়ে বলে, রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেয়া। আরো জ্বলো বাবু। তোমাকে তো আরো একটু জ্বলতেই হবে রাতুল বাবু৷

‘ইরহা নওশাবাকে ঘুম পারিয়ে মোবাইল নিয়ে বারান্দায় আসলো। জারিফের নাম্বার কল করে মনে, মনে কথা সাজাচ্ছে।

‘জারিফ অফিসের কিছু ফাইল চেক করছিলো। মোবাইলের রিংটোনের শব্দে কাজের মনোযোগ বিছিন্ন হয়। ভ্রু কুঁচকে মোবাইল নিয়ে দেখে লাবিবা দিয়ে সেভ করা নাম্বার থেকে ফোন। ফোন কেটে দিয়ে সাথে সাথে কল ব্যাক করে বলে,কি অবস্থা পিচ্চি?
‘আমি পিচ্চির বড় বোন।
‘মানে?
‘আচ্ছা আপনি জানেন লাবু কোন ক্লাসে পড়ে?
‘রাতুলের সাথেই পড়ে।
‘উহু সামনে এইচএসসি দেবে।
‘কিহহহহ এতোটুকু বাচ্চা মেয়ের আবার বাবু আছে!
‘নাহহ জনাব মাথা মোটা মাহশয়। এই নাম্বারটা কার?
‘লাবিবার।
‘কে বলেছে এটা লাবিবার নাম্বার! এটা লাবিবার বোন ইরহার নাম্বার৷
‘তারমানে বাচ্চা, ডিভোর্স সব আপনার?
‘হ্যা। সরি বলবো না কারণ ভুলটা আপনার। আপনার জন্য আপনার সাথে এসব হয়েছে।
‘আপনাকে সরি বলতে হবে না আপনার জন্য সাত খু’ন মাফ।
‘আরেকদিন দেখা করতে পারি আমরা।
‘আমার নাম্বার আপনাকে কে দিলো?
‘সব উপর থেকর ঠিক করা না হলে আপনার নাম্বার আমার কাছে কিভাবে?
‘আপনি মাথার ডাক্তার দেখান দ্রুত আপনার মাথায় সমস্যা আছে৷ লাবুর নাম্বার লাস্টে সিক্স আমার নাইন। বাকি সব সেম।
‘বাদ দেন সেসব আগে বলেন, দেখা করছেন কবে? কত কথা বলার আছে, না বলা কথাগুলো বলতে চাই৷।
‘আজাইরা আলাপ আমার সাথে করবেন না৷
‘ইশশ কি যে বলেন আপনার সাথে করবো প্রেমের আলাপ কোন আজাইরা আলাপ না।
‘আপনি তো ভারী অসভ্য।
‘হ্যা তা ঠিক বলেছেন আমার ওজন ৭০কেজি ভারী অসভ্য-ই আমি।
‘দ্রুত মাথার ডাক্তার দেখান নয়তো আমার বোনকে আপনাদের বাসায় বৌ করে পাঠাবো না।কোন পাগল ফ্যামেলিতে আমার বোন দিবো না।
‘আপনি এসে পরলেই হবে ডাক্তার লাগবে না৷ ওই যে গান আছে না৷বলতেই ইরহা কল কেটে দিলো৷
জারিফ দূর গানটাই শুনলো না। Mareez-e-Ishq hoon main kar dawaa..
Haath rakh de tu dilpe zara.

রাতুল স্টাডি রুম ক্রস করার সময় জারিফের গান শুনে বলে ভাইয়া তুমি গান গাইছো! তারমানে কি সামথিং সামথিং?
‘এতো সহজ না। তবে এ বছরের মধ্যে বিয়ে করেই ফেলবো। চল আজ তুই আর আমি একটা ঝাকানাকা গানে নাচবো।
‘হুট করে তোমার কি হলো বলো তো?
‘রঙ লেগেছে মনে তাই কুকিল ডাকে বনে।

✨ ইরহা ফোনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে, সিরিয়াসলি লোকটার মাথায় সমস্যা আছে৷ ধুর গেলাম ভালো কথা বলতে মুডটাই নষ্ট করে দিলো৷ কি বলে ভারী অসভ্য কারন তার ওজন সত্তুর কেজি। বলেই অট্টহাসি দিলো।

✨ শেফালী বেগম রুবিকে বলে, আমার মনটা যেন কেমন করছে রুবি! আমার ছেলেটার কোন বিপদ হবে না তো?
‘জানিনা আমার ও মন বলছে ভাইয়ার সামনে বড় কোন বিপদ আছে। কেন যে নিজের হাতে নিজের গোছানো জীবনটা নষ্ট করলো। ইরহা ভাবির মত একটা মেয়ে পেয়েও কি করো তাকে ছেড়ে লামার মত একটা নোংরা মেয়ের পাল্লায় পরলো!
‘কিছু মেয়ে আছে তাদের পাল্লায় পরতে হয়না, বরং তারা নিজেদের রুপ যৌবন দেখিয়ে প্রলোভিত করে ছেলেদের। ছেলে জাত এসবের প্রতি দূর্বল। সবাই তো নিজের দূর্বলতাকে প্রশ্রয় না দিয়ে নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না৷ কেউ, কেউ আটকে পরে। আমার ছেলেটাও আটকে পরেছে?
‘মা দোষ শুধু মেয়েটার না। তোমার ছেলেরও। সে কি বাচ্চা? যে প্রলোভন দেখিয়েছে বলে, প্রলোভিত হতে হবে!তোমার জামাই সহ আরো হাজার হাজার পুরুষ বাহিরে মেয়েদের সাথে কাজ করে কই তারা তো এন
এসব করে না। দূর্বলতা তাদের নেই? আসলে সব হলো চরিত্রের দোষ। চরিত্র ভালো হলে সে সব জায়গা ফিট,আর চরিত্র খারাপ হলে সে নর্দমার কিট। জানিনা আবার কোন অপরাধ সে করে।
‘একটা কল কর, বল এখানে চলে আসতে। ওরে বল একটু ভালো পথে আসতে৷
‘বললেও সে শুনবে না। তবুও বলে দেখছি।


দীর্ঘ আট ঘন্টার জার্নি শেষে কক্সবাজার এসে পৌঁছেছে রবিন আর লামা। হোটেল রুমে এসে দু’জনেই ফ্রেশ হয়ে রুমেই খাবার দিতে বললো। রবিন নিজেই লামার পছন্দের সব খাবার অর্ডার করলো।
‘লামা বলে,তোমাকে বুঝতে আমার দেরি হয়ে গেছে জান৷ তুমি যে আমাকে এতো ভালোবাসো বুঝতে পারলে!
‘বুঝতে পারলে কি হতো?
‘তাহলে কি আর জেলে পাঠাতাম! দোষটা কিন্তু তোমারও, তুমি ওই ইরহার জন্য পাগলামি করেছো৷ তাই আমি বাধ্য হয়েছিলাম৷ কি আছে ওর যা আমার নেই! বরং আমি ওর চেয়ে বেশী গ্ল্যামার।
‘রবিন রাগী কন্ঠে বলে চুপ একদম চুপ একটাও কথা বলবে না।
‘তুমি রেগে গেলে কেনো? তারমানে এখনো ওই ইরহার প্রতি তোমার আকর্ষণ রয়েছে?

রবিন লামার মুখ চেপে ধরে বলে একদম চুপ থাক তোর মুখ দিয়ে ওই নাম বের করবি না।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে