গল্পের নামঃ- #কৃষ্ণচূড়া😍😍
লেখিকাঃ- #konika_islam
part:08
শিশির ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আদ্র বারান্দায় দাড়ানো। কথা বলছে কারো সাথে। আদ্র শিশিরকে দেখে কল কেটে দেয় পরে শিশিরকে জ্বালানোর জন্য একটু এক্টিং করে ফোনে কথা বলার
—– হ্যা বেইবি হ্যা,, শিশির এখন নেই, তুমি বলতে পারো।
কথা গুলো বেশ জুড়েই বলে আদ্র। শিশির বেইবি কথাটা শুনে চমকে উঠে এর মানে সত্যি আদ্রের সাথে কারো চক্কর চলছে। সে সোজা দৌড়ে গিয়ে দাড়ায় বারান্দার দরজার পাশে। আদ্র শিশিরের ওড়না দেখে মুচকি হাসে, আর বলে
—- আরে নাহ, শিশকে না আমি তোমাকেই ভালোবাসি। ওকে তো এইভাবেই। তখনই শিশির গিয়ে আদ্রের হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নেয়। আদ্র বলে
—- এই এই কি করছ আমাকে আমার ফোন দাও। শিশির রেগে আদ্রের চুল টেনে ধরে বলে
—– বেইবি না। দাড়াও আমিও দেখি কোন বেইবি।
আদ্রের মনে হচ্ছে চুলগুলো বুঝি এই গেলো। শিশির ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে নাহ কেউ নেই,, এর মানে আদ্র তার সাথে মজা করছিল? তার অনুভূতি গুলো কি শুধুই মজার ছলে দেখে। শিশিরের কান্না আসছে আদ্রের হাতে ফোনটা দিয়ে সোজা রুমে চলে আসে।
বিছানার এক কোনায় আসে মাথায় চিরুনি করছে আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে। আদ্র এখন এটা খুজে চলছে যে শিশির কান্না কেন করছে?? আর শিশির কে কান্না করতে দেখে আদ্রের মেজাজ বিগড়ে যায় শিশিরকে বলে
—– এই সবের মানে কি? কি এমন করেছি?? শিশির চুপ। আদ্র নিজেকে কন্ট্রোল করে বলে
—-, আমাকে রাগীয় না শিশির। শিশির এইবার রেগে যায়। আদ্রের কর্লার ধরে আদ্র তখন শিশিরকে ধাক্কা দেয় শিশির তাল সামলাতে না পেরে বিছানায় পরে যায় আদ্র শিশিরকে দাড় করিয়ে রেগে গায়ে হাত তুলতে গিয়েও থেমে যায়,, তা দেখে শিশির বলে
—– কি করেছেন মানে?? বুঝেন না??! বুঝবেন কিভাবে?? প্রতিনিয়ত তো আমার অনুভূতি গুলো নিয়ে মজা করে যাচ্ছেন। আপনার কাছে কি এমন চেয়েছি?? একটু এটেনশন একটু কেয়ার। এতে আমার তো অনেক বড় পাপ হয়েগেছে। আর আজকে আজকে তো আপনি অতিরিক্ত করেছেন গায়ে হাত তুলতে এসেছেন। অনেক হয়েছে আমি আর পারবো না।
বলেই আদ্রকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আর আদ্রভাবছে রাগের বসে হয়তো বেশি বেশি করে ফেলেছে। এখন নিজের খারাপ লাগছে। শিশির নিচে নেমে সোজা আদ্রের আম্মুর কাছে গিয়ে বলে
—- আমি বাসায় যাবো৷ আদ্রের মা, চাচি,অদ্রিজা,নীল সবাই শিশিরকে দেখে আতকে উঠে একেতো কান্না করছে তারউপর রেগে আছে। আদ্রের মা বলে
—- কি হয়েছে শিশির?? আদ্র কিছু বলেছে?? শিশির বলে
—– আমি কিছু জানিনা,, আমি এখন বাসায় যাবো। আদ্র নিচে নামতে নামতে বলে
—- বাসায় থেকে এক পা বের করে দেখ, পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখব। শিশির রাগে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে বলে
—– আমি যাবো মানে যাবো। এই মানুষটার সাথে থাকা সম্ভব না। আদ্রের মা বলে
—– আচ্ছা বাবা যাস এখন বরং কিছু খেয়েনে। শিশির বলে
—- না আমি এখনই যাবো, নীল ভাইয়াকে বলো আমাকে দিয়ে আসতে। আদ্র বলে
—- নীল তোমার মতো ফালতু আজাইরা ঘুরে না,, ওর অফিস আছে। আদ্রের মা আদ্রের দিকে চোখ রাঙিয়ে বলে
—- তুই একদম চুপ। শিশির মা একটু কিছু মুখেদে। শিশির বলে
—- না আমি এখনই বাসায় যাবো।৷ আদ্র রেগে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়৷ পরে শিশিরও বাসায় চলে আসে।
শিশিরের মা শিশিরকে দেখে খুব খুশি কিন্তু মেয়ের মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। শিশির কাউকে কিছু না বলে সোজা নিজের রুমে চলে যায়। আর নীল বেচারা সেখানেই দাড়িয়ে আছে। শিশিরের মা বলে
—- আসো বাবা ভিতরে আসো। আদ্র কোথায়? কিছু হয়েছে?? নীল ভিতরে এসে বসে বলে
—- না আন্টি একটু ঝগড়া,, এক গ্লাস পানি?? শিশিরের মা একটা সার্ভেন্টকে ডেকে চা কফির ব্যবস্থা করতে বলে আর নীলকে বলে
—- আরে আরে আজকে আর যেতে দিচ্ছি না বিকেলে যাবে। নীল অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে চলে আসে।
___________
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে কিন্তু শিশির রুম থেকে বের-হয়নি। তার মা অনেক ডেকেছে খেতে সে না করে দিয়েছে। তার মা ভালো করেই জানে শিশির যেটা বলে সেটা করেই দম নেয়। রুম অন্ধকার করে বসে আছে। মাঝে মাঝে মশা দুই একটা কামড় দিচ্ছে আর সাথে হিরো আলমের গান শুনাচ্ছে। শিশির বলে
—- দেখ মশা রক্তখাবি খা এইটা তোদের হক,, কিন্তু এই হিরো আলমের মতো গান গাচ্ছিস কেন??
রাত ১০ টার দিকে শিশিরের বাবা আসে অফিস থেকে,, রুমে কড়া নারতেই বাধ্য মেয়ের মতো গিয়ে দরজা খুলে দেয় আর বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলে
—— বাবা আমি যাবো না আর ঐ বাসায়,, আমি তোমার কাছেই থাকব। শিশিরের বাবা নিজের মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
—- তোর যতদিন ইচ্ছে হয় থাক। কে বলেছে যেতে? হিমু সেই কখন থেকে বলছে আপুর সাথে কথা হয়নি একবার ছোট বোনটার সাথে দেখাতো করবি? স্কুল থেকে ফিরে খায়নি তুই খাসনি দেখে, এখন নিচে চল একসাথে খাবো।
শিশির চোখের পানি মুছে বলে চলো৷ মা-বাবা, ছোট বোনকে পেয়ে ভুলেই গিয়েছ আদ্রের কথা। রুমে এসে অদ্রিজার ফোনে ভিডিও কল দেয় শিশির। অদ্রিজা সবাই বসে বসে ড্রয়িং রুমে কথা বলছিল শিশির আর আদ্রকে নিয়ে। বাসাটা কেমন ছন্দ ছাড়া পায়েলের মতো লাগছে। শিশির আর অদ্রিজা মাতিয়ে রাখতো বাসাটা এই কয়দিন।
শিশিরের ফোন পেয়ে সাথে সাথে নীলের মা বলে
—– এই শিশির এতো রাগ কেন? আজ গিয়েছিস কাল থেকে পরশু চলে আসবি। তুই ছাড়া বাসাটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে।
আদ্রের মা বলে
—- স্বামী- স্ত্রীর মাঝে এমন ঝগড়া একটু আদটু লেগেই থাকে। শিশির বলে
—- তোমার ছেলে আমার হাসবেন্ড না টিচার বলো টিচার। আর আমি আসবো না। থাকো তোমারা তোমাদের এই হিটলার ছেলের সাথে।
অদ্রিজা বলে
—– ঐযে যে ভাইয়া বের হয়েছে এখনো বাসায় ফেরেনি। শিশির কিছু বলে না চুপচাপ। তখনই নীল বলে
—– শিশির কালকে ঘুরতে যাবে ?? কলেজ শেষে? শিশির হালকা ভেবে বলে
—- না, আমি যাবো না। তোমরা যাও। অদ্রিজা বলে
—- এতো রাগ কই থেকে আসে?? শিশির ভেংচি কেটে বলে
—- যেখান থেকে তোর ভাই উদয় হয়। তখনই আদ্র বাসায় আসে। সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে।
—- কি হচ্ছে এখানে?? অদ্রিজা এসে আদ্রের হাতে ফোনটা দিয়ে বলে।
—- তোর বউয়ের সাথে কথা বলে রাগ ভাঙা। আদ্র তাকিয়ে দেখে শিশির কলে। আদ্র কিছু বলতে যাবে তার আগেই শিশির কল কেটে দেয়। আদ্র আনমনেই বলে
—- যাহ বাবা, কল কেটে দিল। আদ্রের মা বলে
—- দেখ আদ্র শিশিরকে বাসায় নিয়ে আসবি তুই কিভাবে আমি জানি না। আদ্র উপরে উঠতে উঠতে বললো
—- কেন নিয়ে আসতে যাবো আমি? যেতে নিষেধ করেছিলাম। এবার যেভাবে গিয়েছে সে ভাবেই আসবে আমি কাউকে নিয়ে আসতে যাবো না।
————–
সবার মাথায় হাত দুইটাই ঘাড়ত্যাড়া । শিশির আজকে ফ্রি কেউ পড়তে বসতে বলেনি। কিন্তু আদ্রকে অনেক মিস করছে, আবার সকালের কথা মনে পরতেই রাগে খুবে শেষ। শিশির মেসেঞ্জারে ফ্রেন্ডদের সাথে গ্রুপে কথা বলছিল তখনই একটা মেসেজ আসে দেখে আদ্র মেসেজ দিয়েছে।
—- এতো রাতে অনলাইনে কি? আর আজ পড়তে বসেছিলে বলে তো মনে হয় না..!! ডিনার করেছ?
মানে কি!? কই সরি বলবে তা না। দিলাম ব্লক করে হারামি ফাজিল,, শুধু আছে ঐ পড়া নিয়ে।
অন্য দিকে আদ্র অবাক তাকে ব্লক করে দিল? এই মেয়ে তো তার থেকেও বেশি জেদি
চলবে