গল্পের নামঃ- #কৃষ্ণচূড়া😍😍
লেখিকাঃ- #konika_islam
part:02
—আমি আইসক্রিম খাবো। আদ্র বলে
—তুমি বাচ্চা? শিশির একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলে
—- না আর দুইদিন পর আপনার বাচ্চারা আমাকে আম্মু,,মাম্মা বলে ডাকবে,,। আদ্র বিরক্ত হয়ে বলে
—–হুয়াট ননসেন্স!! কি সব বাজে বকছ? শিশির একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বলে
—- দেখুন,,,,, আমি আইসক্রিম খাবো আর হাসবেন্ড হিসাবে এটা আপনার দায়িত্ব,,এবার গিয়ে আইসক্রিম নিয়ে আসুন নয়তো এখন লোক জড়ো করে বলব আপনি আমাকে অহরন করছেন। আদ্র বলে
—– ঐটা অহরন না অপহরণ
বলেই গাড়ি থেকে বেড়িয়ে হাটা দেয় আইসক্রিম পার্লারের দিকে।
আহহহহ কি শান্তি। জ্বালিয়ে মারছে সকাল থেকে,,, এখন আমার পালা,, আমিও জ্বালিয়ে নিলাম। আইসক্রিম জিনিসটা তেমন আমার পছন্দের না শুধু তাকে জ্বালাতে। আল্লাহ দিয়েছে একটা হিটলার নামক হাসবেন্ড এইতো সকালের কথা
________
মানুষ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কত সুন্দর ভাবে,,,, হাসবেন্ডর বুক থেকে মাথা উঠিয়ে,,, সকলা শুরু করে,,,, হাসবেন্ড রা মিষ্টি হাসি দিয়ে গুডমর্নিং বলে তারপর সকাল শুরু হয়,,কিন্তু আমার সকাল হয়েছে অন্য ভাবে। এইতো সকালের ঘটনা। হঠাৎ করে মুখে তরল কিছু পরাতে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠি সামনে তাকাতেই দেখা মিলে,,, আদ্রের। যেখানে চোখ মুখে বিরক্তির ছাপঁ আমার থাকার কথা সেখানে সে রেগে আছে হাতে পানির গ্লাস। আমাকে অবাক করে দিয়ে বলে
—- ১০ মিনিট টাইম,,, ফ্রেশ হয়ে যেন বই নিয়ে বসতে দেখি। আমি নিচে যাচ্ছি।
মানে কি হ্যা? আমাকে বিয়ে কেন করছে? এই পড়াইতে? আগে জানলে জীবনে বিয়ে করতাম না। ধ্যাত ভালোলাগে না। ভেবেছিলাম ২/৪টা বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে হাসবেন্ডের সাথে সংসার করব৷ কিন্তু তা হলো কই আর। আমার ভাবনা জগৎ থেকে বেড়িয়ে আসতে সাহায্য করে আদ্র সে বলে
—- সময় কিন্তু শুরু হয়েগিয়েছে। মনতো চাচ্ছে সামনে রাখা ফুলদানিটা দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেই। কিন্তু তা তো করা যাবে না। মরলে পরে জেলে যেতে হবে সাথে বিধবা পদবি ফ্রী আর যদি বেঁচে যায়,, তাহলে আমার ইন্না-লিল্লাহ। কি আর করারা হাত মুখ ধুয়ে এসে পড়তে বসলাম।
___________
কিছুসময় যেতেই সে এসে হাজির। হাতে একটা ব্লু কালারের ফাইল সে আমার দিকে একবার তাকিয়ে ফাইলটা নিয়ে চলে যায়,,, মানে কি আমি কি চোর নাকি? যে তার ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করব? কিছু করার নাই শিশির তুমি এখন পরেছ একটা হিটলারের পাল্লায়। আচ্ছা সে তো কোনো সিক্রেট মাফিয়া টাফিয়া না আবার!? তখনই আমার ননদী অদ্রিজা এসে বলে
—- ভাবি নিচে আসো,,, খেতে ডাকছে। আমাকে আর পায়কে,, বই রাখা দিয়ে কথা তাই কিছু না ভেবেই নিচে চলে এলাম। বস আমার কফি হাতে বসে আছে সিঙ্গেল সোফায়। ইস কি এটিটিউড ,,,, ভাব। যেটা আমার মটেও সহ্য হচ্ছিল না। যেমন ঠিক তারও আমার সুখ সহ্য হয়না । খাবর টেবিলে বসার সাথে সাথে বলে
—- খাওয়ার পর সোজা রুমে গিয়ে রেডি হবে তোমাকে নিয়ে আর কলেজে যাবো।
এতটা রাগ হচ্ছিল কি বলব। মনটা চাচ্ছিল ফ্রিজ থেকে গিয়ে সব ডিম নিয়ে এসে তার মাথায় ফাটাই। চুপচাপ মেনে নিলাম। কলেজের সব কাজ মিটিয়ে বাসায় ফিরছিলাম আর তখনই আইসক্রিমের আভির্ভাব ঘটে।
মানে ভাই বুঝি না,, আমার তো স্বপ্ন ছিল একটা রোমান্টিক বর পাবো। তার বদলে পেয়েছি একটা বর নামক টিচার,,, আমাদের মতো রোমান্টিক মেয়েদের কপালেই কি এমন নিরামিষ বর জুটে? তখনই ঠাস করে শব্দ হওয়াতে ভয় পেয়ে যাই।
সামনে তাকাতেই দেখি আদ্র একটা বক্স আর হাতে কোণ। কোণটা আমার দিকে এগিয়ে দেয় আর বক্সটা বেক সিটে রেখে দেয়। ডার্ক চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রিম
—- নিজেও যেমন তিতা করল্লা পছন্দ ও ঠিক তেমনই।। কি করার বাধ্য হয়ে এটাই খেতে হচ্ছে।
___________
বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর হয়ে যায়। আসার পর আইসক্রিমটা অদ্রিজার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আদ্র বলে
—- একা একা খেতে খেতে তো XXll হয়ে গিয়ছিস। সবাইকে দিয়ে খাস। বলেই রুমে চলে যায়। আমিও পিছু পিছু যাই। আসার পর বাসায় তেমন কথা হয়নি। তাই আদ্রকে বলেই ফেললাম
—- ফোনটা একটু দিবেন? সে চুপচাপ নিজের ঘড়ি খুলতে ব্যস্ত। কানে শুনে না নাকি? আমি আবারও বললাম।
—- ফোনটা একটু দিবেন? বাসায় আম্মুর কাছে কল দিব একটু। আমার ফোনটা আনা হয়নি। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলে
—– বাইরে থেকে এসেছে,, ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর ঘুম। পরে এইটা নিয়ে ভাবাবো।
মুহূর্তেই মনটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। কিন্তু এতে তার কি যায় আসে? ভেবেছিলাম বিয়ের পর আমি মুক্ত,,, মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়বো। আর সে তো আমার ডানা কি গজাবে হাত-পা গজানোর আগেই খাঁচায় বন্দী করেছে।
শাওয়ার নিয়ে এসে দেখি আদ্র বিছানায় আধো শুয়ে লেপটপে কিছু একটা করছে। এই লেপটপ ই তার বউ,, সারাক্ষণই এই লেপটপ। মনেতো হচ্ছে ভিতরে ঢুকে যাবে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে সকালে ঘুম থেকে অনেক জলদি উঠতে হয়েছে হয়তো তাই। আর লেট না করে শুয়ে পরি আর ঠিক তখনই আদ্র মাঝে কোলবালিশ দিয়ে দেয়। মানে!!! আমি উঠে বসে উনাকে জিজ্ঞেস করলাম
—- মাঝে শতীন কেন? ইয়ে মানে কোলবালিশ কেন? উনি লেপটপের দিকে তাকিয়ে বলে
—- তোমার বাজে স্বভাব রাতে,,, হুটহাট গায়ের উপর পা তুলে জাপ্টে ধরে থাকো,,, একদম জোকের মতো। তাই।
মনতে চাচ্ছে এই কোলবালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরে,,, এই আহাম্মক টাকে বালিশ চাপা দিয়ে ইন্না-লিল্লাহ করিয়ে ফেলি। কিন্তু এটা মরলে আমি বিধবা পদবি পাবো। বরটা এতো কিউট কিন্তু ব্যবহার কি!! ঐ যে কথয়া আছে। চেহারা তো মাশাআল্লাহ কিন্তু ব্যাবহার আসতাগফিরুল্লাহ।। মনে মনে হাজারটা কথা শুনিয়ে পারি দিলাম ঘুমের রাজ্যে। দুপুরে আমরা বাইরে থেকে লান্ঞ্চ এসেছি তাই,,, আর জ্বালায়নি।
_________
ঘুম থেকে উঠে দেখি পাশে আদ্র নেই,,, উঠে বসি। তখনই রুমে আসে অদ্রিজা। অদ্রিজা এসে আমার পাশে বসে পর আর বলে
—- দেখ ভাবি আমি তোকে তুমি করে বলতে পারবো না,,, তুই করেই বলবো। কারণ আমরা সমবয়সী আর একই কলেজ একই ইয়ারে পড়ি। আমিও অদ্রিজাকে বলি
—- বলবা সমস্যা কি। তখনই আদ্র রুমে আসে আর বলে
—- বয়সে এক হলেও সম্পর্কে তোর বড় তাই তুই না আপনি / তুমি ডাকবি। অদ্রিজা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে
—-, চুপ যা,,,, তোর বউকে আমার যা ইচ্ছা হবে ডাকব। আমার এতো ফর্মালিটিস ভালো লাগে না। আমিও বললাম
—- সমস্যা নেই। আমিও তুই ডাকবো। অদ্রিজা আমার হাত ধরে দাড়িয়ে বলে
—- চল নিচে গিয়ে একটু আড্ডা দেই। রুম থেকে শুধু দরজা অব্দি গিয়েছি। তখনই আদ্র বলে
—– সন্ধ্যার আগে যেন পড়ার টেবিলে পাই। এই আদ্রের জন্য আমার চোখের পানি গুলো বাধ্য হয়ে সুসাইড করবে। বিয়ের সময়ও এতো কান্না পায়নি যতটা এখন পাচ্ছে। এই বজ্জাতটাকে কি বলেছি আমি পড়ব!? আদ্র আবার বলে
—– মনে থাকে যেন।
আমি দাঁত চেপে চেপে হাসি দিয়ে বলি
—জ্বি মনে থাকবে এখন যাই। আদ্র বলে
—- আমি বারণ করেছি? মানে নিজের বোনের সামনেও অপমান। এই দিন দিন না বাচ্চা আমারও দিন আসবে তখন বুঝবে। এক একটা মুহূর্তের বদলা নিব তাও গুনে গুনে পাইপাই করে। অদ্রিজার সাথে জমিয়ে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যায় রুমে ঢুকতে যাবো তখনই
চলবে
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে। 😊