কিছু সমাপ্ত পূর্ণতার (পর্ব – ১৩)
সুমাইয়া আক্তার
__________________
খাবার টেবিলে পাশাপাশি নাহিদা আর অপু। অপর পাশে বসে আছে ইফতেখার এবং জোনায়েদ। জাফরিন আতিথেয়তা করতে কার্পণ্য করছেন না। অপুকে স্নেহ ঢেলে দিয়ে প্লেট উপচে খাবার সাজিয়ে দিয়েছেন। অপু এত ভালোবাসায় আপ্লুত। সে মুচকি মুচকি হেসে খাবার মুখে পুরছে আর গল্প জুড়ছে। এদিকে সবকিছু থেকে বিমুখ, উদাসীন নাহিদা উদাশ হয়ে প্লেটের শুভ্র ভাতে আঙুল ঘোরাচ্ছে। এই মহূর্তে কিচ্ছু ভালো লাগছে না তার। মনে শুধু জাফরিনের বলা কথাগুলো উদয় হচ্ছে। সত্যিই তো, স্বামীর বাড়ি মেয়েদের আসল বাড়ি। কিন্তু মাঝখানে এত প্রতিবন্ধকতা ছাড়িয়ে তানজিমের সাথে আগের মতো থাকার আকাঙ্খা পূরণ হবে বলে মনে হয় না।
জীবন গোলকধাঁধায় ফেলে বারবার। সে গোলকধাঁধা ছাপিয়ে ভালো থাকা বেশ মুশকিল। যদি নাহিদার জীবনের স্থানে জাফরিন হতেন, তবে অবশ্যই তিনি গোলকধাঁধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জিতে যেতেন। কিন্তু নাহিদা পারে না। জাফরিনের মতো করে ভাবতে গিয়েও হেরে যায়, পথ ভুলে যায়।
তানজিমের থেকে দূরে থেকে আরও ভালোবাসা বেড়েছে তানজিমের প্রতি। এ নিয়ে নাহিদা আফসোস করবে নাকি গর্বিত হবে, তা বুঝে উঠতে পারেনি এখনও। এদিকে নাহিদার প্রতি অপুর এত পাশাপাশি থাকার প্রবল ইচ্ছা নাহিদাকে চিন্তায় ফেলেছে। অনেক পুরুষ মানুষের একটা বড় রোগ আছে। রোগটা হলো, বিবাহিত নারীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া। তারা বিবাহিত মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয় বেশি। ওই ধরনের পুরুষদের মধ্যে যদি অপু পড়ে, তবে তার থেকে ধীরে ধীরে সম্পর্কের গভীরতা কমিয়ে আনাই বুদ্ধিমানের কাজ।
নাহিদার উদাসীনতা লক্ষ করলেন জোনায়েদ। কিন্তু সবার সামনে মেয়েকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাইলেন না বলে চুপ থাকলেন। চুপ থাকলেন না জাফরিন। তিনি এতটাও অন্ধ হয়ে যাননি যে কারো আতিথ্য করতে গিয়ে মেয়ের শুকনো মুখ দেখতে পাবেন না।
জাফরিন সাবধানে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘নাহিদা, খাবার কী ভালো হয়নি?’
ভাতের মাঝে আঙুল ঘোরানো বন্ধ করল নাহিদা৷ মুখ তুলে জাফরিনের দিকে তাকাল। মেয়ের শুকনো মুখে সুক্ষ্ম কষ্টের ছাপ লক্ষ করলেন তিনি। বুকটা হুহু করে উঠলেও মুখে কিছু বললেন না। নাহিদা এখন যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থেকে খুশি থাকা সম্ভব নয়। তবুও পরিবারের মানুষগুলো যেন তাকে নিয়ে অতিরিক্ত কষ্ট না পায়, সেজন্য সে মুখে হাসি রেখে কথা বলার চেষ্টা করে। মনে এত বিষাদ থাকলে মুখের কৃত্রিম হাসিতে কী-বা এসে যায়!
নাহিদা যখন লক্ষ করল, চারজন মানুষের চোখ তার উত্তরের আশায় তাকিয়ে আছে, তখন তার ধ্যানভঙ্গ হলো। সে ছোটোখাটো একটা নিশ্বাস নিয়ে বলল, ‘খাবার ভালো হয়েছে মা।’
‘দ্রুত খেয়ে নে। অধরা উঠে যাবে নয়তো।’ নাহিদাকে দ্বিধায় না ফেলে কথার ইতি টানলেন জাফরিন।
রাত অনেক হয়ে গেছে।
খাওয়ার পর্ব সেরে আড্ডা দিতে বসেছিল সবাই। নাহিদার ইচ্ছে না করলেও অপুর জোরাজুরিতে আড্ডার আসরে বসতে হয়েছিল। আড্ডা শেষে যখন অপু চলে যাচ্ছিল, তখন হাফ ছেড়ে বাঁচছিল প্রায় নাহিদা। কিন্তু আগ বাড়িয়ে ইফতেখার আর জোনায়েদ থেকে যেতে বলল। একবার বলতেই অপু রাজি হয়ে গেল৷ নাহিদা চোখ রাঙিয়ে জাফরিনের দিকে তাকিয়েও কোনো লাভ করতে পারেনি। কারণ তিনিও নাহিদার দলেই ছিলেন। অপুকে তিনি পছন্দ করেন, কিন্তু নাহিদার প্রতি অপুর অতিরিক্ত হেলে পড়া ভাবটা খুব খারাপ ঠেকছে তার কাছে।
বর্তমানে সবাই নিজের ঘরে ফিরলেও নাহিদার ঘরে বসে আছে অপু। নানান কথা বলে নাহিদাকে হাসাতে চাইছে সে। হাসি না পেলেও কী যেন ভেবে হাসতে হচ্ছে তাকে। পাশে অধরাকে আদর করার বাহায় ঘরে আছেন জাফরিন। তার মেয়ের প্রতি তিনি যেমনভাবে ছোট থেকে লক্ষ রেখেছেন, এখনও তেমনভাবেই লক্ষ রাখেন। এত রাতে একা এক অবিবাহিত পুরুষের কাছে নিজের মেয়েকে রেখে যাওয়ার মতো নির্বোধ তিনি নন। এমন’ই হওয়া উচিৎ প্রত্যেক মা’কে।
ঘুম জেঁকে বসেছে নাহিদার চোখে। বারবার হাই তুলছে সে। অপু বুঝেও গল্প করেই যাচ্ছে।
জাফরিন মেয়ের অবস্থা বুঝে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘বারোটা তো বেজে গেছে। এবার ঘুমিয়ে পড় দু’জনে।’ নাহিদার দিকে অর্থপূর্ণ চোখে তাকালেন তিনি, ‘নাহিদা, তুই-না রাত জেগে থাকতে পারিস না? ঘুমিয়ে পড়। কাল গল্প করা যাবে।’
অপু হেসে বলল, ‘অভ্যাসটা আগে না থাকলেও এখন হয়ে গেছে আন্টি। আপনি চিন্তা করবেন না।’
নাহিদা প্রশ্ন বিদ্ধ চোখে তাকাল, ‘কী বললে?’
‘যা শুনলে। চোখের নিচ তো আর এক রাতে কালো হয় না!’
চোখ ঘুরিয়ে নিল নাহিদা। জাফরিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘এখন তুমি ওকে বোঝাও তো বাবা। তানজিমের সাথে একবার কথা বলতে বলো। আর কতদিন এভাবে?’
‘বোঝাব। তবে কাল।’ বলে হাতঘড়ির দিকে দৃষ্টি ফেলল অপু, ‘আজ ঘুমাই। রাত হয়ে গেছে।’
দাঁড়িয়ে পড়ল অপু। পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে মাথা ঝাঁকালো। অতঃপর অনিমার সমগ্র মুখে এক অর্থহীন দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল সে।
নাহিদা চুপচাপ বসে থাকল। অপু ঠিক’ই বলেছে, একদিনে তো চোখের নিচ কালো হয় না। এর জন্য অনেক রাত নির্ঘুম থাকতে হয়, বোবাকান্না কাঁদতে হয়। বারবার অনিমার বুকের গভীর থেকে দীর্ঘশ্বাস পড়তে লাগল। চোখ ছলছল করে উঠল।
জাফরিন নাহিদার পাশে এসে বসলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘আমার কথা শোন মা, তানজিমকে একটাবার কল করে ডাক। তোর ভাইয়ের কথা শুনিস না। আমার কথা শোন। মা-বাবা সন্তানের জীবনে সবচেয়ে বড় পীর হয়ে থেকে যান। তারা যা বলেন, আল্লাহ্ তাতেই উত্তম কিছু নিহিত করে রাখেন।’
কিছু বলল না নাহিদা। শুধু অশ্রু বিসর্জন করে চুপ থাকল। জাফরিন নাহিদার ফোনটা টেনে নিয়ে তানজিমের নাম্বার ব্লক লিস্ট থেকে বের করে কল করলেন। নাহিদার বারণ না শুনে নাহিদার কানে ফোনটা রেখে দিলেন। নাহিদা যখন বারবার বারণ করছিল, জাফরিন তখন চোখ রাঙালেন। আর টুঁ শব্দ করল না নাহিদা।
একবার রিং হতে না হতেই ওপাশ থেকে তানজিমের ভাঙা গলা শোনা গেল, ‘হ্যালো, নাহিদা।’
নাহিদার অন্তরটা কেঁপে উঠল। ঢোক গিলে কথা বলতে গিয়ে আটকে গেল সে। জাফরিনের দিকে তাকাল। জাফরিন কথা বলার ইশারা করে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন। বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে টলমল চোখের জল মুছে ফেললেন।
নাহিদা কোনো কথা বলতে পারছে না। ওদিকে তানজিম নাহিদার কণ্ঠ শোনার জন্য কত কী বলে চলেছে!
ওপাশ থেকে আবারও তানজিমের গলা শোনা গেল, ‘খুব রাগ করে আছ আমার উপর তাই না? এই নাহিদা, কথা বলো প্লিজ… একটাবার কথা বলো। তোমার কণ্ঠ শোনার জন্য ভেতরে ভেতরে মরে যাচ্ছি।’
আর চুপ করে থাকতে পারল না নাহিদা। দুই চোখ থেকে টপটপ করে অশ্রুকণা ফেলে খুব কষ্টে বলল, ‘কেন তুমি ওমন করেছিলে তানজিম?’
‘আমাকে ক্ষমা করো নাহিদা। আমি ভুল করেছিলাম। এখন আমি অপরাধবোধে ভুগছি। আর পারছি না। আমাকে ক্ষমা করো।’
নাহিদা জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে শুকরিয়া আদায় করে বলল, ‘তুমি একবার আসতে পারবে?’
‘আগে বলো তুমি ক্ষমা করেছ।’
‘করেছি।’
‘আমি—’ কান্নার চোটে তানজিমের মুখ দিয়ে আর কোনো শব্দ বের হলো না।
নাহিদা ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকালো, ‘কেঁদো না। ক্ষমা করেছি তোমায়। কাল এসে আমার দুই চোখের তৃষ্ণা মিটিয়ে দিও। তোমাকে ছাড়া আমার কী যেন হয়ে গেছে। সব কেমন এলোমেলো।’
‘এখন’ই যাব?’
কান্নার মাঝেও হেসে ফেলল নাহিদা। ডান হাতে চোখের জল মুছে বলল, ‘পাগল! এত রাতে আসতে হবে না। রাস্তা ভালো না। কাল সকাল সকাল এসো।’
‘আচ্ছা।’
আরও অনেক কথা বলতে লাগল দুই স্বামী-স্ত্রী। পরিনয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে থেকে পবিত্র প্রণয় কথা চলতে লাগল অবিরত। এতদিন পর মনের জমানো কথাগুলো বলতে বলতেই মধ্যরাত পেরিয়ে গেল। অধরা উঠলে তবেই হাজারও অতৃপ্তি নিয়ে কল কাটল দু’জনে।
নাহিদা অধরাকে কোলে নিয়ে খুব বেশি’ই আদর করল। চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিল ক্ষুধায় কান্নারত ছোট্ট শিশুটির মুখ। তারপর দ্রুত ফ্লাক্স থেকে গরম পানি ঢেলে তাতে গুঁড়া দুধ মিশিয়ে অতি যত্নে খাওয়াতে লাগল। অধরা কান্না থামিয়ে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে খাবার শেষ করে ঘুমিয়ে পড়ল। আরও একবার সীমাহীন ভালোবাসা নিয়ে অধরার মুখে আদর এঁকে দিল নাহিদা। অধরার ছোট্ট সুন্দর মুখের দিকে তাকিয়ে হাজারও কথা ভাবতে লাগল সে৷ যখন’ই নাহিদার খুব কষ্ট হয়, তখন’ই সে অধরার মুখে তাকিয়ে থাকে। আল্লাহর কী অসীম কুদরতি! কষ্টগুলো অনেকাংশে কমে যায়। আজ সে তাকিয়ে থাকল আনন্দ নিয়ে। আল্লাহ্ মহূর্তেই যেন আনন্দ দ্বিগুণ করে দিলেন!
__________
তানজিম আনন্দে আজকের রাতটা জেগে কাটিয়ে ফেলেছে। প্রতিটা মহূর্তে আগের কথাগুলো ভেবে অপরাধবোধের মাঝেও নাহিদার ক্ষমা বেশ খুশি করেছে তাকে। আজ এতদিন পর অপরাধের বোঝা কমে গেল৷ ভোরে ঘর থেকে বেরিয়ে ফুরফুরে মনে বিল্ডিংয়ের সামনে কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করল সে। তারপর খুব উল্লাসে সকালের নাস্তা তৈরি করতে গিয়ে চামচ দিয়ে টুংটাং আওয়াজ করতে লাগল মাঝে মাঝে। মুখে উপচে পড়া হাসি নিয়ে নাস্তাও শেষ করল। বেশ অনেকদিন পর তৃপ্তি সহকারে খেল সে। এই আনন্দ ক্ষণে নাহিদা পাশে থাকলে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিছু খাওয়ার বায়না করত। নাহিদার আঁচল ধরে রান্নাঘরে গিয়ে নানানভাবে ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে হালকা বিরক্ত করত সে।
আশফিয়ার কন্যা সন্তানকে মারার জন্য ডাক্তার মোস্তফাকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিল তানজিম—এটা আসলেই সত্যি। যে বাচ্চার জন্য নাহিদা আর তার মাঝে এত দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেই বাচ্চাটাকে সারাজীবনের জন্য সরিয়ে দিতে চেয়েছিল সে। আশফিয়া যেদিন সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিল, সেদিন’ই ডাক্টার মোস্তফাকে সব কথা খুলে বলেছিল তানজিম। তারপর আশফিয়ার সন্তানকে মারার জন্য সাহায্য চেয়েছিল। বিনিময়ে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রী’র জন্য দুই লক্ষ টাকা দেবে বলে অগ্রীম এক লক্ষ টাকা প্রদান করে। অধরাকে মারতে পারলে আরও এক লক্ষ টাকা দিত সে। তখন এতটুকু ছোট্ট ফুটফুটে সন্তানকে মেরে ফেলার জন্য সুপারিশ করতে বাধেনি তানজিমের। কিন্তু সে ঘুনাক্ষরেও জানত না, নাহিদা আশফিয়ার অনাগত সন্তানকে ধীরে ধীরে এতটা ভালোবেসে ফেলেছে। ভালোবাসার কারণও আছে। প্রথমত, আশফিয়াকে নিজের বোনের মতো ভাবতে শুরু করেছিল নাহিদা। দ্বিতীয়ত, নাহিদা কখনও মা হতে পারবে না ভেবে অধরাকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবেসে ফেলেছিল।
আশফিয়ার অপারেশনের দিন যখন নাহিদার কথাগুলো তানজিম শুনেছিল, তখন মনে হয়েছিল বড় ভুল করে ফেলেছে সে। সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কেটে গেল আরও একটা দিন। অতঃপর মোস্তফকে গিয়ে অধরাকে মারার সুপারিশ ফিরিয়ে নিল। তবে ফিরিয়ে নিল না এক লক্ষ টাকা।
ঠিক কয়েকদিন আগের কথা।
তানজিম হুট করেই জাফরিনের মাধ্যমে জানতে পারল—নাহিদাসহ সবাই ভাবছে, আশফিয়ার গাল থেকে গলা বরাবর যে ছুরি চলেছিল, তা তানজিমের ক্রোধান্বিত কর্মকাণ্ড। সেদিন খুব অবাক ভরা দিন ছিল তানজিমের। কারণ আশফিয়াকে মারার কথা শুধু রাগ করে ভাবত সে; সত্যিই মেরে ফেলার কথা কখনও ভাবেনি। যে রাতে এ কাণ্ড হয়, সে রাতে তানজিম আশফিয়ার সাথে দেখা করতে গেছিল। আশফিয়াকে বুঝিয়েছিল ভুল বুঝাবুঝি মিটমাট করতে। তানজিম তখনও জানত না, এরমধ্যেই আশফিয়া নাহিদাকে সবকিছু জানিয়ে দিয়েছে। আশফিয়া মুখে হাসি রেখে মাথা ঝাঁকিয়ে ‘না’ করে দিয়েছিল। কে জানত, সে ঠাট্টা করছিল! খুব রাগ করে যা তা শুনিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যায় তানজিম। তারপরের ঘটনা সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। অথচ সবাই ভেবে নিল, আশফিয়া তানজিমের ক্রোধের স্বীকার হয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উঠে পড়ল তানজিম। নাহিদা আর তার একটা বড় ছবি দেওয়ালে ঝুলছে। সেটা নামিয়ে, নিজের শার্টের কোণ দিয়ে মুছে নাহিদার ছবিতে চুমু দিল। আজ সৃষ্টিকর্তা একটা বড় সুযোগ করিয়ে দিয়েছেন। এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। নাহিদাকে সম্পূর্ণ সত্যি জানিয়ে, অধরাকে কন্যার স্থানে জায়গা দিয়ে নিজের বোঝা কমিয়ে ফেলবে তানজিম। আর তা খুব দ্রত’ই।
(চলবে)