কাব্যের বিহঙ্গিনী পর্ব-০৪

0
498

#কাব্যের_বিহঙ্গিনী
#পর্ব_৪
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

(অনুমতি ব্যতিত কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ)

‘আপনারে যদি একখান কথা জিজ্ঞেস করি আপনে কি উত্তর দেবেন?”

ড্রাইভারের কথায় মেহবিন গাড়ি থেকে নামতে গিয়েও আবার থেমে তার দিকে তাকিয়ে বলল,,

‘আপনার কেন মনে হলো? আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিব না।”

“এমনিই সবাই তো আর ড্রাইভারের প্রশ্নের উত্তর দিবার চায় না তাই আর কি?” আপনে তো ডাক্তার তাই না?

“হুম ডাক্তার। আপনি প্রশ্ন করেন না আমার জানা থাকলে অবশ্যই দেব।”

“ঠান্ডা জ্বর লাগলে কি শুধু নাপা খাইলেই শাইরা যায়।”

“ওটা জ্বরের অবস্থা বুঝে। তবে এটা কে বলল শুধু নাপা খেলেই সেরে যায়।”

“আর বইলেন না আমার বউ এর অনেক জ্বর আইছে কতোদিন ধইরা। আমি কই ডাক্তাররে দেখাইতে হে খালি কয় নাপা খাইলেই শাইরা যাইবো। আমি আবার মুর্খ মানুষ লেহাপড়া করি নাই তাই ভালো জানি না।”

“কতোদিন ধরে জ্বর?”

“এই তো সাতদিন এহন তো আবার কাশি ও বাড়ছে।”

“কাল আপনার বউকে নিয়ে হাসপাতালে যাবেন। আমি দেখে ওষুধ লিখে দেব সেগুলো খেলে ইনশাআল্লাহ তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।”

‘আইচ্ছা।”

মেহবিন এবার গাড়ি থেকে নেমে গেল তখন ড্রাইভার আবারো বলল,,

‘গেরামের বেশিরভাগ মানুষেরই খালি নাপা খাইলেই জ্বর শাইরা যায়। খালি জ্বর না সব অসুখ ই মনে অয় নাপা খাইলে শাইরা যায়। আমারও শাইরা যায় কিন্তু আমার বউয়ের শারতেছে না।”

মেহবিন মুচকি হেসে পেছনে ঘুরে বলল,,

‘গ্ৰামের মানুষরা ডাক্তার দেখে ভয় পায় আর ডাক্তারের কাছে গেলেই টাকা লাগবে তাই যায় না। তারা নিজেদের ওপর টাকা খরচ করতে চায়না। সেই জন্য নাপাকে সব রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে। শুধু নাপা খেলে সব রোগ সারে না হয়তো একটু আরাম পাওয়া যায় স্বল্প সময়ের জন্য।

“কথাটা অবশ্য আপনে সইত্য কইছেন।”

‘কাল হাসপাতালে আইসেন।”

বলেই মেহবিন ফোনের টর্চ জ্বালিয়ে সামনে আগাতে লাগলো। দুই মিনিট পর বাড়ির ভেতরে গেল সব অন্ধকার ও গিয়ে আগে ঘরের আর বাইরের লাইট জ্বালালো। বাইরে একটা লাইট লাগিয়েছে যে বাল্বটা পুরো বাড়িকে আলোকিত করে রাখে। মেহবিন রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো কিছুই নেই রান্না করা। ও রাতে রান্না করতে চেয়েছিল কিন্তু তখন চেয়ারম্যান বাড়িতে গিয়ে সব ঘেটে ঘ হয়ে গেছে। তখনি বাইরে থেকে মহিলার কর্কশ আওয়াজ আসলো,,,

“নতুন মাইয়া বাড়িতে ফিরছো নি একটু বাইর হও তো।”

মেহবিন রান্না ঘরের জানালা দিয়ে বাইরে উঁকি দিল দুজন মহিলা আর একজন পুরুষ গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে । হাতে টর্চ লাইট আর কিছু একটা আছে তাদের। মেহবিন দোয়া দরুদ পরে বাইরে বের হলো মোবাইল টা নিয়ে। ঘর থেকে বেরিয়ে বলল,,

‘আপনারা ভেতরে আসেন গেট তো খোলাই আছে।”

মেহবিনের সম্মতি পেয়ে তারা ভেতরে আসলো। মহিলা দুজন এগিয়ে এসে বলল,,

‘আমি তোমার বাড়ির সামনের রাস্তার ঐপাশে থাহি। আজ আমগো বাড়ি দুপুরে অনুষ্ঠান আছিল। তুমি তো দুই দিন আগে আইছো দাওয়াত দিতে মনে আছিল না। আর সারাদিন বাড়ি আছিলা না। আবার সন্ধ্যায় ও চেয়ারম্যান সাহেব লইয়া গেলেন তাই তোমার জন্যে খাওন আনছি খাইয়া নিও।নাকি চেয়ারম্যান বাড়ি থেইকা খাইয়া আইছো।”

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

‘খেয়ে আসলে কি দিবেন না?”

‘এমা তা কেন হইবো? আমি এমনিই জিগাইছি। এই লও তোমার জন্য সেই সন্ধ্যা থেইকা অপেক্ষা করতেছি।”

‘এতক্ষন অপেক্ষা করার দরকার ছিল না। আর এখন এগুলো আনারও দরকার ছিল না। আগে বললে আমি সন্ধায়ই এগুলো নিয়ে রাখতাম শুধু শুধু কষ্ট করলেন।”

“কষ্টের কি হইলো তুমি হইলা আমগো প্রতিবেশী। প্রতিবেশী রে না দিয়া কি থাহুন যায়। তুমি আমগো বাড়ি বেরাইতে যাইও। এহন আসি।”

‘আচ্ছা ধন্যবাদ।”

“ও হুনো?”

“জি বলেন?”

‘কাল ধান সেদ্ধ করুম তোমার দুয়ারে খুব রোদ উঠে। তোমার দুয়ারে কি ধান দিবার পারুম। যদি তোমার সমস্যা না অয়।”

‘সমস্যা নেই দিয়েন। আমি এমনিতেও গেইট খোলা রেখেই যাই।”

“আচ্ছা তাইলে ঠিক আছে। তাইলে যাই একা একা থাকো কোন সমস্যা হইলে আমগো ডাক দিও। আর সাবধানে থাইকো।”

‘আচ্ছা ঠিক আছে সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ।”

ওনারা চলে গেলেন। মেহবিন মুচকি হেসে গেইট আটকে ঘরে এলো। বাইরের বারান্দার কেচিগেইট এ তালা ঝুলিয়ে এলো। এটা সে প্রতিদিনই করে। মেহবিন খাবার গুলো বিছানায় রেখে হাত ধুয়ে এলো ঢাকনা টা খুলতেই দেখলো তেহারী আর পায়েস। মেহবিন অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো,,

“আলহামদুলিল্লাহ সত্যি রিজিক আল্লাহ প্রদত্ত বড় নেয়ামত। কোথায় কিভাবে কার রিজিক আছে সেটা আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। এই জন্যই তো আল কুরআন এ বলেছেন,,

আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে।
(সূরা হুদ-৬)

বলেই মেহবিন খেয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলো। এরপর মোবাইল এ কিছু কাজ করে ঘুমিয়ে পড়লো।

_________________

“কোনভাবে কি ট্রান্সফার টা আটকানো যায় না নাতি?’

রাতে ডিনার টেবিলে আছিয়া খাতুন মুখর কে কথাটা জিজ্ঞেস করলেন। তা শুনে মুখর বলল,,

“আটকানো গেলে তো আটকাতাম না দাদিজান। তোমারে ছাড়া কি আর মন টিকবো ঐহানে।”

“এহন রসের কথা বাদ দে। যা জিগাইলাম হেইডার কথা ক।”

“ঐ যে বললাম আটকানো যাবে না। তাছাড়া আমি কি জানি ওপর থেকে যা আদেশ দেবে আমাকে তাই মানতে হবে।”

“মাহফুজ!!”

‘আমি এসবের ভেতরে নাই মা।”

“তুইই তো যতো নষ্টের গোড়া। পোলাডারে যদি নিজের কাছে নাই রাখতে পারোস তাইলে কিসের কমিশনার তুই।”

“নিজের কাছে রাখার জন্য আমি ওকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বানাইনি মা। দেশের সেবা করার জন্য বানিয়েছি।”

“হইছে তোর ডায়লগ বাদ দে। নিজে তো পুলিশ পোলাডারে কেন পুলিশ বানাইতে হইবো। অন্য কিছু বানাইলে হইতো না।”

“তোমার নাতি চেয়েছে তাই হয়েছে এখানে আমার হাত নেই।”

“আহ হা দাদিজান কাল সকালে আমি চলে যাবো আর তোমরা কি শুরু করলে। মা, কাকাই, কাকিমনি তোমরা কিছু বলছো না কেন বলো তো।”

মুখরের কথা শুনে মুখরের মা নাদিরা খানম বললেন,,

“আমরা কি বলবো তুই বল এখানে একজন হোম মিনিস্টার আর একজন প্রাইম মিনিস্টার। আমরা নিরব জনগণ। জনগনের সামান্য কথা কি এই মিনিস্টার রা শুনবে।”

একথা শুনে মুখরের কাকাই আছলাম শাহরিয়ার বললেন,,

“ভাবি একদম ঠিক বলেছে।”

“হয়েছে আর ড্রামা করতে হবে না কাকাই। তোমার সাহস কতোদূর জানা আছে এতো বড় রাজনৈতিক নেতা হয়েও দাদিজান আর বাবার সামনে ভয় পেয়ে চুপ করে থাকো।”

“এটা ভয় নয় মুখর এটা সম্মান প্রদর্শন। আমি তাদের সম্মান করি তাই চুপ থাকি।”

“রাজনৈতিক নেতারা আর কিছু পারুক আর না পারুক জনগনের মন কথা দ্বারা কিভাবে গলাতে হয় তা ভালো করেই জানে।”

“এই মুখর রাজনীতি নিয়ে কিছু বলবি না।”

তখন মাহফুজ শাহরিয়ার বললেন,,

“হয়েছে এখন সবাই চুপচাপ খাও । কাল সকালে আমরা সবাই স্টেশনে ছাড়তে যাবো মুখর কে ছাড়তে।”

“কিরে নাফিয়া তুই এতো চুপচাপ কেন আজ এমনিতে জ্বালিয়ে মারিস।”

ভাইয়ের এরকম কথা শুনে নাফিয়া অভিমান করে বলল,,

“কাল থেকে আর কেউ তোমায় জ্বালাবে না ভাইয়া। থেকো তুমি সারাদিন আরামে।”

মুখর বুঝতে পারলো নাফিয়ার মন খারাপ তাই বোনের সাথে কাছে গিয়ে বলল,,,

“আমি চলে যাচ্ছি বলে মন খারাপ।”

“আমি কেন মন খারাপ করবো তুমি চলে গেলে আমার ভালোই হবে। সারা বাড়িতে আমি রাজত্ব করবো।”

“তা হোম মিনিস্টার কি তার পদ থেকে নেমে তোকে বসাবে।”

“ভাইয়া তুমি একদম মজা করবে না আমার একটুও ভালো লাগছে না। ভাবি আসলে আমি কিন্তু বলে দেব।

তখন মুখর মুচকি হেসে বলল,,

‘তুই গেলে না তোর ভাবি আসতে পারবে নাফি।”

মুখরের কথা শুনে হুট করেই পুরো পরিবেশ টা থম মেরে গেল। মুখর ওর দাদিজানের দিকে তাকিয়ে একটা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,,,

“যাই হোক মা কাল কিন্তু আমার ফেবারিট খাবার রান্না করবে। আর নাফি তুই পায়েস রান্না করবি।”

নাফিয়া কাঁদো কাঁদো মুখ করে ওর মায়ের কাছে গেল। মুখর পরিবেশটা ভালো করার জন্য নাফিয়ার পেছন পেছন গেল বোনের সাথে কিছুক্ষণ খুনশুটি করে ওর মন ভালো করে দিল। নাফিয়া আর মুখর এক বছরের ছোট বড়। পড়াশোনা শেষ আপাতত সে একটা বোরকার বিজনেস চালু করেছে। আছলাম শাহরিয়ার একজন রাজনৈতিক নেতা সামনের নির্বাচন এ এম পি এর জন্য দাঁড়াবে। তার এক ছেলে এক মেয়ে ছেলে আলভি আর মেয়ে মারিয়া। ছেলে বিজনেস করছে আর মেয়ে কলেজে পড়ে। আর বাকি মহিলাবিন্দু হাউজ ওয়াইফ।

_________________

আজানের ধ্বনি কানে যেতেই ঘুম থেকে উঠে ঘুম থেকে ওঠার দোয়া পরে বিছানা ছাড়লো মেহবিন। গ্ৰামের একটা আজান হয় যা মনকে প্রশান্তি দিচ্ছে শহরের মতো চার পাঁচ টা আজান মিক্সড নয়। যদিও দূরের গ্ৰামের আজান ও কানে ভেসে এলো তবুও ব্যাপারটা মন্দ না। ওয়াশরুম থেকে উযু করে ফজরের নামাজ আদায় করে নিল মেহবিন। সামনের বারান্দায় আসতেই দেখলো সামনের বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে বোধহয় ধান সেদ্ধ করছে। আলো ফুটতে শুরু করেছে তাই বারান্দার কেচিগেইট খুলে বাইরে বের হলো সে। একটু হাঁটাহাঁটি করলো তারপর পুরোপুরি আলো ফুটতেই ওর কানে আওয়াজ এলো মসজিদের ইমাম সাহেবের,,,

“”মক্তবের ছাত্র ছাত্রীরা তোমরা অতি তাড়াতাড়ি মক্তবে চলে আসো। (!!) গ্ৰামের সম্মানিত মা ও বোনেরা আপনারা আপনাদের ছেলে মেয়েদের কুরআন শিক্ষার জন্য মসজিদে পাঠিয়ে দিন।(!!) মক্তবের ছাত্র ছাত্রীরা!!!!

আজকেই প্রথম শুনলো মেহবিন হয়তো দুদিন ইমাম সাহেব ছিলেন না। তবে এভাবে কুরআন শিক্ষার জন্য ডাকাটা ওর ভালো লাগলো। এভাবে শহরে ডাকে না। মেহবিন হেঁসে রান্না ঘরের চলে গেল। আপাতত নিজের এখনের জন্য রুটি ডিম ভাজি আর আলু ভাজি করবে। দুপুরের জন্য ভাত আর মাছ রান্না করে নিয়ে যাবে। ও তাড়াতাড়ি করে রান্না শেষ করলো তারপর গোসল করে রেডি হয়ে নিল। এদিকে কালকের মহিলারা ধান দিয়ে ফেলেছে মেহবিন এক পলক দেখলো এগুলো তার কাছে নতুন। সে বের হলো তারপর শুধু ঘরে তালা মারলো বারান্দা টা এমনিই আটকে দিল আজ আর কেচিগেইট এ তালা দিল না তারপর মহিলাদের কাছে গিয়ে বলল,,

“বারান্দায় টুল রাখা আছে দুটো। আপনারা ওখানে গিয়ে জিরিয়ে নিয়েন আজ খোলাই রাখলাম বারান্দা।

“তুমি আমাগো জন্য বারান্দা খোলা রাখছো কেন?”

“আপনাদের একটু স্বস্তির জন্য।”

“যদি কেউ ঘরের থন কিছু নিয়া যায় তাইলে কি করবা।”

“কিছুই না শুধু পুলিশ ডাকবো।”

এ কথা শুনে মহিলা দুটো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল যা থেকে মেহবিন হেঁসে বলল,,,

“আরে চিন্তার কোন কারন নেই। এই ঘরে রাখার মতো কিছুই নেই। ঘরে তালা মেরেছি শুধু বারান্দা খোলা। তাছাড়া আপনারা দুজন আছেন তো পাহাড়া দেবেন আপনাদের ধানের সাথে। তবে আমি আসার আগে আপনাদের কাজ হয়ে গেলে চলে যাবেন সমস্যা নেই।আসছি আল্লাহ হাফেজ।”

বলেই মেহবিন চলে গেল। মহিলা দুটো ওর দিকে তাকিয়ে রইল হয়তো বোঝার চেষ্টা করলো মেয়েটা কেমন। মেহবিন রাস্তায় যেতেই দেখলো আবুল দাঁড়িয়ে আছে। তা দেখে মেহবিন বলল,,

“আবুল ভাই আপনি?”

“তুমি তো এইসময়ই হাসপাতালে যাও তাই নামাই দিতে আইলাম।”

“ওহ আচ্ছা চলেন তাহলে। তবে হ্যা এই সময় আমার একার জন্য আপনি আবার অন্যদের রিক্সায় নেবেন না। এমনটা করবেন না এতে কিন্তু আমার খারাপ লাগবে।”

“আরে না আজ কেউ আছিল না দেইখা নিতে আইছি তোমারে।”

“বিশ্বাস করে নিলাম আজ।”

“আমি কিন্তু সইত্য কইলাম।”

“আচ্ছা আমিও বিশ্বাস করছি।”

_________________

সকালে হাসপাতালে যেতেই মেহবিন দেখলো কালকের চেয়ারম্যান বাড়ির ড্রাইভার তার বউকে নিয়ে এসেছেন। মেহবিন চেক আপ করে ওষুধ লিখে দিল। আর বলল ঠিক হয়ে যাবে অনেকদিন ধরে ঠান্ডা লাগার কারনে সর্দি বুকে বসে গেছে তাই এমনটা হয়েছে। দুপুরের খাবার খাওয়ার পর একটা রোগীর খুব সিরিয়াস অবস্থা হয়ে গেল। কিন্তু কাল আর আজ সকালেও ভালো দেখে গিয়েছিল কিন্তু হুট করে এমনটা হওয়ার কারন খুঁজে পেল না মেহবিন। ও তাড়াতাড়ি করে সেই রোগীর কেবিনে গেল। মেহবিনের সাথে একজন সিনিয়র ডক্টর ও গেল । পেশেন্ট কে দেখে সিনিয়র ডাক্তার বললেন,,,

“রোগীর তো খুব সিরিয়াস কন্ডিশন ওনাকে এখানে রাখা ঠিক হবে না। আপনি বরঞ্চ ঢাকায় এস.এস. হাসপাতালে নিয়ে যান।”

তখন মেহবিন বলল,,

“ওখানে কেন যাবে? এখানেই তো ওনাকে সুস্থ করা সম্ভব এখন না হয় অবস্থা একটু ক্রিটিকাল।”

“আপনি বুঝতে পারছেন না ডক্টর মেহবিন। এখন এখানে রাখাটা ঠিক হবে না কখন কি হয় সম্পূর্ণ দায় আমাদের পরবে। তাছাড়া এসব.এস. হাসপাতাল ভালো হাসপাতাল ওখানে গেলে উনি সুস্থ হয়ে যাবেন।”

“ওনার যে অবস্থা ওখানে গেলে ঠিক হয়ে যাবে এর গ্যারান্টি কি? তাছাড়া দায় এড়ানোর জন্য আমরা কেন অন্য হাসপাতালে যেতে বলবো। এখন তো ওনার জন্য ট্রাভেল করা বেশ রিস্কি।”

“ডক্টর মেহবিন আমি আপনার সিনিয়র আমি নিশ্চয়ই আপনার থেকে এ সম্পর্কে ভালো জানি‌। আমি যেহেতু বলছি নিশ্চয়ই পেশেন্ট এর ভালোর জন্যই বলছি।”

“কিন্তু স্যার ওনাকে এখানে রেখেই সুস্থ করা সম্ভব। শুধু একটা ইনজেকশন লাগবে। আমি ওটা আনতে পাঠিয়েছে ইনজেকশন টা দেওয়ার পাঁচ মিনিট পরেই ওনার সব নরমাল হয়ে যাবে।”

“আমি আপনার সিনিয়র। কই আপনি তো আমায় বলেন নি।”

‘আমি ভেবেছিলাম আমার বলার প্রয়োজন হবে না। আপনি সিনিয়র আপনিই নিশ্চয়ই বলবেন ওটা আনার কথা। কিন্তু আপনার মাথায় তো এটাই ঘুরছে কিভাবে ওনাকে এস.এস. হাসপাতালে শিফট করা যায়।”

“আপনি কিন্তু আমাকে অপমান করেছেন?”

“মোটেই না আমি শুধু সত্যি বলছি। দেখি সরুন ইনজেকশন এসে গেছে।”

বলেই মেহবিন ওয়ার্ডবয় এর থেকে ওষুধ টা নিয়ে সিরিন্জ এ ঢুকালো। ইনজেকশন টা পুশ করবে এমন সময় সিনিয়র ডক্টর বাবুল বলে উঠলো ,,

“আমি আপনার সিনিয়র আপনি আমাকে না জানিয়ে পেশেন্টকে কোন ইনজেকশন দিতে পারেন না।”

“আমি কোন প্যাক্টিসিং ডক্টর নই স্যার । আমি একজন ডক্টর আমি নিশ্চয়ই জানি কোন ওষুধে কি রকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাছাড়া আপনার সাথে কথা বলে আমার সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না।”

বলেই মেহবিন ইনজেকশন পুশ করে দিল। ডক্টর বাবুল রেগে মুখ শক্ত করে রইলো। পাঁচ মিনিট পরেই লোকটার কন্ডিশন স্বাভাবিক হয়ে গেল। মানে অসুস্থ অবস্থায় যতটুকু হওয়া আর কি। তা দেখে মেহবিন বলল,,

“দেখুন মিস্টার সিনিয়র ডাক্তার বাবুল সব ঠিক আছে এমনি এমনি তো আর ডাক্তার হইনি। বাই দা ওয়ে এস.এস. হাসপাতাল কি আপনার বা আপনার কোন আত্মীয়ের নাকি। বারবার বলছিলেন সেই হাসপাতালে নিতে। শুনুন একটা কথা মনে রাখবেন যে হাসপাতালে আছেন সেটাকে সম্মান করতে শিখুন। নিজের কাজের জায়গা কে একদম নিজের করে নিন। এখানে এসেছে মানে আপনাদের ওপরে ভরসা করে এসেছে নিজের সর্বচ্চোটা দিন যখন আপনার হাতের একদম বাইরে তখন কোন হাসপাতাল রেকোমেন্ট করুন। আগেই হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে হবে।

ডক্টর বাবুল শক্ত মুখে বলল,,

“তোমায় আমি দেখে নেব। তুমি আমাকে অপমান করেছো।”

“আমি তো দাঁড়িয়েই আছি দেখেন তবে হ্যা দৃষ্টি সংযত করে। নাহলে কিন্তু চোখের যিনা হয়ে যাবে।আর হ্যা আমি তো আপনাকে কিছুই বলিনি আপনি যদি অপমানবোধ করেন তাহলে আমার কি!”

বলেই মেহবিন বেরিয়ে আসলো। কার সাথে কিরকম ব্যবহার করা উচিৎ সেটা সে ভালো করেই জানে। বিকেলে মেহবিন সিসি টিভি ক্যামেরা রুমে গেল তার সন্দেহ হচ্ছে কিছু তো ঘটেছে দুপুরে তার জন্য প্রায় সুস্থ হওয়া পেশেন্টের এরকম অবস্থা হলো। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখলো তাকে দেখানো যাবে না এই হাসপাতালের এমডি এর পারমিশন ছাড়া আর কাউকে সিসি ফুটেজ দেখানো নিষেধ। এটা দেখে মেহবিনের মনে সন্দেহ আরো গাঢ় হলো। তবে ও লোকটাকে বুঝতে দেয় নি কিসের জন্য এসেছে শুধু বলেছে একটা পেশেন্ট হাঁটতে বেরিয়েছে পাঁচ মিনিট আগে কোথায় ছিল সেটা দেখে দিতে। সে বলেছে এখন কোথায় আছে সেটা দেখিয়ে দেবে কিন্তু আগের ফুটেজ পারমিশন ছাড়া দেখাবে না। মেহবিন ঝামেলা না করেই আচ্ছা ঠিক আছে বলে চলে এসেছে। বিকেলে পাঁচ টায় মেহবিনের ডিউটি শেষ হলেই ও বাইরে বেরিয়ে বাড়ির পাকা রাস্তায় উঠতেই দেখলো দুজন ব্যক্তি ফুল আর চকলেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের চেহারা দেখে মেহবিনের মুখে হাঁসি ফুটে উঠল। তাদের মধ্যে একজন প্রথমে সামনে এসে বলল,,

“আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন ডক্টর ম্যাডাম?”

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনারা দুজন কেমন আছেন?”

তখন পাশ থেকে আরেকজন বলল,,

“যে জিজ্ঞেস করেছে শুধু তাকেই জিজ্ঞাসা করলেই হবে। কারন আরেকজন আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করবে তখন না তাকেও জিজ্ঞেস করা যাবে।”

এ কথা শুনে মেহবিন তার দিকে তাকিয়ে বলল,,

“মিস্টার মুখর শাহরিয়ার আপনার কি আমার যৌথভাবে বলা পছন্দ হয় নি।”

“না পছন্দ হলে কি করবেন?”

“তাহলে আর কোনদিন ও যৌথভাবে বলবো না।”

কথাটা শুনে মুখরের মুখের হাসিটা আরো বিস্তৃত হলো। আর বলল,,

“মিস্টার আরবাজ দেখেন সি! সি!”

“এই মুখর তোর ঢং বাদ দে তো। এই যে ডক্টর ম্যাডাম আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।”

“এখানে ঢং এর কি দেখলি।”

“তোকে পরে দেখছি তো মিস বিহঙ্গিনী কথা ছিল প্রতিটা সাক্ষাতেই আপনাকে চকলেট দিতে হবে। তাই
এই যে আপনার চকলেট আর নতুন হাসপাতালে জয়েন হয়েছেন তাই এই ফুলগুলো। শুভকামনা রইলো।”

“শুকরিয়া চকলেট বয় না না বাজপাখি।”

“বাজপাখি?”

“মিশুমনির বাজপাখি নামটা পছন্দ হয়েছে তাই আজ থেকে আর চকলেট বয় নয় বাজপাখি বলে ডাকবো।”

“মিশু কিন্তু পারফেক্ট নাম দিয়েছে আরবাজ।”

“মুখর তুই চুপ থাক। শুনুন বিহঙ্গিনী বাজপাখি বলতে চান তা ঠিক আছে কিন্তু বাজপাখি বললে কিন্তু একটু সমস্যা হবে বাজপাখি কিন্তু ছোট ছোট পাখির জন্য বিপদজনক কোনসময় হুট করেই হামলা করে বসে একদম তুলে নিয়ে যাবে তার ঠিক থাকবে না।”

“পাখিদের তুলে নেওয়া সহজ হলেও বুদ্ধিমতী পাখিকে তোলা সহজ হবে না। কারন সে জানে টিকে থাকতে হলে কি করা প্রয়োজন বুঝলেন বাজপাখি।”

“এই জন্যই তো তুলতে পারি নি এখনো।”

একথাটা শুনে মুখর শব্দ করে হেঁসে উঠল। মেহবিন মুচকি হাসলো। তা দেখে আরবাজ বলল,,

“একদম হাসবি না মুখর তোর এই হাঁসি আমার ভাল্লাগে না।”

‘হাঁসি পেলে হাসবো না। কি আজব কথাবার্তা বলিশ।”

আরবাজ কিছু বলবে তার আগেই ওর ফোন এলো ও ফোনে কথা বলতে বলতে দূরে চলে গেল। তা দেখে মুখর ওর হাতের লাল অর্কিড ফুলগুলো এগিয়ে দিয়ে বলল,,

“কথা ছিল প্রতিটা সাক্ষাতেই এই ফুলের জন্য ফুল আনতে হবে। তাই এই ফুল গুলো নিয়ে আমাকে ধন্য করুন।”

মেহবিন মুচকি হেসে ফুলগুলো নিয়ে বলল,,

“শুকরিয়া! হাতে তো চকলেট দেখছি এগুলো কার জন্য?”

“বিহঙ্গিনী চকলেট খেতে পছন্দ করে তাই চকলেটগুলো দেখে যেন আমার কথা মনে পড়ে তাই এনেছি।”

বলেই হাতের বড় চকলেট বক্সটা মেহবিনের দিকে এগিয়ে দিল । মেহবিন সেগুলোও নিল। হাত ফুল হয়ে গেছে আরবাজ আর মুখরের ফুল আর চকলেট দিয়ে।

“সব ঠিক আছে। বাই দা ওয়ে ইন্সপেক্টর মুখর শাহরিয়ার এর ইউনিফর্ম এ আরো একটা স্টার যুক্ত হয়েছে শুনলাম কনগ্ৰাচুলেশন।”

“শুকরিয়া ডক্টর।”

“আচ্ছা আমি তাহলে যাই বাড়ি যাবো। আপনি নিশ্চয়ই আপনার বন্ধুর বাড়ি উঠবেন।”

“কয়েকদিনের জন্য তাই ই। কিন্তু পরে থানার আশেপাশে বাড়ি ভাড়া নেব। এখান থেকে অনেকটা দূরে। কোন সমস্যায় পরলে আমাকে জানাবেন কিন্তু।

‘অবশ্যই!”

“মেহবিন?”

“হুম!”

“কেমন আছেন?”

‘আলহামদুলিল্লাহ জীবন তো জীবনের মতোই চলছে।”

“এটা আমার প্রশ্নের উত্তর নয়।”

“আপনার অজানা থাকার কথা নয় মিস্টার মুখর শাহরিয়ার। যাই হোক আপনি কেমন আছেন?”

“আলহামদুলিল্লাহ সব ঠিকঠাক।”

“পাঞ্জাবিওয়ালা আজ ইউনিফর্ম এ নেই তবুও গায়ে পাঞ্জাবি নেই কেন?”

কথাটা শুনে মুখর হাসলো কারন সামনের মানুষটার কাছে তার নামকরন ও ডাকের সম্মোধন পাঞ্জাবিওয়ালা। যেভাবে আরবাজ চকলেট বয়। মুখর হেঁসে বলল,,,

“এভাবেই!”

“এই মুখর চল বাবা ফোন করেছিল তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে।”

আরবাজের কথায় দুজনেই তার দিকে তাকালো। আরবাজ বলল,,

“ডাক্তার ম্যাডাম তাহলে চলুন ড্রপ করে দিই।”

“যেখানে আমি চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে যাই না। সেখানে চেয়ারম্যান এর ছেলের সাথে কি যাবো।”

“কেন চেয়ারম্যান আর চেয়ারম্যান এর ছেলে কি আপনাকে খেয়ে ফেলবে।”

“খেয়ে ফেলবে না তার থেকেও আচ্ছা বাদ দিন। আপনারা যান আমি গেলাম। আল্লাহ হাফেজ।”

বলেই মেহবিন হাঁটা ধরলো মুখর আর আরবাজ দু’জনেই শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো। তারপর গাড়িতে করে চলে গেল। এখানে মানুষ জন নেই বললেই চলে তাই এতোক্ষণ কথা বললো ওরা। ওদের সাথে কথা বলতে বলতে মেহবিনের অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে । বাড়ির সামনে যেতেই দেখলো ওর বাড়ির সামনের গাছের নিচে তাজেল বসে আছে। তা দেখে মেহবিন হেঁসে বলল,,,

“কি ব্যাপার নেত্রী এসময় এখানে কেন?”

মেহবিনের কথায় তাজেল উঠে দাঁড়ালো আর বলল,

“তোমার বাড়ি পাহারা দিচ্ছিলাম। বাড়িতে গেলেই আজ মা মারবো তাই।”

“কেন মারবে কেন?

বলতে বলতেই মেহবিনের নজর গেল তাজেলের পায়ে গোড়ালিতে অনেক খানিক কেটে রক্ত পরছে । তা দেখে মেহবিন তাড়াতাড়ি করে ওর কাছে গিয়ে বলল,,

“পা কাটালো কিভাবে? বিরোধী দলের সাথে মারপিট করেছো নাকি? আমার সাথে চলো ওষুধ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি। হাঁটতে পারবা?

“অনেক ব্যাথা।”

“দাঁড়াও আমি এখনি আসছি!”

বলেই মেহবিন তাড়াতাড়ি করে গিয়ে বারান্দায় ওর ব্যাগ ফুল আর চকলেট গুলো রেখে এলো। তারপর আবার এসে তাজেলকে কোলে তুলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেল। বারান্দায় বসিয়ে ঘরের তালা খুলে আবার কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিল । তারপর পানি আর ওষুধ এনে ড্রেসিং করে ব্যান্ডেজ করে দিল। কিন্তু তাজেল কিছুই বললো না ওষুধ লাগানোর সময় হালকা আওয়াজ করেছিল। ব্যান্ডেজ শেষ করে মেহবিন বলল,,

“ব্যাথা কমেছে?”

“হুম আচ্ছা ডাক্তার তুমি কেমনে জানলা আমি মারামারি করছি।”

“তারমানে সত্যি সত্যি মারামারি করেছো?”

“হ ঐ কুলসুমের বড় ভাই আছে না ও আমার মায়রে নিয়া খারাপ কথা কইছে।তাই আমি ওরে ধাক্কা দিছিলাম তারপর মারামারি শুরু কিন্তু ও হুট কইরা আমারে ধাক্কা দেয় হেনেই চারাতে (মাটির পাত্রের ভাঙ্গা টুকরো)লাইগা পা কাইটা গেছে গা।”

“বুঝলাম কিন্তু বাড়ি না গিয়ে আমার বাড়ির সামনে কি করছিলা?”

“এই অবস্থা মা দেখলে আমারে মারবো আর যদি হুনে আমি মারামারি করছি তাইলে আমি শেষ। হেই জন্য এনে আইছিলাম পরে দাদি কইলো তোমার বাড়ি পাহারা দিতে তারে নাকি কইছিলা পাহারা দিতে।

” পাহারা দিতে বলছিলাম ঠিকই কিন্তু আবার চলেও যেতে বলেছি । আচ্ছা বাদ দাও এখন বলো এতখানিক পা কেটে গেছে তাও মারবে।”

“হেই জন্য না মারলেও মারামারি করছি এইডা হুইনা নিশ্চিত মারবো। আমার জন্য মাইনসের কথা শোনা লাগবো যে। ঐ কুলসুমের মায় মনে অয় এতোক্ষণে আমগো বাড়ি চইলা গেছে বিচার দিতে।”

“আচ্ছা চলো আমি তোমাকে কোলে করে বাড়ি দিয়ে আসি এই অবস্থায় তো হাঁটতেও পারবে না।”

“তোমারে এই বিদেশি ফুল দিছে কিরা? আবার দেহি বিদেশি চকলেটও দিছে।”

“তুমি খাবে চকলেট?”

‘আমার না বিদেশি চকলেট খুব ভালো লাগে। আমারে কয়ডা বিদেশি ফুল ও দিও বাড়ি গিয়া কুলসুম আর নওশি আপারে দেহামু নওশি আপা খুব খুশি হইবো।”

মেহবিন চকলেট বক্সগুলো ফ্রিজে রেখে দিল। আর ফ্রিজ থেকে পাঁচটা কিটক্যাট চকলেট তাজেল কে দিল। তাজেল একটা নিতে চাইলে মেহবিনের কথায় পাঁচটিই নিল। তারপর আরবাজ এর ওখান থেকে কতোগুলো আর মুখরের ওখান থেকে ফুল এনে আলাদা করে বেঁধে এক তোরা বানালো আর তাজেলের হাতে ধরিয়ে দিল। তারপর ওকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে পরলো তাজেলের বাড়ির উদ্দেশ্যে। রাস্তার ওপাশে যে বাড়িগুলো তার ভেতরের সবথেকে শেষের বাড়িটা তাজেল দের। ওকে কোলে নিয়ে যেতে দেখে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে রইল সবথেকে অবাক হয়েছে তাজেলের হাতে ফুল আর চকলেট দেখে। কিন্তু তাজেলের বাড়ি গিয়ে মেহবিন নিজেই অবাক হয়ে থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।

~চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে