#কাঠগোলাপের_আসক্তি
#পর্ব_৩৭
#ইসরাত_তন্বী
❌অনুমতি বিহীন কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ❌
সময় মধ্যাহ্ন।প্রকৃতি তার তীব্র রোদের প্রখরতায় হাঁসফাঁস করে তুলছে জনজীবন।সকালের ঠান্ডা আবহাওয়া কাটিয়ে এই অসহনীয় তাপমাত্রায় সকলের অবস্থায় শোচনীয়।চৌধুরী বাড়ির পরিবেশ আজ তাপমাত্রার মতোই গরম।সকাল থেকে একের পর একেক চমক পেয়েই চলেছে সকলে।হৃদিত,মেহরিমার সকালে বেরোনোর কথা থাকলেও সময় পরিবর্তন করে রাতে ফিক্সড করা হয়েছে।আয়াশ সেই তখন ঘরে ঢুকেছে আর বের হয়নি।শ্রেয়া চৌধুরীর জ্ঞান ফিরেছে বারোটা পঁয়তাল্লিশ নাগাদ।প্রায় ত্রিশ মিনিট সেন্সলেস অবস্থায় ছিলেন।অতিরিক্ত টেনশন প্লাস স্ট্রেস নেওয়ায় সেন্স হারিয়েছিলেন।আরিফ চৌধুরী একবারের জন্যও ওনার রুমে যাননি ওনাকে দেখতে।বলা বাহুল্য আরিফ চৌধুরী আলাদা রুমে থাকেন।ঘন্টা খানেক হতে চললো আব্রাহাম তালুকদার হসপিটাল থেকে বাসায় এসেছেন।
চৌধুরী বাড়িতে আজ দ্বিতীয় বারের মতো পুলিশের আগমন।প্রথম বার এসেছিল কয়েক যুগ আগে।সবাই এক বুক অস্থিরতা নিয়ে ড্রয়িং রুমে দাড়িয়ে আছে।হৃদিত এসআই এর পাশের সোফায় আরামসে বসে কারোর সাথে টেক্সট এ কথা বলছে।
“হঠাৎ আপনি এখানে?”
আরিফ চৌধুরীর কথায় অমিত সাহা সোজা সাপটা জবাব দেয়,
“আপনার বোন-জামাই আব্রাহাম তালুকদার ব্যক্তিগত আক্রোশের জের ধরে মৃত জলিল শেখকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে।শুধু তাই নয় উনি নিজেই কোম্পানি থেকে এক কোটি টাকা সরিয়েছেন ওনার সহযোগীর সাহায্যে। যিনি বর্তমানে কোম্পানির সিইও পদে কর্মরত আছেন।এই যে দেখুন আপনার বোন-জামাই নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন সবটা।আর হ্যাঁ উনি ড্রা গ বিজনেসের সাথেও যুক্ত।বাইরের দেশ থেকে ড্রা গ এনে তরুনদের মাঝে বিলিয়ে দেন।ওনাকে বাঁচানোর আর কোনো উপায় নেই স্যার।”
কথাগুলো বলেই নিজের ফোন থেকে একটা ভিডিও অন করে দেয় অমিত সাহা।যেখানে আব্রাহাম তালুকদার হসপিটালের বেডে বসে দাপটের সাথে নিজের করা খা রা প কাজ গুলো বলে চলেছেন।হৃদিতের ঠোঁটে ক্ষীণ বক্র হাসির রেখা ফুটে ওঠে।আরিফ চৌধুরী সেটা খেয়াল করতেই মনে মনে হাসেন।সবাই সবটা শুনে হতভম্ব হয়ে যায়!আয়রা চৌধুরী হায় হায় করতে করতে বলেন,
“এগুলো সব মিথ্যে।অলিভিয়ার বাবাকে দিয়ে জোর করে এগুলো বলানো হয়েছে।ও এরকম কিছুই করেনি।ও নি র্দো ষ।আমার সোনার মতো সংসারের দিকে কোন শ কু নে র নজর পড়লো আল্লাহ!”
“সেটা আদালতে যেয়ে বলবেন।এছাড়াও ওনার ড্রা গ বিজনেসের মেইন ইনফর্মেশন গুলো আমাদের কাছে আছে।উনি এখন কোথায়?”
আয়রা চৌধুরী কিছু বলার আগেই আরিফ চৌধুরী বলেন,
“স্ট্রেট যেয়ে তিন নম্বর রুমে পাবেন।নিয়ে যান আপনাদের সাথে।”
আরিফ চৌধুরীর কথামতো অমিত সাহা দু’জন কনস্টেবলকে সাথে নিয়ে আব্রাহাম চৌধুরীর ঘরের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরেন।খুঁজে পেয়েও যান।আব্রাহাম তালুকদার বিছানায় শুয়ে আছেন।অমিত সাহাকে দেখতে নিজেই উঠে এসে হাত দুইটা বাড়িয়ে দেন।একজন কনস্টেবল হাতকড়া পরিয়ে দেয়।অতঃপর সঙ্গে করে ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসে।আয়রা চৌধুরী,অ্যামেলিয়া,অলিভিয়া আহাজারি করছে।তারা আব্রাহাম তালুকদারকে কিছুতেই নিয়ে যেতে দিবে না। কিন্তু পুলিশদের শক্তির কাছে ওদের শক্তি কিছুই না। অ্যামেলিয়া, অলিভিয়া আজ নিজের বাবার জন্য কান্না করছে।অথচ কিছুদিন আগেই ওদের মতোই কারোর বাবাকে মৃ ত্যু র দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছিল!নিয়তি কখন কাকে কোথায় দাড় করিয়ে দেয় বোঝা মুশকিল।বাড়ির সকলে নীরব দর্শক।আজ তারা যেন সত্যের পক্ষে।এইসব কিছু দেখেও দেখছে না।আয়রা চৌধুরী কোনো উপায় না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে আরিফ চৌধুরীর নিকট এগিয়ে যান,
“ভাইজান আপনি কিছু করবেন না?ওকে তো নিয়ে যাচ্ছে।”
“এখানে আমার কী করার আছে?পা প করলে শা স্তি পেতেই হবে।সেটা তুই করলেও পাবি।”
কথাটা বলেই আরিফ চৌধুরী ওখান থেকে চলে যান।ওনার পিছু পিছু আজাদ চৌধুরীও যান। ভাইজানের কথায় হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আয়রা চৌধুরী!এটা তার ভাইজান হতেই পারে না।যে ভাইজান সবার আগে নিজের বোনের সুখের কথা ভেবেছে আর আজ!তবে কী খারাপ সময়ে কাউকে পাশে পাবে না?কীসের শা স্তি দিচ্ছে আল্লাহ!পরক্ষণেই নিজের পা পে র খাতাটা মানসপটে ভেসে ওঠে।অমিত সাহা আব্রাহাম তালুকদারকে নিয়ে চলে যান।আব্রাহাম তালুকদার যাওয়ার আগে হৃদিতের দিকে হিং স্র চাহনি দিয়ে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকেন।যার অর্থ উনি ফিরবে শিঘ্রই।তখন এর হিসাব মেটাবে।আয়রা চৌধুরী ফ্লোরে বসেই কান্না জুড়ে দেয়।সাথে ওনার দুই মেয়ে তো আছেই।বাড়ির দুই বউ ওনাদেরকে শান্তনা বাণী শোনাতে এগিয়ে যান।দোতলার করিডোরে দাঁড়িয়ে সবটা শান্ত চোখে দেখেন শ্রেয়া চৌধুরী।উনি বুঝতে পারেন এবার ওনার পালা।আর তাতেই তাচ্ছিল্যের হাসি দেন।যে পৃথিবীর মানুষের হিং স্র তা থেকে বাঁচতে নিজেকে খারাপ বানিয়েছেন সেই পৃথিবীর মানুষ কী বিচার করবে?এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে একটু ভালোবাসা পাওয়ার আশা করা,একটু ভালো থাকায় আশা করাও বুঝি পাপ!শ্রেয়া চৌধুরী নিজের রুমে চলে যান।এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরেও মেহরিমার ঠোঁটে মুচকি হাসি।যারা বাবাকে কেড়ে নিয়েছে তাদের শা স্তি তো ও নিজে হাতে দেবে। প্রতি সেকেন্ড মৃ ত্যু য ন্ত্র ণা অনুভব করিয়ে তবেই মারবে।হৃদিতের দেওয়া সারপ্রাইজ টা মেহরিমার মনে প্রশান্তি এনে দেয়। এখনও খালামনির মৃ ত্যু র রহস্য উন্মোচন করা বাকি।মাত্রই তো সবকিছুর শুরু।
_____
“ভাইয়া দরজা খোলো?”
ওপাশ থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আবারও ডাকে হৃদিত।
“ভাইয়া….”
হৃদিত নিজের কথা সম্পূর্ণ করার আগেই ওপাশ থেকে দরজার লকটা খুলে যায়।হৃদিত দরজাটা হালকা সরিয়ে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে।পুরো রুম অন্ধকারে ডুবে আছে।জানালা বন্ধ করে পর্দা টানা।পর্দা গলিয়ে মাঝে মধ্যে ল্যাম্পপোস্টের আবছা হলুদ আলো প্রবেশ করছে।ভেতরে সিগারেটের ধোঁয়া আর তীব্র গন্ধে কেমন একটা ভ্যাপসা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সম্পূর্ণ রুম জুড়ে গভীর নিরবতা বিরাজমান।এতো অন্ধকারের মাঝেও আয়াশের অবস্থান ঠিকই বুঝে যায় হৃদিত।দরজাটা লক করে ধীর পায়ে আলমিরার দিকে এগিয়ে যায়।আয়াশের পাশে ফ্লোরেই হাঁটু জোড়া ভাজ করে বসে।আয়াশের দিকে গভীর ভাবে তাকাতেই আবছা আলোয় বুঝতে পারে চোখজোড়া লাল হয়ে ফুলে আছে।দীর্ঘক্ষণ কান্না করার ফল।ভালোবাসার মানুষ হারালে কঠিন মনের ছেলেরাও বুঝি কান্না করে!
“আজব!ছ্যাঁকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে যাওয়া মানুষের মতো বিহেব কেনো করছো তুমি?”
আয়াশ নিরুত্তর।ওর এই নীরবতা যেন অনেক কথার সাক্ষী।মনের গহীনে লুকানো ব্যথা,চার দেওয়ালের মাঝে প্রতিধ্বনি হওয়া এক মিষ্টি কন্ঠস্বরের সাক্ষী।হৃদিত কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবারও বলে,
“আমরা মানুষেরা একটু স্যাক্রিফাইস একটু কম্প্রোমাইজ করলেই কিন্তু সব সম্পর্ক গুলো আরও সুন্দর হয়ে ওঠে।সম্পর্কে বিচ্ছেদ শব্দটা আর আসে না।তবুও আমরা একটু স্যাক্রিফাইস, একটু কম্প্রোমাইজ করতে দ্বিধাবোধ করি।এর কারণটা কী জানোতো?আমরা মানুষেরা সবসময় নিজের টা বুঝি অন্যেরটা না।মানুষ স্বভাবগত ভাবেই স্বার্থপর।”
“দুঃখের দিন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে আমি নিজেই শেষ হয়ে যাবো।আমি নিজেই নিজের কাছে এক ভ য়ং ক র যন্ত্রণা।”
ভাঙা কন্ঠস্বর আয়াশের।হৃদিতের বুকে সুক্ষ্ম ব্যথা অনুভব হয়।হাসিখুশি ভাইটার এ কী অবস্থা!তবে আয়াশকে কথা বলাতে পেরে হৃদিত মনে মনে বেশ খুশি হয়।মুখে গম্ভীর ভাব লেপ্টে রেখেই বলে,
“হারিয়ে যাওয়া কী এতই সহজ?তোমার মতো আমিও ওইসব কথা হাজার বার ভেবেছি। কিন্তু বিশ্বাস করো প্রতিবার কোনো না কোনো পিছুটান আমাকে পিছন থেকে আঁকড়ে ধরে নিজের সাথে রেখে দিয়েছে।”
“আমার তো কোনো পিছুটান নেই।”
“পিছুটান থাকা লাগে না।হয়ে যায়। তোমার কাঁধে একটা দেশের জনগনের দায়িত্ব।এটাই তো সবচেয়ে বড় পিছুটান। আচ্ছা শোনো অবনী মা তোমার সাথে একটু কথা বলবে।ওনার সাথে কথা বললে আশাকরি তোমার ভালো লাগবে।তোমার মা আর ওনার মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ।”
আয়াশ না করেনা।হৃদিত কল দেয়।কয়েক সেকেন্ড পেরোতেই কল রিসিভ হয়।আয়াশ নিজেকে ধাতস্থ করে নেয়।ওপাশ থেকে ভেসে আসে অবনী শেখের স্নেহপূর্ণ কন্ঠস্বর,
“আসসালামুয়ালাইকুম।আয়াশ বাবা?”
“ওয়ালাইকুমুস সালাম আন্টি।জি আমি আয়াশ বলছি।”
“কেমন আছো বাবা?”
“আলহামদুলিল্লাহ,আল্লাহ রেখেছে ভালো।”
“আমি সবটা শুনেছি।ওই টপিক নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না বাবা। আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী।আমি শুধু চাই আমাদের আগের আয়াশ টা যেন বেঁচে থাকে।অবহেলিত আয়াশের মাঝে হাসিখুশি আয়াশটা যেন হারিয়ে না যায়। তুমি যতক্ষণ হাসবে ততক্ষন তোমার সাথে পুরো পৃথিবী হাসবে।এই পৃথিবী কাউকে কিচ্ছু দেয় না।বুদ্ধি,হাসি আর পরিশ্রম দিয়ে সবটা জয় করে নিতে হয়।”
অবনী শেখের কথায় আয়াশ মৃদু হাসে।এইতো জ খ ম মনে একটু শান্তি মিলছে।অবনী শেখের যায়গায় নিজের মা হলেও কী মনটাতে এভাবেই শান্তি মিলতো?মনে প্রশ্নটা জাগলেও আশপাশ হাতড়ে কোনো উত্তর মেলে না।প্রশ্নটা কী এতোটাই কঠিন?নাকি উত্তরটা?আয়াশ জবাবে বলে,
“হাসিখুশি আয়াশকে হারাতে দেবো না আন্টি।”
“সোনা ছেলে আমার।খেয়েছো কিছু?”
“না আন্টি।”
“এটা কিন্তু ঠিক না বাবা।এক্ষুনি খাবে তুমি।আমার কথা রাখবে তো বাবা?”
অবনী শেখের মাতৃসুলভ আচরণে ওনার কথা ফেলতে পারে না আয়াশ।কথাটা রাখে।
“আচ্ছা আন্টি এক্ষুনি খেয়ে নেবো।”
“বাবা স্বপ্ন,শখ,আহ্লাদ সব ভেঙে যাক।নিজেকে কখনও একবিন্দু পরিমাণও ভাঙতে দিও না।ওই অন্ধকার কবরে কতশত মানুষ এক বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে শুয়ে আছে।জীবনের উর্ধ্বে কিছুই না।হায়াত যতদিন আছে কোনো না কোনোভাবে দিন ঠিকই কেটে যাবে। নিজেকে শক্ত রাখো।”
অবনী শেখের বলা কথাগুলো আয়াশকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে তোলে।আজ সারাদিনে নিজের সাথে করা অ ন্যা য় গুলো উপলব্ধি করতে পারে।নিজের মনের কোথাও একটা বেঁচে থাকার শক্তি,জোর খুঁজে পায়।মায়েরা তো এমনই হয়।তাহলে শ্রেয়া চৌধুরী কেন এমন না?সারাটাদিনের মধ্যে একটাবারও ছেলের নিকট কেনো এলেন না।তার ছেলেটা যে অধীর আগ্রহে তার জন্য অপেক্ষারত ছিল।তার কোলে মাথা রেখে জীবন নিয়ে অনেক অভিযোগ করার ছিল।মায়ের হাতের স্নেহের স্পর্শ অনুভব করার ছিল।কিন্তু এমন কিছুই তো হলো না।তবে কী মা সত্যিই পরিবর্তন হয়ে গেছে!অবনী শেখ আরও কিছু কথা বলে কল কেটে দেন।আয়াশ দুহাতে হৃদিত কে আঁকড়ে ধরে।
“তোর মতো একটা ভাই সকলের হোক হৃদিত।”
আয়াশের কথার পরিপ্রেক্ষিতে হৃদিত শুধু হাসে।ভাইকে দুহাতে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।
____
মেহরিমা,হৃদিত সব ঝামেলা মিটিয়ে অবশেষে একটু ক্ষণস্থায়ী সুখের আশায় চৌধুরী বাড়ি থেকে বেরিয়েছে।এখন ওরা দু’জন একজোড়া মুক্ত পাখির ন্যায় আকাশে উড়বে।গন্তব্যস্থল অজানা হলেও জীবনটা প্রশান্তিময় হবে।হোক না সেটা ক্ষণস্থায়ী।
আয়াশকে নিয়ে মেহরিমা,হৃদিত কিছুটা দুশ্চিন্তা মুক্ত এখন।আসার সময় আয়াশকে অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থাতেই পেয়েছে।শেখ বাড়িতে যেয়েও অবনী শেখ,মাধবীর সাথে দেখা করে এসেছে।মেহরিমা এক ঘন্টা যাবৎ গাড়িতে বসে আছে।হৃদিত ড্রাইভ করছে।মেহরিমার কাছে হার মেনে আজও গাড়ির জানালা খোলা রাখতে হয়েছে।পরিবেশ শান্ত,থমথমে,অন্ধকারাচ্ছন্ন। নিস্তব্ধতায় ঘেরা চারিপাশ।মেহরিমার দৃষ্টি জানালার বাইরে।রাস্তার দুইধারে সুউচ্চ সারি সারি গাছ পালা।তার মাঝে দিয়ে শ শ করে ওদের গাড়িটা ছুটে চলেছে।জানালা দিয়ে ঠান্ডা মৃদু হাওয়া এসে লাগছে তনু মনে।সকালের দিকে মনটা খারাপ থাকলেও এখন বেশ ফুরফুরে একটা মেজাজে আছে মেহরিমা।
“তোকে দেখে খুব খুশি মনে হচ্ছে!”
হৃদিতের কথা শুনে মেহরিমা ঘাড় ঘুরিয়ে হৃদিতের দিকে দৃষ্টিপাত করে। মুখে হাসি টেনেই বলে,
“কেনো বলুন তো?”
“এই যে আজ একটু বেশিই হাসছিস তাই।”
“আমাদের জীবনটা খুব সীমিত।হতাশা,দুশ্চিন্তায় মগ্ন হয়ে জীবনটা পার করে দেবো নাকি? শুনুন আপনি সব সময় এমন গোমড়া মুখো হয়ে থাকবেন না।নিজে হাসবেন অন্যকেও হাসাবেন। ছোট্ট এই জীবনটা উপভোগ করুন।নয়তো পরে আফসোস হবে।”
“আমার কাছে জীবন,জীবনের অর্থ মানেই শুধু তুই।তুই হাসলেই আমার জীবন পরিপূর্ণ।বিশ্বাস কর আমার একটুও আফসোস হবে না।”
নিজের কথার পরিপ্রেক্ষিতে এরকম উত্তর একদমই আশা করেনি মেহরিমা। অতিরিক্ত ভালোবাসা পেয়ে যাওয়ার খুশিতে চোখে পানি চলে আসে।সেই ছলছল চোখ নিয়েই একদৃষ্টিতে হৃদিতের দিকে তাকিয়ে থাকে।এই মানুষটাকে মেহরিমা খুব ভালোবাসে।এই মানুষটার মতো করে কেউ মেহরিমাকে আগলে রাখতে পারবেনা।ভালোবাসা দিয়ে মানুষটার সব পাপ মুছে পবিত্র করে তুলবে মেহরিমা।
“এভাবে তাকিয়ে থেকে আমায় নজর লাগিয়ে দিবি নাকি?”
হৃদিতের কথা শুনে মেহরিমা ভ্রু যুগল কুঁচকে ফেলে।পরক্ষণেই উচ্চস্বরে হেসে ওঠে।হৃদিত মুচকি হাসে।সারাদিনের সব কষ্টের মাঝে ভালো থাকার একমাত্র মেডিসিন অ্যানাবেলা।
#চলবে___
#কাঠগোলাপের_আসক্তি
#পর্ব_৩৮
#ইসরাত_তন্বী
❌অনুমতি বিহীন কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ❌
মেহরিমা পিটপিট করে চোখজোড়া মেলে তাকায়। নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করে।সুসজ্জিত একটা রুমে শুয়ে আছে।ওর তো এখন গাড়িতে থাকার কথা ছিল তাহলে এখানে কীভাবে এলো? কিডন্যাপ হয়ে গেল নাকি?হৃদিত কোথায়?মেহরিমা ভয় পেয়ে যায়।এক লাফে বিছানা থেকে নেমে পড়ে।দৌড়ে দরজার নিকট যেতেই শক্ত কিছু একটার সাথে ধাক্কা খায়।ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যেতে নিলেই শক্তপোক্ত একটা হাত এসে মেহরিমার কোমর জড়িয়ে নিজের বুকের উপর ফেলে।মেহরিমা ততক্ষণে ভয়ে চোখজোড়া বন্ধ করে ফেলেছে।
“এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন?পড়ে গেলে কী হতো?”
হৃদিতের কন্ঠস্বর কর্ণধার হতেই মেহরিমা চট করে চোখজোড়া খুলে তাকায়।হৃদিতকে নিজের সাথে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।হৃদিত ঘটনা যা বোঝার বুঝে যায়।মেহরিমার মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
“তুই ঘুমিয়ে পড়েছিলিস তাই আর জাগায়নি।এটা আমার বাগানবাড়ি।আমরা দুটো দিন এখানে থাকবো।”
মেহরিমা নিজেকে ধাতস্থ করে জড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই বলে,
“আপনি কোথায় ছিলেন?
“কিচেনে।তোর জন্য বিরিয়ানি রান্না করছিলাম।”
“আপনি রান্না পারেন!”
অবিশ্বাস্য কন্ঠস্বর মেহরিমার!হৃদিত মৃদু হেসে বলে,
“তোর জামাই সব পারে।”
“এখন কয়টা বাজে?”
“মধ্যরাত,বারোটা বাজে।আমি নিচে যাচ্ছি তুই এখানে বসে রেস্ট নে।আমি খাবার নিয়েই চলে আসবো।”
“নাআআআ।আমিও যাবো আপনার সাথে।”
একপ্রকার আঁতকে উঠে বলে মেহরিমা।হৃদিত মুচকি হাসে।ইশারায় পিছু পিছু আসতে বলে।হৃদিতের শার্টের একাংশ ধরে পিছু পিছু হাঁটতে থাকে মেহরিমা।নিচ তলায় নেমে ড্রয়িং রুমে দাড়িয়ে অবাক চোখে পুরো বাড়িটা দেখতে থাকে।একটা ছোট খাটো ডুপ্লেক্স বাড়ি এটা।ঘরের ওয়াল,সোফা সেট থেকে শুরু করে সবকিছুই ব্ল্যাক কালারের।ড্রয়িংরুমের প্রতিটা ফার্নিচার কাঁচের তৈরি।সবকিছুতেই আধিপত্যের ছোঁয়া লেপ্টে আছে।কী সুন্দর বাড়িটা!হৃদিত ততক্ষণে খাবারের প্লেট নিয়ে উপস্থিত হয়েছে।মেহরিমাকে আবারও ইশারা করে রুমের দিকে হাঁটা ধরে।মেহরিমা আগের মতোই শার্টের একাংশ ধরে হৃদিতের পিছু পিছু রুমে হাজির হয়।
“ফ্রেশ হয়ে আয় জান।”
হৃদিতের কথামতো মেহরিমা ফ্রেশ হতে চলে যায়।দশ মিনিটের ব্যবধানে ফ্রেশ হয়ে আসে।হৃদিত আগেই ফ্রেশ হয়েছে।
“এখানে এসে বস সানসাইন।আমি খাইয়ে দিচ্ছি তোকে।”
মেহরিমা লক্ষী মেয়ের মতো যেয়ে হৃদিতের পাশেই ডিভানে বসে।হৃদিত যত্ন সহকারে খাইয়ে দিতে থাকে।মেহরিমা পুরো ঘরে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়।এই ঘরেরও বেডশিট থেকে শুরু করে সব ব্ল্যাক কালারের।ঘরের ফার্নিচার গুলোও ড্রয়িং রুমের মতোই কাঁচের তৈরি।ঘরে ফার্নিচার বলতে একটা ওয়াল আলমিরা,একটা ডিভান,একটা ক্যাবিনেট,একটা ড্রেসিং টেবিল আর একটা বেড ব্যস।অতিরিক্ত কিছুই নেয়।মেহরিমা ধারণা করে নেয় পুরো বাড়ির ডেকোরেশনও বোধহয় এমনই।মেহরিমা পেটে কথা চেপে রাখতে না পেরে বলে,
“আপনার কী ব্ল্যাক আর পার্পল কালার ফেভারিট?”
“হুঁ।হোয়াই?”
“চৌধুরী বাড়িতে আপনার রুমের ডেকোরেশন পার্পল আর এখানে ব্ল্যাক তাই বললাম।”
“পার্পল কালার আমার কাছে স্পেশাল।আর ব্ল্যাক কালার ফেভারিট।”
“পার্পল কালার স্পেশাল কেন?”
“আমার জীবনে প্রথম বসন্ত এনেছিল একটা পার্পল ফেইরি।শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে ধোঁয়াশা দেখেছিলাম তাকে।”
“আপনারও ভালোবাসার মানুষ ছিল?”
“হুঁ,ইভেন এখনও আছে।”
হৃদিতের কথায় মেহরিমার মুখটা মলিন হয়ে যায়।হৃদিত মেহরিমাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসত,আবার এখনও ভালোবাসে কথাটা ভাবতেই বুক কেঁপে ওঠে মেহরিমার।হৃদিত মেহরিমার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসে।সেই হাসিতে মেহরিমার গা জ্বলে ওঠে।কিড়মিড়িয়ে বলে,
“আপনার সেই সো কলড ভালোবাসার মানুষটা কে শুনি?”
“আমার অ্যানাবেলা।”
“কী!আমি?”
কম্পনরত কন্ঠস্বর মেহরিমার।হৃদিত মুখের হাসি প্রসারিত করে বলে,
“হুম।তখন তুই ক্লাস থ্রিতে পড়তিস।আমার রুমের জানালা দিয়ে এক কুয়াশামাখা ভোরে সেই প্রথম আবছা দেখেছিলাম তোকে।তোর মতো পুঁচকে একটা মেয়েকে দেখে আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেছিল।কিছু সময়ের জন্য থমকে গেছিল আমার হৃদয়।তাহলে ভাব তোর কত ক্ষমতা!ওতটুকু বয়সে হৃদিত চৌধুরীর মনে ভালোবাসার জাল বুনেছিস।”
হৃদিতের কথায় মেহরিমার মুখের মলিনতা কেটে উজ্জলতায় ছেয়ে যায় গাল দুটো।চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে ওঠে।উৎফুল্ল কন্ঠে প্রথম বারের মতো বলে বসে,
“খুউউউব ভালোবাসি আপনাকে।আমার এই বদ্ধ পাগল হৃদিতকেই লাগবে।সবসময় এমনই থাকবেন কেমন?”
“হুম।আর কোনো কথা না।চুপচাপ খেয়ে নে।”
“আপনি তো কিছু বললেন না?”
“কি বলবো?”
“কিছু না।”
“মনের কথা বোঝার জন্য আমার চোখের ভাষা, আমার করা পাগলামি গুলোই কি যথেষ্ট নয়?”
“যথেষ্ট।আপনার চোখের ওই অতল গভীরতায় নিজেকে হারিয়ে বসেছি আমি।।”
হৃদিত মুচকি হাসে কোনো প্রত্যুত্তর করে না।চুপচাপ খাইয়ে দিতে থাকে।কিছুক্ষণ পর নিজে থেকেই বলে,
“বিনা প্রকাশে তোকে নিজের থেকেও অনেক বেশি ভালোবাসি আমি।”
হৃদিতের বলা এক লাইনের কথাটা মেহরিমার মন কুঠুরিতে বসন্তের দোলা দিয়ে যায়।মনটা ফুরফুরে হয়ে ওঠে।এই মানুষটার সাথে এক জনম কেন সাত জনমও অনায়াসেই কাটিয়ে দেওয়া যাবে।কিন্তু মেহরিমা তো ওতোটাও ভাগ্যবতী না!
মেহরিমা চুপচাপ খেতে থাকে।তবে চুপ থাকার মতো মেয়ে মেহরিমা না।আর সামনের মানুষটা যদি হৃদিত হয় তাহলে তো চুপ থাকতেই পারবে না।বকবক করে হৃদিতের মাথা খাওয়ার অভ্যাস কি না!দুই মিনিটের মাথায় অধৈর্য হয়ে আবারও প্রশ্ন করে,
“আপনার বাসা টা এমন নির্জন,ভুতুড়ে কেন? কেমন একটা ভ্যাম্পায়ার ভাইব দিচ্ছে সবকিছুতেই।”
“তোর জামাই ভ্যাম্পায়ার তাই তার সবকিছুতে ভ্যাম্পায়ার ভাইব দিচ্ছে।”
হৃদিতের কথায় মেহরিমার মুখে থাকা খাবার গলায় আটকে যায়।হৃদিত দ্রুত পানি খাইয়ে দেয়। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে মেহরিমা নিজেকে সামলিয়ে বলে,
“আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন কেন?”
“ভয় কখন দেখালাম?তোর প্রশ্নেরই তো উত্তর দিলাম জাস্ট।”
মেহরিমা জানে এখন এই টপিক নিয়ে কথা বললেই হৃদিত ঘাড়ত্যাড়ামো করবে।তাই চুপ থাকাই শ্রেয়।হৃদিত মেহরিমাকে খাইয়ে দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে নিজেও খেয়ে নেয়।দু’জন ক্লান্ত থাকায় আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ে।হৃদিত মেহরিমার কম্ফোর্টারের মধ্যে ঢুকে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।মেহরিমা মৃদু হাসে।
____
মেহরিমার কাছে আজকের সকালটা একটু বেশিই মনোমুগ্ধকর।হৃদিতের ব্যালকনিতে কম্ফোর্টার মুড়ি দিয়ে ডিভানে বসে শীতের সকালের পরিবেশ উপভোগ করছে।প্রকৃতি কুয়াশার চাদরে মোড়ানো।একটু দূরের কিচ্ছু দেখার উপায় নেই।বাড়িটার চারি পাশে সুউচ্চ গাছের সারি।গাছের ডালপালার ফাঁক ফোকড় দিয়েও দিবাকরের দেখা পাওয়া মুশকিল। আশেপাশের কোথাও থেকে ভেসে আসছে পানির কলকল ধ্বনি।নিস্তব্ধ পরিবেশে সেই ধ্বনি বড়ই মনোরম শোনাচ্ছে।নিশ্চয় পাশেই নদী অথবা লেক জাতীয় কিছু আছে।ভেসে আসছে কতশত পাখির ডাক।অদূর হতেই একটা পাহাড় হাত ছানি দিয়ে মেহরিমাকে ডাকছে। ব্যালকনির সামনেই বড় একটা ছাতিম গাছ আর কাঠগোলাপ গাছ।একটু দূরেই লাইন দিয়ে আরও অনেকগুলো কাঠ গোলাপ গাছ লাগানো।শীতকাল হওয়ার দরুন কাঠগোলাপ গাছ ফাকা।একটা ফুলও নেই।তবুও গাছগুলো দেখতে মেহরিমার বড্ড ভালো লাগছে।সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যায় মেহরিমা।ভুলে বসে নিজের মনের ব্যথা,কষ্ট সব।হয়তো প্রকৃতি মেহরিমার ব্যথাগুলো কিছু সময়ের জন্য গিলে নেয়।প্রশান্তি এনে দেয় প্রকৃতিপ্রেমী এক কিশোরীর মনে।হঠাৎ কম্ফোর্টারের মধ্যে কারোর উপস্থিতি অনুভব করতেই ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকায় মেহরিমা।হৃদিতের ঘুমু ঘুমু ফেইস দেখতেই মুচকি হাসে।হৃদিত ঘুমু ঘুমু কন্ঠেই বলে,
“এত ঠান্ডায় এখানে কী করছিস?”
“প্রকৃতি দেখছি।আমি কিন্তু কম্ফোর্টার নিয়ে এসেছি।”
“গুড গার্ল।”
“আশে পাশে কোথাও নদী আছে?”
“হুম বড় একটা নদী আছে।”
“আজ ওখানে ঘুরতে যাবো।”
“আচ্ছা।”
“ওই যে পাহাড় টা দেখছেন না?ওখানেও যাবো।”
“আচ্ছা।”
“আপনি এখানে এসেও ঘুমাচ্ছেন?”
“উহু। রুমে চল ঘুম পাচ্ছে।”
“আপনি যান।আমি এখানেই থাকবো।”
হৃদিত আর কোনো কথা না বাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়।মেহরিমাকে কোলে উঠিয়ে নেয়।হৃদিতের কান্ডে মেহরিমা হতভম্ব হয়ে যায়!হৃদিত ব্যালকনির দরজা বন্ধ করে বিছানার নিকট এগিয়ে আসে।মেহরিমাকে শুইয়ে দিয়ে ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।মেহরিমা কটমট করে বলে,
“এটা কী হলো?”
“কিছুই না। চুপচাপ ঘুমা।”
“পারবো না।আমি সকালের পরিবেশ দেখবো।”
“বাইরে ঠান্ডা জান।আমাদের কুট্টুস পাখির জন্য হলেও এখন একটু মেনে চল।এই হৃদিত থেকে শুরু করে হৃদিতের সবকিছু শুধুই তোর।তোর যখন মন চাইবে তখনই এখানে আসতে পারবি সমস্যা নেই তো।”
মেহরিমা আর কিছু না বলে চুপচাপ মুখ ফুলিয়ে শুয়ে থাকে।হৃদিত হতাশ হয়।পরক্ষণেই কিছু একটা ভাবতেই বাঁকা হাসে।হঠাৎ হৃদিতের হাতের অবাধ্য বিচরণ অনুভব করতেই মেহরিমা খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে।হৃদিত মেহরিমার কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে আরো ঘনিষ্ঠ করে নেয়।অধরে অধর মিলিয়ে দেয়।মেহরিমা আবেশে চোখজোড়া বন্ধ করে নেয়।হৃদিতের উন্মুক্ত পিঠ খামচে ধরে। কিছুক্ষণ পর হৃদিত মেহরিমাকে ছেড়ে দিয়ে কপালে উষ্ণ ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।
“আর একটুও মুখ গোমড়া করে থাকলে আই সোয়্যার তোকে এখন ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।”
ব্যস মেহরিমাকে আর কে পায়!ঠান্ডা পানি,গোসল কথাটা ভাবতেই মেহরিমার রুহ কেঁপে ওঠে! তৎক্ষণাৎ মুখে হাসি টেনে ঘুমের ভান ধরে।মুখে বলে,
“আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।আপনার সাথে পরে কথা বলবো কেমন?আপনিও ঘুমিয়ে পড়ুন।”
মেহরিমার কান্ডে হৃদিত শব্দ করে হেসে ওঠে।মেহরিমা নিজের একচোখ একটুখানি খুলে হৃদিতের দিকে তাকায়।ওর নজরকাড়া হাসি দেখে নিজেও মুচকি হাসে।অতঃপর দু’জন ঘুমের দেশে পাড়ি দেয়।
#চলবে___