কাঠগোলাপের আসক্তি পর্ব-১১

0
5

#কাঠগোলাপের_আসক্তি
#পর্ব_১১
#ইসরাত_তন্বী

❌অনুমতি বিহীন কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌

(পর্বটা একটু সেন্সিটিভ।)

সূর্য পশ্চিম আকাশে অস্ত যেয়ে ধরনীর বুকে রাত্রি নেমেছে।সকালের পর থেকে আর বৃষ্টি হয়নি।হঠাৎ এখন সুবিশাল অম্বরে কাদম্বিনী তার নিজস্ব শব্দে ক্ষণে ক্ষণে গর্জন তুলে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে।সাথে বইছে হালকা ঝিরিঝিরি মৃদু পবন।

সময় রাত এগারোটা বেজে সতেরো মিনিট।গতকালের পর থেকে হৃদিত লা পাত্তা।ফোন দিলে ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে।মেহরিমা হৃদিতের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় সারাদিন ছটফট ছটফট করেছে।সন্ধ্যার পরে এক প্রকার অধৈর্য হয়ে তৃধার কাছে কল দিয়ে হৃদিতের খোঁজ নিয়েছে মেহরিমা।আর তাতেই জানতে পেরেছে মেহরিমার মহামান্য হাসবেন্ড নিজের রুমের দরজা লক করে ভেতরেই আছে।জাস্ট খাওয়ার সময় নাকি ওনাকে নিচে খাবার টেবিলে দেখা গেছে।এখন দরজা লক করে রুমের মধ্যে কি করছে সেটা তো আর তৃধা জানে না!মেহরিমা সবটা শুনে স্বস্তি পায়। কিন্তু নারী সত্তাটা বড্ড অভিমান করে বসে।এতো রাতে মেহরিমা শুয়ে শুয়েই উশখুশ উশখুশ করছে‌।ঘুম আসছে না।আজও পাশে মাধবী শুয়েছে।মেহরিমা নিজের উপর বিরক্ত হয়েই বিছানা ছেড়ে উঠে ঘরের সাথে লাগোয়া ব্যালকনিতে যায়।

ঘুটঘুটে অন্ধকার পরিত্যক্ত একটা রুম। রুমের মধ্যে শুধুমাত্র একটা মোমবাতি জ্বলছে নিভু নিভু আলোয়।ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে মাটিতে পড়ে আছে শিহাব।মুখটা বাঁধা থাকায় শুধুমাত্র গোঙানির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।শিহাবের ঠিক সামনে একজোড়া নীলচে মণি জোড়া জ্বলজ্বল করছে। সামনে বসা মানবের থেকে কেমন ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ ভেসে আসছে।শব্দটার সাথে শিহাব পূর্বপরিচিত।এটা কোনো ধা রা ল অ স্ত্র ঘষার শব্দ।শিহাবের বুকের পানি শুকিয়ে যায়।অদূরেই তাবান,তাইফ দাঁড়িয়ে কাঁপছে।ওদের দুজনের হাতে থাকা দুটো বিদেশি কুকুর থেকে থেকে তার নিজস্ব শব্দে ডেকে উঠছে।এই পরিবেশের সাথে ডাকটা বড্ড ভয়ংকর শোনাচ্ছে!

“ওই শা লা শিহাব পটল তোলার আগেই মনে হচ্ছে তুই পটল তুলবি?এত কাঁপাকাপি করছিস কেনো?”

তাইফের কথায় তাবান ওর পিঠে এক চাপড় মেরে বলে,

“হাদা আমি কি একা একা কাঁপছি?তুইও তো কাঁপছিস।দেখ তোর পা জোড়া আমার থেকেও বেশি কাঁপছে।”

“সত্যিই কি আমি কাঁপছি?”

“না তো!তোর হ্যাবলাকান্ত শ্বশুর কাঁপছে?তুই কাঁপতে যাবি কেনো?”

“এই,এই তাবান।আমার সহজ সরল শ্বশুর টাকে নিয়ে কিছু বলবি না বলে দিলাম।”

ওদের কথার মাঝেই শিহাবের গগনবিদারী এক চিৎকার ভেসে আসে ওদের কানে।আর তাতেই দুজনের কাঁপাকাপি আরও বেড়ে যায়।হৃদিত শিহাবের ডান হাত কে টে ফেলেছে।সেটা অনাদরে পাশেই পড়ে আছে।হৃদিত এখন ওর সেই চিরচেনা সত্তায় ফিরে গেছে।দুই আঙ্গুলের সাহায্যে শিহাবের গালে চাপ প্রয়োগ করে মুখটা ওর নিকট এগিয়ে হিসহিসিয়ে বলে,

“মা দা র ফা কা র তোর সাহস কি করে হয় আমার অ্যানাবেলা কে বাজেভাবে টাচ করার?হু আর ইয়্যু?ইউ নো শী ইজ মাই লাইফ।আ’ম নাথিং উইদাউট হার।আই কান্ট থিংক অ্যানিথিং উইদাউট হার।অলওয়েজ আমার ভাবনা,আমার মনের মাঝে থাকে আমার অ্যানাবেলা।নয় বছর ধরে ভালোবেসে এখনো একটুও বাজেভাবে ওকে টাচ করিনি আমি।এই নয়বছরে ওর চোখ থেকে কখনো এতোটা পানি পড়িনি।আমি পড়তে দেই নি।তুই আমার জানে হাত দিছোস শা লা।খুব করুণ মৃত্যু হবে তোর।আই উইল টেক ইয়্যু অন অ্যা জার্নি টু ব্লাডি হেল।জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড সি।”

হৃদিত কথাগুলো বলে গালে আরেকটু চাপ দিতেই কেমন কটমট শব্দ হয়!শিহাব ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠে।হৃদিত শিহাবের গাল ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়াতেই শিহাব ওর একটা হাত দিয়ে হৃদিতের পা জোড়া চেপে ধরে ভা ঙ্গা মুখ নিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বলে,

“আমার ভুল হয়ে গেছে।ক্ষমা করে দেন।”

কথাটা শেষ করার সাথে সাথেই ওর বুক বরাবর লাথি মারে হৃদিত।শিহাব পিছলে দুই হাত দূরে গিয়ে পড়ে।হৃদিত পাশে থাকা একটা টেবিল থেকে হাতুড়ি আর না ই ফ নিয়ে পুনরায় শিহাবের নিকট এগিয়ে আসে।একাধারে বিড়বিড় করে চলেছে,

“বা স্টা র্ড!ইয়্যু হ্যাভ নোট রাইট টু টাচ মাই অ্যানাবেলা।”

হৃদিতকে ওগুলো নিয়ে এগিয়ে যেতে দেখতেই তাইফ চাপা স্বরে বলে ওঠে,

“এই ব্যাটার জীবন আজ শেষ। গ্রামে এতো মেয়ে থাকতে মেহরিমার দিকেই নজর দিতে হলো‌!ওপস ছরি ওই ব্যাটায় তো নিজেদের শত্রুতার বসে এমন করেছে।”

“নাম ধরে ডাকিস না।ভাবী বল ভাবী। নাহলে আজ আমাদের ও শেষদিন হবে।ভাই নিজের মধ্যে নেই।”

তাবানের কথায় তাইফ চুপসে যায়।হৃদিত শিহাবের নিকট এগিয়ে এসে ওর এক হাতের উপর পা রেখে হাতুড়ি দিয়ে শব্দ করে সবগুলো দাঁত ভা ঙ তে থাকে।শিহাব নিজেকে বাঁচানোর জন্য ছটফট ছটফট করছে।হৃদিত একে একে সবগুলো দাঁত ভে ঙে থামে। অতঃপর নিজের হাতে হ্যান্ড গ্লাভস পড়ে নাইফ দিয়ে একটানে ঠোঁট জোড়া কে টে ফেলে।হৃদিত তাতেও ক্ষান্ত হয়না।শেষমেষ জিহ্বা টাও কে টে নেয়।শিহাবের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে।

“ব্লাডি বিচ তোর ওখানে খুব জোর তাই না?”

কথাটা বলে হৃদিত আবারও বিড়বিড় করতে করতে টেবিলের নিকট যেয়ে ড্রয়ার থেকে একটা ছোট কাঁচের বোতল নিয়ে আসে।শিহাবের নিকট এসে একটানে প্যান্টের জিপার খুলে ঢেলে দেয়।শিহাব চিল্লাতে না পারায় কা টা কবুতরের মতো লাফাতে থাকে।হৃদিত পাশে দাঁড়িয়ে ঠোঁটের কোণে হিংস্র হাসি দিয়ে শিহাবের সেই ছটফটানো এনজয় করতে থাকে।

“এই এই তাবান?ভাই ওটা কি ঢেলে দিলো রে?”

“এ সি ড। তুই থামবি? নাহলে তোরও যায়গা মত ঢেলে দেবে নে।”

তাবানের কথায় তাইফ অসহায় মুখ নিয়ে তাবানের দিকে তাকিয়ে থাকে।

“তাবান,তাইফ হ্যানসেল আর হ্যারি কে ছেড়ে দে।”

হৃদিতের গম্ভীর শীতল কন্ঠ কর্ণগোচর হতেই ওরা নিজের অজান্তেই রশি ছেড়ে দেয়।হ্যানসেল,হ্যারি এক ছুটে হৃদিতের নিকট এসে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে।যেন হৃদিতের হুকুমের অপেক্ষায়।

“বা ই ট হিম।”

হৃদিত বজ্রপাতের ন্যায় কথাটা বলতেই সাথে সাথে কুকুর দুটো শিহাবের উপর হামলে পড়ে।একদম র ক্তা ক্ত করে শরীরের মাংশ ছিন্ন বিছিন্ন করে থামে। পরক্ষণেই তাবান,তাইফ কে নির্দেশ দেয় হ্যানসেল আর হ্যারি কে ধরতে।হৃদিত শিহাবের নিকট এগিয়ে এসে ওর নাকের কাছে হাত নিয়ে চেক করতেই দেখে এখনো শ্বাস চলছে।হৃদিত পৈশাচিক হাসি দেয়।প্যান্টের পকেট হাতড়ে দুই ইঞ্চি সাইজের একটা পিন বের করে।সেটা দিয়ে ক্রমাগত শিহাবের চোখে আঘাত করতে থাকে।শিহাবের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত পেরেক দিয়ে চোখের মণি খোঁ চা তে থাকে হৃদিত।পরক্ষণেই হুংকার দিয়ে বলে,

“শুনে রাখো পৃথিবী,আমার অ্যানাবেলার দিকে যে নজর দেবে তার অবস্থা ঠিক এরকমই হবে।এই মা দা র ফা কা র তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী।”

আকাশের বজ্রপাতের শব্দের সাথে সেই হুংকারের শব্দ মিলেমিশে তৈরি করে হাড়হিম করা পরিবেশ।তাইফ ততক্ষণে সেন্স হারিয়েছে।তাবান অসহায় চোখে একবার তাইফের দিকে তাকায় আর একবার হৃদিতের দিকে তাকায়।

_______

সময় রাত তিনটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট।ফোনের তুমুল শব্দে মেহরিমার ঘুম হালকা হয়ে যায়।ঘন্টা দুয়েক হলো ব্যালকনি থেকে রুমে এসে ঘুমিয়েছে।এতো রাতে আবার কে কল দেবে?মেহরিমা বিরক্তি তে নাকমুখ কুঁচকে কল কেটে দেয়।কল কাটার মিনিট দুয়েক পরে ঘুমের ঘোরেই হৃদিত নামক নামটা মস্তিষ্ক জানান দিতেই মেহরিমা তড়িৎ গতিতে উঠে বসে।চট করে ফোন হাতে নিয়ে কল লিস্ট চেক করে।যা ভেবেছিল তাই!মেহরিমা কল ব্যাক করতে যাবে ঠিক তখনই ফোনটা আবারো শব্দ তুলে বেজে ওঠে।মেহরিমা তৎক্ষণাৎ কল রিসিভ করে।

“তোদের মেইন গেইটের তালা খুলে দে ফাস্ট।আমি বাইরে ওয়েট করছি।”

ব্যস নিজের কথা শেষ করে কল কেটে দেয় হৃদিত।মেহরিমা কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে হৃদিতের কথাটা বুঝতে পারে।সারাদিনের অভিমান ভুলে গায়ে কোনোরকম ওড়না জড়িয়ে চাবি আর ছাতা হাতে বাইরে দৌড় লাগায় মেহরিমা।তিন মিনিটের ব্যবধানে গেট খুলে দিতেই হৃদিত গাড়ি নিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ পড়ে।মেহরিমা গাড়ির দিকে এক পলক চেয়েই দরজা লক করে দেয়। পিছন ঘুরতেই শক্তপোক্ত কিছুর সাথে ধাক্কা খায়।মেহরিমা চোখ তুলে তাকাতেই হৃদিতের ক্লান্ত মুখটা চক্ষুগোচর হয়।মেহরিমা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হৃদিত ওকে জাপটে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।মেহরিমার হাত থেকে ছাতা পড়ে যায়।দু’জনেই কাক ভেজা হয়ে যায়।মেহরিমা নিজের অজান্তেই হৃদিতের বুকে মাথা রাখে।অতঃপর রিনরিনিয়ে বলে,

“আপনাকে এতো ক্লান্ত দেখাচ্ছে কেনো?”

“তুই কাছে ছিলি না তাই।”

হৃদিতের কথায় মেহরিমা লজ্জা পেয়ে যায়।হৃদিতের শক্তপোক্ত বুকে মুখ লুকায়।পাঁচ মিনিট এভাবেই কেটে যায়।

“আমাকে এভাবেই দাঁড় করিয়ে রাখবি? শ্বশুর বাড়িতে এই প্রথম আসলাম।একটু খাতির যত্ন করবি তা না বাইরেই দাঁড় করিয়ে রেখেছিস।”

হৃদিতের কথায় মেহরিমার টনক নড়ে।ও হৃদিতের বাহুডোর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।তারপর দ্রুত হাতে ছাতা তুলে নিয়ে হৃদিতের হাত ধরে সামনের দিকে হাঁটা ধরে।

মেহরিমার রুমে মাধবী থাকায় মেহরিমা হৃদিতকে গেস্ট রুমে নিয়ে আসে।আলমিরা থেকে নতুন টাওয়াল বের করে দেয়।

“আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন।আমিও ফ্রেশ হয়ে আপনার জন্য খাবার নিয়ে আসছি।”

মেহরিমার কথায় হৃদিত কয়েক সেকেন্ড ভ্রু কুঁচকে মেহরিমার দিকে তাকিয়ে থেকে দুষ্টু কন্ঠে বলে,

“ফ্রেশ হয়ে পরবো কি?দেখছিস ভিজে গেছি।নাকি আমাকে ড্রেসলেস রাখার পরিকল্পনা করছিস?”

হৃদিতের কথায় মেহরিমার কান,মুখ গরম হয়ে ওঠে।সারা মুখে লালচে আভা ছড়িয়ে পড়ে।

“আরে,আরে!তোর সাথে তো এখনও কিছুই করলাম না। ইভেন তোকে ছুঁয়েও দেখিনি আমি।আর তাতেই তুই লজ্জায় লাল, নীল, সবুজ, হলুদ, বেগুনি হয়ে যাচ্ছিস?আশ্চর্য!আমার মতো ভদ্র পোলা আর কোথাও পাবি তুই?”

হৃদিতের বে ফাঁ স কথায় মেহরিমা ল জ্জা য় হাঁসফাঁস করতে থাকে।কোনোরকমে বলে,

“বাবার শার্ট আর লুঙ্গি এনে দিচ্ছি।”

কথাটা বলেই মেহরিমা দ্রুত পায়ে প্রস্থান করে। হৃদিত পেছন থেকে উচ্চস্বরে বলে,

“লাগেজে আমার নিউ টি-শার্ট, ট্রাউজার আছে। ওগুলো জলদি নিয়ে আয়।আর আমি এখন কিছু খাবো না।খেয়ে এসেছি।”

মেহরিমা যাওয়ার সময় হৃদিতের সব কথাগুলোই শুনতে পায়।নিজে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে দশ মিনিট পর হৃদিতের জন্য টি-শার্ট, ট্রাউজার নিয়ে গেস্ট রুমে আসে মেহরিমা।ওয়াশ রুমের ভেতর থেকে পানি পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে।দুই মিনিট পরে হৃদিত বের হয় ওয়াশ রুম থেকে।পুরুষালি শক্ত পেটানো কোমরে জাস্ট টাওয়াল বাঁধা।উপরের অংশ নেকেড।বুকে বিন্দু বিন্দু পানির কণা মুক্তোর মতো জ্বলছে।ঘাড় সমান চুল গুলো এলোমেলো ভাবে চোখের উপরে পড়ে আছে।চুল বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে ঠোঁ টে র উপরে।সেই পানি জ-লাইন দিয়ে অ্যাডামস অ্যাপেল বেয়ে বুকে নেমে যাচ্ছে।নীল রঙের মণি জোড়া স্বচ্ছ দেখাচ্ছে।চোখ জোড়া যেনো গভীর এক সমুদ্র!যেই সমুদ্রের গভীরতা অসীম।মেহরিমা খুব সহজেই সেই গভীরতায় নিজেকে হারিয়ে ফেলে।হৃদিতের এহেন রুপ দেখে মেহরিমা শুকনো ঢোক গেলে।ইতোমধ্যে ওর বুকের মাঝে হাতুড়ি পেটাতে শুরু করেছে।এক অবাধ্য টান অনুভব করছে হৃদিতের প্রতি।হৃদিত মেহরিমার বেহাল অবস্থা দেখে বাঁকা হাসে।সবে তো শুরু!এই নয় বছরে তো কম কষ্ট করেনি হৃদিত।এত সহজেই ধরা দেবে নাকি?

“ওগুলো কি নিজে পড়ার জন্য এনেছিস?”

হৃদিতের কথায় মেহরিমা আমতা আমতা করে বলে,

“আসলে না ইয়ে মানে আপনার জন্যই এনেছি।”

কথাটা বলে মেহরিমা কয়েক কদম এগিয়ে এসে হৃদিতের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।হৃদিত আলতো করে মেহরিমার হাত স্পর্শ করে।মেহরিমার শরীর উষ্ণ।হৃদিতের ঠান্ডা স্পর্শে কেঁপে ওঠে।হৃদিত মুচকি হেসে কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায়।যাওয়ার আগে মেহরিমাকে ওয়ার্ন করে যায়।সে না আসা পর্যন্ত মেহরিমা যেনো রুমেই থাকে।পনেরো মিনিট পর হৃদিত ওয়াশ রুম থেকে বের হয়।মেহরিমার নিকট এগিয়ে এসে ওর হাতে টাওয়াল দিয়ে বলে,

“চুল মুছে দে।”

“আমি?”

মেহরিমার হতভম্ব কন্ঠস্বর।

“তুই ছাড়া আর এখানে কেউ আছে নাকি?চোখে তো দেখছি না।”

কথাটা বলে হৃদিত ভেতর থেকে দরজা লক করে এসে বিছানায় যেয়ে বসে।হৃদিতের কান্ডে মেহরিমা ভেতরে ভেতরে বড্ড ভয় পেয়ে যায়।মেহরিমা, নিজের তড়িৎ গতিতে ধ্বক ধ্বক করা হৃৎপিণ্ড টা নিয়েই গুটি গুটি পায়ে হৃদিতের নিকট এগিয়ে যায়।কাঁপা কাঁপা হাতে মাথা মুছিয়ে দিতে থাকে।মাথা মোছানোর শেষ পর্যায়ে হৃদিত মেহরিমার পাতলা কোমর নিজের শক্ত পোক্ত হাতের বন্ধনে আবদ্ধ করে নেয়।সেকেন্ডের ব্যবধানে মেহরিমাকে নিজের উপর ফেলে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে।মেহরিমা আঁতকে ওঠে!ওর কাঁপাকাপি বেড়ে যায়।হৃদিত আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।যেনো মেহরিমাকে নিজের বুকের ভেতরে ঢুকিয়ে নেওয়ার তীব্র প্রচেষ্টা করছে।অতঃপর কপালে গভীরভাবে একটা ভালোবাসার পরশ দিয়ে বলে,

“আ’ম টায়ার্ড জান।একদম নড়াচড়া করবি না।আমি এখন একটু ঘুমাবো।”

হৃদিতের কথায় মেহরিমা শান্ত হয়ে যায়।পরম আবেশে হৃদিতের বুকে মাথা রেখে চোখজোড়া বন্ধ করে নেয়।মেহরিমার দিকে এক পলক চেয়ে হৃদিত মুচকি হেসে বলে,

“দ্যাটস মাই গুড অ্যাঞ্জেলা।”

#চলবে______

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে