কাছে_পাশে
পর্ব_৭
#Hiya_Chowdhury
রোদ জুহির কথায় নিশ্চুপ হয়ে যায়।জুহি রোদের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে নিচে চলে যায়।
শুভ্র ছাঁদে আসে…..
-কিরে রোদ জুহির কি হয়েছে? কান্না করছে কেন?
-কিছু না।
রোদ কিছু না বলে ছাঁদ থেকে নেমে যায়। রোদের প্রচন্ড অনুতপ্ত বোধ হয়। জুহির সাথে এমন ব্যবহার করা তার সত্যি ই ঠিক হয়। আর জুহি ই বা তার কথা শুনবে কেন? সে তো জুহির কথা আগে শুনতো না। বরং আরো নানা ভাবে জুহি কে বকা দিতো অপমান করতো। বলতে গেলে তখন জুহির সাথে এসব করতে রোদের মজা লাগতো আর সেই মজার ফল এখন রোদ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।
ডিনার শেষে জুহি ওর রুমের দিকে যাচ্ছিলো এমন সময়।
-জুহি…..
-নো রেসপন্স….
-জুহি আ’ম সরি।
-নো রেসপন্স…
জুহি রোদ কে পাওা না দিয়ে নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। রোদ ও মন খারাপ করে নিজের রুমে চলে যায়। অদ্ভুত বিষয় রোদের চোখের ঘুম উড়ে গেছে। কিছু তেই ঘুম আসছে না। রাত টা এপাশ ওপাশ করতে করতেই কেটে গেছে।
সকালে নাস্তা সেরে রোদ অফিসে চলে যায়। আজকে একটা মিটিং আছে তার। রাতে ঘুম না হওয়ার ফলে এখন খুব ঘুম পাচ্ছে। কিন্তুু মিটিং টা খুব ইনফর্টেন্ট যেভাবেই হোক করতেই হবে।
মিটিং টা কমপ্লিড করে রোদ ম্যানেজার কে তার রুমে ডাকে।
-ম্যানেজার সাহেব আপনি এদিকে টা সামলে নিন আমার এখন বাসায় যেতে হবে।
-আচ্ছা স্যার।
-পারবেন তো?
-হ্যাঁ স্যার।
আর এদিকে জুহি একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন পায়। কথা বলার পর বুঝতে পারে ঐ দিনের সেই লোক গুলো। কোনো একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য ওরা জুহি কে রেস্টুরেন্টে ডেকেছে। তাই জুহি গাড়ি করে বেরিয়ে গেছে সকাল সকাল।
,
,
,
,
,
,
রোদ বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে। হঠাৎ সে রেস্টুরেন্টে জুহির মতো কাউকে দেখতে পায়। পরে ভাবে জুহি কেন এখানে আসতে যাবে? এটা হয়তো বা তার মনের ভুল। সেদিকে আর মন টা দিয়ে বাসায় চলে আসে রোদ।
-আম্মু জুহি কোথায়?
-কেন বলতো?
-না মানে এমনি আর কি।
-জুহি তো ওর রুমে।
-ওহ আচ্ছা।
রোদ আর কিছু বললো না। মনে মনে ভাবলো সত্যি রেস্টুরেন্টে যাকে সে জুহি ভেবেছে সেটা আসলেই তার মনের ভুল।
রোদ আর সাতপাঁচ না ভেবে জম্পেশ একটা ঘুম দেয়। এক ঘুমে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। রোদের ঘুম ভাঙ্গলে ফোনে টাইম দেখে সে থ হয়ে যায়। এতোসময় সে ঘুমিয়েছে। অবাক করা বিষয়। কেউ একবার ডাকলো ও না।
-আম্মু ও আম্মু কোথায় তোমরা…?
-আরে এই তো কেন ডাকছিস?
-তোমরা আমাকে একবার ও ডাকলে না কেন?
-ডাকি নি মানে? তুই জানিস কতোবার ডেকেছি কিন্তুু তোর তো কোনো সাড়াশব্দ ই পেলাম না।
-ওহ।
-নাস্তা করতে আয়।
-এই তো আসছি।
সবাই মিলে একসাথে নাস্তা সেরে নেয়। জুহি একবারের জন্যও রোদের সাথে কথা বলে নি। বিষয় টা রোদের ভালো লাগছে না।
রোদ জুহি কে পুরো বাসা খুঁজে কোথাও না পেয়ে ছাঁদে যায়। রোদ দেখে জুহি ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে একা একা।
,
,
,
,
,
রোদ ও জুহির পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। কারো উপস্থিতি বুঝতে পেরে জুহি সেদিকে তাকায়। দেখে রোদ এসে তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
জুহি চলে যেতে নিলে রোদ ওকে আটকায়।
-দেখ জুহি আমি সরি বললাম তো। প্লিজ তুই আমার সাথে রাগ করে থাকিস না। তুই এভাবে রোবটের মতো হয়ে আছিস এটা আমার ভালো লাগছে না রে।
-নো রেসপন্স।
-কিছু তো বল জুহি।
-নো রেসপন্স।
রোদের কোনো কথা জেনো জুহির কান ওবধি পৌঁছাচ্ছে না। সে চুপ করে আছে।
-ওকে তুই আমার সাথে কথা বলবি না তো দেখ আমি নিজের কি অবস্থা করি।
রোদ পকেট থেকে ব্লেড বের করে হাতে কয়েকটা টান মারে। সাথে সাথে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে।
এটা দেখে জুহির কলিজা মোচড় দিয়ে উঠে। রোদের থেকে ব্লেড টা কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয়।
-কি করলেন এটা আপনি হ্যাঁ। পাগল হয়ে গেছেন নাকি?
-তোকে যে কষ্ট দিয়েছি সেই কষ্টের থেকে এগুলা কিছুই না।
জুহি দৌড়ে নিচে গিয়ে ফাস্ট এইড বক্স টা নিয়ে আসে। এখনো রক্ত পড়ছে। কোনো ভাবে রক্ত বন্ধ করে রোদের হাতে ব্যান্ডেজ করে দেয় জুহি। জুহি কান্না করছে আর সেটা রোদ দেখে নেয়।রোদ জুহির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
-কিরে তুই কান্না করছিস কেন?
-আর একবার এসব উল্টা পাল্টা কাজ করবেন তো আমি এই বাড়ি ছেড়ে আবার দেশের বাহিরে চলে যাবো। ধুর আমার আসলে এখানে আসাই ঠিক হয় নি।
রাগে দুঃখে নিজের চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে জুহির। কিভাবে পারলো সে রোদ কে এটা করতে দিতে?
জুহি নিচে চলে যায়। রোদ ও কিছুক্ষণ পর চলে যায়। ডিনার শেষে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েছে তখন রোদ চুপিচুপি জুহির রুমে যায়। আর দেঝে জুহি গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে। জুহির ঘুমন্ত চেহারা মুগ্ধ হয়ে দেখছে রোদ।
রোদ আস্তে আস্তে জুহির পাশে গিয়ে বসে। কেমন জেনো ঘোর লেগে গেছে তার। ইচ্ছে করছে জুহির কপালে তার ঠোঁট ছুঁয়ে দিতে। যেই ভাবা সেই রোদ আস্তে করে জুহির কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। কিছু টা কেঁপে উঠলো জুহি…………
চলবে————
(আজকে গল্প লিখার কোনো ইচ্ছা ছিলো না। তাও লিখলাম। ছোট করে দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে দুঃখিত।)