কাছে_আসার_গল্প পার্ট 22
লেখা আশিকা
সেদিন আমি ইউনিভার্সিটি গেলাম.
যদিও শরিরটা খারাপ লাগছিলো তাও গেলাম….
কারন অনেক দিন যাওয়া হয় না।
কারো সাথে তেমন কথা বলতে ইচ্ছা হলো না। আমি আমার মত ক্লাস করলাম।
ফ্রাস্ট ক্লাস এর পর আমি একটু বাইরে বের হলাম। পিছনে তাকাতেই দেখি মুবিন স্যার…
– হিয়া কি অবস্থা তোমার??
কখন থেকে তোমাকে ডাকছি, তুমি বোধ হয় খেয়াল করো নাই।
– এইতো স্যার, ভালো আছি..
আপনি??
– ভালোই আছি??
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
হিমেল কি করে??
কই থাকে কিছুই তো জানিনা..
সেদিন দেখা হয়েছিলো..
বললো ও নাকি ট্রান্সফার হয়ে আসছে এখানে..
যাক ভালোই হয়েছে এইবার..
কি বলো…
– স্যার আমি আসি..
বলেই তাড়াহুড়া করে চলে আসলাম।
স্যার কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না আমি কেন চলে আসলাম।
আসলে হিমেল আমাকে কখনো ভালোই বাসেনি তাই এই খবরটাও আমি জানলাম না।
মাথাটা কেমন জানি ঘুরাচ্ছে…
উফফ কোন খানেই শান্তি নাই..
-হিয়া এই হিয়া..
হিয়া তুই পড়ে যাবিতো এইভাবে হাটছিস ক্যান??
তুষার আমার সামনে খাড়া..
-তুই সর. সর আমার সামনে থেকে।
তোরে আমি খুন করে ফেলবো??
তুই আমার সামনে আসার সাহস কি করে পাস??
– তোকে খুব ভালোবাসিরে তাই বারবার আসি। তুই না বাসলেও আমি তোকেই ভালোবাসবো সারা জীবন।
আর আমার মাথা ঠিক ছিলো না। চোখের সামনে তোকে অন্য কার হতে দেখলে আমি কি করে সহ্য করবো বল..
আমি যা করেছি তা তোকে ভালবাসি বলে করেছি। একটা কথা আছে কি জানিস তো ভালোবাসা আর যুদ্ধে ভুল বলে কিছু নেই।
কেনো জানি তুষারকে আর কিছু বলতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
সত্যি অই গানটা কেনো আজ মনে পড়ছে…
যে যারে ভালোবাসে সে তারে পায়না কেন??
আমি কোন কথা না বলেই জোরে জোরে হাটতে লাগলাম.
চোখে কেমন জানি অন্ধকার দেখছিলাম..
আমি সেন্সলেস হয়ে গেলাম..
তারপর সবাই আমাকে হস্পিটাল নিয়ে যায়..
ডাক্তার আমাকে দেখে কিছু টেস্ট দেয়..
কালকে রিপোর্ট দিবে..
তারপরো মাথা নিয়ে উঠতেই পারছিলাম না..
তুষার আর নিতু আমাকে ধরে ধরে বাসায় নিয়াসে..
মা আর বাবা ওদেরকে জিজ্ঞাস করলে ওরা সবটা খুলে বলে।
মা আমাকে কড়া নিষেধ করে দেয় যেন আমি একা একা বাহিরে না যাই..
তারপর বিকেলে তুষারের মা আন্টি আসেন আমাকে দেখতে..
বোধ তুষারের কাছে শুনেছে আমার অসুস্থতার কথা।
একটু পর কলিং বেল বাজলো..
একজন ল’ ইয়ার আসলো..
আমার কলিজাটা ধক করে উঠলো…
উনি আমার হাতে একটা কাগজ দিলেন..
হাতটা কাঁপছিলো
খুলে দেখি ডিভোর্স লেটার…
আমি আর পারছিলাম না দাঁড়িয়ে থাকতে..
সেন্সলেস হয়ে গেলাম আবার..
সবাই আমার চোখে মুখে জল দিয়ে সেন্স ফেরালো..
সবাই এতক্ষনে জেনে গেছে এইটা আসলে কিসের কাগজ।
আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
পরে শুনেছিলাম তুষারের মা আন্টি নাকি বলেছে, যা হবার তা হয়ে গেছে.
এখন হিয়ার যা মেণ্টাল কনন্ডিশন ওর একা থাকাটা ওর জন্য ভালো হবে না। তাই ডিভোর্স টা হয়ে গেলে আমি তুষারের জন্য হিয়াকে বঊ হিসেবে নিতে চাই।
আর হিয়াকে আমার তুষার কতটা বুঝে সেটা আপ্নারাই ভালো জানেন আশা করি।
মা র কথা শুনে মনে হচ্ছিলো তারা সবাই রাজি এই প্রস্তাবে।
সবাই হয়তবা এইবারো আমার স্বপ্নগুলো গলা টিপে হত্যা করবে.
আমি একটা জড় পদার্থ।
পরদিন বিকেলবেলা তুষার আসে বাসায় রিপোর্ট নিয়ে..
ওর চোখ মুখে কেমন অনিশ্চয়তার ছাপ..
মা বলে উঠলো..
– তুষার কি রে হিয়ার কি হইছে??
তোর চোখ মুখ এমন দেখাচ্ছে কেন??
আমি তুষারের হাত থেকে খপ করে কাগজটা নিয়ে সোজা ফ্লোরে বসে পড়লাম..
মা আমার হাত থেকে টান দিয়ে কাগজটা নিয়ে নিলো..
মা সোফায় বসে কাদতে লাগলো।
আমি রুমে বসে দরজা লাগিয়ে দিলাম।
আমি হিমেলের সন্তানের মা হতে যাচ্ছি..
আমার কি করা উচিৎ…
খুশি হবো নাকি দুঃখ পাবো??
আমি কি হিমেলকে জানাবো, ও যদি বিশ্বাস না করে এইটা ওর সন্তান।
ফোনটা বাজছে…
হিমেলের ফোন..
আমি খুশি হয়ে পুরোনো সব কিছু ভুলে, অনেক আশা নিয়ে রিসিভ করলাম।
– হ্যালো..
– হ্যালো..
কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ..
তারপর হিমেলই বললো
– তুমি যা চেয়েছিলা তাই হচ্ছে..
ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছি, সাইন করে দিও..
আমার জোড়ে যাওয়া মনটা কাচের মত ভেংগে চুরমার হয়ে গেলো…
– ও তুমি এইটা বলার জন্য এতদিন পর ফোন করলা??
– না। ওহে তোমার নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা রইলো।
ভালো থেকো..
হিমেল ফোন কেটে দিলো..
ওর শেষ কথাগুলো শুনে মনে হলো…
ও এখনি কান্না করে দেবে..
এরকম কেন লাগলো, ধুর মনের ভুল ও এইরকম করতেই পারে না, ও তো আমাকে ভালোই বাসেনা।
আমার চোখের জল কেনো বাধ মানছে না??
আমার সন্তানের কপাল এত খারাপ। আজ তার সব থেকেও কিছু নেই..
ওর কথা ভেবেই আমার আরো খারাপ লাগছে..
আমি পারিনি হিমেলের সব চিন্হ মুছে ফেলতে…
আমি হেরে গেছি…
ঠিক করে খেতে পারছিলাম না, যতবার খাচ্ছি তত বার বমি হচ্ছে..
শরির খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে..
রাতের বেলা মা আমাকে ডাকলেন..
আমার সাথে নাকি কিছু কথা আছে..
বাসার সবাই দেখি এখানে বসে আছে…
আমাকে দেখেই বাবা বললো..
– বসো, আমাদের কিছু কথা আছে তোমার সাথে।
দেখো তোমার আর হিমেলের ডিভোর্স হয়ে যাচ্ছে…
এখন তুমি প্রেগন্যান্ট..
এখন এই অবস্থায় কোন ডিভোর্স হয় না। আচ্ছা তুমি কি ওদের জানিয়েছো এই খবরাটা??
– না।
– তা বেশ ভালোই করেছো। দেখো আমরাও চাই তোমার আর হিমেলের ডিভোর্স হোক।
এইভাবে তোমাকে একটা অমানুষের সাথে ঘর করতে দিতে আমরা পারি না। তাই যে তোমাকে ভালোবাসে তার হাতে তোমাকে তুলে দিতে..
এখন প্রবলেম হচ্ছে এই বাচ্চাটা। তুমি এবরেশন্টা করিয়ে নাও..
– হুয়াট ও আমার সন্তান। আমি ওকে হারাতে পারবো না। তোমরা কি ভেবেছো কি এক্টার পর একটা ডিসিশনস আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছ। যখন খুশি যার তার গলায় ঝুলিয়ে দিচ্ছো..
আমি একটা ম্যাচিউর মেয়ে আমার একাটা মতামত আছে…
ব্যাস আমি ওকে আমার নিজের পরিচয়ে বড় করবো।
ভাইয়া চেঁচিয়ে উঠলো
– নিজের পরিচয়ে বড় করবি মানে কি??
আমারা একটা সমাজ বসবাস করি, তোমার সাথে একটা বাচ্চা থাকলে কে তোমাকে বিয়ে করতে চাইবে। আর এইরকম ঝামেলা কে ঘাড়ে নিতে চাইবে??
– আমি আমার বাচ্চাকে মানুষ করবো, তোদের কাছে চাইতে আসবো না।
– ভুলে যাচ্ছিস বোধ হয় তুই এখনো আমাদের ঘাড়ে খাস..
– তুই এত বড় কথা বলতে পারলি..
মা, বাবা
তোমারা বেচে থাকতে ও এইগুলা বলে কি করে..
ভাবি বলে উঠল
ও ভুল কি বলেছে…
মা বাবা কেউ কোন কথা বলছে না। তারমানে তারা সবাই এটাই চায়..
ভাইয়াই ঠিক।
আমি আমার রুমে এসে দরজা লাগাই দিলাম।
সেদিন আর কারো সাথে কথা বললাম না।
এরপর থেকে আমি চুপচাপ হয়ে গেলাম। সব কিছু অসহ্য লাগত। মনে হত মরে যাই..
কেউ আমাকে বুঝে না..
আমার রুমের দরজায় অনেক্ষন ধরে কেউ নক করছে…
– এই কে??
আমার রুমে কে?? নক করে?
কেউ আসবে না আমি একা থাকবো।
নাহ তবুও নক করেই আছে..
রাগে দরজা খুলি..
তুষার আমাকে ঠেলে রুমে ঢুকে..
আমি বিছানায় বসে পড়ি..
– এই তুই এইরকম গুটিয়ে নিয়েছেন ক্যান।
দেখ তুই চাইলে আমি তোর বাচ্চার বাবা হতে পারি.
জানি মা রাজী হবে না তবুও তোকে খুশি রাখার জন্য আমি রাজি।
– তুই আমাকে খুশি রাখবি না..
এইটা বলে আমি ওকে ঠাস করে চড় মারলাম।
– আমার সন্তানের বাবা থেকেও আজ নেই শুধু তোর জন্য।
আমার সংসার ভেংগেছে তোর জন্য.
আমার জীবনে যে আধার ঘনিয়ে এসেছে তার জন্য তুই দায়ী।
বিশ্বাস কর আমি মরে যাব যদি আমার বাচ্চাকে হারাই।
আর তোকে আমি স্রেফ ঘৃনা করি।
তুই আমাকে যদি বিয়েও করিস আমার মন কোনদিন পাবি না। আই হেইট ইউ..
জাস্ট হেইট ইউ…
গেট লস্ট..
যাহ…
– দেখ তুই শান্ত হ। এমন উত্তেজনা তোর জন্য ঠিক না।
– কি শান্ত হবো আমি??
যে স্রী তার স্বামীকে তার অনাগত সন্তানের খবর দিতে পারেনা , যে মা কোনদিন তার সন্তানকে তার বাবার পরিচয় দিতে পারবে না..
সে কি করে শান্ত হবে। আমার সন্তান পিতৃহারা হবে শুধু তোর জন্য…
আমি ফ্লোরে বসে কাদতে লাগলাম…
তুষার উঠে চলে গেলো…
এরপর থেকে আমি সারাদিন ভয়ে ভয়ে থাকি কখন ওরা আমাকে হস্পিটালে নিয়া যায়।
আমি অনেক বোঝাই ওদের কিন্তু সবাই নির্দয়ের মত আমার কথা শুনে নাই। আমাকে জোর করে টেনে হিচড়ে হস্পিটালে নিয়ে যায়…
আমার কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে…
আমি মরে যাব ওকে হারালে এই কথাটা কেউ বুঝল না ।
ক্ষ্মমা করে দে আমায় অনাগত সন্তান, আমি পারলাম না তোকে রাখতে…
আমি যখন গাড়িতে তখন তুষার আমাকে ফোন করে..
– এই তুই কই গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছে…
– তোর মনের বাসনা পুরন করতে যাচ্ছি। বাচ্চাটাকে গলা টিপে মেরে ফেলতে। এরপর দেখিস আমি সত্যি মরে যাবো..
তুই দেখিস..
ফোনটা কেটে দিলাম..
মা আর ভাবি কিছুই মনে করলো না এমন কথা শুনে..
ভাবলো আমি এমনিই বলছি…
হস্পিটালে গেলে ডাক্তার আমাকে কিছু টেস্ট দিলো।
আমি অঝরে কাদছিলাম…
অনেক প্রশ্ন করছিলো কোন উত্তর দিচ্ছিলাম না…
ডাক্তার বলল দেখুন ভয় পাবেন না এইটা এমন কোন কিছু না।
এইভাবে কাদতে আমি কোনদিন কাউকে দেখি নাই।
আপনার স্বামী আসে নাই??
মা বলে উঠল..
না ঢাকার বাহিরে থাকেতো তাই আসতে পারে নাই। আপনি আপনার কাজ করুন।
– ঠিক আছে। বাট ফ্রাস্ট বেবি আপ্নারা আরেকবার ভেবে দেখলেও পারতেন।
– নাহ, আপনি ওকে নিয়ে যা করার করেন। আর ভাবার কিছু নাই।
আমাকে স্যালাইন দেয়া হল…
আমার কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছে..
বারবার বলছিলাম আল্লাহ তুমি আমার বাচ্টাকে রক্ষা করো।
এরপর ডাক্তার আমাকে ওটিতে নিয়ে গেলো।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
Next article…!?
Plz plz plz give next part as soon as possible
ANyways ay golpo thake eta oboshoy jante parlam j meyara jemon tader husband r valobasha r ongsho kawke dite chai nah Chelara o same tader wife r valobasha r ongsho onno kawke dite chai nah❤️❤️❤️
Apnader page er golpo guli pori valo lage but ekta jinish valo lage na ekta time e golpo gula ar pai na jei part gula 1 mont hoye geleo post hoy na eita keno bolte paren
সাময়িক বিচ্ছিন্নতার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত !! ডটকম এর পাঠকদের সুবিধার্থে আমরা আমাদের গল্পপোকা ডটকম প্লাটফর্মে নতুন নতুন ফিচারস যুক্ত করতে চলেছি । আশাকরছি ভবিষ্যতে আর এমনটা হবে না ।
Pls next part deban pls