কাছে_আসার_গল্প পার্ট ১৮+১৯

1
3812

কাছে_আসার_গল্প পার্ট ১৮+১৯
#লেখা_আশিকা

কিছুই ভালো লাগছে না। ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠলাম…
আজকে আবার আমার এক্সাম আছে…
তাড়াতাড়ি কিচেনে গেলাম..
রান্নায় মনোযোগ নাই…
কিন্তু কিচ্ছু করার নাই।
ফোনটা সাইলেন্ট করা ২ দিন ধরে, নিতুকে ফোন করতে হবে…
এদিক দিয়ে আসার জন্য,

একসাথে যাব।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


হিমেল ঘুম থেকে উঠে পড়ছে…
আমি কিচেন থেকে শব্দ পাচ্ছি..
আমার ফোনটা তখন বালিশের নিচে ছিলো।
সাইলেন্ট করা, হিমেল কখনো আমার ফোন টাচ করে না কিন্তু সেই দিন করেছিলো।
আমার ফোনে তুষার ২ দিন ধরে নাহলেও ৫০-৬০ টা ফোন দিয়েছিলো।
আমি ফোনটা ধরেই দেখি নাই ২ দিন ধরে….
এত এত কল দেখে হিমেল তুষারের কলটা রিসিভ করে
রিসিভ করতেই হ্যালো বলার আগেই তুষার পাগলের মত বলতে থাকে….
— হিয়া, আমি তোকে পাগলের মত ফোন দিচ্ছি ২ দিন ধরে, কেনো ফোন ধরিছ নাই, আমি পাগল হয়ে যাবো, আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারছি না। বিশ্বাস কর আমি দুরেই সরে যেতে চাইছিলাম, কিন্তু যখন দেখলাম তুই হিমেলের সাথে ভালো নেই, তখন আমি পারি নাই দূরে সরে থাকতে। যদি তুই দুরেই চলে যাবি তবে কেনো এই কয়েকটা মাস এত কাছে এসেছিলি??
আমি জানি তুই তোর ফ্যামিলির জন্য এই বিয়েটা মেনে নিয়েছিস। আর কত বলতে পারিস আমরা কষ্ট পাবো…
তুই এই মিথ্যে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আয়…
কিরে কথা বলিস না কেন?
কি হলো..

কিছু তো বল…
আমি তখন রুমে গেলাম.

দেখি হিমেলের কানে আমার ফোন…
— কে ফোন করেছে??
কার ফোন??
দাওতো..
আমি হিমেলের থেকে ফোনটা কেড়ে নিতে গেলে…
কোন কিছু বোঝার আগেই
হিমেল ঠাস করে একটা চড় বসায়…
আমি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে ফেলি মার খেয়ে..
আমি হিমেলের শার্টএর কলার ধরি রাগে…
— এই তুমি পাগল হয়ে গেছো, আমি কি করেছি, যার জন্য তুমি আমার গালে হাত তুলছো..

ফোন দাও বলছি
বলেই আমি ফোন্টা কাড়তে গেলাম…
হিমেল ফোনটা জোড়ে ছুড়ে ফেলে দিলো..
সাথে সাথে ভেংগে চৌচির হয়ে গেলো।
আমি ভাংগা ফোনটা হাতে নিয়া হিমেলের দিকে এগিয়ে গেলাম
— তোমার খুব টাকা তাই না।
আমার ফোনটা ভেংগে দিছো তো আমাকেই ভেংগে দিছো।
আর আমাকে মারার সাহস তুমি কি করে পাও…
আমি হিমেলকে একটা ধাক্কা দিলাম।
ও আমার দুই হাত পেছন থেকে একসাথে জোরে চাপ দেয়…
— খুব তেজ তোমার তাই নাহ।
মিনিমাম লজ্জা থাকলে তুমি এই কথাগুলো এখন বলতে পারতা
না। ফোন ভেংগে গেছে খুব লাগছে না…
হুম সেটাই তো স্বাভাবিক…
এক্স এর সাথে কথা বলতে পারবা না তেজ তো আসবেই…
নাহ আমার কাছে এখন পুরা ব্যাপার ক্লিয়ার আমি কাছে আসলে তোমার এতো প্রবলেম হতো ক্যান, কেনো আমাকে সহ্য করতে পারতা না। এই শোন দুই নৌকায় পা দিয়া চলা যায়না।
বাহ বেশ তো..
— হিমেল আমার লাগছে ছাড়, এইগুলা কি বলছো, বিশ্বাস করো আমি কিছুই জানি না।
হিমেল আমাকে ছেড়ে দেয়…
আর সোজা বিছানায় বসে পড়ে
নিচের দিকে কিছুক্ষন তাকাই থাকে…
আমি হিমেলের পাশে গিয়ে বসি
ওর হাতটা ধরি….
— হিমেল কেনো তুমি এইগুলা বলছি আমি জানি না।
কে তোমাকে কি বলছে আমি সেটাও জানি না…
প্লিজ মানুষের কথা শুনে তুমি আমাকে ভুল বুঝ না।
হিমেল আমাকে সরিয়ে দেয়।
— ভুল তো আমি আগে বুঝেছিলাম। নাহ এখন সব ক্লিয়ার…
একদম নাটক করবানা…
আমি হিমেলের দিকে তাকালাম
তার চোখে জল…
হিমেল কাঁদছে…
— হিমেল আমার কথাটা শোন..
— ব্যাস আর এক্টাও কথা না। আমি একটু একা থাকতে চাই…
প্লিজ..
— আমি কোথায় যাব??
তুমি এমন কেনো করতেছো??
–আশা করি তোমার মত মেয়েদের যাওয়ার যায়গার অভাব হবে না….
আমি রুম থেকে যাচ্ছি না দেখে হিমেল বাসা থেকে বের হয়ে গেলো…
আমি বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে এইসব…
মনে হচ্ছে আমি একটা ঘোরের মধ্যে আছি…
রুমে বসে কতক্ষন কেঁদেছি জানি না।
তার পর ঘড়িতে দেখি ১০ টা বাজতেছে…
হিমেল এখনো বাসায় আসে নাই।
আমার এক্সাম আছে, কি করবো এখন, যাব নাকি যাবনা…
না গেলে তো প্রবলেম…
আমি কোনরকম রেডি হয়ে ইউনিভার্সিটিতে চলে গেলাম।
জানি না কপালে কি লেখা আছে…

#কাছে_আসার_গল্প#
পার্ট 19

আমার যেতে লেট হয়ে যায়.
এক্সাম হলে স্যার খাতে দিয়ে দেই…
কোনদিকে তাকানোর আর টাইম পাই নাই…
এক্সামটা কোনরকম দিয়ে বের হয়ে আসলাম।
ডিপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে সামনে তাকাতেই দেখি হিমেলের গাড়ী…
তার মানে হিমেল আসছে আমাকে নিতে…
ও হয়ত ওর ভুল টা বুঝতে পারছে…
আমার এতো ভালোলাগছে কেনো….
কিন্তু ওকে দেখতে পাচ্ছি না কেনো??
আমি যখন সামনে আগাতে যাব…
তখনি কেউ আমাকে পিছন থেকে টান মারে।
আমি জোক সামলাতে না পেরে পড়ে যাই।
উঠে দেখি তুষার….
আমি ওর দিকে তাকালাম
কি অবস্থা, এলোমেলো চুল, চেহারার কি হাল, কেমন ভিলেনের মত লাগছে…
— তুই???
–হুম আমি। তোর ফোন বন্ধ কেন??
আমি পাগলের মত তোকে ফোন দিচ্ছি…
ধরিস না, ধরলেও কথা বলিস না, এখন বন্ধ???
এইগুলা কি??
তুই কি বুঝিস না আমার ভালোবাসা??? বল…
এতদিনেয়েও কি তুই বুঝিস নাই, আমি তোকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারি নাই।
আমি তুষারের কথা শুনে হাসবো নাকি কাঁদবো কিছুই বুঝতে পারছি না।
— এই তুই এসব কি বলছিস??
ভুলে যাসনা আমি অন্য কারো স্রী।
— নাহ আমি কিচ্ছু ভুলি নাই। আমি শুধু তোকে চাই আর কিছু আমি জানতে চাই না।
— দেখ তুই অনেক লেট করে ফেলেছিস। তুই তো কখনো আমাকে বলিস নাই…
প্লিজ এই চিন্তা মাথাতেও আনিস না। এবার আমার পথ ছাড়…
— এইভাবে হুট করে এই বিয়েটা হয়ে যাবে সেটা কি আমি জানতাম??
আমি তোকে সেই ছোট থেকে ভালবাসতাম তুই কি সেটা বুঝতি
নাহ.. .
বল
তুষার চিৎকার করে উঠে….
এই তুই বুঝতি না, তোর পিছে আমি কুত্তার মত ঘুরতাম, তুই কিছু চাইলে আমি সারা শহর তন্নতন্ন করে খুজে এনে দিতাম।
তুই মুখ ফুটে বলতে দেরি হলেও তোর সামনে আনতে আমার দেরি হয় নাই, তুই না খেয়ে থাকলে আমি খেতাম না, তুই অসুস্থ থাকলে আমি রোজা রাখতাম যাতে তুই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাস। এইগুলা কি ভালবাসা ছিলো না??
বল??
উত্তর দে??
আমি ওর দিকে তাকাই আছি, ও কেমন ভায়োলেন্ট হয়ে যাচ্ছে…
— ব্যাস আর একটা কথাও শুনতে চাই না। তুই আমাকে শান্তি দে…
আমি তোকে কোনদিন ওই চোখে দেখি নাই…
প্লিজ তুই আমার সামনে থেকে সর, আমার সব অশান্তির মুল তুই??
— তোকে অবশ্যই শান্তি দিবো। তোকে না পেলে এই জীবন দিয়ে আর কি করবো
এই কথা বলেই তুষার তার ব্যাগ থেকে ছুড়ি বের করে…
তার হাতের দিকে ছুড়ি ধরে।

তখনি আমি তুষারের হাত ধরি…
ছুড়িটা কাড়াকাড়ি করি…
— হিয়া সর তুই…
— তুই ছুড়িটা দে বলছি। তুই এইরকম কিছু করতে পারিস না।
দে বলছি…
দে….
তখন আমাদের এইসব কাণ্ডকারখানা দেখে আশেপাশে মানুষ আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে…
আমি তুষারের দুই হাত ধরে ফেলি….
— প্লিজ তুই এইরকম কিছু করিস না। তুই আন্টির কথাটা একবার ভাব.
আমার তখন মাথা কাজ করছিলো না।
হিমেল আমাকে নিতে আসছিলো।
আমাদের নিউ টিচার মুবিন স্যার হিমেলের ফ্রেন্ড, এখানে আসার পর হঠাত ওর স্যার এর সাথে দেখা হয়ে যায়…
তো ও স্যারের সাথে কথা বলছিলো…
এই টাইমে তুষারের সাথে আমার ঝামেলা শুরু হইছে..

আশেপাশে চেঁচামেচি শুনে হিমেল আর মুবিন স্যার এই দিকে আসে..
এসেই দেখে আমি তুষারের হাত ধরে কি যেন বলছি..

এইটা দেখে হিমেলের পায়ের তলায় মাটি সরে গেল…
সে লজ্জায় মাথা নিচু করলো তার ফ্রেন্ড সাথে থাকায়…
আমি আর পিছে তাকাই নাই..
হিমেল পরিস্থিতি সামলে নিতে আমার পিছনে আসে…
— এইটা একটা পাবলিক প্লেস, এইখানে এইরকম সিনক্রিয়েট করাটা খুব একটা শোভন না।
আমি হিমেলের গলা শুনে তুষারের হাত ছেড়ে দেই…
— তোমরা আমার সাথে আসো, যা জামেলা হইছে আমি সব মিটিয়ে দিবো…
কথা দিচ্ছি…
— আপনি কি মিটিয়ে দিবেন…??
আমার হিয়াকে আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন..??
বলুন হিমেল??
উত্তর দিন??
জানি কোন উত্তর নেই??
তুষারের কথা শুনে আমি হা হয়ে গেলাম…
কোন কথা বেরুচ্ছে না…
— তুমি আমার সাথে আসো..
যা বলার সেখানে বলছি…
— আরে আপনি কি বলবেন আমাকে.??
যা বলার এখানে বলেন??
— এই ছেলে তুমিতো খুব ডেস্পারেট??
হিয়া, এই রকম ছেলে তোমার বন্ধুর থেকে বেশি কিছু হয়?? হাউ ফানি..!!
তুমি প্রোভ করো হিয়া তোমার..
আমি তোমাদের মাঝ খান থেকে সরে যাবো…
— হিমেল, তুমি এইসব কি বলছো…
— হিয়া জাস্ট সেট আপ..
— কি প্রোভ চান??
আপনি বিয়ের আগে হিয়াকে জিজ্ঞাস করেছিলেন ও কাউকে ভালবাসে কিনা??
করেন নাই।
আপনি বিয়ে করে নিলেন।
হিয়া আপনাকে মানতে পারে নাই সেটা আপনি ভালো করেই জানেন।
আপনার ওয়াইফ কে জিজ্ঞাস করেন…
ছোট থেকে এখন পর্যন্ত ওর খেয়াল কে রাখছে??
ওতো ওর নিজের ডিসিশন নিজে নিতেই পারে না…
যে কয়েকটা মাস আপনি ওর থেকে দূরে ছিলেন..
আমি ওর খুব কাছে ছিলাম..

— তুষার, মানে কি??
এইগুলা কি বলস তুই??
— চুপ হিয়া, এক্টাও কথা না ওকে বলতে দাও…
আমি চুপ করে গেলাম..
তুষার আমাকে পাওয়ার জন্য এতটাই ডেস্পারেট হয়ে গেলো যে সত্য মিথ্যার প্রভেদ সে ভুলে গেলো..
একপর্যায়ে সে বলে ফেললো..
— আপনার ওয়াইফকে জিজ্ঞাস করেন ওর রুমে আমি ঢুকি কিনা??
বাকীটা নিশ্চয় আর বলতে হবে না।
— ছিঃ ছিঃ তুই এতো নিচে নামতে পারিস??
এত বড় মিথ্যে কথা তুই বলতে পারলি??
তুই আমার রুমে ঢুকিস তো কি??
এর মানে কি??
ক্লিয়ার কর??
হিমেল মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে যায়..

আমি হিমেলের পিছু পিছু যাই..
— হিমেল প্লিজ আমার কথাটা শোন…
সব মিথ্যে..
কিছুই সত্য না…
হিমেল না শোনেই গাড়িতে উঠে বসে…
আমিও তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠি…
হিমেল ড্রাইভ শুরু করে সারা রাস্তা আমার দিকে তাকাই নাই আর কোন কথা ও বলে নাই..

একটু পর দেখি হিমেল তার এক হাত দিয়া চোখের জল মুছতেছে..

বাসায় এসে হিমেল রুমে চলে যায়..
আমিও তার পিছুপিছু যাই…
আমাকে দেখে হিমেল বলে উঠে..
— হিয়া প্লিজ আমি একটু একা থাকতে চাই…
–হিমেল বিশ্বাস করো, আমার কোন দোষ নেই…
হিমেল রুম থেকে বেড়িয়ে অন্য রুমে দরজা লাগাই দেই…
আমি ওই রুমের দরজায় নক করি অনেকবার..
কিন্তু দরজা খোলে না..
আমি রুমের সামনে হিমেল হিমেল বলে কাদতে থাকি…
চলবে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে