কাছে_আসার_গল্প পার্ট ১২
লেখা আশিকা
আজকে ইউনিভার্সিটিতে গেলাম
অনেকদিন যাওয়া হয় নাই।
সবাই আমাকে পেয়ে বসলো।
ওই কেমন কাটতেছে বিবাহিত জীবন।
তুইতো দুলাভাইকে পেয়ে আমাদের ভুলেই গেলি??
দুলাভাই কেমন ভালবাসা দিলো রে??
এই টাইপ কুয়েশ্চেন করে করে মাথা টা পুরা খেয়ে ফেললো।
সবাই আমার সাথে কথা বললেও তুষার আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে..–
এই তুষার তোর কি হইছে রে??
তুই আমাদের রিসিপশনে আসলি না ক্যান??
— আমার কি হইছে সেটা তোর না জানলেও চলবে। তাছাড়া তুই সুখে আছিস সেটাই বড় কথা।
বলেই তুষার চলে গেলো..
আমি নিতুকে জিজ্ঞাস করলাম,,
— ও এইরকম চুপ চাপ কিভাবে হয়ে গেলো??
যে ছেলের বকবক না করলে পেটের ভাত হজম হয় না সেই ছেলে এতো চেঞ্জ??
-তুই বাদ দে তো ওর কথা ।
চল বাসাই যাই।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
— হুম চল।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে হিমেলকে ফোন দিলাম, ফোনটা তুলছে না।
আমি ফোন দিতেই আছি বারবার
কিছুক্ষন পর ব্যাক করে
— কি হইছে??
— তোমাকে কালকে থেকে এতবার এতবার ফোন দিচ্ছি ধরো নাই ক্যান??
— লিসেন, আমি তোমার মত বসে বসে খাই না যে সারাদিন ফোন নিয়া বসে থাকবো।
— অন্তত একটা ফোন তো করতে পারতা??
— তুমি এতো কথা বলো কেনো??
কি বললাম তোমাকে সেটা কান দিয়া ঢুকে নাই?
আর একটা কথা আমাকে এইভাবে বার বার ফোন দিয়া বিরক্ত করবানা।
-হিমেল হিমেল….
শোনো…
নাহ ফোনটা এইভাবে কেটে দিলো……
তারপর আর ফোন করার সাহস পেলাম না।
মা এসে আমাকে জিজ্ঞাস করছিলো যে, আমার শ্বশুর শাশুড়ি আমাকে ফোন টোন করে কিনা??
আমি বলেছি যে করে, আরেকটু আগেও করেছিলো।
সত্যিটা বলার সাহস পাচ্ছিলাম না।
হিমেলের জন্য মা আর বাবা আমাকে কি মনে করছে কে জানে??
মাইক্রোবায়োলজি নোটস আমার কাছে নাই তাই নিতু কে ফোন দিলাম…
নিতু বললো ওইটা ওর কাছে নাই। তুষারের কাছে আছে।
ও বললো চল বিকেলে তুষারের কাছে যাই, নইলে কালকে আবার এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে।
আমি বললাম ঠিক আছে…
আমি, নিতু, তুষার পাশাপাশি এলাকায় থাকি, আমরা প্রায়শই একসাথে যাওয়া আসা করতাম।
মা কে বলে বিকেলে তুষারের বাসায় গেলাম….
আমার ফোনটা আবার সাইলেন্ট করা ছিলো।
তুষার আমাদের দেখে এমন ভাব করলো যেন চিনেই না।
আমি হাসিমুখে বলে উঠলাম,
— কি রে বাসায় আসতে দিবি না? নাকি চলে যাবো??
— আয় ভিতরে আয়…
ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে তুষার আমার দিকে তাকিয়ে বললো…
কিরে হিয়া তোর আবার আমাকে কেন দরকার পড়লো সেটাইতো বুঝলাম না।
— কেনো আমি কি তোর কাছে আসতে পারি না।
— আচ্ছা বস তোরা।
আমি মাকে ডেকে নিয়াসি…
ঐতো মা…
মা হিয়া আর নিতু আসছে..
ভিতরে আসো।
আন্টি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো…
হিয়া মা তুই কেমন আছিস??
এইভাবে তুই আমাদের ছেড়ে চলে গেলি..
একটিবার জানালিও না।
সেই ছোট থেকে তোকে দেখছি..
কত ভালবাসা জড়িয়ে আছে তোর সাথে সেটাতো একবারো তুই বুঝলি না।
দেখ আমার তুষার….
তুষার আন্টিকে থামিয়ে দিলো..
— মা প্লিজ থামো।
তোমার হিয়া খুব সুখে আছে সেইটাই তো সব থেকে বড় পাওয়া।
আন্টি বললেন ঠিক আছে তোরা বোস আমি আসছি।
আমি কিছুটা কনফিউজড আন্টি কি সব বলে গেলেন।
এতোটা পাত্তা দিলাম না।
আমার ফোনটা আবার সাইলেন্ট করা ছিলো…
আমরা নোটস টা নিয়ে চলে আসবো তখন নিতু বলে দেখতো কয়টা বজে??
আমি টাইম দেখার জন্য ফোন খুলে দেখি ১৮ মিসড কল…
কল লিস্টে দেখি হিমেল ফোন করেছিলো ৮ বার, শাশুড়ি মা ৫ বাদ, বাবা ৫ বার এতো কল করেছে কেনো???
আমি ফোন করলাম হিমেলকে…
— হ্যালো
— হ্যা মেম, আপনারফোন কোথায় থাকে??
আর আপনি কোথায় থাকেন??
— আমার ফোনটা সাইলেন্ট করা ছিলোতো তাই??
— তা বেশ, সাইলেন্ট কিন্তু আপনি এই সন্ধ্যার সময় বাসায় নেই কেনো??
আমার মা তোমাকে দেখতে আসছিলো কিন্তু তুমি নাই কেনো??
— মা আসবে সেটাতো আমি জানিনা??
আমাকে যদি বলতো তাহলে আমি সত্যিই বাইরে আসতাম না।
— তাহলে এখন থেকে তোমাদের বাসায় আসার জন্য তোমার পারমিশন লাগবে, তাইতো..
— তুমি এইভাবে নিচ্ছো কেনো??
আমি কি তাই বলেছি?? আর এইখানে এইভাবে রিএক্ট করার মত কিছু হয় নাই।
— গুড, তা আপনি আছেন কোথায়??
— আমি একটা ইমপোরটেন্ট নোটস নিতে আসছি আমার এক ফ্রেন্ড এর বাসায়।
— কি ছেলে ফ্রেন্ড ??
— ফ্রেন্ড ছেলে না মেয়ে এইগুলা কি ধরনের ভাষা??
— এখন কি আপনার কাছে আমাকে ল্যাংগুয়েজ
শিখতে হবে??
তোমার বলতে এতো অসুবিধা হচ্ছে কেনো যে বয়ফ্রেন্ড এর সাথে ডেটে আসছ?? তাই ফোন সাইলেন্ট মুডে রাখছ যাতে কেউ ডিস্টার্ব না করতে পারে।
— তুমি কিন্তু তোমার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছো??
— ও রিয়েলি?? আসলে জানা ছিলো না। আমি জানি তুমি এই সম্পর্কটা মানো না আর তার প্রমান তুমি আজকেই আবার দিয়া দিলা। তুমি যে এখন বাইরে আছো এইটা তুমি কার পারমিশিন নিয়া আসছ?? লিগ্যালি তুমি এখনো আমার ওয়াইফ, আমি তোমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই পারি।
তুমি যে আমাকে মানোনা সেটা আবার বুঝাই দিলা…
ভাল..
আমার কাছে কোনো উত্তর নেই হিমেলের প্রশ্নের..
— হিমেল শোন
প্লিজ শোন আমার কথা।
তুমি আমাকে ভুল বুঝছো..
হিমেল…
হিমেল..
ফোনটা কেটে দিছে..
আমি তুষারের বাসায় ফ্লোরে বসে কাদতে লাগলাম।
নিতু আর তুষার এতক্ষণ ধরে আমার কথাগুলো শুনছিলো..
নিতু আমাকে জড়িয়ে ধরে।
তুষার অন্যদিকে তাকাই ছিলো
আমার কান্না দেখে।
এখন আমার একদম কাছে আসে হিয়া প্লিজ এইভাবে কান্না করিস না
সব ঠিক হয়ে যাবে।
— তুই কিছু জানিস না রে তুষার, কিচ্ছু ঠিক হবে না…
— কাদিস না। বাসাই যাহ…
আমি নিতুর সাথে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় আসতেই মা আর বাবা একসাথে প্রশ্ন করতে শুরু করলো..
এতক্ষণ লাগলো কেনো??
তোমার শাশুড়ি এসেছিলো, তোমার সাথে কথা বলতে।
ফোন ধরো নাই ক্যান??
তোমার কবে বুদ্ধি হবে ওদেরকে ফোন করে জানাওনাই ক্যান??
তোমার শাশুড়ি ভেবেছিলো হিমেল জানে তাই হিমেলকে ফোন করেছিলো…
……………..
সবার সব কথা মাথা নিচু করে শুনে নিলাম।
কোন উত্তর দেয়ার ইচ্ছে করছে না।
আমি সরাসরি আমার রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম।
মা আর বাবা বুঝে গেছে আমার কিছু একটা হয়েছে…
চলবে
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/