কাছে_আসার_গল্প পর্ব ৬

0
3651

কাছে_আসার_গল্প পর্ব ৬
লেখা আশিকা

রুমটা ফাকা ফাকা লাগছিলো।
কেন যেন আমার ভালো লাগছিলো না। বাসায় পৌছে হিমেল ফোন করেছিলো…
আর করে নি।
আমি রাতের খাবার খেয়ে বই পড়তে লাগলাম।
ফোনটা বেজে উঠল…
হিমেল ফোন করেছে, রিসিভ করলাম…আমি হ্যালো বলতেই…
— কি গো লজ্জাবতী আপনার লজ্জা ভাংছে।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


— আপনি কি সব বলেন না। ধ্যাত ভালো লাগে না।
— হুম ভালো তো আমারো লাগছে না।
আমার তোমাকে ছাড়াএকদম ভালো লাগছে না।
তারপর দুজনেই চুপ…
তার পর সে সেই ই বলল…
— কি হলো কিছু বলছোনা কেনো??
— কই কিছুই না তো।
— আমি জানি তুমি আমাকে মিস করছ…..
কি ঠিক বলেছি না?
জানি তুমি স্বিকার করবানা….
— আপনার মাথা, এই যে আমি রাখলাম।
বলেই ফোন কেটে দিলাম..
হিমেলের মুখে এইসব কথা শোনলে কেমন যেন আনইজি লাগে, জাস্ট নিতে পারিনা।
রাতে কেন জানি ভালো ঘুম এলো না। খালি এপাশ ওপাশ করলাম….
ফলাফল লাল চোখ। সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খাওয়ার জন্য কিচেনে গেলাম।
মা আর ভাবী গল্প করছে।
আমাকে দেখেই ভাবী বলে উঠল..

— কি গো ননদীনী তুমি এত সকালে?? তাও আবার রান্নাঘরে..
কি ট্রায়াল দিতে??
হি হি করে হেসে উঠল…
— আমি কি এখন সকালে উঠতেও পারবোনা, আর কিচেনে আসতেও পারবো না…
ধুর…
— আহা হিয়া তুই রাগ করছিস ক্যান?
তোর ভাবী তো মজা করছিলো…
কিছুইতো শিখাতে পারি নাই তোকে, শ্বশুরবাড়িতে না জানি কত কথা শোনতে হয়…
বলেই মা আমাকে ধরে কাঁদতে লাগল…
আমিও কাঁদতে লাগলাম।
— মা দিলেন তো মেয়েটাকে কাদিয়ে….
ভাবী কথা ঘুরানোর জন্য বলে উঠল…
হিয়া দেখ আজকে সব তোর পছন্দের রান্না হইছে।
চিংড়ির মালাইকারীটার যা টেস্ট হয়েছে না…
বলেই আমার মুখে চিংড়ী ঢুকিয়ে দিলো….
— খুব মজা হয়েছে ভাবী, আমাকে শিখাই দিও নইলে পরে আমার খেতে ইচ্ছে করলে কে খাওয়াবে বলেই ভাবীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলাম।
ভাবী ও কেদে দিলো।
এক রাশ কান্নাকাটির পালা শেষ করতেই দেখি আত্নিয়-স্বজন এসে উপস্থিত।
সবাইকে কুশল জিজ্ঞাস করে রুমে আসলাম।
সবাই ব্যাস্ত আমাকে বিদায় দেয়ার জন্য।
অনেক কাজ, ভাইয়া, আর বাবাকেই সব করতে হচ্ছে।
হিমেল আর ফোন করে নাই হয়ত সেও বিজি।
ফ্রেন্ডদের বললাম কালকে বাসায় আসার জন্য।
সারা সন্ধ্যা বই পড়েই কাটালাম। আমি এইভাবেই অভ্যস্ত, ছোটবেলা থেকেই একটু চুপচাপ একা থাকতেই বেশি প্রছন্দ করি। আর হিমেল তার উল্টো, আমি জানিনা ওকে কোনদিন ভালো বাসতে পারবো কিনা?
খালি মনে হয় সব শেষ হয়ে যাচ্ছে, যখন এইগুলা মনে হয় তখন হিমেলকে অসহ্য লাগে।
ফোন বাজছে হিমেল কল করেছে…
— এই তুমি বউ না,প্লাস্টিক??
— হুয়াট?? এইগুলা কি ধরনের ভাষা। আমি জীবনে ও শুনি নাই…
— শোন নাই এখন থেকে শুনবা।
সবে তো শুরু…
আর হ্যা তোমাকে প্লাস্টিক বলবনাতো কি বলবো??
তুমি তো আমাকে একবারো কল করলা না। সব ঠেকা শুধু আমার নাহ…??
— হুম সব ঠেকা আপনার, এবার হইছে…
— কি??
তুমি এই কথা বললা??
তোমাকে আগে কালকে পেয়ে নেই তারপর কার কি সেটা একদম ক্লিয়ার করে বোঝাই দিবো।
— হিমেল আমার মাথা ব্যাথা করছে, প্লিজ এখন একটু থামেন….
— মেডিসিন খাও, আর শোন বই নিয়া সারাদিন রাত বসে থাকো তাহলে মাথা ব্যাথা কমবে।
রাখি বলেই একটু রাগে হিমেল ফোন কেটে দিলো
হিমেল ফোনটা রাখার পর থেকে এতো খারাপ লাগছে কেনো??
আমিতো এটাই চাইছিলাম হিমেল ফোন কেটে দিক…
কিন্তু এতো অস্বস্তি হচ্ছে কেনো…
কিছুক্ষণ ঘুমানোর চেষ্টা করলাম.

কিন্তু নাহ ঘুম আসছে না।
সাত পাচ না ভেবেই হিমেলকে ফোন দিলাম…
রিং হয়ে যাচ্ছে, ধরছে না..
আবার দিলাম….
এখন ধরেছে…
— হ্যালো…
আমি চুপ..
— এত রাতে আবার কি হইছে?
কি বলব বুঝতেছিনা…
তাই চুপ থাকাটাই বেটার।
— কি কথা বলতে পারছোনা?
আমার সাথে যেহেতু কথা বলতে ভালো লাগে না তাহলে ফোন করেছো ক্যান??
এইবার আর থাকতে পারলাম না। অজান্তেই বলে ফেললাম…
— তুমাকে কি আমি এই কথা কখনো বলেছি??
এত বেশি বুঝো ক্যান??
— কি জানি বললা??
— কই কিছু নাতো??

(লজ্জা পেয়ে)

— নাহ..
তুমি শব্দটা শোনলাম মনে হচ্ছে…

— বললে বলছিইইই..
তো কি হইছে..
— অনেক কিছু হইছে, ততুমি সেটা বুজবা না, তোমার বাবুর বাবাটা খুব খুশি হইছে, এইবার লক্ষি মেয়ের মত ঘুমিয়ে পড়ো, আর আমিও ঘুমাই, আর হ্যা কিছু কথা কালকের জন্যো তুলা থাক।
গুড নাইট বলে হিমেল ফোন কেটে দিলো…
আমিও গুড নাইট বললাম।
সেদিন অনেক ভালো ঘুম হলো।
পরদিন সকালে সবার চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভাংগল…
হবেইতো কত মানুষ বাসায়…
মা এসে আমাকে ঘুম থেকে তুললেন।
ফ্রেশ হয়ে এসেই দেখি মা খাবার নিয়া বসে আছে…
মা আমাকে আজকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলেন….
সেদিন সবাই আমাকে নিয়া পুরা ব্যাস্ত হয়ে পড়ল…
মা আমার জন্য বানানো গয়নাগুলো আমার হাতে দিলো।
আমার বন্ধু-বান্ধবরা সবাই চলে আসল…
শুধু তুষার আসে নাই।
তুষার ওদের বাড়িতে গিয়েছিলো, পরে সবার কাছে আমার বিয়ের কথা শুনেছে, আমি আর ওকে জানাইতে পারি নাই তাই হয়ত রাগ করেছে…
আসলে ওর সাথে আমি সব কিছু শেয়ার করতাম তো, তাই এইটা না বলাতে ও রাগ হয়েছে।
যাক পরে তুষারের সাথে কথা বলে নিবোনি….
মা আমাকে বান্ধবিদের সাথে পার্লারে পাঠালো….
আমাকে একটা লাল বেনারসি শাড়ি পড়ানো হলো…..
হিমেলদের বাড়ী থেকে যে গয়নাগুলো পাঠানো হইছে অইগুলা আজকে পড়লাম।
আমাকে অনেক সুন্দর করে সাজানো হলো…
বান্ধবীরা সবাই বলছে আমাকে দেখে নাকি হিমেল আজকে চোখ সরাতেই পারবে না।
এরপর কমিউনিটি সেন্টারে আমাকে নিয়া গেলো।
হিমেল আজকে আমাকে দেখে কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে।
সবার সামনে বার বার এইভাবে তাকালে লজ্জা লাগে!।
বাট এই ছেলে কিচ্ছু বোঝে না।
হিমেলের বন্ধুরা আসলো সবার সাথে আমাকে পরিচয় করাই দিলো।
অনেক ছবি তোলা হলো।
যাওয়ার কথা মনে হতেই আমার কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে…
যাওয়ার সময় আমি মা, বাবা, ভাবী, ভাইয়া সবাইকে ধরে অনেক কাঁদলাম।
জানি না আমার কান্না কেনো থামছেই না। সারা রাস্তা কান্না করতে করতে গেছি।

চলবে।।।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে