কাছে আসার গল্প পর্ব ৫
লেখা আশিকা
ঘুম ভেংগে দেখি ১২ টা বাজে। এত বেলা হয়ে গেলো তবুও কেউ ডাকেনি। বুঝলাম না।
উঠতে যাব তখন জিরাফটা বলে,
— এই তুমি উঠ কেন?? আরেকটু ঘুমাও।
— তাইলে কি সারা দিন ঘুমাবো?? কয়টা বাজে জানেন??
১২ টা বাজে।
কলকল করে বলে দিলাম।
— কি ই ই??
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
হু…
— এখনো তো কেউ ডাকেনাই। নো প্রব্লেম। আসো…
নিলজ্জের মত
বলেই আমার কাটা হাত ধরে জোরে টান দিয়া শোয়াই ফেলে।
— উঁহু…
আমার হাতে ব্যাথাতো…
— ভুল হয়ে গেছে…
আসলে মনে ছিলো না। যাও আর ভুল হবেনা।
— মনে থাকলেই ভালো। এবার উঠুন সবাই কি ভাবছে…
— কি ভাববে??
আমার বউ এর সাথে আমি আরো ঘুমাবো তাতে কার কি???
একটা চোখ মেরে মুচকি হাসি দিয়ে কথাটা বললো
— সেই তো…
নাহ…
আমি কথায় পারবোনা।
আমি উঠে পড়লাম।
হিমেল বালিশের নিচ থেকে ফোন নিয়া দেখে ২৬ টা কল..
— এইরে আম্মু ফোন দিছিলো ২৬ বার। কি মরা ঘুম দিলাম…
ধুর..
কালকে বাসা থেকে আসার সময় কাউকে বলে আসি নাই। তাই হয়ত সবাই খুব টেনশন করতেছিলো..
এত এত ফোন করেছে তাই..
ইভেন গেট টাও খোলা রেখে এসে পড়ছি।
— এইভাবে এত রাতে কেউ আসে?? সবাই কি ভাববে?
— আরে ধুর আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছিলাম না। আর সে আছে তার প্রেস্টিজ নিয়া…
শোন মেয়ে পেটে খিদা থাকলে মুখে লাজ করতে নেই।
— আহারে আপনার খুব খুধা পেয়েছে না।
আপনি ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি টেবিলে যান।
–হু পাইছে। আমি বলি কি আর আমার বউ বুঝে কি?
বলেই শাশুড়ি মাকে ফোন দিলো
ফোনটা ননদীনী ধরল…
— হ্যালো ভাইয়া।
— মা কই রে??
এত ফোন দিছে ক্যা?
— তাইলে তোমারে কি করবে??
তুমি ঢং করে বাসায় আসো, আবার চলে যাও। এইগুলা কি??
বিরহ অভিমানের পালা চলছিলো কি??
মা বিশাল খেপছে?? দিবেও তোমাকে?
বাই দ্যা ওয়ে, তুই ভাবীর রাগ কেমনে ভাংগাইলি??
— তুই বেশি পেকে গেছিস?
মা কি বলছেরে??
— আমি যা জিজ্ঞাস করছি
চুপচাপ উত্তর দাও।
নইলে কিন্তু
কইতাম না কি কইছে??
— এই তুই বলবি?? নাকি ফোন রাখব??
— বি কুল ভাইজান। মা আর বাবা ডিসিশন নিয়েছে
মানে অলরেডি আংকেলের সাথে কথা বলেও নিয়েছে…
আগে বল কি দিবি??
— যেটা চাস সেটাই দিবো। প্লিজ বল কি বলছে??
— ঠিক তো।তাইলে বলেই ফেলি।
— হু পাক্কা বল।
— বলেছে তুই যেটা করছিলি
আই মিন বিরহ অভিমান এইগুলা যাতে বাসায় বসে সারাদিন ধরে করতে পারিস তাই ভাবীকে পরশুদিন বাসায় উঠায় নিয়াসবে।
এইবার খুশি??
— সত্যি!!!
— হ্যারে বুদ্ধু..
এইবার যা চাই তা দিতে হবে। আর একটা কথা তোমাকে একটু পর বাসায় আসতে বলছে।
তো জলদি আইসা পড়ো। আমি আর ফোন করতে পারবোনা।
— ঠিক আছে…
বলেই ফোন কেটে দিলো।
আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছিলাম
পিছন থেকে আমার হাতটা টান দিয়ে ধরে হিমেল..
এরপর আচমকা পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমার পেটের উপর একটা হাত রাখে….
বুকের ভেতর ঢংঢং করে ঘন্টা বাজতে লাগলো। নিঃশ্বাস ঘন থেকে ঘনতর হতে লাগলো।
আমি উল্টো ঘুরতেই সে আমাকে আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে।
— পরশুদিন তোমাকে বাসায় নিয়া যাবো। আমার খুব খুশি লাগছে।
তুমি খুশি হও নাই ময়না??
এইকথা বলতেই আমি তাকে ধাক্কা দিয়া সরিয়ে দেই।
আমি ওয়াশরুমের দিকে যেতে থাকি।
__ আরে কি হলো, এইভাবে সরে গেলা কেনো?? আর কিছুতো বললা না?
__ কিছু বলার নাই।
বলেই ওয়াশরুমে গেলাম।
কল ছেড়ে ইচ্ছামত কাঁদলাম। কিছু ভালো লাগছে না। সবাই আমাকে এইভাবে পর করে দিচ্ছে??
তাছাড়া হিমেলের কোন কিছুই আমার ভালো লাগছে না। হিমেলের প্রতি কোন ফিলিংস কাজ করছে না। আমি ওকে ভালো বাসতে পারছি না। আমি মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না। আমার স্বপ্ন গুলো খালি আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে…
খালি মনে হচ্ছে হিমেলের জন্য আমার ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু আমি কি করব??
বাবাতো আমাকে ভালো করে বুঝে, কিন্তু সে আমাকে কেনো এইভাবে বিয়ে দিয়ে দিলো। সেইদিনের পর থেকে বাবা আমার সাথে ভালো করে কথা বলে নি কারন বাবা জানে তার মেয়ের মনে এখন কি চলছে…
খালি কলিজাটা ফেটে চিৎকার আসছে, কিন্তু কি কপাল সেটাও করতে পাচ্ছি না।
চোখে মুখে পানি দিয়ে রুমে চলে আসলাম।
এসেই দরজা খুলে বাহিরে যেতে লাগলাম।
হিমেল পিছন থেকে ডাকতে থাকল
কিন্তু আমি না শোনার ভান করে চলে গেলাম।
সরাসরি ভাবির রুমে ঢুকলাম,
ভাবিকে ধরে অনেক্ষন কাদলাম।
মা আসল তাকে ধরেও কাদতে লাগলাম।
— তোমাদের ছাড়া থাকব কিভাবে মা? আমাকে এইভাবে পর করে দিওনা মা।
— বিয়ের পর স্বামীর বাড়ী যেতে হয় মা
এইটা নিয়ম।
বলেই মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল
হিয়া হিয়া কোথায় গেলা ..
বলেই হিমেল এই ঘরে আসল
— কী শুরু হয়ে গেছে না।
আমি চোখ মুছে হিমেলের দিকে তাকালাম।
— আসলে আমার মেয়ে ছোট থেকে কখনো কোথাও থাকে নাই তো তাই একটু এমন করছে। তুমি কিছু মনে করনা।
–টেবিলে খাবার দিচ্ছি তোমরা আসো..
বলে ভাবি ডাইনিং চলে গেলো।
একটু পর হিমেল মা র সামনে আমার হাত ধরে বলে চলো খুব খিদা লাগছে..
এইছেলে তো আমার মান সম্মান কিচ্ছু রাখবে না।
গেলাম খেতে কিন্তু খেতে পারছিলাম না।
হিমেল আড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো…
এইবার সে তার প্লেট থেকে খাবার নিয়া আমার মুখের সামনে ধরে বলে খাও, নাও হা করো…
আমি মুখ খুলছি না বলে সে বাচ্চাদের মত জোড় করে মুখে তুলে দিলো…
কিন্তু আমি গিলতে পারছিলাম না। কিন্তু সে জোড় করে খাওয়াতে লাগল…
আমি খাবনা খাবনা করতে লাগলাম
কিন্তু সে জোড় করতেই আছে…
আমার বমি চলে আসল…
আমি বেসিনে দৌড়ে গেলাম, পিছনে সে ও…
আমি বমি করে দিলাম।
সে বলে উঠলাম….
— এই এখনোতো কিছু করলামই না, আর তুমি আগেই বমি করে দিলা।
আমি তার কথা শুনে জানিনা কেনো হেসে দিলাম….
— এইতো আমার বউ হাসছে। বলেই আমার নাকে টিপ দিলো..
— উহু ব্যথা লাগেতো।
— ওরে আমার ননী র পুতুল রে। খালি ব্যাথা লাগে।
এরপর ফ্রেশ হয়ে আমারা রুমে গেলাম।
— হিয়া আমার শার্টট দাও। আমি বাসায় যাব।
আমি তার শার্টটা বের করে দিলাম, সে রেডি হয়ে গেলো।
আমি চলে যাচ্ছিলাম, সে আমার দিকে আগাতে থাকে, আমি ভয়ে এক পা করে পিছতে থাকি, সেও আগাতে থাকে, সে আমার হাতটা ধরে আমাকে ওয়ালে ঠেকায়, আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি।
— আই লাভ ইউ, লাভ ইউ সো মাচ,বলেই আমার কপালে কিস করল।
আমি লজ্জা পেয়ে দৌড় দিলাম।
অবাক হয়ে আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে চিল্লানি দিয়ে বলতে থাকে,
–হিয়া আরে কই যাও…
এদিকে আসো, আমি চলে যাবো…
আরে কই গেলা??
ঠিক আছে, তুমি থাকো, আমি গেলাম…
অন্তত ব্যাল্কনিতে আসো প্লিজ…
বলেই সে চলে গেলো।
আমি ব্যাল্কনিতে দাঁড়িয়ে থেকে তার যাওয়া দেখছি…
চলবে।।।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/